সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার কোনগুলো সে বিষয়ে আজকের আর্টিকেল। আঁশযুক্ত খাবার সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের জেনে রাখা উচিত। কারণ এ খাবারগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
আমরা অনেকেই আঁশযুক্ত খাবার সম্পর্কে জানি আবার অনেকেই এ খাবারগুলো সম্পর্কে জানি না। তবে আঁশযুক্ত খাবারগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তারপর খাওয়া উচিত। তো বিস্তারিতভাবে জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ুন।
সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার
আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে আঁশযুক্ত খাবারের ভূমিকা রয়েছে। হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ প্রতিরোধ করতে আঁশযুক্ত খাবারগুলো ভূমিকা রাখে। শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারী গুন আঁশযুক্ত খাবারগুলো থেকে পাওয়া যায়। স্বাস্থ সচেতন মানুষদের পচ্ছন্দের খাবার হলো আঁশযুক্ত খাবার। কারণ সুস্থ থাকতে এ খাবারগুলো প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা জরুরি। তাই আমাদের জানতে হবে কোন খাবারগুলো বেশি আঁশযুক্ত। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সবচেয়ে আঁশযুক্ত খাবার কোনগুলো।
গোটাশস্য, শুকনো ফল, ফল, বিভিন্ন প্রকারের সবজি, বিভিন্ন জাতের মাছের মধ্য থেকে আঁশ পাওয়া যায়। গোটাশস্য জাতীয় খাবারগুলোর মধ্যে বার্লি, ওটমিল, বাদামি চাল, বুলগুর গম থেকে বেশি পরিমাণে আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। ফলের মধ্যে পেয়ারা, আমড়া, আতাফল, নারকেল, কালোজামের মধ্য থেকে বেশি পরিমাণে আঁশের অংশ থাকে। শাক সবজির মধ্যে মিষ্টি আলুর শাক, কলমি শাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, ব্রকলি, বাঁধাকপি, গাজর, শিম, বরবটিতে আঁশ রয়েছে। এছারাও মটর, মুগ, ছোলা , খেসারির ডাল, ভুট্টা, আটা, তিল, বেরি জাতীয় ফল থেকেও প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায়।
তবে সবথেকে বেশি আঁশজাতীয় খাবারের তলিকায় প্রথমেই রয়েছে মসুর ডাল ও মটরশুটি। এ দুই ধরনে এক কাপ খাবার থেকে ১৫ গ্রাম মতো ফাইবার পাওয়া যায়। এছারাও নাশপাতি, ব্রকলি, বরবটি, ঢেঁঢ়স, ওলকপি, মিষ্টি আলু সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার।
আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ন কেন
খাবার আমাদের বেঁচে থাকতে অপরিহার্য। সে খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা, ক্যালোরি, ফাইবার বা আঁশ থাকা অপরিহার্য। আমরা অনেকেই এ খাবারের মধ্যে আঁশযুক্ত খাবারগুলো খেয়ে থাকি। উদ্ভিদ হতে প্রাপ্ত খাবারগুলোর যে অংশটুকু মানবদেহ হজম করতে পারে না অথবা শোষণ করতে পারে না সে খাবারটুকুই আঁশযুক্ত খাবার। শাক, সবজি, ফলমূল ইত্যাদি থেকে আঁশ পাওয়া যায়। যা আমরা প্রায় খেয়ে থাকি, তবে জানি কি? আঁশযুক্ত খাবারগুলো ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ন। আঁশযুক্ত খাবারগুলো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ন। কেন গুরুত্বপূর্ন এ জাতীয় খাবারগুলো, চলুন নি¤েœর আলোচনা থেকে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে আঁশযুক্ত খাবারগুলো বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের শরীরে ভালো খারাপ দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন হলেও, খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমরা যে আঁশযুক্ত খাবারগুলো খেয়ে থাকি সে খাবারগুলোতে থাকা আঁশ পরিপাকনালী থেকে আমাদের খাবারের কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়। যার কারণে রক্তে চর্বির মাত্রা কমে যায় এবং কোলেস্টরলের মাত্রা ঠিক থাকে। আর মানবদেহে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক না থাকলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ত্বকে সমস্যা, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা দেওয়ার মতো সমস্যা হতে দেখা যায়। যদি আঁশযুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় থাকে, তাহলে এসব রোগ প্রতিরোধ করা খুবই সহজ হয়ে যায়।
আঁশযুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে পিত্তথলির রোগ, ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে, লিভারের রোগ, ডায়াবেটিস রোগ কম হতে দেখা যায়। এছারাও কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, হজমের সমস্যা, দন্তক্ষয়, হার্টের সমস্যার প্রতিষেধক হিসেবে এ জাতীয় খাবারগুলো কাজ করে থাকে। বর্তমান সময়ে রক্তচাপ জটিল একটি সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। সে সমস্যার সমাধান হয় নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো খেলে।
উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় আঁশযুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহন করা স্বাস্থের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। তাই শরীর সুস্থ রাখতে আঁশযুক্ত খাবারগুলোর ওপর নির্ভর করতে পারেন।
আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা
আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবারগুলো রাখা প্রয়োজনীয়। খাবার থেকে দুই ধরনের আঁশ বা ফাইবার পাওয়া যায়। একটি দ্রবনীয় ফাইবার বা আঁশ অন্যটি অদ্রবনীয় ফাইবার। এ দুই ধরনের আঁশযুক্ত খাবারগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। শরীরকে সুস্থ রাখতে এ খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন। আঁশযুক্ত খাবার থেকে বিভিন্ন উপকার আমরা পেয়ে থাকি। আঁশযুক্ত খাবার থেকে পাওয়া উপকারগুলো তুলে ধরেছি। নিচের আলোচনা থেকে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখে: বর্তমানে ওজনের সমস্যা নিয়ে প্রায় মানুষ ভোগান্তিক। সে সমস্যা প্রতিরোধ করতে আজ থেকেই খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবারগুলো যুক্ত করুন। ওজন কমাতে আঁশযুক্ত খাবারগুলোর ওপরে সহজে নির্ভর করতে পারেন।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে: আঁশযুক্ত খাবারগুলো শরীর থেকে পানি শোষণ করে এবং পায়খানা নরম করে যার ফলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে মুক্তি এনে দেয়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো খেতে হবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আঁশযুক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে। আঁশযুক্ত খাবারগুলো থেকে পাওয়া উচ্চমাত্রার এন্টি অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখে: ডায়াবেটিস রোগিরা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে বেশ চিন্তিত। তবে আঁশযুক্ত খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগিদের অনেক চিন্তা কমিয়ে এনেছে। ডায়বেটিস প্রতিরোধ করতেও এ খাবারগুলো বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে।
হৃদপৃন্ডের রোগ প্রতিরোধ করে: পরিমিত মাত্রায় যদি নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া হয়, তাহলে হৃদপৃন্ডের বিভিন্ন রোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে: আঁশযুক্ত খাবারগুলো থেকে প্রচুর পরিমানে মিনারেল ও ভিটামিন পাওয়া যায়। যার কারনে প্রতিদিন পরিমিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো খাওয়ার ফলে শরীরের হাড় গঠন হয়। এছারাও এ খাবারগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, যার কারনে এগুলো খেলে হাড় মজবুত হয়।
