ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। পর্যাপ্ত ভিটামিন যদি আমাদের শরীর না পায় তাহলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক ভিটামিন আছে যার অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যায়, তা নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়লে জেনে যাবেন কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এছারাও আমাদের আর্টিকেলটি পড়লে ভিটামিন এর কাজ কি এবং ভিটামিন সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য পেয়ে যাবেন। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয় এবং ভিটামিনের কাজ কি।
ভিটামিন এর কাজ কি
আমরা প্রতিদিন খাবার খাই, সে খাবারের মধ্যে আমরা পুষ্টি পেয়ে থাকি। ভিটামিন হলো সেই খাবারহগুলোর মধ্য থেকে পাওয়া পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন ছাড়া আমাদের শরীর সুস্থ থাকতে পারে না। এ পর্যন্ত মোট ভিটামিনের অস্তিত্ব রয়েছে তেরো টি, সেগুলো হলো: ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি৭, ভিটামিন বি৯, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে। এ ভিটামিনগুলো খাবারের মধ্যে আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় কাজ করে থাকে। ভিটামিন এর কাজ কি বিস্তারিতভাবে জেনে নিন-
ভিটামিন এ’ এর কাজ-
- চোখকে সুরক্ষিত রাখে।
- দাঁতের গঠনে সহায়তা করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন বি এর কাজ-
- বেরিবেরি রোগের প্রতিষেধক হলো ভিটামিন বি’।
- পরিপাকতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন বি২’ এর কাজ-
- বিপাকের কাজে সাহায্য করে থাকে।
- ত্বকের সৌন্দয্য ঠিক রাখে।
- স্নায়ুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ভিটমিন বি৩ এর কাজ-
- টিস্যুকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
- কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে।
- হজম শক্তি ঠিক রাখে।
ভিটামিন বি৫ এর কাজ-
- হরমোন নিয়ন্ত্রন করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হার্টের স্বাস্থ ভালো রাখে।
ভিটামিন বি৬ এর কাজ-
- রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে।
- গর্ভবতী মহিলাদের মনিং সিকনেস এবং বমি বমি ভাব দূর করে।
- হার্ট ও চোখ ভালো রাখে।
ভিটামিন বি৭ এর কাজ-
- মস্তিষ্কের স্বাস্থ ভালো রাখে।
- রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে।
- ত্বক, নখ ও চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন বি৯ এর কাজ-
- প্রোটিনের বিপাক প্রকিয়ায় সহায়তা করে।
- অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।
- স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ভিটামিন বি১২ এর কাজ-
- রক্তস্বল্পতা রোধ করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের স্বাস্থ ভালো রাখে।
- মস্তিষ্ক ও চোখের জন্যও বেশ উপাকারি।
ভিটামিন সি’ এর কাজ-
- রক্তের প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করে।
- ফুসফুস ও শ্বাসনালী সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- এলার্জি প্রতিরোধ করে ও যেকোনা ক্ষম দ্রুত সারায়।
- কোষে কোলেজেন টিস্যু গঠনে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি’ এর কাজ-
- শরীরের মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করে।
- শরীরের হাড় মুজবুত রাখতে সহায়তা করে।
- রিকেট ও অস্টিওম্যালেসিয়া রোগ প্রতিরোধক করে।
ভিটামিন ই’ এর কাজ-
- শরীরের মধ্যে কোষঝিল্লি গঠন করে।
- গর্ভপাতের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে।
- হরমোনের সমতা রক্ষা করে।
ভিটামিন কে’ এর কাজ
- রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে।
- হাড়ের গঠনে সহয়তা করে।
- মানবশরীরে ক্যান্সার এর কোষ তৈরি হতে বাধা দেয়।
এককথায় বলা যায় আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন সর্বদা কাজ চালিয়ে যায়। আমাদের শরীরে যেন কোনো ধরনের রোগ সৃষ্টি না হয় সে জন্য ভিটামিনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়
ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। ভিটামিন আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ জীবানুর হাত থেকে সুস্থ রাখে। আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন যদি না পায় তাহলে, শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা যায়। যার একটি সমস্যা হলো শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া। তেরো ধরনের ভিটামিন আমরা খাবারের মধ্যে পেয়ে থাকি, এ ভিটামিন গুলো একেকটির কাজ একেক রকম। এমন কিছু ভিটামিন রয়েছে যেগুলোর অভাবে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। আমাদের শরীর প্রায় দুর্বল হয়ে, তাই আমাদের জানতে হবে কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক কোনে ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি’ এর অভাব হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। ভিটামিন ডি’ আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি পুষ্টি উপাদান। এটি আমাদের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন উপকারি কাজ সম্পন্ন করে থাকে। হাড় শক্ত ও মজবুত রাখে, দাঁত শক্ত রাখে, পেশির শক্তি বাড়াসহ বেশ কিছু উপকার আমরা ভিটামিন ডি’ এর মাধ্যমে পেয়ে থাকি। আয়রনের খুব ভালো উৎস হলো ভিটামিন ডি’। এর অভাবে আমাদের শরীরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত লাগে। তাই শরীর দুর্বল মনে হলে ভিটামিন ডি আপনার শরীরকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। জেনে নিন ভিটামিন ডি’ এর উৎসগুলো কি কি-
ভিটামিন ডি এর ভালো একটি উৎস হলো সূর্যের আলো। এছারাও ডিমের সাদা অংশ, তৈলাক্ত মাছ, মাশরুম, দুধ, গরু ও খাসির কলিজা, চিজ এসব খাবার এবং ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ড ও ট্যাবলেট আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরন করে থাকে।
আমাদের শরীরের জন্য আরও একটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন হলো, ভিটামিন বি১২’। যার অভাবে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি ভিটামিন বি১২। ভিটামিন বি১২ রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে, হার্টেও স্বাস্থ ভালো রাখে, মস্তিষ্ক ও চোখের জন্য উপকারি এবং ডিএনএ ও লোহিতা রক্ত কনিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এটি অভাবে আমাদের শরীরে বেশ কিছু সমস্যা হতে দেখা যায়। তাই এ সমস্যাগুলোর হাত থেকে মুক্তি পেতে আমাদের শরীরকে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ দিতে হবে। ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভব করা ভিটামিন বি১২ এর প্রধান লক্ষণ। তাই শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল মনে হলে, আপনার শরীরকে ভিটামিন বি১২ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। জেনে নিন ভিটামিন বি১২ এর উৎসগুলো কি কি-
বিভিন্ন প্রানীর মাংস যেমন: গরু, ছাগল, কাকড়া, ভেড়ার মাংস ভিটামিন বি১২ এর ভালো উৎস। এছারাও দুগ্ধজাত খাবার, দই, ডিম, মাছ, বাদাম, সয়ামিল্ক, ওটস, গাঢ় সবুজ শাকসবজি থেকেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি১২ পাবেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কোন ভিটামিন
ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। আমাদের শরীরকে বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে ভিটামিনগুলো। আমাদের শরীরের একটি জটিল সমস্যা হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। আমাদের জীবনযাত্রা অস্বাস্থকর, ভেজাল ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য গ্রহন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। যার কারণে আমরা অল্পতেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে যায়, কোনো কাজে মন বসে না। তাই আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এমন কিছু ভিটামিন আছে যেগুলো আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কোন ভিটামিন।
আমরা প্রতিদিন কোনো কোনো খাবার খাই, সে খাবারের মধ্যে ভিটামিন রয়েছে। আর সেগুলো আমাদের শরীরের মধ্যে গিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তেরো ধরনের ভিটামিন রয়েছে, যার সবগুলো আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নিন-
দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার: এ জাতীয় খাবারগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবারগুলোর মধ্যে দুধ, দুই, পনির, চিজ, মাখন থেকে পাওয়া ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
তরল খাবারগুলো: গ্রিন টি, স্যুপ, ফলের রস, শরবত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
