কিডনি রোগের লক্ষন ও প্রতিকার – সুস্থ কিডনির লক্ষন

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ন একটি অঙ্গ হলো কিডনি। এটি কোনো কারণে আক্রান্ত হলে শরীরে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়। তাই এ রোগ প্রাথমিক অবস্থাতেয় চিকিৎসার প্রয়োজন। এজন্য এ রোগের লক্ষন সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা জরুরি।

কিডনি রোগের লক্ষন ও প্রতিকার

কিডিনি রোগ নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন কিডনি রোগের লক্ষন কি এবং এ রোগ থেকে প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে। বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

সুস্থ কিডনির লক্ষন

মানবদেহের গুরুত্বপূর্ন অঙ্গগুলো মধ্যে একটি হলো কিডনি। মানবদেহে ছাঁকনির কাজ করে থাকে কিডনি। শরীরর মধ্যে থাকা যাবতীয় দূষিত পদার্থগুলোকে বাইরে বের করে আনে কিডনি। কিডনি ভালো থাকলে শরীরের অনান্য অংশগুলোও ভালো থাকে। তাই সবসময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে কিডনি ভালো আছে কি-না। কয়েকটি উপায়ের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার কিডনি ভালো আছে কি-না। কিডনি সুস্থ আছে কিনা বিষয়টি প্রত্যেক মানুষের জানা উচিত। সুস্থ কিডনির লক্ষনগুলো কি জেনে নিন।

  • আপনার কিডনি সুস্থ থাকলে, আপনার রক্তচাপ ঠিক থাকবে। তাই বুঝতে চেষ্টা করুন, যে আপনার রক্ত চাপ ঠিক আছে কি-না। আপনার রক্ত চাপ যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি ঠিক আছে।
  • আপনার কিডনি যদি সুস্থ থাকে তাহলে সারাদিনে আপনার ৬ থেকে ১০ বার প্রসাবের বেগ আসবে। সুস্থ কিডনির একটি লক্ষন হলো সারাদিনে কমপক্ষে ৬ থেকে ১০ বার প্রসাব হবে। এর থেকে কম বা বেশি হলে কিডনি পরীক্ষা করে নিতে হবে।
  • আপনার কিডনি সুস্থ থাকলে সময়মতো খিদে ও পানি খাওয়া ইচ্ছা হবে।
  • অল্প পরিশ্রমে যদি আপনি ক্লান্ত না হন, তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি ঠিক আছে।
  • আপনার ওজন যদি ঠিক থাকে এবং হঠাৎ করে ওজন না কমে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি ঠিক আছে।
  • শরীরে অস্বাভাবিক ভাবে চুলকানি বা ফুসকুড়ি না হলে বুঝবেন কিডনি ভালো আছে।

কিডনি রোগিদের বেশ কিছু লক্ষণ আছে, সেগুলো আপনার শরীরে যদি থেকে না থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি ঠিক আছে। (কিডনি রোগিদের লক্ষনগুলো নিন্মে আলোচনা করা হয়েছে, সেখান থেকে জেনি নিন)

কিডনি সুস্থ আছে কি-না তা বোঝা খুব কঠিন একটি কাজ। কারণ প্রাথমিক অবস্থাতে কিডনি রোগের লক্ষনগুলো মানবদেহে প্রকাশ পায় না। তাই কিডনি সুস্থ আছে কি-না বোঝার জন্য সবথেকে উত্তম উপায় হলো বছরে একবার কিডনি ভালো আছে কি-না পরীক্ষা করে নেওয়া। এর জন্য দুটি পরীক্ষা করলেই বুঝে যাবেন, একটি হলো প্রসাব পরীক্ষা অপরটি হলো রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা। এ দুটি পরীক্ষা করলেই সহজেই জেনে নিবেন আপনার কিডনী সুস্থ আছে কি-না।

বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, প্রসাবে ঘন ঘন প্রদাহ হয়, কিডনিতে পাথর হয়েছিল, যারা ধুমপান করে, যারা অতিরিক্ত লবন খায় এবং যাদের বংশে কিডনি রোগ ছিল তাদের জন্য বছরে দুইবার কিডনি ভালো আছে কিনা বুঝতে পরীক্ষা করতে হবে। এরা কিডনি রোগের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ন।

