শরীরের কোনো জায়গায় অস্বাভাবিক ভাবে কোষ বৃদ্ধি হলে সেটাকে টিউমার বলা হয়। টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে অনেকের ধারনা নেই। তবে টিউমার চেনার উপায়, টিউমার থেকে মুক্তির উপায়গুলো জেনে রাখা উচিত।
কারণ টিউমার যদি শুরুর দিকে চিনতে পারা যায়, তাহলে বড় সমস্যা থেকে সেটাকে নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। টিউমার চেনার উপায় ও টিউমার থেকে মুক্তির উপায়গুলো জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পুরোটায় পড়ুন।
টিউমার চেনার উপায়
বর্তমানে টিউমার শব্দটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। কারণ প্রায় এ সমস্যাটি অনেকের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। শরীরে কোনো স্থানের কোষ অসামঞ্জস ভাবে বেড়ে উঠায় হলো টিউমার। টিউমার সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকের তেমন ধারনা নেই বলে, আমরা মনে করে থাকি, শরীরে টিউমার হওয়া মানেই ক্যান্সার। তবে এটা সত্যি নয়, সব ধরনের টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় না। তাই জানতে হবে টিউমার আসলে কি? কিভাবে চিনবো টিউমার। টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক টিউমার চেনার উপায়গুলো।
সাধারনত টিউমার দুই ধরনের হয়ে থাকে, এ দুই ধরনের টিউমারগুলো মানবদেহে বেশি হতে দেখা গেছে। একটি হলো ম্যালিগন্যান্ট টিউমার অপরটি হলো বিনাইন টিউমার। বিনাইন টিউমার একটি জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, সারা শরীরে এ টিউমার ছড়ায় না। তাই এ ধরনের টিইমার তেমন বিপজ্জনক নয়। এ ধরনের টিউমার যদি মাথায় ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় হয়, তাহলে এ টিউমার থেকে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। আর মাথায় হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
অপরদিকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার শরীরের একটি কোষে সীমাবদ্ধ থাকে না। এ ধরনের টিউমার একটি কোষ থেকে অনান্য কোষে ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের টিউমার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ টিউমার থেকেই ক্যান্সার হয়ে থাকে।
টিউমার থেকে শরীরে যাতে বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হয়। সেজন্য প্রাথমিক অবস্থাতেই টিউমার চিনে নিতে হবে। বিনাইন টিউমার কিভাবে চিনবেন জেনে নিন-
- বিনাইন টিউমার সাধারনত আঁচিল বা ফোড়ার মতো দেখতে হয়।
- এ ধরনের টিউমার শরীরের এক জায়গায় হয়ে থাকে , শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে না।
- টিউমারের ভেতরের অংশ শক্ত থাকে।
- এ ধরনের টিউমার ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।
এ ধরনের টিউমার ভালোভাবে চিকিৎসা নিলে, ওষুধ ও অপারেশন করার মাধ্যমে মুক্তি পাওয়া যায়।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার চিন্থিত করা কঠিন, সহজে এ টিউমার চিন্থিত করা যায় না। এটি চিন্থিত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যান, এক্সরে করানোর পর এ টিউমার ধরা পড়ে। তবে কিছু লক্ষন শরীরে প্রকাশ পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ক্লান্তি, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া এবং ব্যাথা হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে যেতে হবে কোন ধরনের টিউমার শরীরের মধ্যে হয়েছে।
টিউমার কি ব্যাথা হয়
শরীরের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত মাংসপিন্ড হচ্ছে টিউমার। শরীরের অভ্যন্তরে এটি হয়ে থাকে। কিছু টিউমার আছে, যেগুলো থেকে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই টিউমার হলে আমাদের মধ্যে ভয় কাজ করে। তবে সব ধরনের টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় না। তাই টিউমারের লক্ষনগুলো শরীরের মধ্যে প্রকাশ পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যাচাই করে নিতে হবে। টিউমার হলে ব্যাথা হয় কি না অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। চলুন জেনে নেওয়া যাত টিউমার হলে ব্যাথা হয় কি-না।