রঙিন শাকসবজি: শাকসবজি থেকে পাওয়া ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পালংশাক, টমেটো, ক্যাপসিকাপ, গাজর, মিষ্টি কুমরো, পেঁপে প্রভৃতি খাবারগুলোতে ভিটামিনের পাশাপাশি মিনারেলস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ফলমূল (ভিটামিন এ, ডি, সি, ই জাতীয় ফল): কমলা, মাল্টা, লেবু, আমড়া প্রভৃতি টক জাতীয় ফলগুলোতে থাকা ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: মাছ, মাংস, কলিজা, ডিম, ডাল, বিভিন্ন বীজ এসব প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো থেকে পাওয়া ভিটামিন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
শস্যজাতীয় খাদ্য: চাল, গম, আলু, ভুট্টা থেকে তৈরি খাবারগুলো থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়মিত খাবেন এবং যে অভ্যাস বা খাবারগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় সেগুলো পরিহার করবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে চুলকানি হয়
আমাদের শরীরে চুলকানির সমস্যা প্রায় হতে দেখা যায়। অস্থির করে দেয় এ চুলকানির সমস্য্ বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে এ সমস্যা হয়ে থাকে। যার একটি কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। ভিটামিনের অভাবেও আমাদের শরীরে চুলকানি হতে পারে। আমাদের শরীরকে প্রতিনিয়ত সুস্থ রাখে বিভিন্ন পুষ্টিউপাদান যার একটি হলো ভিটামিন। এ ভিটামিনের অভাবে শরীরে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তার একটি হলো চুলকানি। তবে আমরা জানি এ পর্যন্ত মোট তেরো ধরনের ভিটামিন রয়েছে, এ সবগুলো ভিটামিনের অভাবে কি চুলকানি হয়? অনেকের সে বিষয়ে ধারনা নেই। তবে ভিটামিনের অভাবে হওয়া চুলকানি দূর করতে সে বিষয় সম্পর্কে আমাদের সবার জানতে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ভিটামিনের অভাবে চুলকানি হয়।
শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিনের অভাব, শরীরের অনেক অংশ চুলকানোর কারণ হতে পারে। এমন কয়েকটি ভিটামিন রয়েছে যার কারনে শরীরে চুলকানির সৃষ্টি হয়। ভিটামিন এ’, বি’, সি’, ডি’, ই’ এ সবগুলো ভিটামিনের অভাবে ত্বকে চুলকানি হতে পারে। কারণ এ সবগুলো উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য অপরিহার্য। এ সবগুলো ভিটামিন আমাদের ত্বককে সুরক্ষা রাখে এবং সবগুলো ভিটামিনের অভাবে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়।
আমাদের শরীরে ভিটামিন এ’ এর অভাব হলে, ত্বকে মৃত কোষ জমে এবং ত্বকে প্রদাহ ও চুলকানি সৃষ্টি হয়। ভিটামিন বি’ এর অভাবে ত্বকের চুলকানি হয়, বিশেষ করে পা ও পায়ের পাতায়। ভিটামিন ডি’ এর যদি অভাব হয় তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুলকানি হয়। ভিটামিন ই’ এর অভাব হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং ত্বকে ফাটল সৃষ্টি করে, ফলে ত্বক চুলকায়। ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারি ভিটামিন সি’। এর অভাব হলে পানির ক্ষয় ত্বকে হয়ে থাকে এবং ত্বক চুলকায়, যার ফলে ত্বকে চুলকানি হয়।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারি চুলকানি প্রতিরোধে আমাদের সবধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খাওয়া জরুরি। সবার ক্ষেত্রে একই ধরনের ভিটামিনের অভাবে শরীর চুলকায় না, তাই শরীর চুলকালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে যাবেন, যে কোন ভিটামিন আপনার শরীরে কম রয়েছে। এরপর সে ভিটামিনের চাহিদা পূরন করতে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়মিত খাবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়
সুুস্থ শরীর ও সুন্দর মন পেতে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। ঘুম আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। আর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে , ঘুম কম হলে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি হতে দেখা যায়। তাই পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরকে দেওয়া প্রয়োজন। এর জন্য ঘুমের প্রতি আমাদের গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
অনেক সময় আমাদের মধ্যে হতে দেখা যায়, ঘুমাতে যাচ্ছি কিন্তু ঘুম হচ্ছে না। কেন এরকম হচ্ছে চিন্তা করে থাকি। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যার মুখোমুখি আমাদের হতে হয়। তবে আমরা জানি কি? শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে ঘুম কম হয় এবং কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়। যদি না জেনে থাকি, তাহলে ঘুমের সমস্যা সমাধানে অবশ্যই জানতে হবে কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়।
