মুরগী পালন পদ্ধতি – মুরগি পালন প্রশিক্ষণ

প্রিয় পাঠক আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুরগি পালন পদ্ধতি – মুরগি পালন প্রশিক্ষন সম্পর্কে। মুরগি পালন করার ক্ষেত্রে কিছু সঠিক পদ্ধতি রয়েছে। যদি সে পদ্ধতি আপনারা কাজে লাগাতে পারেন তাহলে মুরগি পালন করে আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তাই আপনাদের সুবিধার্তে কিভাবে মুরগি পালন করা যায় তা নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা করবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক মুরগি পালন করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে।

মুরগী পালন পদ্ধতি - মুরগি পালন প্রশিক্ষণ

মুরগি পালন একটি সুবিধা ও লাভজনক ব্যবসা। মুরগি পালনের মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক গোশত, পুষ্টি এবং পাশাপাশি বাড়তি কিছু আয় করা যাবে। এটি একটি সহজ প্রকিয়ায় লাভজনক ব্যবসা। তবে সে প্রক্রিয়া আমাদের জেনে মুরগি পালন করতে হবে তাহলে মুরগি পালন করে সফলতা আসবে। চলুন শুরু করা যাক বিস্তারিত আলোচনা।

মুরগির ঘর কেমন হওয়া উচিত

মুরগি পালন করতে হলে প্রথমেই মুরগির ঘরের দিকে নজর দিতে হবে। মুরগির ঘর সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে। মুরগি পালনের জন্য ফাঁকা জায়গা এবং অতিরিক্ত রোদ, বৃষ্টি ও ঠান্ডা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। মুরগির ঘর এমন হতে হবে যেখানে শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং গরমে যাতে অতিরিক্ত তাপ না লাগে প্রয়োজনে ফ্যানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মুরগির জন্য আরামদায়ক স্থান নির্বাচন করতে হবে। ঘড়ের বেড়া অবশ্যই শক্ত করে বানাতে হবে যাতে ক্ষতিকার প্রানী ঘরে প্রবেশ করে মুরগির কোনো ক্ষতি করতে না পারে। বেড়া কাঠ, বাঁশ অথবা শক্ত জাল দিয়ে ঘেরতে পারেন অসুবিধা নেয়। ঘরের চাল খর, টিন, বা বাঁশের সাথে পলিথিন দিয়ে তৈরি করতে পারেন।

বন্যার পানি যাতে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য উঁচু স্থান নির্বাচন করতে হবে। সহজে ঘরের গ্যাস বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাজারজাতের সুবিধা থাকতে হবে। সকল জাতের মুরগি পালনে ঘরের ধরন ও ঘরের মাপ একরকম নয়। কোন মুরগি পালনে ঘরের মাপ কেমন হবে। তা পুরো আর্টিকেল পড়ে জানতে পারবেন।

দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি

দেশি মুরগি পালন করে অনেক মানুষের আত্মকর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। এ মুরগি পালনের বিশেষ সুবিধা হলো কম শ্রমে আয় বেশি। মুরগি পালনের মাধ্যমে আমাদের প্রানিজ আমিষের ঘাটতি পূরন হয়। গ্রাম বাংলার মহিলাদের বাড়িতে থেকে আয়ের একটি বিশেষ উৎস হলো মুরগি পালন করা। অনান্য মুরগির তুলনায় দেশি মুরগির ডিম ও মাংসে বেশি স্বাদ রয়েছে। দেশি মুরগি ভালোভাবে চিনে ক্রয় করবেন।

দেশি মুরগি চেনার উপায়: দেশি মুরগির রং অনান্য মুরগি তুলনায় বেশি গাঢ় লাল হয়। এদের পায়ের চামড়া খসখসে প্রকৃতির হয়ে থাকে। অন্য জাতের মুরগির থেকে এদের পা খাটো হয়ে থাকে। গ্রামে যারা মুরগি পালন করে তাদের থেকে মুরগি নিলে ভালো জাতের মুরগি পাওয়া যায়।