টিউমারের হলে ব্যাথা হয়ে থাকে, তবে সব ধরনের টিউমারে ব্যাথা হয় না। এমন অনেক টিউমার আছে যেগুলোতে ব্যাথা অনুভব হয়, আবার এমন কিছু টিউমার আছে যেগুলোতে ব্যাথা সৃষ্টি হয় না। টিউমারের আকার ও ধরনের ওপর নির্ভর করে, টিউমারের ব্যাথা হয়। তাই কোনো টিউমারের ব্যাথা না হলে এটা ভাববেন না, যে এটি টিউমার নয়। টিউমারের লক্ষন শরীরের মধ্যে বুঝতে পারলেই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
টিউমারের লক্ষন কি
মানবদেহের পরিচিত একটি সমস্যা হলো টিউমার। টিউমার মানবশরীরের যেকোনো স্থানে হয়ে থাকে, মস্তিষ্কের মধ্যে, স্তনে, পেটে, নাকে, ঘাড়ে, জরয়ায়ুতে, থাইরয়েডে, কিডনিতে, ফুসফুসে এসব বিভিন্ন জায়গায় টিউমার হয়ে থাকে। জায়গা ভেদে টিউমারের লক্ষন আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় টিউমার ধরা পড়লে, সেটির চিকিৎসা সহজ হয় এবং মারাত্মক কোনো ঝুঁকি টিউমার থেকে সৃষ্টি হয় না। তাই টিউমারের লক্ষনগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো টিউমারের লক্ষনগুলোর সম্পর্কে।
বিনাইন টিউমার শরীরের মধ্যে হয়ে থাকলে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়, সেগুলো হলো-
- চোখের সমস্যা হওয়া, দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিক না থাকা।
- ক্লান্তি ও দুর্বল অনুভব করা।
- বেশি শীত শীত অনুভত হওয়া।
- খাবারের চাহিদা কমে যাওয়া।
- ওজম কমতে শুরু করা।
- মাথা ব্যথা হওয়া।
এছারাও পেটের মধ্যে টিউমার হলে পেটে ব্যাথা হতে পারে, বমি বমি ভাব, খাবার গিলতে সমস্যা এ ধরনের লক্ষনগুলো দেখা দিতে পারে।
স্তনে টিউমার হলে স্তনের রঙ ও আকার পরিবর্তন হয়, স্তন থেকে স্রাব বের হয়, স্তনের ত্বক কুঁচকে যাওয়ার মতো লক্ষনগুলো প্রকাশ পায়।
মস্তিষ্কে টিউমার হলে শুনতে সমস্যা হওয়া, স্মৃতির সমস্যা, চোখে ঝাপসা দেখা, শুনতে কম পাওয়া, মাথাব্যাথা হওয়া, ভারসাম্যহীনতা, খিঁচুনি এ ধরনের লক্ষনগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে।
জরায়ুতে টিউমার হলে পিরিয়ডের সমস্যা, তলপেটে ব্যাথা, গর্ভধানরনে সমস্যা বা গর্ভপাত হওয়া, রক্তস্রাব বেশি হওয়া, ঘন ঘন প্রসাবের বেগ আসা, কোমরব্যাথা এ লক্ষনগুলো হয়ে থাকে।
তবে উপরের বলা লক্ষণগুলো অন্য কোনো সমস্যা থেকেও হতে পারে। তাই শরীর স্বাভাবিক না লাগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে, যে এ লক্ষণগুলো টিউমারের লক্ষন কি না।
টিউমার থেকে মুক্তির উপায়
টিউমার শরীরের মধ্যে নতুন কোষের সংযোজন ঘটায় বা শরীরের মধ্যে থাকা কোষের অস্বাভাবিক রুপান্তর ঘটায়। বিভিন্ন কারনে টিউমার হয়ে থাকে। যেসব মহিলারা গাছ-গাছালি খেয়ে ভ্রুন নষ্ট করে, সন্তান প্রসবের হার যে মহিলার বেশি, অল্প বয়সে যে মেয়ের বিয়ে হয় এসবের কারনে মেয়েদের টিউমার হয়ে থাকে। পুরুষদের অন্ডকোষে কোনো সমস্যা হলে, কলকারখানায় যারা চিমনি পরিষ্কার করে এদের টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছারাও বংশগত কারনে, পরিবেশগত কারনেও টিউমার হয়ে থাকে। টিউমার থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের টিউমার প্রতিরোধ করতে হবে। কিভাবে টিউমার প্রতিরোধ করবেন এবং টিউমার হয়ে গেলে এ থেকে মুক্তির উপায় কি নি¤েœর আলোচনা থেকে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
টিউমার প্রতিরোধের উপায়
টিউমার ব্যপক আকার ধারন করলে, এটি থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তাই টিউমার প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ করায় উত্তম। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু অভ্যাস আছে সেগুলো যদি আমরা সতকর্তার সাথে মেনে চলি তাহলে টিউমার প্রতিরোধ করা সহজ হবে। আমাদের নিত্যদিনের চলাফেরায় অনেক বদ অভ্যাস আছে, সেগুলো টিউমার প্রতিরোধে এড়িয়ে চলতে হবে এবং খাওয়া দাওয়া সঠিক রাখতে হবে। টিউমার প্রতিরোধের উপায় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন করলে টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই টিউমার প্রতিরোধ করতে মদ্যপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে।