কিডনি রোগের প্রতিকার

বর্তমানে কিডনি রোগিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই আছে। কিডনি রোগকে মারাত্মক রোগগুলোর তালিকায় রাখা হয়েছে। যেসব মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যায়, তার মধ্যে কিডনি রোগ একটি। কিডনি মানবদেহে রক্ত পরিশোধিত করে থাকে। প্রতিদিন কিডনি মানুষের শরীর থেকে দুষিত পদার্থগুলোকে বের করে দেয় এবং রক্তকে পরিশোধিত করে দেয়। প্রসাবের নালী, প্রাসাবের থলি, প্রসাবের রাস্তা এসব নিয়েই কিডনি কাজ করে থাকে। এসবের কোনো একটি জায়গায় ত্রুটি বা রোগ হলে এই রোগকে তখন কিডনি রোগ বলা হয়। কিডনি মানবদেহে খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি অঙ্গ তাই এটি ভালো রাখা প্রয়োজন। কিডনি সুস্থ না থাকলে ভালো থাকা সম্ভব নয়।

আরো পড়ুনঃ-  দাউদ কিভাবে ভালো হয় - দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা

কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না বললেই চলে। তবে একবারে প্রাথমিক অবস্থাতে যদি এ রোগ শনাক্ত করা যায়। তাহলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটির প্রতিকার করা যায়। তাই কিডনির প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ করায় উত্তম। একটু সচেতন থাকলেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। জেনে নিন এ রোগ প্রতিরোধের উপায় কি-

  • ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে, এগুলোকে নিয়ন্ত্রনে রাখুন  এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলাফেরা করুন।
  • শরীরের ওজন যদি অতিরিক্ত থেকে থাকে তাহলে সে ওজন কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন।
  • ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
  • অতিরিক্ত লবন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই সে অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন।
  • প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন।
  • অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো রোগের ওষুধ সেবন করবেন না। এমন অনেক ওষুধ আছে যা অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।
  • কিডনি ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং কিডনিকে সুস্থ রাখে।
  • প্রসাবে ইনফেকশন জনিত সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
  • কিডনি ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমাতে হবে এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।

উপরের নিয়মগুলো যদি মেনে চলেন তাহলে আপনার কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারবেন এবং ঘাতক এ রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষন

কিডনি আমাদের সুস্থ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। এটি বিকল হয়ে গেলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যাই ভুগতে হয়। কিডনি রোগের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষন নেয়। তবে এমন কিছু লক্ষন আছে যেগুলো আপনার মধ্যে দেখা দিলে কিডনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন আপনার কিডনি ভালো আছে কি-না। এসব লক্ষনগুলো থাকলে অনেকের কিডনি রোগ হতে দেখা গেছে। তবে নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না যে এ লক্ষনগুলো থাকা মানেই আপনার কিডনি রোগ হয়েছে। তাই লক্ষনগুলো প্রকাশিত হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিডনি রোগের লক্ষনগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

  • কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে অনেক সময় রোগির চোখ, মুখ অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে যায়। পায়ের গোড়ালি ও মুখের ফোলাভাব স্থায়ী হয়, তখন ধারনা বেশি ভাবে করা হয় কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
  • শরীরে খুব বেশি ক্লান্ত, দুর্বল হয়ে পড়বে কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির প্রসাবের রঙ পরিবর্তন হয়ে যায় এবং স্বাভাবিকের থেকে কম অথবা বেশি প্রসাব হয়।
  • প্রসাবের সময় তলপেটে ব্যাথা হওয়া কিডনি রোগের একটি লক্ষন। ব্যাথার পাশাপাশি প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে।
  • প্রসাবে বেশি বেশি ফেনা তৈরি হতে দেখা যায়, কিডনি রোগ হলে।
  • কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক অবস্থাতে অতিরিক্ত বমি বমি ভাব হয় কোনো কারন ছাড়াই।
  • চামড়া শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুলকানির সৃষ্টি হয়।

উপরের লক্ষনগুলো যদি আপনার মধ্যে প্রকাশ পায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে কিডনির সমস্যা নাকি কি সমস্যার কারণে এ উপসর্গগুলো শরীরে দেখা দিচ্ছে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষন

কয়েক মাস বা কয়েকবছর ধরে কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে হ্রাস যখন পায়, তখন সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হিসেবে ধরা হয়। কিডনি খুবই নীরব ঘাতক ব্যাধি রোগ, যা সহজেই শনাক্ত করা যায় না। অনেক সময় দেখা যায় কিডনি গুরুত্বরভাবে আক্রান্ত হলেও এর কার্যকারিতা চলতে থাকে। তাই সহজেই কিডনি রোগ ধরা যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনি রোগের উপসর্গগুলো অনির্দিষ্ট হতে দেখা যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি  রোগ হলে সেটা শনাক্ত করা একটু সহজ হয়। কিডনি যদি দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তাহলে শরীরে কয়েকটি লক্ষন প্রকাশ পায়। জেনে নিন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষনগুলো কি কি।

