প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলের বিষয় হচ্ছে মরিচ চাষ পদ্ধতি – মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়। মরিচ চাষ করতে হলে, মরিচ চাষের কিছু সঠিক পদ্ধতি এবং এ চাষের উপযুক্ত সময় আছে। যে সময়ে মরিচ চাষ করে সফলতা অর্জন করা যায়। আজকের আর্টিকেলে এসব তথ্যই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাই আর্টিকেলটি পড়ুন এবং জেনে নিন কিভাবে মরিচ চাষ করা যায় এবং মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় কখন।
বাংলাদেশে প্রায় বারোমাস এ ফসল চাষ করা হচ্ছে। নারী ও পুরুষের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে এ মরিচ চাষের মাধ্যমে। আমরা মরিচ সাধারনত মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। মরিচ আমাদের তরকারির স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেয়। মরিচ চাষ করে আমাদের কিছু বাড়তি আয় করাও সম্ভব। তবে এর জন্য মরিচ চাষের সঠিক পদ্ধতি কি সেটা আমাদের জানতে হবে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আমরা মরিচ চাষ করে সফলতা অর্জন করতে পারবো।
মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়
মরিচ আমরদের প্রায় সবার প্রয়োজনীয় একটি ফসল। রান্নায় আমরা মসলার কাজে মরিচ ব্যবহার করে থাকি। সঠিক ভাবে মরিচের চাষ করে সফল হওয়া যায়। তাই আমাদের জানতে হবে মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় কখন। মরিচ আমরা বারো মাসই চাষ করে থাকি। তবে তার পরও মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় আছে। সেই উপযুক্ত সময় হচ্ছে জুন এবং জুলাই মাসে। কিন্তু আমরা অনেকেই আগাম মরিচ চাষের কথা চিন্তা করি। যারা আগাম মরিচ চাষ করতে চান তাদের জন্য মরিচ চাষের সময় হলো এপ্রিল অথবা মে মাসে। জুন ও জুলাই মাসে সাধারনত কৃষকের বেশি মরিচ চাষ করে থাকে। তাই যারা আগাম মরিচ চাষ করবেন তারা এপ্রিল অথবা মে মাসে মরিচ চাষ করতে পারেন। তবে আগাম মরিচ চাষের কিছু ক্ষতি আছে। আগাম মরিচ চাষে দাম বেশি পাবেন ঠিক কিন্তু এ সময় মরিচ চাষে ঝড়, শিলাবৃষ্টি বেশি হয়ে থাকে ফলে মরিচের ফলন কমে যায়। আগাম মরিচ চাষে যেমন লাভ বেশি তেমন ক্ষতিও বেশি। তাই আগাম মরিচ চাষ করতে হলে বেশি যত্ন করতে হবে। আগাম মরিচ চাষে সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে স্প্রে করলে লাভবান হওয়া যায়। তবে মরিচ চাষের জন্য সঠিক সময় বেছে নেওয়ায় ভালো।
হাইব্রিড মরিচ চাষ পদ্ধতি
উত্তম মরিচ চাষে সঠিক পদ্ধতি জানা আবশ্যক। মরিচ চাষ করতে সঠিক জমি, বীজ বপনের উপযুক্ত সময়, সঠিক বীজতলা , চার রোপনের পদ্ধতি, সঠিক পরিচর্যা এসব বিষয়ের ওপর নজর দেওয়া জরুরি। কিভাবে হাইব্রিড মরিচ চাষ করবেন সে বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।
জলবায়ু ও মাটি: মরিচ চাষ করার জন্য বেলে দোআঁশ থেকে এঁটেল দোআঁশ মাটিতে জমি চাষ করা ভালো। এ মাটিতে পানি নিষ্কাশন সুবিধাজনক। মাটির পিএইচ মাত্রা ৬.০ থেবে ৭.০ হলে মরিচের ফলন ভালো হয়। মাঝারি ও উঁচু জমিতে মরিচ চাষ করলে উৎপাদন ভালো হয়। উষ্ম ও আদ্র আবহাওয়ায় মরিচ চাষের জন্য ভালো। বর্ষাকালে মরিচ গাছের পাতা ঝড়ে যায় এবং গাছ পঁচে যায়।
তাই আপনারা যারা মরিচ চাষ করার সিধান্ত নিচ্ছেন, বর্ষার পরে এ মরিচ গাছ আগষ্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে চাষ করার উপযুক্ত সময়। মরিচ চাষ করতে ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা প্রয়োজন। এ তাপমাত্রায় মরিচের গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয়।