সঠিক খাবার খেতে হবে: টিউমার প্রতিরোধে বেশি বেশি শাকসবজি, ফলমূল, আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। ব্রকলি, সবুজ শাকসবজি, তৈলযুক্ত মাছ, টমেটো, সয়া বীজ, মটর শুঁটি, এসব খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
অস্বাস্থকর খাবার পরিহার করতে হবে: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অস্বাস্থকর খাবার টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই টিউমার প্রতিরোধে যে খাবারগুলো আমাদের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর সে খাবারগুলো পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার, অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, এবং বাইরের খাবারগুরো পরিহার করতে হবে।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে না থাকলে আমাদের শরীরে টিউমারসহ বিভিন্ন রোগ বাসা বাধতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রনে স্বাস্থকর খাবার খেতে হবে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। টিউমার থেকে মুক্তি পেতে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা জরুরি।
টিউমার প্রতিকারের উপায়
শরীরের টিউমারের লক্ষণ বুঝতে পারলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। লক্ষণ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে যদি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়া হয়, তাহলে টিউমার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। টিউমারের অবস্থান, আকার এবং আক্রান্ত ব্যক্তির শারিরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকেরা, চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। টিউমার যদি জটিল হয়, তাহলে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। তবে সব সময় টিউমার অপারেশনের প্রয়োজন হয় না। টিউমার যদি জটিল না হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ওষুধ খেলে টিউমার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এছারাও টিউমার চিকিৎসায় কিছু কার্যকারী ওষুধ রয়েছে, যেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করলে টিউমার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা টিউমার হয়ে থাকে। তাই টিউমারের আকার ও অবস্থান অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। কারও কাছ থেকে শুনে, চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ সেবন করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
টিউমার থেকে মুক্তি পেতে উপরের বিষয়গুলো ফলো করবেন। আর ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া টিউমার ভালো করার যেকোনো ওষুধ সেবন করবেন না।
টিউমার থেকে কি ক্যান্সার হয়
শরীরে টিউমার হলেই আমরা অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারণ আমরা অনেকেই জানি শরীরে টিউমার মানেই ক্যান্সার। সতিই কি তাই! চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় কি না।
মানবদেহে পুরো শরীরজুড়ে অসংখ্যা কোষ রয়েছে। পুরোনো কোষগুলো মরে যায়, আবার নতুন কোষ গঠিত হয়। সে কোষগুলো যদি অনিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের মধ্যে বেড়ে ওঠে, তাহলে সেটাকে টিউমার বলা হয়। মানবশরীরে দুই ধরনের টিউমার হয়ে থাকে। একটি বিনাইন টিউমার এবং অন্যটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। এ দুই ধরনের টিউমাররের মধ্যে বিনাইন টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় না। কিন্তু ম্যালিগন্যান্ট টিউমার থেকে ক্যান্সার হয়ে থাকে। বিনাইন টিউমারগুলো ক্যান্সারের কোষ গঠন করতে পারে না এবং অনান্য কোষগুলোকে আক্রমন করতে পারে না। আর ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলো শরীরের মধ্যে ক্যান্সারের কোষ গঠন করতে পারে। যেহেতু ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলো থেকে ক্যান্সার হলেও বিনাইন টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় না। সুতরাং বলা যায় সব ধরনের টিউমার থেকে থেকে ক্যান্সার হয় না।