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বল অনুভব হবে এবং অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে যাবেন যদি আপনার কিডনি দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত বমি বমি ভাব ও বমি হবে।
  • শরীরের যেকোনো অংশ ক্রমাগত চুলকাতেই থাকবে।
  • প্রসাবের পরিবর্তন হতে দেখা যাবে, দৈনিক যে অনুযায়ী আপনি প্রসাব করেন তার থেকে কম অথবা বেশি হবে।
  • আপনার কিডনি অকেজো হলে ঘুমের সমস্যা হতে দেখা যাবে।
  • পা ও পায়ের গোড়ালি অধিক পরিমাণে ফুলে যাবে।
  • বুকে ব্যাথা হবে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হলে।
  • শ্বাসকষ্টের সমস্যা হবে।
  • প্রসাবের সাথে রক্ত বের হয়।
আরো পড়ুনঃ-  ডায়রিয়া হলে করণীয় - ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত

উপরের লক্ষনগুলো যদি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে দ্রুত ডাক্তরের পরামর্শ নিবেন।

সুস্থ কিডনির লক্ষন

কিডনি ব্যাথা বোঝার উপায়

গোপনে শরীরের ক্ষতি করতে শুরু করে কিডনি রোগ। কিডনি রোগ বোঝা খুব কঠিন, সহজেই বোঝা যায় না এ রোগ শরীরে হয়েছে কি-না। তাই এ রোগ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। কিডনির ব্যাথা কেমন হয় অনেকেই সেটা বুঝে উঠতে পারে না। কোমরে ব্যাথা হলেই ধরে নেই যে তার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। তবে সবার ক্ষেত্রে কোমরে ব্যাথা মানেই কিডনি রোগ হয়েছে বলা যায় না। কিডনির ব্যাথা হচ্ছে নাকি অন্য কোনো কারণে ব্যাথা হচ্ছে, সেটা বুঝতে হলে কিছু উপায় আপনাকে জানতে হবে। জেনে নিন কিডনির ব্যাথা বোঝার উপায়-

আপনার কোমরে ব্যাথা মানেই কিডনির ব্যাথা নয়।  অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে কারও মেরুদন্ডের হাড় ভাঙা থাকলে, মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয় হলে, মেরুদন্ডতে ক্যান্সার থাকলে অথবা কোমরের মাংপেশিতে স্পাসম থাকলে কোমরে ব্যাথা হতে পারে। তবে কিডনিতে পাথর হলে কোমড়ে ব্যাথা হয়ে থাকে এবং সে ব্যাথা মারাত্মক হবে। রোগিদের যদি এরম প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং সেটা সহ্য করার মতো না হয়, তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে তার কিডনিতে পাথর হয়েছে।

কিডনির ব্যাথা পিঠে অথবা তলপেটে অনুভূত হতে পারে। শুধু স্থান বিবেচনা করে কিডনির ব্যাথা বোঝা যায় না।  ব্যাথার ধরনের ওপর নিভর করবে যে কিডনির ব্যাথা হচ্ছে কিনা। কিডনির ব্যাথা হবে তীক্ষè এবং খোঁচা দেওয়ার মতো। পাশাপাশি জ্বর আসবে, বমি বমি ভাব হবে, প্রাসাবের সাথে রক্ত যাবে ইত্যাদি লক্ষনগুলো দেখা যাবে।

কিডনির ব্যাথা দূর করার উপায়

বর্তামানে কিডনি রোগিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই আছে। কিডনি খুবই মারাত্মক একটি রোগ। এ রোগিদের খুবই সাবধানতার সাথে চলাফেরা করতে হয়। কিডনির ব্যাথা হচ্ছে, কিভাবে ব্যাথা কমাবেন অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না কিংবা হঠাৎ করে ডাক্তারের কাছেও যেতেও পারছেন না। সেক্ষেত্রে কয়েকটা ঘরোয়া উপায় আছে যেগুলো করলে ব্যাথা কিছুটা হলেও কমে যেতে পারে। জেনে নিন কিডনির ব্যাথা দূর করার উপায়।

পানি পান করা: কিডনির ব্যাথা উঠলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আপনি যদি কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় আপনাকে বেশি পানি পান করতে হবে। অনেক সময় প্রসাব কমে গেলে কিডনিতে ব্যাথা হতে দেখা যায়। তাই কিডনির ব্যাথা হলে বেশি করে পানি খাবেন।

আরো পড়ুনঃ-  দাঁত সাদা করার উপায় - দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায়

