ব্লগিং করে আয় - ব্লগ তৈরির নিয়ম

আপনি কি ব্লগিং করে আয় অথবা ব্লগ তৈরির নিয়ম জানতে চান? আপনি যদি বর্তমান সময়ে ব্লগ তৈরি করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে প্রথমে জানতে হবে কিভাবে ব্লগ তৈরি করতে হয়। যেমন মনে করুন, আপনার একটি ওয়েবসাইটে গুগলের অ্যাডসেন্স রয়েছে সেখান থেকে আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ক্লিক আসবে আপনার তত ইনকাম হবে গুগলের অ্যাড দেখার মাধ্যমে।

ব্লগিং করে আয়

সাধারণত এই মাধ্যমকে আমরা প্যাসিভ ইনকাম বলে থাকি। তাই ব্লগিং সবার  কাছেই প্যাসিভ ইনকাম হিসেবে পরিচিত। তবে ব্লগিং করে আয় করতে হলে এক্ষেত্রে আপনাকে ব্লগ তৈরির নিয়ম সম্পর্কে বাধ্যতামূলক বিস্তারিত জানতে হবে। মূলত সেজন্যই আমাদের আজকের এই পোষ্টটি লেখা হয়েছে। আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই আজকে এই আর্টিকেলে ব্লগিং নিয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেছি।

উপস্থাপনা

ব্লগিং হচ্ছে মূলত ওয়েবসাইট প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি বিভিন্ন ব্লগপোষ্ট করার একটি প্রক্রিয়া। আর এ্টি যেকোন প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই মূল্যবান হাতিয়ার। ব্লগিং করে আমাদের দক্ষতা তুলে ধরে  পাঠকদের সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক তৈরি করা হয়।

এর পাশাপাশি ওয়েবসাইটে অনেক ট্রাফিক নিয়ে আসা যায়। সুতরাং বলতে গেলে এই ব্লগিং এর চাহিদা অনেক বেশি। এজন্য খেয়াল করবেন যে এই সেক্টরে কাজের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্লগ কি ও ব্লগ তৈরির নিয়ম ভালোভাবে জেনে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা ব্লগ তৈরি করে ইনকাম করছে। তো আপনিও কি ব্লগ তৈরির নিয়ম জানতে আগ্রহী? তাহলে এই পোষ্টটি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ আজকে আমরা ব্লগ কি, ব্লগিং কেন করবেন, ব্লগিং করে আয়, ব্লগ তৈরির নিয়ম ইত্যাদি সহ বিস্তারিত আলোচনা করব।

আরো পড়ুন: কনটেন্ট রাইটিং কি - কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায়

ব্লগ কি

ব্লগ এর বাংলা পারিভাষিক শব্দ হচ্ছে মূলত ডাইরি। অর্থাৎ আমরা দৈনন্দিন জীবনে একটি ডাইরিকে যেভাবে ব্যবহার করে থাকি ব্লগ ঠিক সেই কাজের জন্যই ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে বা তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ব্লগ অর্থ মানে অনলাইনে ব্লগ ওয়েবসাইটে লেখালেখি করা।

যারা মূলত এই ব্লগ এর কাজ করে থাকে এবং এর পাশাপাশি মেইন্টেইন করে তাদেরকেই ব্লগার বলা হয়। আবার অন্যভাবে বলতে গেলে ব্লগ লেখার যে প্রক্রিয়া তাকেই যৌথভাবে ব্লগিং বলা হয়। ব্লগিং বর্তমান সময়ের অনলাইন ভিত্তিক একটি অনেক জনপ্রিয় পেশা। 

যারা ব্লগ নিয়ে লেখালিখি করে তারা মূলত নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর দক্ষ হয়। তারা তাদের অভিজ্ঞতাগুলো ব্লগ পোষ্ট লেখার মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করে রাখে। আর সেই লেখাগুলি পড়ে পাঠক তাদের জীবনের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি ও নতুন বিষয়ের উপর জ্ঞান রাখতে পারে। 

ব্লগিং কেন করবেন

মনে করেন আপনি কম্পিউটারে বা আপনার হাতে থাকা মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে লেখালেখি করতে পছন্দ করেন। এখন যদি আপনি জানতে পারেন অনলাইনে লগইন করে লেখালেখির মাধ্যমে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করা যায় তাহলে আপনি কি এই সুযোগটি ছাড়বেন।

অবশ্যই না। আপনার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টটি অনেক সাহায্য করবে আপনার লেখালেখির মাধ্যমে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আমাদের আর্টিকেলটি আপনাকে অনেক সাহায্য করবে।

প্রতিদিন গুগলে সার্চ করে কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। আর সেই বিষয়গুলি আপনি ব্লগার ওয়েবসাইটে কিওয়ার্ড রিচার্জ করে পাঠক জানতে চায়। সে বিষয়ে বিস্তারিত লেখে গুগলে পাবলিশ করে। আপনি গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি কেন ব্লগিং করবেন সেই বিষয়ে আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া যাকঃ

