ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

আপনি কি ২০২৪ সালে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা জানতে চাচ্ছেন? ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা দিনের পর দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং এত বেশি চাহিদা যে কোন কাজ করে টাকা ইনকাম করবে এটা ঠিক করা কঠিন। আর আমরা যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সবগুলো কাজ নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে যাই তাহলে আজকে আর্টিকেল শেষ করা যাবে না। এজন্য মূলত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যেসব কাজের চাহিদা সবথেকে বেশি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরবো।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ২০২৪ এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই গুগলের কাছে জানতে চান, মূলত সেজন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে যাতে আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে সঠিক তথ্য পেতে সক্ষম হন। কেননা আমরা এ আর্টিকেলে ২০২৪ সালে এসে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তা আলোচনা করেছি। আশাকরি এই বিষয়ে জেনে আপনাদের উপকারে আসবে।

উপস্থাপনা

ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কোন কাজ করতে চান। কেননা আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর অনেক বড়। এজন্য এই ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফল হতে হলে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং টার্গেট অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তা নাহলে আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না।

২০২৪ সালে বাংলাদেশের ট্রেন্ডিং ও চাহিদাসম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজ হলো ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং ওয়েব ডিজাইন। এছারাও আরো যে সকল কাজের চাহিদা রয়েছে তা আপনারা নিচের অংশ থেকে জানতে পারবেন। তবে তার আগে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কি কি কাজ রয়েছে সেটা আগে জেনে নিব। এরপর চাহিদাসম্পন্ন কাজগুলি জানবো।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মূলত মুক্ত পেশা যা একটি অনলাইন কাজের পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি নির্দিষ্ট কোন আইটি সেন্টার কিংবা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করে নিজের সময় ও সুবিধা মোতাবেক মুক্তভাবে কাজ করতে পারেন।

এটা মূলত নিজের স্বাধীন ভাবে কাজ করার একটি উপায়, যার মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আপনারা অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ জানতে চেয়েছেন। তাই আজ আমি এমনি কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে তুলে ধরেছি যেগুলো সচরাচর ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সাররাই করে থাকেন। যেমন-

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design)
  • কনটেন্ট রাইটিং (Content writing)
  • এডমিন ও কাস্টমার সাপোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
  • ভিডিও এডিটিং (Video editing)
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট (SMM)
  • ইউএক্স বা ইউ আই ডিজাইনার
  • ওয়েবসাইট ডিজাইন (Website design)
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web development)
আরো পড়ুনঃ-  গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

২০২৪ সালে এসে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)

ডিজিটাল মার্কেটিং মানে হচ্ছে অর্থ অনলাইনে কোন সার্ভিস এর বিজ্ঞাপন প্রচার করা। প্রচার প্রচারনা  বিভিন্ন উপায়ে হতে পারে যেমনঃ সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন, ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে। মানুষ এই ডিজিটাল মার্কেটিং করে বহু টাকা ইনকাম করছে। প্রত্যেকটি ব্যবসায়ী চাই তার পন্য বা সেবা প্রতিটি মানুষ জানুক। এজন্য তারা ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করিয়ে নেয়।

কনটেন্ট রাইটিং (Content writing)

ডিজিটাল মার্কেটিং এর পাশাপাশি কনটেন্ট রাইটিং এর কাজেরও অনেক চাহিদা রয়েছে। আর কনটেন্ট রাইটিং মানে কোন বিষয়বস্তুর উপর নিজের জ্ঞান থেকে লিখে প্রকাশ করা। শুধু ওয়েবসাইট এর জন্য নয় বরং বিভিন্ন মিডিয়া বা টিভি বিজ্ঞাপনের জন্য যে স্ক্রিপ্ট লিখে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়।

গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphic Design)

ফ্রিল্যান্সিং জগতে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর জনপ্রিয় এতটাই বেশি যে অন্যান্য সকল ধরণের ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা কমে গেলেও এই কাজের চাহিদা কখনই কমবে না। আমরা অনলাইনে যেটাই দেখি না কেন প্রতিটা স্টেপে স্টেপে রয়েছে এই গ্রাফিক্সের অবদান। যেমনঃ কভার পেইজ, নিউজপেপার, বুক কভার পেইজ, বিজ্ঞাপন এবং আলোক চিত্রসহ আরো অনেক কিছু।

ওয়েব ডেভলপার  (Web Developer)

গ্রাফিক ডিজাইনিং ২০২৪ সালে ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা বেশি তালিকার মধ্যে একটি। গ্রাফিক ডিজাইনাররা ভিজ্যুয়াল এর সহায়তায় তাদের ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিটা কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য ডিজাইনে বিনিয়োগ করে।

কিছু গ্রাফিক ডিজাইনারও ইলাস্ট্রেটর যারা অবিশ্বাস্য লেআউট এবং ভিজ্যুয়াল উপাদান তৈরি করার জন্য এক বিশেষ সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। মার্কেটপ্লেস থেকে গ্রাফিক ডিজাইনাররা, গড়ে প্রতি ঘন্টায় $30 ডলার ইনকাম করে থাকেন।

ওয়েবসাইট ডিজাইন (Web Design)

আজকের আধুনিক অর্থনীতিতে ওয়েব ডিজাইন এর চাহিদা তুলনামূলক অনেক বেশি। ওয়েব ডিজাইনাররা মোবাইল এবং ডেস্কটপ উভয় ডিভাইসে ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন সরল থেকে শুরু করে জটিল লেআউট তৈরি করে থাকে। যার বিনিময়ে বেশ ভালো ইনকাম করা যায়।

আরো পড়ুনঃ-  স্টুডেন্ট লাইফে অনলাইন ইনকাম করার উপায়

ভিডিও এডিটিং (Video Editing)

লক্ষ লক্ষ নির্মাতা, ব্লগার, YouTubers এবং স্বাধীন পেশাদার যারা মূলত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে তারা তাদের ভিডিও ফুটেজ এডিটিং করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সারদের নিয়োগ করেন। বর্তমানে এই কাজের চাহিদা খুবই বেশি। কেননা এখন ভিডিও কনটেন্ট তৈরির সংখ্য দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। ভিডিও এডিটিং খুব সহজেই ইউটিউব থেকে ফ্রি তে শিখে নিতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)

বর্তমান সময়ে খুব ভাল মানের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারদের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন কেননা উন্নতির জন্য অনন্য দক্ষতার প্রয়োজনীয় হয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটাররা (SMM) বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং লিঙ্কডইন এর মত প্ল্যাটফর্মে কাজ করে থাকে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ

আর্টিকেল রাইটার: বর্তমান সময়ে সহজ এবং জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং কাজ হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং করা। আপনি যদি বাংলা কিংবা ইংরেজিতে অনেক আর্টিকেল রাইটিং কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে বিভিন্ন লোকাল বা ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আর্টিকেল রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন।

ই বুক রাইটার: আপনি যদি ই বুক রাইটার হিসেবে একটি সফল ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ইউনিক কনটেন্ট লেখা শিখতে হবে। এর কারণ হচ্ছে ভালো মানের কনটেন্ট রাইতার এর চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। আর আপনি যদি ইউনিক রাইটার না হতে পারেন তাহলে ই-বুক রাইটার হতে পারবেন না। তাই  ই বুক রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের গড়ে তুলতে হলে ভালোভাবে  কনটেন্ট লেখা শিখতে হবে।

ফিকশন রাইটার: আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা অনলাইনে সাইন্স ফিকশন রিলেটেড গল্প লিখিয়ে নেন। তাই ফিকশন রাইটার হিসেবে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং ক্যরিয়ার গড়ে তুলতে চান তাহলে আপনাকে একজন ইউনিক ফিকশন স্টরি লিখতে জানতে হবে।

কপি রাইটার: কপি রাইটার এর কাজ হলো একটা স্ক্রিপ্ট থেকে লেখা গুলো একটি ডকুমেন্টে আবারও লিখা। কপিরাইটিং খুব একেবারেই সহজ তবুও এই কাজ অনেক জনপ্রিয়। তাই আপনি অতি সহজেই কপি রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ মূলত ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে একটি ডিভাইস দিয়ে হোক কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ এক দেশ থেকে অন্য দেশ এর কাজ সম্পন্ন করে দিয়ে টাকা ইনকাম করা হয়। বিষয়টি যদি আরো সহজাভবে বলি তাহলে মনে করুন আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার।

আরো পড়ুনঃ-  ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায়

আর আপনি বাংলাদেশে বসবাস করেন। এখন আপনি এই দেশে বসে থেকে বাইরের দেশের যেকোন অনলাইন ভিত্তিক কাজ করে দেওয়ার পরে আপনাকে পারিশ্রমিক হিসেবে অর্থ প্রদান করবে। মূলত এভাবেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হয়। আপনি যখন একেবারে নতুন তখন আপনাকে নির্দিষ্ট একটি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এরপরে মানে দক্ষতা অর্জন করার পর আপনি নিজের কাজ খুঁজে নিতে পারবেন এবং সহজেই ক্লাইন্ট খুজে নিতে পারবেন।

এর পাশাপাশি প্রফেশনাল ভাবে কাজ করার জন্য আপনাকে প্রফেশনালি মার্কেটপ্লেস গুলিতে একাউন্ট চালু করতে হবে। এখন অনেকগুলো প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে আপনি ক্লায়েন্ট খুজে পেয়ে যাবেন। এবং এর পাশাপাশি আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি

ফ্রিল্যান্সিং এর যে কোন স্কিল আপনি যদি ভালোভাবে শিখতে পারেন তাহলে তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার খুবই সুন্দর এবং সফল হবে। আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হওয়ার পাশাপাশি জীবনে সফলতা দেখতে পাবেন। আর যদি স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলি তাহলে বলব ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য নাই কোন নির্দিষ্ট অফিস, নির্দিষ্ট প্রেসার, নাই কোন ঝামেলা। একেবারে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারবেন।

কাজে দক্ষ হলে সেই কাজ ভালোমতো করতে পারলে টাকা এমনি এমনি চলে আসবে। আপনি ভালো কাজ পারলে মানুষ আপনাকেই খুঁজে নিবে। তখন টাকা আপনাকে খুঁজতে হবে না বরং টাকা আপনাকে খুঁজে বের করবে ইনশাল্লাহ। তাই সবসময় আপনাকে যেকোন একটি স্কিল ডেভেলপ করে কাজ করতে হবে। আর কাজের উপর ফোকাস করতে হবে এবং চেষ্টা করবেন সবসময় সেই কাজটি সঠিকভাবে শিখে এরপর আপনার ক্লাইন্ট এর কাছ থেকে কাজ নিয়ে সঠিকভাবে কাজ উপহার দেওয়ার জন্য।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি সম্পর্কে লেখকের মতামত

অনলাইন ইনকাম বা ফ্রিল্যান্সিং বেকারদের আশা আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং স্ক্লি শিখে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করছে। আর আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান চাকরি অবস্থা নাই বললাম। চাকরির বাজার নিয়ে আশা করছি আপনি জানেন।

তাই আমি বলব আপনি আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন কিনা তার সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার। আর যদি আপনার ইচ্ছামতো কাজ করে মাসে হ্যন্ডসাম অ্যামাউন্ট ইনকাম করতে চান তাহলে আজকে থেকেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখুন। আমরা ইতিমধ্যে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তা আলোচনা করেছি।

আর মনে রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে অবশ্যই আপনার প্রয়োজন একটি ভালো ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। তাহলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিমাসে ভালো ইনকাম করতে পারবেন। প্রথম দিকে হয়তো অনেক কম ইনকাম হবে কিন্তু আসতে আসতে এই ইনকাম লক্ষ লক্ষ টাকায় গিয়ে পৌঁছাবে ইনশাল্লাহ।

Leave a Comment