বিশ্রাম নিতে হবে: কিডনির ব্যাথা দূর করতে আপনাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। চলাফেরা, কাজকর্ম করলে ব্যাথা আরও বেড়ে যায় তাই ব্যাথা হলে বিশ্রাম নিন।

গরম সেঁক দিন: কিডনির ব্যাথাসহ অনান্যা ব্যাথায় গরম সেঁক খুবই কার্যকারী। বাজার থেকে গরম পানির ব্যাগ কিনে, গরম পানি করে ব্যাগের মধ্যে ভরে দিয়ে, ব্যাথার স্থানে রেখে দিন। ব্যাথা অনেকটাই কমে যাবে।

তুলসি পাতার রস: কিডনির ব্যাথা কমাতে তুলসি পাতার রস করে খাবেন, ব্যাথা কমবে।

ভিটামিন সি’ কম খেতে হবে: আমাদের শরীরে ভিটামিন সি’ প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান হলেও এটি কিডনি রোগিদের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে কিডনির ব্যাথা বেড়ে যেতে পারে। তাই এ খাবার কিডনি রোগিদের অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

কিডনির ব্যাথা হলে, ব্যাথা কমাতে উপরের নিয়মগুলো ফলো করবেন। তবে ব্যাথা কমিয়ে ঘরে বসে থাকা যাবে না, যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যাথা হয়

কিডনি রোগটিকে দুই ভাবে ভাগ করা হয়, একটি হলো একিউট কিডনি রোগ অপরটি হলো কিডনি ইনজুরি। কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হলে কিডনিতে ব্যাথা অনুভূত হয়। বিভিন্ন কারণে কিডনিতে ব্যাথা হতে পারে। কিডনিতে পাথর হলে, মূত্রনালীতে ইনফেকশন, কিডনিতে সিস্ট, কিডনিতে ক্যান্সার, কিডনি থেকে প্রসাব বেরিয়ে আসতে না পারলে  এসব বিভিন্ন কারণে কিডনিতে ব্যাথা হয়ে থাকে। ব্যাথার ধরন বা কোথায় ব্যাথা হয় কিডনি রোগ শনাক্ত করতে আমাদের জানতে হবে। কিডনি রোগ যাতে জটিল হয়ে না যায় সে কারণে এর ব্যাথা সম্পর্কে ধারনা থাকা ভালো। তাই জেনে নিন কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যাথা হয়।

কিডনির সমস্যা পিঠের নিচের দিকে ব্যাথা করে। যদি কিডনি রোগ আপনার শরীরে হয়ে থাকে তাহলে পিঠের নিচের দিকে ব্যাথা হবে, উপরের দিকে নয়। এরম ব্যাথা যদি আপনি আপনার পিঠে অনুভব করেন, তাহলে এ ব্যাথা এড়িয়ে যাবেন না। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে যাবেন, যে আপানার কিডনি ঠিক আছে কিনা।

কিডনির  সমস্যা হলে ব্যাথাটা তলপেটের দিক থেকেও আসে। প্রসাব করার সময় তলপেটে প্রচুর ব্যাথা হয়, যা সহ্য করার মতো না। এসময় অনেকের প্রাসাবের সাথে রক্তও বের হয়ে আসে।

কিডনিজনিত ব্যাথা মেরুদন্ড থেকে একটু দূরে ডান দিকে অথবা বাম পাশের দিক থেকে অনেক সময় আসে। এ ব্যাথা ক্রমান্বয়ে বেড়ে গিয়ে কোমরের দুই পাশেও চলে যায়। কিডনির ব্যাথা সাধারণত ভাবে কোমরে, পাজরে, উপরের পেটে, তলপেটে, হিপ জয়েন্টে হয়ে থাকে। ব্যাথাটা খুবই তৃব্য হবে,  কখনও কখনও ব্যাথা কমে যাবে আবার কখনও একটানা ব্যাথা থাকবে।

পরিশেষে বলতে চাই, কিডনির ব্যাথা অবহেলা করবেন না, এ ধরনের ব্যাথা হলে বাড়িতে বসে থাকবে না অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কিডনি খুবই মারত্মক একটি রোগ তাই এ রোগ প্রতিরোধ করা জরুরি। এ রোগ প্রতিরোধ করতে চাইলে নিজের জীবনযাত্রা ও খাদ্যভাসে পরিবর্তন আনুন। স্বাস্থ সচেতন হতে পারলে এ জটিল রোগ হওয়া থেকে মুক্তি পাবেন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

কিডনি রোগের লক্ষন ও প্রতিকার – সুস্থ কিডনির লক্ষন সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি কিডনি রোগের লক্ষন ও প্রতিকার – সুস্থ কিডনির লক্ষন সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment