প্রিয় পাঠক আপকি কি গ্যাসের সমস্যায় ভুগছেন? গ্যাসট্রিকের সমস্যা দূর করতে চান? জানতে চান কি কারনে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরবো গ্যাসের সমস্যা কেন হয়, কি খেলে গ্যাস হবে না এবং কিভাবে ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে গ্যাসের সমস্যা দূর করতে পারবেন।
গ্যাস শব্দটার সাথে আমরা প্রায় সবাই পরিচিত। গ্যাসের সমস্যা নিয়ে আমরা ছোট অথবা বড় সবাই ভোগান্তিক। অনিয়মিত খাদ্যভাস অথবা অস্বাস্থকর খাবারের ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে। এই গ্যাসের সমস্যার কারনে আমাদের অনেকেরই খাবারের পরে বুক মাঝখান থেকে জালাপোড়া করে। এর সমধান কি? আমাদের অনেকের জানা নেই। তাই দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় – গ্যাসট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
পেটে গ্যাসের লক্ষন
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এক অসস্থিকর বিষয়। এ সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছ। গ্যাসের সমস্যা হয়নি এমন মানুষ কম রয়েছে। অনেক সময় গ্যাস হলে আমরা বুঝতে পারিনা ফলে আমরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে যায়। পেটে গ্যাস হলে গ্যাস থেকে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, গ্রাসট্রিক আলসার এমনকি ক্যান্সারের মতো বড় রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমাদের জানতে হবে কি কি লক্ষন দেখলে বুঝবো যে পেটে গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে।
পেটে গ্যাসের লক্ষন গুলো হলো:
- ঢেঁকুর তোলা
- পেট ফাঁপা ও পেট ফুলে যাওয়া
- বুক ও গলায় জা¦লাপোড়ার সৃষ্টি হবে
- বুক ও পেটে চাপ অনুভূত হওয়া
- হজমে অসুবিধা ও বমি বমি ভাব
- খিদেমন্দা ৭.গা গোলানো
- খিদে পেলে বমি পাবে
- শরীরে অস্বস্তিবোধ.
- ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
- হেঁচকি উঠে
- শ্বাসে দুর্গন্ধ আসতে পারে ইত্যাদি
উপরে বলা লক্ষনগুলো যদি আপনার মাঝে দেখা যায় তাহলে বুঝবেন আপনার গ্যাসের সমস্যা হয়েছে। এর জন্য ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করবেন এতে কাজ না করলে বাড়িতে থাকা গ্যাসের ওষুধ খাবেন তবুও যদি গ্যাস না কমে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার একটি লক্ষন হলো পেট ফেঁপে যাওয়া। শরীরে গ্যাসের সমস্যা এ এক বিরক্তিকর বিষয়। অতিরিক্ত মসলা যুক্ত খাবার খাওয়া, ভেজাল যুক্ত খাবার খাওয়া, পামওয়েল, ডালডা, পঁচা বাসি খাবার, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চা-কফি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। আমরা আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলেই, আমরা নিজে নিজেই এ সমস্যা অনেকটা কমিয়ে আনতে পারবো। কিছু ঘরোয়া উপায় আছে যেগুলো করলে আমাদের পেটের ফাঁপা সমস্যা দূর হবে। পেট ফাঁপা দূর করতে ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নিন।
- আমারা অনেকেই খাবার পেট ভরে খাই। তবে পেট ভরে খেলে গ্যাসের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই অনেক খাবার একসাথে খাবেন না, সারাদিনে ভাগ করে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। অনেক খাবার একসাথে খেলে পাকস্থলি ফুলে যায় আর সে কারনে আমাদের গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে।
- সময়মতো খাবার খাবেন, খাবারে অনিয়ম করা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন খাবার অনিয়ম হলে পাকস্থলিতে ইনফেকশন হতে পারে ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই পাকস্থলি সুস্থ রাখতে নিয়ম করে খাবার খাবেন।
- সবার ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যাটা একই ভাবে হয় না। আপনার যে খাবারে গ্যাসের সমস্যা হয় অন্য কারও সে খাবারে গ্যাসের সমস্যা নাও হতে পারে। তাই আপনার যে খাবারগুলোতে বুক জ্বালাপোড়া করে সে খাবার গুলো আপনি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং সে খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- ইসবগুল গ্যাসট্রিক সমাধানে কাজ করে। দইয়ের সাখে অথবা গরম দুধের সাথে এটি খেলে বদহজম এবং পেট ফাঁপা দূর করে।