আমাদের দেশে সাধারনত দুই পদ্ধতিতে মুরগি পালন করতে দেখা যায়। ১.মুক্তভাবে ২.সম্পূর্ন আবদ্ধ ভাবে।

মুক্তভাবে মুরগি পালন পদ্ধতি: এটি একটি সনাতন পদ্ধতি। আমাদের গ্রামাঞ্চলে এ পদ্ধতিতে বেশি মুরগি পালন করা হয়। এ পদ্ধতি মুরগি পালন সম্পূর্ন ছেড়ে করা হয়। এ পদ্ধতিতে মুরগি পালনের জন্য একটি সঠিক ঘর নির্বাচন করতে হবে। সকাল বেলা মুরগিকে কিছু খাবার দিয়ে ছেড়ে দিলে সারাদিন তারা আশেপাশে ঘুড়ে নিজের খাবার নিজেরা তৈরি করে। এ মুরগি পালনে খরচ কম হয়।

সম্পূর্ন আবদ্ধ ভাবে মুরগি পালন পদ্ধতি: মুরগি পালনের এটি একটি আধুনিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মুরগি সবসময় ঘরের মধ্যে থাকে। এভাবে মুরগি পালনে খরচ বেশি হয়। বাইরে বের হতে না পারার  কারনে খাবার বেশি পরিমানে দিতে হয়। তবে এভাবে মুরগি পালনে মুরগির রোগ কম হয়। মুরগির দিকে নজর বেশি পড়ে ফলে মুরগি অসুস্থ হলে তাড়াতাড়ি বুঝতে পারা যায় এবং চিকিৎসা করে ভালো করা যায়।

আরো পড়ুনঃ-  গরু মোটাতাজা করনের খাদ্য তালিকা - গরু মোটাতাজা করনের পদ্ধতি

দেশি মুরগির ঘর তৈরি: ঘর তৈরির আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তা আগেই আলোচনা করেছি। আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন থাকে এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। মুরগির সংখ্যা অনুযায়ী ঘর নির্মান করতে হবে। ১০ থেক ১৫ টি মুরগি পালনের ক্ষেত্রে ৫ ফুট লম্বা, ৪ ফুট চওড়া এবং ৩.৫ ফুট উঁচু ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের বেড়া অবশ্যই শক্ত করে বানাবেন যাতে ক্ষতিকর প্রানী ঢুকতে না পারে। মুরগিকে সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। এর ফলে মুরগি তাড়াতাড়ি বাড়বে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মাংসের উৎপাদন বাড়বে।

মুরগির চিকিৎসা: মুরগি পালনে রোগ বালাই হয় এটা স্বাভাবিক বিষয়। দেশি মুরগির বিভিন্ন ভাইরাসজনিত, ব্যকটেরিয়াজনিত, ছত্রাকজনিত রোগ হয়ে থাকে এ রোগ গুলোর নিয়মিত চিকিৎসা প্রয়োজন। মুরগির রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে পরবর্তীতে আলোচনা করা আছে, জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

সোনালি মুরগি পালন পদ্ধতি

বাংলাদেশে দেশি মুরগি পালনের পাশাপাশি সোনালি মুরগি পালনের জন্য অনেকেই আগ্রহ। কারন সোনালি মুরগির জাত বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপযোগি এবং এ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এ মুরগি পালনে অল্প দিনেই ভালো উপার্জন করা যায়।

সোনালি মুরগির ঘর: কতটি মুরগি পালন করবে তা হিসাব করে মুরগির ঘর নির্মান করতে হবে। সোনালি মুরগি পালনের জন্য, এদের ঘর হতে হবে পূর্ব পশ্চিম বরাবর। প্রস্থ ২০ থেকে ২৫ ফুট এবং  দৈঘ্য ১৫০ ফুট করতে হবে। ঘরের মেঝে হবে মাটি থেকে কমপক্ষে ১ ফুট উঁচুতে। চারপাশ ভালোভাবে শক্ত নেট দিয়ে ঘেরতে হবে যাতে বাইরে থেকে কিছু প্রবেশ করতে না পারে। ৮০০ থেকে ১ কেজি ওজনের প্রতিটি মুরগির জন্য ০.৮৫ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন। মুরগির ডিম পাড়ার সময় হলে জায়গা একটু বেশি প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে জায়গার মাপটা হবে একটি মুরগির জন্য ১.৫ বর্গফুট। তবে মুরগি পালনের জন্য এক মুরগি থেকে আরেক মুরগির দুরত্ব বেশি হওয়া ভালো। পর্যাপ্ত জায়গা না হলে মুরগির বিভিন্ন রোগ হতে পারে।

মুরগির খাবার: সোনালি মুরগির খাবার দেওয়ার সময় বয়স, আবহাওয়া, পুষ্টিমানের দিকে নজর দিতে হবে। খাবার যেন মুরগি অপচয় না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বয়স অনুযায়ী মুরগির খাবার-

  • ০ থেকে ৬ সপ্তাহের মুরগিকে স্টার্টার দিতে হবে
  • ৭ থেকে ১২ সপ্তাহের মুরগিকে গ্রোয়ার দিতে হবে
  • ১৩ থেকে ১৭ সপ্তহের মুরগিকে প্রিলেয়ার দিতে হবে
  • ১৮ থেকে ৪৫ সপ্তাহের মুরগিকে লেয়ার ১ দিতে হবে
  • ৪৬ থেকে ৯৫ সপ্তাহের মুরগিকে লেয়ার ২ দিতে হবে

পানির সঠিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। পানি পরিবর্তন করে সবসময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে। রোগ শনাক্ত করে ওষুধ দিতে হবে। সোনালি মুরগিকে সাধারনত বিসিআরডিবি, আরডিবি ও গামবোরা রোগ হয়ে থাকে এর বিপরিতে মুরগিকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। সোনালি মুরগির জন্মের ৩৫ দিনে কৃমিনাশক ওষুধ দিতে হবে। পাইপার জিন সাইড্রেট নামের ওষুধ কৃমির জন্য ভালো কাজ করে। এ মুরগির ওজন প্রায়  ১.৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বছরে প্রায় ১৩০ টি মতো ডিম দেয়। মুরগির থাকার জায়গা খাবারের পাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মুরগিকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  কবুতর পালন পদ্ধতি - কেন কবুতর পালন করবেন

কালার বার্ড মুরগি পালন পদ্ধতি

কালার বার্ড উন্নত জাতের একটি মুরগির নাম। এ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এ মুরগি দেখতে দেশি মুরগির মতো। এ মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। অল্প দিনেই মুরগি বড় হয়ে যায়। ওষুধ কম লাগে। এটি পালনের সময়কাল ৪৫ থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। একেক দিন আগে অথবা পেছনে হলে সমস্যা নেয়। এ মুরগির ওজন ১০০০ থেকে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ মুরগি অনান্য মুরগির তুলনায় কম খায়। ৪৫ দিনে একটি মুরগি গড়ে ১ কেজি মতো খায়। এ মুরগির মাংস অতটা শক্ত হয় না। আবার ব্রয়লারের মতো খুব বেশি নরম হয় না।  এ মুরগির মাংসের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অল্প জায়গায় অধিক মুরগি পালন করা যায়। ১১৪০ বর্গফুট জায়গায় ১৩০০ মুরগি পালন করা যায় । সবসময় এ মুরগি পালন করা যায় তবে উপযুক্ত সময় হলো সেপ্টেপম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। খামারে বাচ্চা তোলার আগে জীবানুনাশক স্প্রে করতে হবে। স্পেরের কয়েকদিন পরে বাচ্চা খামারে তুলতে হবে। বাচ্চা তোলার পর ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত গ্লুকোজের পানি খাওয়াবেন। এতে বাচ্চা শক্তি পাবে।  এ মুরগির বাচ্চা পালনে শীতকালে তাপ দিতে হোবারের প্রয়োজন। বাচ্চাকে সঠিক তাপ দিতে হবে প্রয়োজনের থেকে বেশি বা কম হলে সমস্যা। যখন দেখবেন বাচ্চাগুলো হেবারের নিচে জড়সড় হয়ে বসে আছে তখন বুঝবেন বাচ্চাগুলো কম তাপ পাচ্ছে। তখন হোবারটি নিচে নামিয়ে দিবেন। আর বাচ্চা বেশি তাপ পেলে হোবার উপরে উঠিয়ে দিবেন। গরমে হিট দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এ মুরগির লিটার হিসাবে ধানের তুষ দিবেন। তুষের উপর পেপার বিছিয়ে দিবেন। পেপার নিয়মিত পরিষ্কার করে আবার নতুন পেপার দিবেন। সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা রাখবেন। এ মুরগি পালনের সময় মোট ৪ ভ্যাকসিন দিতে হবে। দুটো রানিক্ষেত এবং দুটো গাম্বুরা। মুরগির তোলা প্রথম ৫ দিনে গাম্বুরা, ১১ দিনে রানিক্ষেত আবার ১৬ দিনে গাম্বুরা এবং ৩০ দিনে রানিক্ষেত। মাঝে মধ্যে ঠান্ডার উপসর্গ দেখলে ঠান্ডার ওষুধ (প্যারাসিটামল জাতীয়) ও হামোর ওষুধ দিতে পারেন এবং কৃমিনাশক ওষুধ দিবেন। খামারের চারদিক পরিষ্কার রাখবেন। সময় মতো লিটার পাল্টাবেন। বর্ষাকালে বৃষ্টি থেকে বাচাতে পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে। যত্ন করেও খামারে মুরগি রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াবেন।

