মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে: যারা কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি জানা অত্যন্ত জরুরি যে মালয়েশিয়া যেতে আনুমানিক কত টাকা খরচ হতে পারে। এই খরচ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা থাকলে দালাল বা বিভিন্ন এজেন্সির প্রতারণা থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।

মালয়েশিয়া বর্তমানে একটি উন্নত দেশের তালিকায় নিজেদের নাম লিখিয়েছে এবং এই দেশে শ্রমিকেরা তুলনামূলকভাবে ভালো অঙ্কের টাকা উপার্জন করতে পারে। বর্তমানে সেখানে শ্রমিকের চাহিদা ব্যাপক।
ফলে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ উন্নত জীবনযাপনের আশায় মালয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন। তবে এই যাত্রার আগে মালয়েশিয়া যেতে মোট কত টাকা লাগে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা আবশ্যক। এর পাশাপাশি কোন ভিসার খরচ কেমন, কোন কাজের বেতন কত, কাজের চাহিদা ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্যগুলোও জেনে রাখা প্রয়োজন।
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া যাওয়ার মোট খরচ মূলত ভিসার ক্যাটাগরি, ভিসার মেয়াদ এবং ভিসা প্রসেসিং-এর মাধ্যমের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে গড়ে আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ডেনমার্ক যেতে কত টাকা লাগে? 2026
সরকারিভাবে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া গমনে খরচ সাধারণত কম লাগে, তবে মালয়েশিয়ান ভিসার ব্যাপক চাহিদার কারণে সরকারি প্রক্রিয়ায় খুব কম খরচে যাওয়া বেশ কঠিন।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতেও প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়। অন্যদিকে, বেসরকারি বিভিন্ন এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গেলে এই খরচের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত ২০২৬
মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে প্রবেশ করতে হলে দেশটির বৈধ ভিসা থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একসময় মালয়েশিয়ান ভিসা তৈরি করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হতো এবং ভিসা আবেদন ফিও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে সেই খরচ আবার হাতের মুঠোয় চলে আসবে।
মালয়েশিয়ার ভিসার অনুমোদন সরকারি ও বেসরকারি, দুই ভাবেই দেওয়া হয়। সরকারি প্রক্রিয়ায় ভিসা তৈরির খরচ কম হলেও, বেসরকারি প্রক্রিয়ায় সেই খরচ অনেক বেশি।
বর্তমানে বেসরকারিভাবে ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় ৬ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। অন্যদিকে, সরকারিভাবে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মধ্যেই ভিসা তৈরি করা সম্ভব।
১. মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত
মালয়েশিয়ায় পৌঁছে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য সর্বপ্রথম ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন বাবদ সর্বোচ্চ ২ লক্ষ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
তবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ভিসার মেয়াদের উপর ভিত্তি করে মালয়েশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসার এই খরচ এর থেকে কম বা বেশিও হতে পারে।
২. মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কত টাকা
মালয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য ব্যক্তিগত বা ভ্রমণ ভিসার মাধ্যমে যেতে চাইলে আপনাকে টুরিস্ট ভিসা করতে হবে এবং বিমানের টিকিট কাটতে হবে। টিকিটের দাম এয়ারলাইন্সের উপর ভিত্তি করে কম বা বেশি হতে পারে। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আপনি এয়ার এশিয়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ার অথবা রিজেন্ট এয়ারওয়েজের টিকিট কাটতে পারেন।
মালয়েশিয়ার টুরিস্ট ভিসার খরচ সিঙ্গেল এন্ট্রি নাকি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা নিচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে। সিঙ্গেল এন্ট্রি টুরিস্ট ভিসার দাম সাধারণত কম হয়। সাধারণভাবে ৫০,০০০ টাকা থেকে ১,৫০,০০০ টাকায় টুরিস্ট প্যাকেজ পাওয়া গেলেও, মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার সর্বোচ্চ দাম প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, ভিসার ধরন এবং আপনি কত সময়ের জন্য ভিসা নিচ্ছেন, তার ওপর ভিত্তি করে ভিসার চূড়ান্ত দাম পুরোপুরি নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ, ন্যূনতম ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায় টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যেতে পারে এবং সর্বোচ্চ দাম হতে পারে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
৩. মালয়েশিয়া কৃষি ভিসা খরচ কত?
মালয়েশিয়ায় কৃষি ভিসায় যাওয়া বাংলাদেশী কর্মীরা সেখানে কৃষিকাজ করতে পারেন। এই কাজগুলোর মধ্যে প্রধানত পাম বাগানে কাজ করা এবং বাগান দেখাশোনা করার মতো বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে।
যারা মালয়েশিয়ার পাম ফলের বাগানে কাজ করেন, তারা সাধারণত বাংলাদেশের টাকায় প্রতি মাসে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। তবে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার কৃষি ভিসা নিয়ে যেতে হলে আনুমানিক ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
৪. মালয়েশিয়া ফ্রি ভিসা খরচ কত?
মালয়েশিয়াতে ‘ফ্রি ভিসা’ পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। মালয়েশিয়ার ফ্রি ভিসা হলো এমন একটি ভিসা, যার মাধ্যমে কর্মীকে কোনো নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হয় না। অর্থাৎ, এই ফ্রি ভিসার সাহায্যে আপনি মালয়েশিয়াতে স্বাধীনভাবে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন।
বর্তমানে, পাসপোর্ট তৈরি করা থেকে শুরু করে মালয়েশিয়া পর্যন্ত পৌঁছানো এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় ফ্রি ভিসার জন্য মোট খরচ প্রায় চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার মতো হয়।
৫. মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম কত
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা এবং কোম্পানি ভিসাগুলো পাওয়া কিছুটা কঠিন, তবে এগুলোর মাধ্যমে তুলনামূলকভাবে বেশি বেতন পাওয়া যায়। এই ভিসাগুলো সাধারণত চুক্তির ভিত্তিতে তৈরি হয়।
কোম্পানি বা ফ্যাক্টরি থেকে চাকরির অফার লেটার পেলে আপনি খুব সহজে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা তৈরি করতে পারবেন।
একটি ফ্যাক্টরি ভিসার ন্যূনতম খরচ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ধরা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ খরচ ৪ লক্ষ থেকে ৪.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই খরচ সরকারি ও বেসরকারি ভিসার ধরনের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তন হতে পারে।
মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়া এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং এখানে বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকদের কাজের বেশ চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যারা কাজের ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে চান, তাদের মালয়েশিয়ায় কাজের বেতন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ কুয়েত কোন কাজের বেতন কত?
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় কাজের বেতন সাধারণত ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে, কাজের ধরন, কর্মীর দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিভেদে এই বেতনের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
১. মালয়েশিয়া রেস্টুরেন্ট কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়ার রেস্টুরেন্টে নতুন অবস্থায় একজন হেল্পারের সর্বনিম্ন বেসিক বা মূল বেতন সাধারণত ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৯,০০০ টাকার কাছাকাছি।
আপনি যদি ওয়েটার পদে কাজ করেন, তাহলে আপনার বেতন সাধারণত ১৬০০ রিঙ্গিত বা তার কিছু বেশি হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪১,৬০০ টাকার মতো। অন্যদিকে, যদি আপনি মহিলা ওয়েটার হন, তাহলে আপনার বেতন আরও বেশি হতে পারে, যেমন ১৮০০ রিঙ্গিত বা প্রায় ৪৬,৮০০ টাকা।
২. মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়াতে ফ্যাক্টরি কাজের দারুণ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যারা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন, তাদের বেতন সাধারণত ১৮০০ রিঙ্গিত থেকে শুরু করে ২৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ শ্রমিক ফ্যাক্টরি কাজের জন্যই মালয়েশিয়াতে যান। মালয়েশিয়াতে ফ্যাক্টরি কাজের পাশাপাশি যদি ওভারটাইম কাজ করা যায়, তবে একজন কর্মী অনায়াসে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
৩. মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়াতে কনস্ট্রাকশন কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত বেতন শুরু হয় ২,০০০ রিংগিত থেকে এবং তা ২,৫০০ রিংগিত পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও, কর্মীরা চাইলে ওভারটাইম করে আরও বেশি টাকা উপার্জনের সুযোগ পান।
ফলস্বরূপ, একজন দক্ষ কনস্ট্রাকশন কর্মী মালয়েশিয়াতে কাজ করে মাসে খুব সহজেই ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। এতেই বোঝা যায়, মালয়েশিয়াতে কনস্ট্রাকশন কাজের সুযোগ-সুবিধা ও চাহিদা কেমন।
৪. মালয়েশিয়া ইলেকট্রনিক কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়াতে ইলেকট্রনিক কাজের জন্য সাধারণত ২২০০ থেকে ২৫০০ রিংগিত বেতন দেওয়া হয়। এর মানে হলো বাংলা টাকায় এটি ৪৫,০০০ থেকে ৫৫,০০০ টাকারও বেশি। এছাড়াও, মালয়েশিয়াতে ইলেকট্রনিক কাজের ক্ষেত্রে ওভারটাইম করার সুযোগ রয়েছে, যা থেকে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব।
একজন দক্ষ ইলেকট্রনিক কর্মী প্রতি মাসে এই কাজ করে খুব সহজেই ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন। এতেই বোঝা যায়, এই ক্ষেত্রে আয়ের সুযোগ কতটা ভালো।
৫. মালয়েশিয়া কৃষি কাজের বেতন কত?
মালয়েশিয়াতে কৃষি কাজের জন্য সর্বনিম্ন বেতন হলো ১৪০০ রিংগিত। তবে, যারা অভিজ্ঞ ব্যক্তি, তাদের ক্ষেত্রে বেতন ২০০০ রিংগিত থেকে শুরু করে ৩০০০ রিংগিত পর্যন্ত হতে পারে।
এই কারণে, আপনি যদি কৃষি কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে মালয়েশিয়াতে কাজ করার মাধ্যমে প্রতি মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খুব সহজেই উপার্জন করতে পারবেন।
মালয়েশিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত
মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক কাজের জন্য একটি সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নির্ধারিত রয়েছে, যা বর্তমানে প্রায় ১,৭০০ রিংগিত। তবে লক্ষ্য করা যায় যে প্রবাসীরা সাধারণত এই বেতনের চেয়ে কম পেয়ে থাকেন।
মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘন্টা এবং সপ্তাহে মোট ৪৫ ঘন্টা ডিউটি করতে হয়। কর্মীরা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টা পর্যন্ত ওভারটাইম কাজ করার সুযোগ পান। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ বাঙালি প্রবাসী শ্রমিক ঘন্টা চুক্তিতে কাজ করে থাকেন।
মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন বেশি?
মালয়েশিয়াতে কোন কাজের বেতন সবচেয়ে বেশি, তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। সেখানে সি-লেভেলের নির্বাহী কর্মকর্তারা সবচেয়ে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন।
আরো পড়ুনঃ ইতালি কোন কাজের বেতন বেশি?
এই সকল কর্মকর্তাদের মাসিক বেতন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭২ লক্ষ ৬০ হাজার ৯৪০ টাকা। তবে, বাংলাদেশিরা চাইলেও মালয়েশিয়াতে গিয়ে খুব সহজে এই ধরনের কাজ করতে পারেন না। বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে ইলেকট্রিশিয়ান, হোটেল বয় এবং ড্রাইভিং-এর কাজ করে তুলনামূলক ভালো বেতন পাওয়া যায়।
তবে যদি কোনো বাংলাদেশি হোটেলের ওয়াটার বয়ের কাজ পান, তাহলে তার মাসিক আয় ৪ লক্ষ টাকার উপরে হতে পারে, কারণ তাদের আয়ের বিভিন্ন উৎস থাকে।
মালয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি?
মালয়েশিয়া উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার কারণে বিভিন্ন সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে। বর্তমান মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, কারখানা শ্রমিক, পাম বাগান, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বিং, পেইন্টার, সুপার মার্কেট ইত্যাদি কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে।
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়
মালয়েশিয়া সরকারের মাধ্যমে যেতে হলে, প্রথমে “আমি প্রবাসী” অ্যাপ ডাউনলোড করে সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। চাকরি নিশ্চিত হওয়ার পর, বিএমইআইটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা আবশ্যক, কারণ এটি ছাড়া মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করা সম্ভব নয়।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হয়। স্টুডেন্ট বা টুরিস্ট ভিসার জন্য নির্দিষ্ট ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হলেও, কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে গেলে কম ডকুমেন্টেশন লাগে। বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে বোয়েসেলের মাধ্যমে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়।
মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে
মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট পেতে হলে আবেদনকারীর বয়স ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকা আবশ্যক। ২১ বছরের নিচে কারও কাজের অনুমতি সাধারণত মেলে না। ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কমে যায়, ফলে তাদের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
বয়সের এই বাধ্যতামূলক শর্তটি ছাড়াও ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আরও কিছু বিষয় জরুরি:
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা (Medical Check-up)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (PCC)
- স্পন্সর কোম্পানির অনুমোদন (Sponsor Company Approval)
মনে রাখা ভালো, কিছু এজেন্সি নিয়ম এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও, এতে ভবিষ্যতে আপনার ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার আকাশপথের দূরত্ব প্রায় ৩,৭৪৮ কিলোমিটার। ননস্টপ ফ্লাইটে গেলে আনুমানিক ৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে পৌঁছানো যায়। তবে, যদি ওয়ান-স্টপ ফ্লাইট হয়, তাহলে গন্তব্যে পৌঁছাতে সাধারণত ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
লেখকের শেষ মতামত
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সরাসরি অভিজ্ঞতা না থাকায়, তারা প্রায় সবাই দালাল বা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে তাদের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকেন। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধু দালাল বা মধ্যস্থতাকারী বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে।
এ কারণে মালয়েশিয়া গমনের ক্ষেত্রে এজেন্সি বা দালালদের বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আশা করি, এই আলোচনা থেকে আপনারা মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত ও কাজের চাহিদা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।
আজকের এই তথ্যগুলো যদি আপনার কোনো উপকারে আসে, তবেই আমার লেখা সার্থক হবে। তাই পোস্টটি ভালো লাগলে এটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।