মাটির অম্লতা: মাটির পিএইচ মাত্রা ৫.৮ -৬.৫ এর থেকে কম হলে সেই মাটি অম্লীয় মাটি হিসাবে ধরা হবে। সেক্ষেত্রে মাটির অম্লতা দূর করতে হবে। মাটির অম্লতা দূর করার জন্য শেষ চাষের ১০ থেকে ১৫ দিন আগে প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ থেকে ৪ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ তলা তৈরি: যেখানে পানি জমে থাকেনা, আলো বাতাস পায় এবং উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরি করবেন। প্রতিটি বীজতলার আকৃতি ৩*১ মি. হতে হবে। এ ধরনের বীজতলায় ১৫ গ্রাম হারে বীজ সারিতে বপন করতে পারেন। ভালো চার পেতে মাটির সাথে কপোস্ট সার ও ছাই মিশিয়ে নিবেন। বিভন্ন জাত ভেদে বীজ বপন করতে হবে। অগ্নিবীনা (এপ্রিল-নভেম্বর), জাদু ১০৬৬ ( জুন-নভেম্বর), সনি (অতিরিক্ত শীত ছাড়া সার বছর)।
চারার পরিচর্যা: মরিচের ফলন ভালো পেতে চারার পরিচর্যা করা অতবশ্যক। বীজতলায় বীজ যাতে পোকামাকড় ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ২ গ্রাম সেভিন প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে মাটিতে দিতে হবে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও প্রচুর রোদ থেকে বীজকে রক্ষা করতে বীজতলায় পলিথিন বা চাটাই দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। বীজতলায় আগাছা দমন করতে হবে। নিয়মিত সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বীজ গজাতে শুরু করে। ৩০ থেকে ৩৫ দিন চারার বয়স হলে, চারা জমিতে লাগানো যায়। মাটি নরম হলে চারা তোলা সহজ হয়। তাই চারা তেলার আগের দিন সেচ দিলে মাটি নরম হয়।
চারা রোপনের পদ্ধতি: সারি এবং গাছ উভয়ের থেকে ৫০ সে.মি দূরত্বে লাগাতে হবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি: চার সময়ে চারা গাছে সার প্রোয়োগ করতে হবে। চারা রোপন করার ৩০ দিন পর , ৫০ দিন পর, ৮০ দিন পর এবং শেষ চাষের সময়। মরিচ গাছে যে সারগুলো প্রয়োগ করবেন গোবর বা কম্পোস্ট, ইউরিয়া, টিএসপি, এমগুপি, জিপসাম, দস্তা, বোরন, ম্যাগনেসিয়াম। জমির পরিমাপ ও গাছের সংখ্যা অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে।
আগাছা দমন, নিয়মিত সেচ প্রয়োগ, নিয়মিত সার আপনার মরিচ গাছের উৎপাদন বাড়ায়।
বিজলী প্লাস মরিচ চাষ পদ্ধতি
হাইব্রিড জাতের একটি মরিচ গাছের নাম হলো বিজলী প্লাস। এ মরিচ চাষে কম সময়ে উৎপাদন বেশি হয়। এ মরিচ গাছের ভাইরাস ও ঝিমিয়ে পড়া রোগ কম হয়। এ মরিচের ত্বক মসৃন ও উজ্জল থাকায় বাজারে এর চাহিদা বেশি। তায় এখন অনেকেই এ মরিচ চাষে আগ্রহী।
বিজলী প্লাস মরিচ চাষ পদ্ধতি
জলবায়ু ও মাটি: আলো বাতাস এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাবতে হবে। দোঁয়াশ মাটিতে মরিচ চাষের ফলন ভালো হয়। মাটির পিএইচ মাত্রা ৬.০ থেকে ৭.০ হলে ভালো। বিজলী প্লাস মরিচ গাছের জাতটি উচ্চ তাপমাত্রা এবং বৃষ্টি সহনশীল তাই গ্রীষ্মকালে চাষের উপযোগি।
বীজ তলা তৈরি ও চারা রোপন: যেখানে পানি জমে থাকে না উঁচু স্থানে বীজ তলা তৈরি করতেহবে। নিয়মিত আগাছা দমন করতে হবে। ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বীজ গজাতে শুরু করে। ৩০ দিনেই চার রোপন করা যায়। নরম মাটিতে চারা উঠানো ভালো হয়, তাই চারা উঠানোর একদিন আগে মাটিতে সেচ দিতে হবে। আগাছা পরিষ্কার করে, জমি প্রস্তুত করে চারা রোপন করতে হবে। সারি থেকে সারির দুরত্ব ৫০ সে.মি এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব ৪০ -৪৫ সে.মি। এভাবে চারা রোপন করলে ফলন ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
পরিচর্যা: জমিতে আগাছা হলে পরিষ্কার করতে হবে। জমির আদ্রতা পরিক্ষা করে সেচ দিতে হবে। ফুল আসার সময় ও ফল বড় হওয়ার সময় জমির আদ্রতা ঠিক থাকতে হবে। জমির পরিমাপ অনুযায়ী নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: বিজলী প্লাস এ জাতের মরিচ গাছে অল্প সময়েই ফুল ও ফল চলে আসে। ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যেই ফল সংগ্রহ করা যায়।