- লেবু পানি গ্যাসট্রিকের সমস্যা সমাধানে কার্যকারী একটি উপাদান। হালকা গরম পানির সাথে লেবু মিক্স করে খাবেন, পেটের ফাঁপা দূর হবে।
- গ্যাসের সমস্যা প্রতিরোধে কিশমিশ একটি উপকারি উপাদান। যারা গ্যাস কন্ট্রোলে আনতে পারছেন না তারা কিশমিশ খাবেন।
- দারুচিনি হজম প্রক্রিয়ায় খুব ভালো কাজ করে। পেট ফাঁপা দূর করতে এক গ্লাস পানির সাথে ১ চা চামচ দারুচিনির গুড়া মিশিয়ে, পানি ফুটিয়ে খাবেন।
- মেথিগুড়া গ্যাসট্রিকের সমস্যায় কার্যকারী একটি উপাদান। এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ মেথিগুড়া মিশিয়ে খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়।
- আপেল সিডের ভিনেগার খাওয়ার আগে পানি বা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পেট ফাঁপা দূর হবে। নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন ফল পাবেন।
- পেট ফাঁপা দূর করতে পেটের উপরিভাগে মাসাজ করবেন। এতে গ্যাস আপনার পায়ুদ্বারের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।
- এলাচ পাকস্থলির ইনফেকশন দূর করে। পানির সাথে দুটি এলাচ গুড়া মিশিয়ে সেদ্ধ করে নিন, সেদ্ধ করা পানিটুকু খাবেন অল্পসময়ের মধ্যে পেট ফাঁপা দূর হবে।
- পিপারমেন্ট অয়েল সাপ্লিমেন্ট গ্রহনে পেট ফাঁপা প্রশমিত হয়। খাবারের ১ ঘন্টা আগে এটি খাবেন।
পেট ফাঁপা দূর করতে উপরের বলা টিপসগুলো ফলো করবেন। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করবেন। পানি আপনার পেটে থাকা গ্যাস বের করে আনে। এসব মেনে চলার পরও যদি আপনার পেট ফাঁপার সমস্যা না দূর হয়, তাহলে বাড়িতে নিজ থেকে কোনো ওষুধ না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরমর্শ নিবেন।
সকালে কি খেলে গ্যাস হবে না
আমাদের সবার প্রায় গ্যাসের সমস্যা হতেই থাকে। দিন দিন এ সমস্যা যেন বেড়েই চলেছে। একটু সতর্ক থাকলেই আমরা এ সমস্যার সমাধান পেয়ে যাব। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার মূল কারন হলো আমাদের অনিয়মিত ও অস্বাস্থকর খাদ্যভাস। পেটের সমস্যা দূর করতে অনেকেই আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠেই গ্যাসের ওষুধ খেয়ে ফেলি। কিন্তু প্রতিদিন ওষুূধ খাওয়া ঠিক নয় এর ফলে আমাদের শরীরে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অ্যাসিডের পরিমান শূন্য হয়ে যায় যার কারনে গ্যাস্ট্রিক আলসার এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। তাই ওষুধ না খেয়ে, ওষুধের বদলে কিছু প্রাকৃতিক খাবার আছে যেগুলো খেলে আপনার শরীরে গ্যাসের সমস্যা দূর হবে এবং শরীরে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। চলুন জেনে নিই সকালে কি খেলে আমাদের গ্যাস হবে না বরং গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
খেজুর: খেজুরে প্রচুর ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়ায় ভালো কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য , পেঠের সমস্যা দূর করে এবং আপনাকে গ্যাসের সমস্যা থেকে দূরে রাখে। তাই সকালে আপনি খেজুর খাবেন গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
মধু ও গরম পানি: সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে, হালকা গরম পানির সাথে অল্প করে মধু মিশিয়ে খাবেন। গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
কাঠবাদাম: রাত থেকে সকাল পর্যন্ত, দীর্ঘ সময় ধরে না খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সমস্যাকে দূরে রাখতে সকাল বেলা ৫-৬ টা কাঠবাদাম পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষন পর খাবেন। সকালে এভাবে কাঠবাদাম খাবেন গ্যাস হবে না।
কাঁচা ও সবুজ শাকসবজি: সেদ্ধ করা কাঁচা শাকসবজি দিয়ে আপনার দিন শুরু করতে পারেন তাহলে গ্যাস হবে না।
