বয়স্ক ভাতা আবেদন – বয়স্ক ভাতা মাসে কত টাকা

বাংলাদেশের বয়স্ক মানুষদের সামাজিক আর্থিক নিরাপত্তার আওতায় বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়।  বয়স্ক ভাতা শুধুমাত্র অনলাইনেই আবেদন করা যাবে।  শিশুর শারীরিক বিকাশ যেন ব্যাহত না হয় এজন্য সরকার গর্ভবতী নারীদের জন্য গর্ভবতী ভাতা প্রচলন করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে অনেকেরই ধারণা নেই। তো আপনি কি বয়স্ক ভাতা আবেদন করার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই বিষয়ে জানতে আপনি এখন আপনি একেবারে সঠিক জায়গাতেই এসেছেন।

বয়স্ক ভাতা মাসে কত টাকা

কেননা আপনি যদি আজকের এই ব্লগপোষ্টটি শুরু থেকে একেবারে শেষ অবদি পড়েন তাহলে বয়স্ক ভাতা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পাশাপাশি বয়স্ক ভাতা মাসে কত টাকা, বয়স্ক ভাতা কত বছর বয়সে দেওয়া হয়, বয়স্ক ভাতা কত মাস পর পর দেওয়া হয়, বয়স্ক ভাতা টাকা চেক, বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্যাদি জানতে পারবেন।

উপস্থাপনা – বয়স্ক ভাতা

বয়স্ক ভাতা আবেদন করার নিয়ম জেনে নেওয়ার আগে আমাদের বয়স্ক ভাতা কি? সেই  সম্পর্কে ধারনা রাখা দরকার। তা না হলে আমরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারবো না কিভাবে আবেদন করবো। আর কেনোই বা আবেদন করবো। তাহলে চলুন এখন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

বয়স্ক ভাতা হলো দেশের সরকার কতৃক প্রদত্ত একটি আর্থিক অনুদান কর্মসূচি। এই কর্মসূচির অধিনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সকল বয়স্ক, কর্মহীন এবং স্বল্প আয়ের দুস্থ লোকেদের একটি আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে এই আর্থিক অনুদান/সহযোগিতা পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে।

তারপর আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জমা দিবেন। এরপর যদি তারা আপনার সকল কাগজপত্রের তথ্য যাচাই বাছাই করে তারা ভালোমতো আবারো চেক করার পরে আপনি বয়ষ্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচনা করলে তবেই আপনি সেই ভাতা পাবেন।

বয়স্ক ভাতা আবেদন করার নিয়ম

এখন খুব সহজেই বাড়িতে বসে থেকেই বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করা যায়। তবে তার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। তাহলে চলুন এখন আমরা সকলেই অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে এই বয়স্ক ভাতার আবেদন করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ-  প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

ধাপ ১: প্রথমে আপনাকে গুগল ওয়েব ব্রাউজারে গিয়ে mis.bhata.gov.bd লিখে সন্ধান করে সেই ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। তারপর সেই পেজে একটু খেয়াল করে দেখবে “নির্বাচন করুন” নামক একটি অপশন রয়েছে সেখানে ক্লিক করে বয়স্ক ভাতা অপশানটি বাছাই করে নিতে হবে।

ধাপ ২: তারপরে আপনাকে ২য় পেজে নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানে যার নামে আবেদন করছেন তার এন আই ডি কার্ডের নাম্বার ও তার পরের বক্সে জন্ম তারিখ দিতে হবে। এর পরে ”যাচাই করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৩: ”যাচাই করুন” বাটনে ক্লিক করলেই উক্ত এন আই ডি কার্ডের মালিকের ছবি সহ আরো অনেক তথ্য পুরণ হয়ে যাবে স্বয়ংক্রীয়ভাবে। আর এখানে ভালো করে দেখবেন কোন কোন তথ্য পুরণ হয় নি। যেই গুলো পূরণ হয় নি সেগুলো আপনি নিজে সঠিকভাবে পূরণ করে দিন।

ধাপ ৪: এরপরে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদকারীর সম্পর্কে বেশ কয়েকটি জরুরি তথ্য দেওয়া লাগবে যেমন সেগুলো হচ্ছে আবেদকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, তার পেশা, তার নিজের ভূমির পরিমাণ, তার নিজের বাসস্থান ইত্যাদি সহ আরও তথ্য দেওয়া লাগবে।

ধাপ ৫: এর পরবর্তি ধাপে যোগাযোগের ঠিকানা দিতে হবে। আর নিচের দিকে এসে আপনার বয়স্ক ভাতার টাকা পাওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর নাম্বার দিতে হবে। যেমন Bkash/ Nagad অ্যাকাউন্ট দিতে হবে।

ধাপ ৬: এর পরবর্তি ধাপে আপনার আবেদনের সকল তথ্য দেখতে পারবেন। এখানে যদি আপনার সকল তথ্য সঠিক থাকে। তাহলে “সংরক্ষণ” বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে আবেদনটি জমা দিয়ে দিবেন। জমা দেওয়ার পর প্রিন্ট নামক অপশন থেকে আবেদন ফর্মটি প্রিন্ট করে নিবেন।

তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন যে, আবেদন জমা একবার হয়ে গেলে পরে আর সেটা পরিবর্তন করা যায় না। তারপর পরিশেষে আবেদন পত্রের প্রিন্টকৃত ফর্মটি পৌরসভা কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে তাদের কাছে সব ধরণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জমা দিন।

বয়স্ক ভাতা মাসে কত টাকা

আপনারা অনেকেই বয়স্ক ভাতা কত টাকা দেওয়া হয় বাংলাদেশে সেই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আপনারা অনেকেই এই সকল তথ্য খুজে খুজে অনেক হয়রানির স্বিকার হন কিন্তু সঠিক তথ্য জানতে পারেন না। এখন আমরা আপনাকে এই সকল তথ্য সম্পর্কে জানাবো। তাহলে চলহুন এখন জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভবতী ভাতার আবেদন করার নিয়ম

বাংলাদেশে যে পরিমাণে বয়স্কভাতার টাকা দেওয়া হয় তা অনেক সামান্য টাকা। যা দিয়ে একজন মানুষের চলাচল করা অনেক কঠিন একটি বিষয়। বাংলাদেশে একজন ব্যাক্তির জন্য বয়স্ক ভাতার পরিমাণ মাসিক মাত্র ৫০০ টাকা। তবে এটি হয়তো ভবিষ্যতে পরিবর্তনশীল হতে পারে।

পূর্ববর্তিতে বিভিন্ন অর্থবছরে এই ভাটার টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই আশা করা যায় ভবিষ্যতেও এই টাকার পরিমাণ পরিবর্তন হতে পারে। তাহলে চলুন এখন আমরা বিভিন্ন বছরে এই বয়ষ্ক ভাতার টাকার পরিমাণ জেনে নেই একটি ছকের মাধ্যমে।

বয়স্ক ভাতা আবেদন

বয়স্ক ভাতা কত বছর বয়সে দেওয়া হয়

অনেকেই হয়তো জানেন আবার অনেকেই হয়তো জানেন না যে টিক কতো বছর বয়সে বয়স্কভাতা ভাতা প্রধান করা হয়। চলুন যেনে নেই কতো বছর বয়সে বয়স্কভাতা পাওয়া যায় বা আবেদন করা যায়।

বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পুরুষের বয়স ৬৫ বছরের উর্দ্ধে এবং মহিলার বয়স ৬২ বছরের উর্দ্ধে হতে হবে। তাহলেই একজন ব্যাক্তি বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বয়স্ক ভাতা কত মাস পর পর দেওয়া হয়

বয়স্কদের জন্য সরকার থেকে দরিদ্রতা দূর করার লক্ষ্যে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা চালু করেন।বয়স্ক ভাতার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। এরপর সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন সম্পূর্ণ হলে তার বয়স ৬৫ হলে তিনি বয়স্ক ভাতা পাবেন।

বয়স্ক ভাতার এক মাসে আগে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হত এই বছর ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে আরো ১০০ টাকা বৃদ্ধি করে ৬০০ টাকা করে প্রতিমাসে দিবে সরকার বয়স্কদের ভাতা।

ভাতার টাকা খুব সহজে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে মোবাইলে চলে আসবে। প্রতি ৩ মাস পর পর বয়স্ক ভাতা পাওয়া যায়। এক সাথে তিন মাসের টাকা দেওয়া হয়। বছরে ৪ বার দেওয়া হয় বয়স্ক ভাতার টাকা তাদের মোবাইল চলে আসে।

বয়স্ক ভাতা টাকা চেক

বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার পরেই আমাদের জানতে হবে বয়স্ক ভাতা আবেদন যাচাই কিভাবে করতে হয় সেই সম্পর্কে। আপনি যে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের তথ্য আপনি যদি চান তাহলে আপনি অনলাইনের মাধ্যমেই যাচাই করে নিতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন আমরা অনলাইনের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা আবেদন যাচাই সম্পর্কে জেনে নেই।

  • আবেদনপত্রটি যাচাই করার জন্য প্রথমে আপনাকে এই mis.bhata.gov.bd ওয়াবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। আপনি এখানে ক্লিক করলেই সেই ওয়েবসাইটে চনে যাবেন।
  • আপনি সেখানে ম্যেনু দেখতে পাবেন। সেখানে প্রথম অপশানে আপনাকে বয়স্কভাতা সিলেক্ট করতে হবে।
  • তারপরের অপশন থেকে প্রথম ঘরে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে দিতে হবে। আর পরের বক্সে NID অনুযায়ী সঠিক জন্ম তারিখ দিতে হবে। তারপর অনুসন্ধান নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে।
  • অনেক সময়ে সার্ভারের সমস্যার কারণ একটি অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। তবে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।
  • আর আপনার বয়স এখানে বয়স্কভাতার জন্য নির্ধারণ করা হলে আপনার ভাতার আবেদনটি দেখতে পারবেন।
  • আবার আপনার আবেদন করা না হয় তাহলে আপনি সহজেই এখান থেকেই আবেদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ-  মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সংক্রান্ত তথ্য - মুক্তিযোদ্ধা ভাতা কত

মূলত উপরের উল্লিখিত উপায়ে বয়স্ক ভাতা টাকা চেক করতে পারবেন। আশা করছি এই অংশটুকু পড়ে আপনারা উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।

বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড

অনলাইনে বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি এখন পর্যন্ত কার্যকর করা হয়নি। তাছাড়াও বয়স্ক ভাতা কার্ডের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। বয়স্ক ভাতা পাওয়ার জন্য আপনি এলিজেবল পাবার জন্য এলিজেবল হওয়ার পরে প্রথম পর্যায়ে যেভাবে ভাতার টাকা নিবেন সেটি অনলাইন আবেদন পত্রে উল্লেখ করতে হবে।

বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট সিস্টেম কার্যকর হওয়াতে বয়স্ক ভাতার টাকা গ্রহণ করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আগেকার সময়ের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা গ্রহণ করার কষ্ট পুরোটাই কমে গেছে বললেই চলে।

তবে বয়স্ক ভাতা কার্ড ডাউনলোড করার কোন পদ্ধতি না থাকলেও এটি ট্র্যাকিং করার পদ্ধতি ঠিকই রয়েছে। বর্তমান সময়কে যেহেতু ডিজিটাল যুগ বলা হয় তাই এই বয়স্ক ভাতাটি অনলাইন ভিত্তিক কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভাতা ভোগী ব্যক্তির সকল তথ্য অনলাইনে বয়স্ক ভাতা সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে জমা থাকে। ভাতার টাকা লেনদেন করার সঠিক হিসাব বা ভাতাভোগী ব্যক্তির অগ্রগতি জানতে বয়স্ক ভাতার নতুন কর্মসূচি ট্র্যাকিং সন্ধান করতে পারেন।

বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে লেখকের মতামত

বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন কিন্তু যখন তখন করা যাবে না। সাধারণত বছরের শুরুতেই এই তালিকা প্রণয়নের কাজ করা হয়। তাই খেয়াল রাখুন কখন বয়স্ক ভাতার আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। এবং সেই সময়ে বয়স্কভাতার জন্য আবেদন করুন।আবেদন এর পর যদি যাচাই-বাছাই করে আপনি উপযুক্ত হন ভাতার জন্য তাহলে আপনাকে ভাতা প্রদান করা হবে।

আমরা ইতিমধ্যে বয়স্ক ভাতা আবেদন করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি পুরো পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি আপনারা এতক্ষণে বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে সকল ধরণের প্রশ্নের উত্তর জানতে পেরেছেন। তবে এছাড়াও বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকলে তা এই পোষ্টের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

Leave a Comment