বিজলী প্লাস জাতের মরিচের বৈশিষ্ট ও ফলন ভালো হওয়ায় এ জাতের মরিচ চাষ করতে কৃষকেরা আগ্রহী।
বিন্দু মরিচ চাষ পদ্ধতি
বিন্দু মরিচ চাষের সব থেকে বড় সুবিধা হলো, এ মরিচ গাছটি সারাবছরই ভালো ফলন দেয়। তাই আপনারা চাইলে এ মরিচ চাষ করতে পারেন। এ মরিচটি খুব বেশি ঝাল হয়ে থাকে। গাছ অনান্য মরিচের গাছের তুলনায় বেশ বড় হয়। এ মরিচ আকারে বেশ ছোট হয়। এ মরিচের উচ্চতা ২.৫ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত হয় এবং ওজন ৩ থেকে ৪ গ্রাম।
বিন্দু মরিচ চাষ পদ্ধতি
উপযুক্ত জমি ও মাটি: আলো বাতাস যুক্ত এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। দোঁয়াশ মাটি চাষের জন্য বেছে নিতে হবে।
চারা তৈরি ও চারা রোপন: ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার করে , মই দিয়ে ৩*১ মিটার আকারে বীজতলা তৈরি করতে হবে। ভালো চারা পেতে মাটির সাথে কম্পোস্ট সার মিশিয়ে নিবেন। বীজ বপনের ৩০ দিন পর চারা উত্তলন করা যায়। চারা রোপনে চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৫০ সে.মি এবং সারি থেকে সারির দুরত্ব ৮০ সে.মি। চারা রোপনের পর কয়েকদিন পানি দিতে হবে।
পরিচর্যা: বিন্দু মরিচের বাম্পার ফলন পেতে হলে আপনাকে চারার সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। নিয়মি সেচ দিতে হবে। আগাছা দমন করতে হবে। সঠিক মাপে সার প্রয়োগ করতে হবে। রোগবালাই দমনে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফল সংগ্রহ: সাধারনত ফুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। বীজ উৎপাদনে একটু বেশি সময় দিতে হবে। কারন ফল পরিপক্ক ও পুষ্ট না হলে বীজ ভালো হয় না।
বোম্বাই মরিচ চাষ পদ্ধতি
বোম্বাই মরিচ অতিরিক্ত ঝাল হওয়ার কারনে এ মরিচের চাহিদা বাড়ছে। আপনারা ইচ্ছা করলেই এ মরিচ চাষ করতে পারবেন। যারা বোম্বাই মরিচ চাষ করতে চান তারা নিচের পদ্ধতি গুলো ফলো করুন।
চারা উৎপাদন: বীজ তলা তৈরি করে অথবা বাজার থেকেও এ মরিচের চারা পাওয়া যায়। মরিচের জাত অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে সতর্কতার সাখে কিনবেন।
জলবায়ু ও জমি নির্বাচন: বোম্বাই মরিচের জাতটি আপনারা শীত ও গ্রীষ্ম উভয়ই মৌসুমে চাষ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং কম বৃষ্টি মরিচের ক্ষতি করে। এর ফলে ফুল ঝরে যায় ও ফল পচে যেতে পারে। দোআঁশ মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযুক্ত। মাটির পিএইচ এর মাত্রা ৫.৫ থেকে ৭.০ এর মধ্যে থাকেতে হবে। ছায়াযুক্ত বা বৃষ্টির পানি যেখানে জমে থাকে সে মাটি নির্বাচন করা যাবে না। উঁচু জায়গা নির্বাচন করতে হবে। উুঁচু করে মাটি তুলে প্লট বানিয়ে বোম্বাই মরিচের চারা রোপন করতে হবে।
পরিচর্যা: সঠিক ভাবে পরিচর্যা করলে এ মরিচ চাষে সফল হওয়া যায়। বোম্বাই মরিচে পোকামাকড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- পাতা কোঁকরানো, থ্রিপস পোকা, জাবপোকা, ফলছিদ্র পোকা ইত্যাদি। এছারাও ঢলে পড়া, মরিচ পচা, ডগা শুকিয়ে যাওয়া এ রোগ গুলো হতে পারে। তবে চিন্তার কোনো কারন নেই। ২ থেকে ৩ বার ইউরিয়া মিশ্রিত পানি স্প্রে করলে চারা আবার সবল হয়ে যাবে।
চেষ্টা করে দেখুন সঠিক পদ্ধতি অনুসরন করলে আপনিও বোম্বাই মরিচ চাষ করে সফল হতে পারবেন।
টবে মরিচ চাষের পদ্ধতি
মরিচ আমাদের রান্নার জন্য খুবই উপকারি একটি উপাদান। তাই এই মরিচের চাহিদা মিটাতে আমরা ছাদে, বারান্দায় অথবা বাড়ির আঙিনায় টবে অল্প জায়গাতে মরিচ চাষ করতে পারি। মরিচ গাছে সামান্য যতœ আর রোদ পেলেই মরিচ গাছ চাষ করা যায়। অনেক সময় মরিচের দাম অনেক বেড়ে যায়। বাড়িতে দু একটা মরিচ গাছ থাকেলেই আমরা মরিচের চাহিদা পূরন করতে পারবো। এর জন্য আমাদের বাড়ির চারপাশে কোনো ফাকা জায়গা না থাকলে, টবে মরিচের চাষ করা যায়। তবে এর জন্য আমাদের সঠিক পদ্ধতি জানতে হবে। চলুন জেনে নিই কিভাবে আমরা টবে মরিচ চাষ করবো।
কাঁচা মরিছ চাষ করার জন্য খুব বড় টব লাগবে এটা কোনো জরুরি বিষয় নয়। মাঝারি আকারের টব হলেই হবে। জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্যে মরিচের গাছ লাগালে ভালো ফলন হয়। টবে মরিচের চাষ করতে হলে আমাদের টবে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করতে হবে। দোআঁশ মাটির সাথে অল্প পরিমানে গোবর নিয়ে মিক্স করে, টবে ব্যবহার করবেন। নার্সারি থেকে গাছ কিনে লাগাবেন, চাইলে শুকনো মরিচের বীজ ছিটেয়ে দিতে পারেন। টবটি আদ্র স্থানে রাখুন। বীজ ছিটেয়ে গাছ লাগালে সেক্ষেত্রে বীজ থেকে চারা বের হওয়ার পর শক্তিশালী চারাগুলো কয়েকটা রেখে বাকি চারা উঠিয়ে ফেলুন।
অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার জন্য টবে ছিদ্র থাকা ভালো। কারন অতিরিক্ত পানিতে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গাছের সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। রোগাক্রান্ত মরা ডাল পালা কেটে ছাটায় করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় গাছ বড় হলে, গাছ মাটির দিকে নেকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে গাছের সাখে শক্ত লাঠি পুঁতে দিবেন। যথেষ্ট আলো বাতাসের প্রয়োজন হয় মরিচ গাছের, সে ব্যবস্থাও ঠিক রাখবেন। মরিচের গাছে পিঁপড়া লাগে অনেক সময়, এ থেকে বাঁচতে কীটনাশক চকের দাগ দিয়ে দিতে পারেন অথবা পোকা মারা কীটনাশক স্প্রে করুন। অল্প দিনের মধ্যে গাছে ফুল দেখতে পাবেন এবং ফল আসা শুরু করবে। ৬০ দিনের মধ্যেই ফল সংগ্রহ করতে পারবেন।
সঠিক ভাবে গাছের যত্ন নিন। বাজারে মরিচ কিনার প্রয়োজন পড়বে না। টবে মরিচ চাষ করেই, বাড়িতেই পাবেন ভালো মানের মরিচ।
মরিচ চাষের উপকারিতা
মরিচ আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় ফসল। মরিচের চাহিদা প্রায় সারাবছর ধরে থাকে। প্রতিদিনই রান্নার কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। মরিচ আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরন করে পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। মরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি’, ভিটামিন এ’, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে, ফলিক এসিড ইত্যাদি যা আমাদের শরীরে পুষ্টির চাহিদা মিটায়।
মরিচ খাওয়ার ফলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়, সেগুলো হলো-
- কাঁচা মরিচে থাকে আয়রন। আমাদের শরীরের আয়রনে ঘাটতি পূরন হয় কাঁচা মরিচ খেলে।
- কাঁচা মরিচে রয়েছে ভিটামিন এ’। যা খাওয়ার ফলে আমাদের হাড় ও দাঁত সুস্থ থাকে।
- কাঁচা মরিচে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি আমাদের শরীরকে সর্দি, কাশি এবং জ¦র থেকে রক্ষা করে।
- কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে আমাদের হৃৎপিন্ডের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
- রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে প্রতিদিন কাঁচা মরিচ খেলে।
- ত্বক ও চুলের জন্য দারুন উপকারি কাঁচা মরিচ।
- কাঁচা মরিচ খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- কাঁচা মরিচ খাওয়ার ফলে নার্ভের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঁচা মরিচ রাখুন এবং আপনার শরীরকে সুস্থ রাখুন।
মরিচ চাষ নিয়ে উপরে অনেক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপকৃত হবেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
মরিচ চাষ পদ্ধতি – মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি মরিচ চাষ পদ্ধতি – মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।