তবে শরীরের টিউমার হলে বা টিউমারের লক্ষন প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ সব ধরনের টিউমার থেকে ক্যান্সার না হলেও কিছু টিউমার থেকে ক্যান্সার হয়ে থাকে। আর বাইরে থেকে বোঝা কঠিন, কোন ধরনের টিউমার শরীরে বাসা বেধেছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে টিউমার ক্যান্সার কি না।
টিউমার থেকে ক্যান্সারের লক্ষণ
ক্যান্সার খুবই মারাত্মক একটি রোগ, যেটিতে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ লোক মারা যায়। তবে আধুনিক যুকে ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেঁচে থাকার সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে সেটিকে ভালো করা সম্ভব। টিউমার থেকেও ক্যান্সার হয়ে থাকে, এমন কিছু টিউমার আছে যেগুলো শরীরে বাসা বাঁধলে ক্যান্সারের পর্যায়ে চলে যায়। টিউমার থেকে ক্যান্সার হলে সে ক্যান্সার মারাত্মকভাবে আকার ধারন করার আগেই এর চিকিৎসা নিতে হবে। এর জন্য জানতে হবে টিউমার থেকে ক্যান্সার হওয়ার লক্ষণগুলো কি।
- ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে, আক্রান্ত ব্যক্তির ওজন কমতে শুরু করে। যদি আপনার টিউমার হয়ে থাকে এবং ওজন কোনো কারণ ছাড়া কমতে শুরু করে তাহলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টিউমার না হলেও যদি ওজন কমতে শুরু করে, তাহলে চিকিৎনসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- টিউমার থেকে ক্যান্সার হওয়ার একটি লক্ষণ হলো ক্লান্তি। শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধলে শরীরে ক্লান্ত অনুভব হয়। এমন ক্লান্তি যে বিশ্রাম নেওয়ার পরও দূর হয় না।
- ফুসফুসে যদি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয়ে থাকে এবং সেটি যদি ক্যান্সারের পর্যায়ে চলে যায় তাহলে একটানা কাশি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কাশির পাশাপাশি বুকে ব্যাথা, খাবার গিলতে অসুবিধা ও নিশ্বাস কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
- স্তনে টিউমার হলে, স্তন বৃন্ত থেকে রক্ত বের হওয়া, স্তনের আকার পরিবর্তন টিউমার থেকে ক্যান্সারের লক্ষণ হয়ে থাকে।
- মলের সাথে রক্ত যাওয়া টিউমার থেকে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
- টিউমার থেকে ক্যান্সার হলে শরীরে জ¦রের লক্ষন দেখা দিতে পারে। ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় সময় জ¦রে ভুগে থাকে। তাই ঘন ঘন জ¦র হলে এড়িয়ে যাবেন না চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
- ম্যালিগন্যান্ট টিউমার থেকে যদি ক্যান্সার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ত্বকের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ত্বক কালো হয়ে যাওয়া, ত্বক হলুদ বা লাল হয়ে যাওয়া, ত্বকে চুলকানি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
- খাওয়া কমে যাওয়া এবং বমি বমি ভাব টিউমার থেকে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অনেক রোগির এমটি হতে দেখা যাচ্ছে। ক্যান্সার হলে খাওয়া দাওয়ায় অরুচিভাব চলে আসে।
উপরের লক্ষণগুলো আপনার শরীরে প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে ক্যান্সার সারানো যায়। ক্যান্সার যদি দেরিতে ধরা পড়ে তাহলে ক্যান্সার জটিল হয়ে যায় এবং তা থেকে সেরে ওঠা আর সম্ভব হয় না। তবে উপরের উপসর্গ দেখা মানেই নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না, যে ক্যান্সার হয়ে গেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু পরীক্ষা করলেই রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারনা পাওয়া যাবে।
পরিশেষে বলতে চায়, শরীরের কোনো অংশে টিউমার হলে বা টিউমারের লক্ষনগুলো দেখা দিলে, ভয় পাবেন না। বর্তমান সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টিউমার থেকে মুুক্তি পাওয়া যায়। টিউমার হলে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতন থাকুন, শরীর সুস্থ থাকবে।
লেখকের শেষ বক্তব্য
টিউমার চেনার উপায় – টিউমার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি টিউমার চেনার উপায় – টিউমার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।