কলা: কলাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড বলা হয়। সকাল বেলা আপনার পেট গ্যাসে ভরা থাকলে, সকালের নাস্তায় কলা খাবেন। গ্যাসের সমস্যা আর বাড়বেনা বরং কমবে।
তুলসি পাতা: সকাল বেলা চায়ের লিকারের সাথে কয়েকটি তুলসি পাতা পানিতে ফুটিয়ে খাবেন। এটা সকালে খেলে গ্যাস হবে না।
কিশমিশ: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা যারা কন্ট্রোলে আনতে পারছেন না। তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত কিশমিশ ভিজিয়ে রেখে, ভেজানো কিশমিশ খাবেন। আপনার পেটে জমা থাকা অতিরিক্ত অ্যাসিডকে কমিয়ে। গ্যাসের সমস্যা দূর করবে।
আদা: আদার উপকারিতা অনেক, গ্যাস্ট্রিকের সমস্য দূর করতেও আদার অবদান অনেক। আদাকে কেটে কুসুম গরম পানির সাথে খাবেন পেট ফুলে থাকা সমস্যার সমধান পাবেন। সকালে এই আদা পানি খেলে আপনার গ্যাস হবে না।
গ্যাসকে কন্ট্রোল রাখতে প্রতিদিন সকালে উপরে বলা খাবার গুলো খাবেন আশা করি সমাধান পাবেন। তবে সকাল বেলা অতিরিক্ত চা-কফি, ফুলকপি-বাধাকপি, আপেল, পেঁয়াজ, শসা ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। সকালের নাস্তায় এসব খাবার আপনার গ্যাসের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
বুকে গ্যাসের ব্যাথা কমানোর উপায়
গ্যাসের আরও একটি লক্ষন হলো বুকে ব্যাথা। বুকে গ্যাসের ব্যাথা অসহ্যনীয় এক যন্ত্রনা। যার এ সমস্যা সেই কেবল যানে এ যন্ত্রনার মাত্রা ঠিক কতটা। আমরা প্রায় সবাই এ রোগের শিকার। বিভিন্ন হজম সংক্রান্ত সমস্যার কারনে বুকে ব্যাথা হতে পারে। আমাদের নিজেদের অসচেতনার কারনে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। গ্যাসের কারনেই বুকে ব্যাথা হয় তবে অনেক সময় হার্টের জন্য ব্যাথা হতে পারে, সে ব্যাথার উপসর্গ আলাদা। গ্যাসের জন্য বুকে ব্যাথা হলে, সেই ব্যাথা কমানোর কিছু উপায় আছে যেগুলো আমাদের জানা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক বুকে গ্যাসের ব্যাথা কমানোর উপায় কি।
- গুড় আমাদের প্রায় সবার পরিচিত একটি উপাদান। বুকে গ্যাসের ব্যাথা দূর করতে এ উপাদানের কার্যকারীতা অনেক। এক টুকরো গুড় নিয়ে চুষে খান, তাহলে দেখবেন বুকের ব্যাথা আসতে আসতে কমছে।
- রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়ার চেষ্টা করুন অন্তত শুতে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে। কারন বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়লে অ্যাসিড রিফ্লাক্স হতে পারে এবং তা থেকে বুকে ব্যাথা হতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করলে বুকে ব্যাথা কমে যায়। আপনার পেটে থাকা খাবার হজম না হলে ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে খাবার হজম হবে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে কমিয়ে আপনার বুকের ব্যাথা দূর করবে।
- প্রাকৃতিক উপাদান আদা, এই আদাতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার হজমের সমস্যার সমাধান করে এবং বুকে গ্যাসের ব্যাথা কমায়। তাই আদাকে ছোট ছোট করে কেটে গরম পানির সাথে খাবেন।
- পুদিনা পাতা বুকে গ্যাসের ব্যাথার উপশম করে। পুুদিনা পাতার অ্যান্টিপেসমোডিক গুন বুকে গ্যাসের ব্যাথা কমায় । তাই বুকে গ্যাসের ব্যাথার সমস্যা সমাধানে পুদিনা পাতার রস খাবেন।
- বুকে গ্যাসের ব্যাথাকে কমায় অ্যাপল সিডের ভিনেগার। অ্যাপল সিডের ভিনেগার আপনার শরীরে গিয়ে হজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফলে গ্যাস অনেকটা কমে যায় এবং বুকে ব্যাথা দূর করে।
- লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে বুকে গ্রাসের ব্যাথা দূর হয়। তাই যাদের গ্যাস থেকে বুকে ব্যাথা হয়, তারা নিয়মিত লবঙ্গ চিবিয়ে খাবেন।
- বুকে গ্যাসের ব্যাথা দূর করার এক কার্যকারী উপাদান হলো মৌরি বীজ। মৌরি বীজ খাবার হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাসের ব্যাথা কমায়।
- বুকে গ্যাসের ব্যাথা কমাতে আঁশ জাতীয় সবজি খাবেন। আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে ব্রকোলি, কাঠবাদাম, খেজুর, শুকনা নারিকেল, ওটস ইত্যাদি খেতে পারেন গ্যাসের ব্যাথা কমবে।
- অতিরিক্ত গ্যাস জমে থাকার কারনে গ্যাস থেকে বুকে ব্যাথা হয়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে বুকে গ্যাস জমতে পারে না এবং বুকে গ্যাসের ব্যাথাও হবে না।
জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন আনলেই গ্যাসট্রিকের বুকে ব্যাথা দূর করতে পারবেন। তবে অতিরিক্ত বুকে ব্যাথা হলে যদি এসব উপায় গুলো কাজে না লাগে তাহলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
পেটে গ্যাস কমানোর খাবার
হজম প্রক্রিয়ার সমস্যা থেকেই মূলত গ্যাসের সৃষ্টি হয়। আমরা আমাদের খাবারের প্রতি অসতর্কতার কারনে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ওষুধকেই বেছে নিই, তবে দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ খেলে আমাদের শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই গ্যাসের সমস্যায় ওষুধ না খেয়ে কমানোর চেষ্টা করতে হবে। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে এমন কয়েকটি খাবারের নাম।
জিরা: আমাদের প্রায় সবার বাড়িতেই এই মসলা থেকে থাকে। জিরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। এটি বদহজম ও অ্যাসিডিটর মতো সমস্যা দূর করে।
দই: দইতে কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আমাদের শরীরে গিয়ে হজমের সমস্যা দূর করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে।
লেবু ও পানি: লেবু ও পানি আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমধানে খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। এজন্য গ্যাসের সমস্যা সমাধানে হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাবেন।
শসা: নিয়মিত শসা খেলে গ্যাস নামের সমস্যার সমাধান মিলবে। এজন্য গ্যাসকে দূরে রাখতে শসা চিবিয়ে খেতে পারেন।
কলা ও কমলা: পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর হয় কলা ও কমলা খেলে। যার ফলে পেটের গ্যাস ভালো হয়। তাই পেটের গ্যাস কমাতে নিয়মিত কলা ও কমলা খাবেন।
মৌরি: গ্যাসের সমস্য সমাধানের মৌরি হলো একটি প্রাকৃতিক ওষুধ। কাজেই গ্যাসকে দূরে রাখতে মৌরি ভেজানো পানি নিয়মিত খাবেন।
ভেষজ চা: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে কমাতে ভেষজ চা খুবই কার্যকারী একটি উপাদান । ভেষজ উপাদান আদা, পুদিনা, লেবু ও ক্যামোমাইল দিয়ে চা বানিয়ে খান। পেটের গ্যাস দূর হবে।
উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ খাবার: আঁশজাতীয় খাবারের মধ্যে ব্রকোলি, বীজ, বাদাম ও সবুঝ শাকসবজি খেলে হজম প্রক্রিয়ায় ভালো কাজ করে এবং গ্যাসকে কমিয়ে আনে।
ডাবের পানি: ডাবের পানিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে গিয়ে গ্যাসকে কন্ট্রোলে আনে। তাই গ্যাসকে কমাতে ডাবের পানি খাবেন।
রসুন: গ্যাসের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন ১ কোয়া রসুন বেটে ভাতের সাথে খেতে পারেন।
চিয়া বীজ: চিয়া বীজে রয়েছে ফাইবার ও ওমেগো-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। এজন্য এই চিয়া সিড ঠান্ডা পানীয় , ফলের রস অথবা পুডিং এর সাথে খেতে পারেন।
উপরে বলা খাবারগুলো আপনার পেটের গ্যাস দূর করতে নিয়মিত খাবেন। এছারাও নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও পানি পান করুন। যে খাবারগুলোতে আপনার গ্যাসকে বাড়িয়ে দেয় সে খাবার গুলো খুঁজে বের করুন এবং সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আপনি নিজেই চেষ্টা করলে গ্যাসের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আর যদি চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় – গ্যাসট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় – গ্যাসট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।