  • অনলাইনে নিজে কিছু জানা এবং সে বিষয়ে অন্যকেও সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো। 
  • অন্যকে জানানোর মাধ্যমে নিজের পার্সোনালিটি গুগল এর কাছে জানান দেওয়া। যাতে করে গুগল বুঝতে পারে আপনি একজন দক্ষ আর্টিকেল রাইটার।
  • আপনি যদি ব্লগিং করেন। তাহলে প্রতি মাসে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবেন। এবং নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারবেন।
  • আপনি যদি কোন ব্যবসা করে থাকেন। সে ব্যবসা বিভিন্ন প্রোডাক্ট সার্ভিস মানুষের কাছে খুব সহজে পৌঁছে দিতে পারবেন এই ব্লগিং করার মাধ্যমে। 
  • আপনার ব্যক্তিগত জীবনকে সারা বিশ্বে পরিচিত করতে পারবেন। এবং সবাই আমার আপনাকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জানবে।

আরো পড়ুন: ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় - ফ্রি টাকা ইনকাম

ব্লগ তৈরির নিয়ম

ব্লগ তৈরি করার জন্য বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে সেগুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। তো আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা পোষ্টের এই অংশে হয় সেগুলো বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলঃ 

১. ব্লগের উদ্দেশ্য

একটি ব্লগ পোষ্ট বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে প্রথমে আপনাকে সেই ব্লগের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করাটা  খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আসলে কোন বিষয়ে দক্ষ কিংবা কোন টপিকে ব্লগ তৈরি করবেন এবং আপনার পাঠকরা সেই ব্লগ দেখে উপকৃত হতে পারবে কিনা সেজন্য ভালো উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা।  

২. ডোমেইন নাম নির্ধারণ

এরপর আপনার ব্লগের ইউনিক নাম বেছে নিতে হবে যেটি আপনার ব্লগ ওয়েবাসাইটের নাম হিসেবে প্রচলিত হবে। ডোমেইন নাম নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ডোমেইন ক্রয় করতে হবে।

৩. ব্লগিং ওয়েবসাইট

ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য মূলত ২ ধরনের জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে তার মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।

ব্লগার ডট কম সুবিধা

  • সম্পূর্ণ বিনামূল্য
  • গুগল এডসেন্স পাওয়া যায়
  • ব্যবহার করা খুবই সহজ
  • কোন হোস্টিং এর প্রয়োজন নেই

অসুবিধা

  • সীমিত কাস্টমাইজেশন হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হয় না।
  • ব্লগার সাইট গুগলের নিয়ন্ত্রণ থাকে
  • তাই ব্লগার সাইটে অসুবিধা নেই বললেই চলে।

ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম সুবিধা

  • এতে সীমিত কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে
  • সাইট অনেক ভালো পারফর্ম করে
  • বিভিন্ন প্লাগিং ব্যবহার করে অনেক জটিল কাস্টমাইজেশন অতি সহজভাবে করা হয়।

অসুবিধা

  • হোস্টিং এর প্রয়োজন রয়েছে।
  • সীমিত কাস্টমাইজেশন করা যায়।
  • বিজ্ঞাপন এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

সাধারনত ব্লগ তৈরী করার জন্য এই ২ দুটি মাধ্যম ছাড়াও আরও অনেক প্লাটফর্ম আছে। যে প্লাটফর্মগুলি গুলো ব্যবহার করে আপনি ব্লগ তৈরি করতে পারবেন। আর আপনি আসলে কোন প্লাটফর্ম থেকে আয় করতে চান সেটা একান্তই আপনার ব্যাপার। তবে আমরা আপনাদের সুবিধার জণ্য উপরে ২ টি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম এর সুবিধা অসুবিধা উল্লেখ করেছি। আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্লগ তৈরি করতে পারেন।

ব্লগ তৈরির নিয়ম

ব্লগিং করে আয়

বিজ্ঞাপন: ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে উত্তম ও সাধারন উপায়। আপনি গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করার জন্য সাইন আপ করতে পারেন, যার মাধ্যমে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। সেই বিজ্ঞাপন যখন আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটররা দেখবে বা ক্লিক করবে তখন ইনকাম হিসেবে তারা আপনাকে ডলার প্রদান করবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করার আরেকটি জনপ্রিয় উপায়। আপনি আপনার ব্লগে অন্যান্য কোম্পানির পণ্য বা পরিষেবার প্রচার করতে পারেন এবং প্রতিবার আপনার লিঙ্কের মাধ্যমে কেউ কেনাকাটা করলে কমিশন উপার্জন করতে পারেন।

পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি: আপনি আপনার নিজস্ব পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে আপনার ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ই-বুক থেকে শুরু করে শারীরিক পণ্য থেকে কোর্স পর্যন্ত যেকোনো কিছু হতে পারে।