মুরগি পালন ও চিকিৎসা

আমাদের দেশে মুরগি পালন প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই হয়ে থাকে। কেউ বাড়িতে কমসংখ্যাক মুরগি অথবা কেউ খামারে বড় করে মুরগি পালন করছে। বিভিন্ন জাতের মুরগি এখন বাংলাদেশে পালন করা হচ্ছে। সব জাতের মুরগিকে কোনো না কোনো অসুখ লেগেই সঠিক চিকিৎসা করলে সে রোগ ভালো হয়ে যায়। প্রাকৃতিক কারনে রোগ বালাই হয়ে থাকে তবে অনেক সময় অপুষ্টিজনিত খাবার বা যতেœর অভাবেও  বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। বাচ্চা ওঠার পর থেকেই মুরগির সঠিক যত্ন নিতে হবে। সঠিক যত্ন নিলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকে। মুরগি অসুস্থ হলে, অসুস্থ মুরগির কিছু উপসর্গ আছে যেমন- মুরগি ঝিমিয়ে থাকা, সাদা চুনা পায়খানা, নিস্তেজ হয়ে পড়া, খাবারে কম মুখ দেয় বা খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া, মাথার ঝুটি কালো হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। এসব বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশি, সোনালি এবং কালার বার্ড মুরগি পালন পদ্ধতি আগেই আলোচনা করেছি। এখন এসব মুরগির রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করবো।

দেশি মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

  • দেশি মুরগির রানিক্ষেত রোগ: এটি মূলত মুরগির ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত মুরগি ঝিমাবে, দুর্বল হয়ে যাবে এবং ডায়রিয়ার মতো লক্ষন দেখা যেতে পারে। চিবিৎসকের পরামর্শ নিয়ে, এ রোগের চিকিৎসায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে এ রোগের নিরাময় পাওয়া যায়।
  • গামবোরা রোগ: এটি মুরগির লসিকা গ্রন্থি বারসাকে আক্রান্ত করে। এ রোগ ভ্যাকসিন অথবা টিকা দিয়ে ভালো হয়ে যায়।
  • মুরগির ফাউল পক্স রোগ: শরীরের যে জায়গায় পালক থাকেনা সেই জায়গায় শক্ত গোটা উঠে বা চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে এবং মুরগির তিব্র জ্বর আসে। এ রোগে ফাউল পক্সের টিকা দিতে হবে।
  • মুরগির রক্ত আমাশয়: এই রোগটি মুরগির বর্ষাকালো বেশি হয়ে থাকে। এ রোগের চিকিৎসা হলো এমপ্রোলিয়াম জাতীয় ওষুধ।
  • ফাউল কলেরা রোগ: অতিরিক্ত গরমে মুরগির এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।
  • নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।
আরো পড়ুনঃ-  ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা - ই ক্যাপ খেলে কি হয়

সোনালি মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

সোনালি মুরগি পালনে মুরগির ভাইরাসজনিত, প্রোটোজোয়া এবং ব্যক্টেরিয়া জনিত রোগ হয়ে থাকে।

  • রানিক্ষেত রোগ: এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগে মুরগি ঝিমায় এবং পাতলা পায়খানা করে। এর জন্য মুরগিকে রানিক্ষেত ভ্যাকসিন দিতে হবে।
  • গামবোরো রোগ: এটিও মুরগির ভাইরাস জনিত রোগ এ রোগের চিকিৎসায় ভ্যাকসিন বা টিকা দিতে হবে।
  • মারেক্স রোগ: বড় মুরগির ক্ষেত্রে এ রোগ দেখা দেয়। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ । মারেক্স প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে।
  • রক্ত আমাশয়: এ রোগে আক্রান্ত মুরগির পায়খানার সাথে রক্ত যায় এবং ওজন অনেক কমে যায়। যার জন্যে খামারি অনেক লসে পড়ে যায়। এমপ্রলিয়াম জাতীয় ওষুধ দিয়ে এ রোগ ভালো করা যায়।
  • কৃমি রোগ: কৃমি আক্রান্ত মুরগি খাবে কম। ফলে মুরগির ওজন কমে যায়। এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে মুরগিকে নিয়মিত কৃমির ওষুধ খাওয়াবেন।

কালার বার্ড মুরগির রোগ ও চিকিৎসা

অনান্য মুরগির তুলনায় কালার বার্ড মুরগির রোগ কম হয়। তবে একেবারেই হয় না তা না। ঠান্ডা থেকেই এদের বেশি রোগ জন্মায়। মুরগি পালনে ৪ ধরনের  ভ্যাকসিন দিতে হয়। কখন কিভাবে দিতে হবে। উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এছারাও মুরগির যে রোগ হয়-

  • মুরগির ঠান্ডার সমস্যা:  মুরগিকে ঠান্ডা লাগলে মুরগি বিশেষ শব্দ করে। হাঁচি, কাশি দেয় খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন। খাবার কম খাবে। পায়খানা স্বাভাবিক ভাবে হবে না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঠান্ডার ওষুধ নিয়ে খাওয়াবেন।
  • রক্ত আমাশয়: এ রোগের লক্ষন গুলো হলো, মুরগি রক্তের মতো পায়খানা করবে। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং ঝিমাবে। এ রোগের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো। তবে ডিকলাসল ও সিপ্রোসল খাওয়াতে পারেন।
  • এন্টারাইসিস রোগ: এ রোগে আক্রান্ত হলে মুরগি কম খাবে। মুরগি ফুলে বসে থাকে। ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াবেন। ডাক্তাররা এ রোগে  অ্যামোক্সিলিন ও ইলেকট্রোমিন পাউডার খাওয়াতে বলেন।

বয়স অনুযায়ী মুরগিকে ওষুধ দিবেন। বুঝতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

উপরে মুরগি পালনের পদ্ধতি, রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি পড়ে উপকৃত হবেন। পরিশেষে বলি মুরগির সঠিক যত্ন নিবেন, মুরগি পরিষ্কার জায়গায় রাখবেন, নিয়মিত খাবার দিবেন এবং রোগ নির্ধারন করে সঠিক চিকিৎসা দিবেন। তাহলে মুরগি পালন করে সঠিক উদোক্তা হয়ে উঠবেন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

মুরগী পালন পদ্ধতি – মুরগি পালন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি মুরগী পালন পদ্ধতি – মুরগি পালন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment