বর্তমান সময়ে এসে আপনি যদি কনটেন্ট রাইটিং করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে কনটেন্ট রাইটিং শিখতে হবে। যেমন ধরুন আপনার গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল ওয়েবসাইটে কোন কনটেন্ট তৈরি করে আপলোড করে সেখান থেকে যত বেশি ভিজিটর সেই কনটেন্ট দেখবে সেই কনটেন্ট থেকে আপনার তত ইনকাম হবে গুগলের অ্যাড দেখার মাধ্যমে।
সাধারণত এই মাধ্যমকে প্যাসিভ ইনকাম বলা হয়। আর অন্যদিকে আপনি যদি কনটেন্ট রাইটিং করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে কনটেন্ট রাইটিং শেখার উপায় সম্পর্কে বাধ্যতামূলক বিস্তারিত জানতে হবে। এখন অনেক প্রতিষ্ঠান কনটেন্ট রাইটিং শিখিয়ে থাকে।
উপস্থাপনা
কন্টেন্ট রাইটিং ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি বিভিন্ন ব্লগপোষ্ট করার প্রক্রিয়া। আর এই ব্লগপোষ্ট যেকোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক মূল্যবান হাতিয়ার। কন্টেন্ট রাইটিং করে নিজেদের দক্ষতা বা স্কিল প্রদর্শন করা, পাঠকদের সাথে একটি সসম্পন্ন সম্পর্ক তৈরি কর হয়। এর পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটে বেশি পরিমানে ভিজিটর নিয়ে আসা যায়। অতএব বলতে গেলে এই কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা অনেক বেশি এজন্য এই সেক্টরে কাজের চাহিদাও দিন দিন বেড়েই চলছে, তাই কনটেন্ট রাইটিং কি ও কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান সময়ে এসে অনেকেই কনটেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করছে। তো আপনিও কি কনটেন্ট রাইটিং শেখার উপায় জানতে আগ্রহী? তাহলে এই পোষ্টটি অনুরোধক্রমে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ আজকে আমরা ফ্রিল্যান্সিং কনটেন্ট রাইটিং কি, কনটেন্ট রাইটিং শেখার উপায়, কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় ইত্যাদি সহ আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।
কনটেন্ট রাইটিং কি
কন্টেন্ট রাইটিং হল মূলত ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং ডিজিটাল মিডিয়ার অন্যান্য রূপের জন্য লিখিত একটি সামগ্রী তৈরি করার প্রক্রিয়া। ডিজিটাল কন্টেন্টের মধ্যে রয়েছে ব্লগ পোস্ট, ওয়েবসাইট কপি, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, বিভিন্ন পণ্যের বিবরণ এবং এছাড়াও আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কন্টেন্ট রাইটারদের অবশ্যই বিভিন্ন শ্রোতাদের জন্য লিখতে হয়, এজন্য তাদের সঠিক ব্যাকরণ ব্যবহার করতে হয় এবং পাঠকদের সঠিক চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে আকর্ষক কন্টেন্ট তৈরি করতে হয়। সার্চ ইঞ্জিনে কন্টেন্ট অপ্টিমাইজ করার প্রয়োজন রয়েছে আর তা সঠিকভাবে নিশ্চিত করার জন্য এসইও (SEO) অনুশীলন করতে হয়। লেখকরা তাদের ব্লগপোষ্ট বা কনটেন্ট অপটিমাইজেশন করার জন্য মৌলিক HTML এর পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনের সাথেও পরিচিত হতে হবে। হওয়া উচিত।
কন্টেন্ট রাইটার কাকে বলে
সাধারনত যিনি ওয়েবসাইটে ব্লগপোষ্ট এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নানান ক্যাটাগরিতে মানসম্পন্য কন্টেন্ট লেখেন তাদেরকেই কন্টেন্ট রাইটা বলা হয়। এছাড়া তারা বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করে একটি শিরোনাম তৈরি এবং সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র্যাঙ্ক পাবার জন্য কন্টেন্ট অপ্টিমাইজ করে।
আর একজন কন্টেন্ট রাইটারকে লেখার কৌশল, এসইও, ব্যাকরণগত ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের দৃঢ় ধারণা থাকতে হবে। তারা অবশ্যই তাদের লক্ষ্য দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় ও তথ্যপূর্ণ মূলক কনটেন্ট লিখে থাকে। কন্টেন্ট রাইটারদেরও আঁটসাঁট সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা উচিত ও ডিজিটাল মিডিয়ার সহায়তায় এবং ইন্টারনেট জগতে প্রবণতাগুলির সাথে আপ-টু-ডেট থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কন্টেন্ট রাইটিং কত প্রকার
সাধারণভাবে বলতে গেলে, কন্টেন্ট রাইটিং মূলত দুটি বিভাগে পড়ে এসইও কন্টেন্ট এবং কপিরাইটিং। এসইও কন্টেন্ট লেখা হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের জন্য সেই কন্টেন্ট অপ্টিমাইজ করে এর পাশাপাশি সেই কনটেন্টে আরও বেশি ভিজিটর নিয়ে আসতে কীওয়ার্ড এর উপর নির্ভর করে।
অন্যদিকে, কপিরাইটিং হচ্ছে মূলত পাঠকদের টার্গেট করে করতে হয় এবং তাদের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করার জন্য কৌশল ব্যবহার হয়। এছাড়াও গল্প এর মধ্যে প্ররোচক লেখার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়। আপনি যে ধরনের কনটেন্ট তৈরি করছেন সেটার উপর নির্ভর করে।
এছাড়াও কন্টেন্ট রাইটিং বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করা যায় যেমন
- ইবুক রাইটিং
- টেকনিকাল রাইটিং
- ব্লগের জন্য আর্টিকেল রাইটিং
- প্রফেশনাল ইমেইল রাইটিং
- কপিরাইটিং বা সেলস রাইটিং
- এড এন্ড প্রোমোশোনাল রাইটিং
- সোশাল মিডিয়ার জন্য রাইটিং
- ভিডিও, নাটকের জন্য স্ক্রিপ্ট রাইটিং
- গোস্ট রাইটিং, ইত্যাদি।
কন্টেন্ট রাইটিং কেন প্রয়োজন
কন্টেন্ট রাইটিং কেবল বিষয়বস্তু লেখক হতে সাহায্য করে না বরং আরও বিভিন্ন সুযোগ এবং সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে সাহায্য করে। রাইটিং কারও নেশা এব কারও পেশা হয়ে থাকে। এই নেশাকে কাজে লাগিয়ে জীবনের সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
কন্টেন্ট রাইটিং নিজেকে যেমন সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে ঠিক তেমনি সেই কন্টেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরা তথ্যগুলো অন্যদের কাছে সহজ করে তোলে।আমাদের মধ্যে যারা আছে লেখা লেখি করতে অনেক পছন্দ তারা বিভিন্ন উপয়ে কন্টেন্ট রাইটিং করে ঘরে বসে আয় করতে পারে।
লেখকের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যতে এই চাহিদা আরও বাড়তে থাকবে সে জন্য নিজে রাইটিং করে এবং অন্যদের রাইটিং এ অনুপ্রেরনা দিতে হবে। কন্টেন্ট রাইটিং করলে আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।লেখালেখি করলে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আপনি দক্ষতাও অর্জন করা যায়। একজন রাইটার যখন পোষ্ট লিখে তখন সে বিষয়কে খুবই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
কন্টেন্ট রাইটিং করলে যেমন অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি হয় তেমনি লেখালেখির জন্য আপনি ভালো পরিমান আয় করতে পারছেন। আপনার যদি কনটেন্ট এর উপরে অনেক ভালো অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে ভালো জব পাওয়া সম্ভব। কন্টেন্ট রাইটিং শিখে জেনে যেকোনো উপায়ে অনুসরণ করে আপনি ভালো একজন কন্টেন্ট রাইটার হতে পারেন।
কনটেন্ট রাইটিং শেখার উপায়
কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় গুলো জানুন। কন্টেন্ট রাইটিং করার জন্য নিজেকে সৃজনশীল হতে হবে, আর্টিকেল লেখা এবং শেখা অতটা সহজ নয়। তাই শেখার আগে মূল বিষয়গুলি বোঝা জরুরি। কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় গুলো নিচে দেওয়া হল-
প্রচুর পরিমানে পড়তে ও লিখতে হবে
একজন সফল লেখক হতে হলে, প্রচুর পরিমানে পড়া এবং লেখার দক্ষতা থাকতে হবে। বর্তমান বিষয় গুলির সাথে আপডেট থাকার জন্য দর্শকদের বোঝার জন্য প্রচুর পড়া অপরিহার্য।
বিভিন্ন ক্যটাগরিতে লিখতে হবে
বিভিন্ন ক্যটাগরিতে লেখার অনুশীলন করতে হবে এর মাধ্যমে আপনি মেকানিক্স শিখতে এবং কন্টেন্ট তৈরি করার প্রক্রিয়ার সাথে পরিচিত হতে পারেন।
ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে
আপনি যে ভাষায় লিখবেন সে বিষয়ে আপনাকে ভালো মতো জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আর একজন সফল লেখক হতে হলে এটি অপরিহার্য। সহজে পড়ার মতো ব্লগপোষ্ট তৈরি করতে হলে আপনাকে ভাষার বানান, ব্যাকরণ এবং বাক্য গঠনের সাথে বেশ ভালোভাবে পরিচিত হতে হবে।
এসইও (SEO) রাইটিং শিখতে হবে
এসইও এর ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু প্রাথমিকভাবে অন পেজ এসইও (On Page SEO) কৌশল শিখতে হবে যেমন কীওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research) করা, কিওয়ার্ড এর ব্যবহার ইত্যাদি।
সৃজনশীল হতে হবে
আপনার কনটেন্টকে সৃজনশীলমূলক হতে হলে, মূল ধারণা নিয়ে আসার জন্য নিজেকে সঠিকভাবে চ্যালেঞ্জ করুন এবং এর পাশাপাশি গল্প বলার উপর ফোকাস করুন।
যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা
একজন রাইটারকে তাদের পাঠকের কাছে কার্যকরভাবে বার্তা পৌঁছা্তে যোগাযোগ দক্ষতা থাকাটা জরুরি। এর পাশাপাশি আকর্ষক পদ্ধতিতে কনটেন্ট লেখার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং ক্লায়েন্টের প্রয়োজনের সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম হতে হবে।
সবসময় লেগে থাকতে হবে
আকর্ষক ব্লগ পোস্ট তৈরি করা থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট কন্টেন্ট লেখা এবং অনলাইন মার্কেটিং করা একটি অপরিহার্য উপাদান। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একজন সফল কন্টেন্ট রাইটার হতে হলে সমসময় এ সেক্টরে লেগে থাকতে হবে এবং আপ-টু-ডেট থাকতে হবে।
কন্টেন্ট রাইটিং করে আয়
কন্টেন্ট রাইটিং করে বেশ ভালো ইনকাম করতে হলে প্রথমে আপনাকে আপনার মন স্থির করতে হবে আপনি আসলে কি টাইপের বা কোন বিষয়ে কন্টেন্ট দিয়ে কাজ শুরু করতে চাচ্ছেন। যদি আপনার ব্লগিং ভালো লাগে তাহলে ব্লগিং কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। এভাবে করে ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি বিষয় কন্টেন্ট তৈরি করে আয় করেত পারেন।
বর্তমানে কন্টেন্ট ইনকামের একটি বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সাইট থেকে মানুষ বিভিন্ন কন্টেন্ট বানিয়ে ইনকাম করতে পারছে। বর্তমান সময়ে অনেকগুলো মাধ্যমে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করতে পারবেন। কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করার মাধ্যমগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- টেক্সট বা লিখিত কন্টেন্ট
- ছবি না ইমেজ কন্টেন্ট
- ভিডিও ও এনিমেশন কন্টেন্ট
- অডিও কন্টেন্ট
- পত্রিকা ম্যাগাজিন লিখা
- ব্লগিং কন্টেন্ট
- ই-বুক রাইটিং
- কোনো বইয়ের রিভিউ লিখা
- কেস স্টাডি কন্টেন্ট
- পণ্যের বিবরণ নিয়ে কন্টেন্ট
- ভিডিও এর স্ক্রিপ্ট নিয়ে কন্টেন্ট
- টেমপ্লেট এন্ড চ্যাকলিস্ট
- হোয়াইট প্যাপারস ইত্যাদি।
কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে মূলত একটি লাভজনক পেশা হতে পারে। একজন কন্টেন্ট রাইটারের প্রতি মাসের ইনকাম আসলে কত হবে তা ডিপেন্ড করবে তাদের লেখার ধরন, তারা কি পরিমাণ কজ করেছে, কতটুকু মেহনত করে কাজ করেন এবং তাদের স্কিলের স্তরের উপর নির্ভর করে। মূলত, প্রাথমিক পর্যায়ে কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে প্রতি মাসে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার পর্যন্ত উপার্জনের আশা করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে লেখকের মতামত
পরিশেষে বলব আপনি যদি কোনো কাজে সফলতার মুখ দেখতে চন তাহলে আপনাকে নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে। এই সেক্টরে আপনাকে সফলটা পাওয়ার জন্য আপনাকে ধৈর্য, অধ্যাবসায় ও পরিশ্রম অবশ্যই করতে হবে। একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে আপনাকে উন্ন মানের কন্টেন্ট লিখতে হবে। আর কন্টেন্ট রাইটিং করে ঘরে বসে থেকে ইনকাম করা সম্ভব।
আমরা ইতিমধ্যে কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে বিভিন্ন যাবতীয় তথ্যাদি এই আর্টিকলে আলোচনা করেছি। আশা করছি এই বিষয়ে আপনার মনের সকল ধরণের প্রশ্নের উত্তর জানতে পেরেছেন। তবে এরপরেও যদি কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে আপনার কোন ধরণের প্রশ্ন কিংবা মতামত থেকে থাকে তাহলে এই পোষ্টের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আজকের পোষ্ট নিয়ে এই ছিল আমাদের কন্টেন্ট রাইটিং এর খুঁটিনাটি বিষয়াদি। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু পড়েন তাহলে থাকলে আপনি হয়তো কন্টেন্ট রাইটিং কি, কন্টেন্ট রাইটিং কত প্রকার, কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায়, কন্টেন্ট রাইটিং করে আয়, কন্টেন্ট রাইটিং কেন প্রয়োজন ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত জেনে গেছেন।