ফ্রিল্যান্স লেখা: আপনি যদি একজন ভাল লেখক হন তবে আপনি অন্যান্য ওয়েবসাইট বা প্রকাশনার জন্য ফ্রিল্যান্স লেখার মাধ্যমে আপনার ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

পরামর্শ: আপনার যদি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকে তবে আপনি ব্যবসা বা ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

আপনি ব্লগিং থেকে কত টাকা উপার্জন করতে পারেন তা আপনার দর্শকের আকার, আপনার সামগ্রীর গুণমান এবং আপনি যে পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করেন তা সহ অনেক কারণ এর উপর নির্ভর করে। 

ব্লগিং কিভাবে শিখব

আপনারা হয়তো অনেকেই গুগলকে প্রশ্ন করেন যে কিভাবে ব্লগিং কিভাবে শিখব বা ব্লগিং শুরু করব। কিন্তু তারা হয়তো কোথাও কোন সঠিক তথ্য খুজে পাচ্ছেন না। তাদের জন্য পোষ্টের এই অংশটি অনেক উপকার হতে চলেছে। কেননা আমরা এই অংশে জানাবো যে আপনি কিভাবে সঠিক উপায়ে ব্লগিং শুরু করবেন সেই সম্পর্কে বর্ণনা। ব্লগিং শুরু করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন যেমনঃ

  • প্রথমে ব্লগিং এর জন্য নিশ বেছে নিতে হবে 
  • একটি ব্লগিং প্লাটফর্ম সিলেক্ট করুন
  • ব্লগার (Blogger.com)
  • ওয়ার্ডপ্রেস (Wordpress)
  • টাম্বলার সিলেক্ট করুন
  • সঠিক ডোমেইন নাম বেছে নেবেন
  • একটা ভালো হোস্টিং সার্ভার নিন
  • একটি সুন্দর থিম ইমপ্লিমেন্ট করুন
  • ব্লগ লিখতে ও পাবলিশ করতে শুরু করুন
  • এসইও (SEO) করুন
  • কিওয়ার্ড রিসার্চ করুন
  • আর্টিকেল লিখুন ও অন-পেজ এসইও করুন
  • সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন
  • Google Adsense/ Affiliate মার্কেটিং করে আয় করুন

আরো পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

সত্যিকার অর্থ বলতে গেলে ব্লগিং করে ইনকাম করার কোন সীমা নেই। এটা আসলে সম্পুর্ন নির্ভর করে আপনি কোন উপায়ে বা কোন ম্যাধ্যম অনুসরণ করে অর্থ উপার্জন করছেন তার উপর। যেমন আপনি যদি অ্যাডসেন্স এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একসাথে ব্যবহার করেন তাহলে প্রচুর অর্থ উপার্জন হবে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলা ব্লগে প্রতি মাসে ১০০ থেকে ২০০ ডলার আয় হয়। তবে অনেকেই মানে যারা এখন সুদক্ষ হয়ে গেছেন তারা প্রতি মাসে ১০০০ ডলার বা লাখ টাকার বেশি ইনকাম করে থাকেন। 

অপরদিকে বাংলা ব্লগ এর চেয়ে ইংরেজি ব্লগে ইনকামের পরিমান অনেকটা বেশি। তাই বাংলাদেশে বেশির ভাগ ব্লগাররা ইংরেজি ভাষায় ব্লগিং করে ইনকাম করে থাকেন। অধিকাংশ সময় দেখা যায় ইংরেজি ব্লগ থেকে অনেকেই প্রতি মাসে ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার ইনকাম করেন। বলা বাহুল্য যে প্রো - ব্লগাররা অনেকগুলো ওয়েবসাইট মনিটাইজ করে প্রতি মাসে ১০০০০+ ডলার ইনকাম করছেন।

ব্লগিং সম্পর্কে লেখকের শেষ মতামত

আমাদের আজকের এই পোস্টটি আসলে নতুন ব্লগার মানে যারা কেবলমাত্র ব্লগিং শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য। কেননা যারা প্রো - ব্লগার তারা সবকিছুই জানেন বিধায় এত টাকা ইনকাম করছেন। তো আপনি যদি একজন নতুন ব্লগিং শুরু করেন তাহলে আমাদের এই পোষ্টে লেখা উপায়গুলি অবলম্বন করু। তাহলে আশা করছি আপনি এই ব্লগিং প্লাটফর্ম থেকে ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

আজকের পোষ্ট নিয়ে এই ছিল আমাদের গ্রাফিক্স ডিজাইন এর খুঁটিনাটি বিষয়াদি। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু পড়েন তাহলে থাকলে আপনি হয়তো গ্রাফিক্স ডিজাইন কত প্রকার, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে আয়ের উপায়, গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর ভবিষ্যৎ ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত জেনে গেছেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
comment url