১.ভিটামিন ডি’ এর অভাবে ঘুমের সমস্যা হতে দেখা যায়। ঘুম কম হওয়া ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত একটি লক্ষণ। বিভিন্ন গবেষনা থেকে প্রমানিত শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকে তাহলে ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই ঘুম হলে শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি দিন।
২.ভিটামিন ডি’ ছাড়াও, ভিটামিন বি৬ এর অভাবেও ঘুম কম হয়। আমাদের শরীরে মেলাটিন ও সেরোটিন নামে দুটো হরমোন রয়েছে, যেগুলো আমাদের ভালো ঘুমে সহায়তা করে থাকে। আর এ দুটি হরমোন যদি কম বের হয় তাহলে ঘুম কম হয়ে থাকে। আর ভিটামিন বি৬ এর অভাবে এ হরমোন দুটি কম বের হয়। তাই ঘুম কম হলে ভিটামিন বি৬ রয়েছে এমন খাবার খান।
ঘুমের সমস্যা ছোট খাটো বিষয় নয়। ভিটামিনের অভাব ছাড়াও বেশ কিছু কারনে ঘুম কম হয়ে থাকে। তাই ঘুমের সমস্যা যদি আপনার একটানা হতেই থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাবেন, পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারগুলো খান। তাহলে সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর শুকিয়ে যায়
ভিটামিন এর অভাব আমাদের শরীরকে বিভিন্ন সমস্যার মুখে ফেলে দেই। পর্যাপ্ত ভিটামিন আমাদের শরীরে না থাকলে বেশ কিছু লক্ষন আমাদের শরীরের মধ্যে প্রকাশ পায়। যেগুলো দেখে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে। ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায়, ক্লান্তা হয়ে যায় এবং কিছু খেতে পারি না। যার ফলে শরীর অনেকটাই শুকিয়ে যায়। যদি আপনার এ ধরনে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান দিতে হবে। ভিটামিনের অভাবেও শরীর শুকিয়ে যায়, এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে সেটা নির্দিষ্টভাবে লক্ষণ দেখে বোঝা যায় না। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাবে শরীর শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ শরীর শুকিয়ে যাওয়অর বিভিন্ন কারন রয়েছে, যেগুলো অনান্য ভিটামিনের অভাবেও হয়ে থাকে। তবে ভিটামিন বি১২ এবং ভিটামিনি সি’ এর অভাবে শরীর শুকিয়ে যায় বলে ধারনা করা হয়।
ভিটামিন বি১২’: ভিটামিন বি১২ আমাদের শরীরে রক্ত তৈরি করে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। ভিটামিন বি১২ এর অভাবে আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় এবং ক্ষুধা অনেকটায় কমে যায়। যার ফলে কিছু খেতে না পারার কারনে শরীর শুকাতে শুরু করে এবং ওজন অস্বাভাবিক ভাবে কমে যা। তাই শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে অনুভব করলে ভিটামিন বি১২ আপনার শরীরকে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
ভিটামিন সি’: আমাদের শরীরে অত্যান্ত প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন হলো-ভিটামিন সি’। ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের শরীরে থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দেয়, যার কারনে খিদে চলে যায় এবং শরীর শুকাতে শুরু করে। তাই শরীর শুকাতে শুরু করলে ভিটামিন সি এর ঘাটতি মেটান। খাবার থেকে আমরা আমাদের শরীরকে ভিটামিন সি’ দিতে পারি। তাই শরীর শুকিয়ে যাওয়া সমস্যাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
উপরের বলা ভিটামিন দুটোর কারনেই যে শরীর শুকাতে পারে সেটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। সব ধরনের ভিটামিনের অভাবে শরীর শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সব ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো অল্প অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আর শরীর শুকিয়ে যাওয়ার লক্ষণ, গুরুত্বর কোনো কারনেও হতে পারে। তাই অস্বাভাবিক ভাবে শরীর শুকিয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
পরিশেষে বলতে চাই, আপনি সুস্থ আছেন হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লেন, এটি ভিটামিনের অভাবেই বেশি হয়ে থাকে। তাই সুস্থ থাকতে শরীরকে সব ধরনের ভিটামিন দেওয়ার চেষ্টা করুন। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন পেতে এখন থেকেই খান ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার।
লেখকের শেষ বক্তব্য
কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয় – ভিটামিন এর কাজ কি সে সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয় – ভিটামিন এর কাজ কি সে সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।