অপ্রয়োজনীয় টক্সিন বের হয়: শরীরে থাকা অপ্রয়োজনীয় টক্সিন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সে টক্সিন গুলো সহজেই বের হয়ে আসে, যদি নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো খাওয়া হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গবেষনায় পাওয়া গেছে শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে আঁশযুক্ত খাবারগুলোর ভূমিকা রয়েছে।
উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় আমরা বুঝতে পারছি যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবারগুলো রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রোগমুক্ত শরীর পেতে, স্বাস্থ ঠিক রাখতে খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখা আবশ্যক।
আঁশযুক্ত খাবার কি কি
মানবদেহের কাজ সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে আঁশযুক্ত খাবারগুলো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে প্রতিদিন আঁশযুক্ত খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন বলে দেখা গেছে, গবেষণায়। আর নিয়মিত যারা এ খাবারগুলো খায় না, তাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা গেছে। তাই নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবারগুলো আমাদের খেতে হবে। তবে আমরা সবাই আঁশযুক্ত খাবারগুলো চিনি তো? যদি সেগুলো না চিনে থাকেন তাহলে চলুন দেখে নিন আঁশযুক্ত খাবারগুলো কি কি।
বাদাম: আঁশজাতীয় খাবারের তালিকায় বাদাম রয়েছে। ৯৫ গ্রাম বাদামের মধ্য থেকে আঁশের অংশ পাওয়া যায় ১১.৬ গ্রাম। আঁশযুক্ত খাবার খেতে চাইলে নিয়মিত বাদাম খেতে পারেন। বাদামে আঁশের অংশ ছাড়াও ভিটামিন ই ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
ওটস: ওটসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে। প্রতিদিন সকালের খাবার তালিকায় এটি রাখতে পারেন, সুস্থ থাকবেন।
ছোলা: ২০০ গ্রাম ছোলার মধ্যে আঁশের অংশ থাকে ৩৮.৮ গ্রাম। তাই শরীরকে পরিমিত আঁশ দিতে ছোলার তৈরি খাবার খেতে পারেন।
মসুর ডাল: মসুর ডাল আঁশজাতীয় খাবারের ভালো উৎস। তাই প্রায় এটি খেতে পারেন, আপনার শরীর পর্যাপ্ত আঁশ পাবে।
নারকেল: শুকনো নারকেলের মধ্য থেকে আঁশ পাওয়া যায়। ২৮ গ্রাম শুকনো নারকেল খেলে ৪.৬ গ্রাম আঁশ পাবেন।
খেজুর: আঁশযুক্ত খাবার খেতে চাইলে নিয়মিত খেজুর খান উপকার পাবেন। ২৪ গ্রাম খেজুর থেকে ১.৬ গ্রাম আঁশ পাবেন।
মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলু থেকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাবেন, তাই এটি খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।
ব্রকলি: আঁশজাতীয় সবজি খেতে চাইলে ব্রকলি খেতে পারেন। এক কাপ ব্রকলি থেকে ৫.১ গ্রাম আঁশ পাওয়া যায়।
মটরশুঁটি: মটরশুটির মধ্যে আঁশের অংশ রয়েছে। এক কাপ মটরশুটি যদি আপনি খান তাহলে ১৫ গ্রাম আঁশ আপনি পাবেন।
নাশপাতি: নাশপাতি ফলের মধ্যে আঁশ পাওয়া যায়, শরীর সুস্থ রাখতে এ ফলটি খাওয়া অত্যান্ত উপকারী। মাঝারি একটি নাশপাতি থাকে আঁশ পাওয়া যাবে ৫.৫ গ্রাম।
অ্যাভোকাডো: স্বাস্থ সুরক্ষায় আ্যাভোকাডো খুবই উপকারী একটি ফল। এ ফলটির মধ্যে আঁশসহ আরও বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে। অর্ধেক যদি কাঁচা অ্যাভোকাডো খাওয়া যায় তাহলে ৬.৭ গ্রাম আঁশ সেখান থেকে পাওয়া যাবে। বিশেষজ্ঞরা হৃদরোগিদের জন্য এ ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আঁশজাতীয় শাক: যেসব শাক থেকে আঁশ পাওয়া যায় সেগুলো হলো-মিষ্টি আলু শাক, কলমি শাক, কচু শাক, পুদিনা পাতা শাক, মুলা শাক, ডাটা শাক ইত্যাদি।
আঁশজাতীয় ডাল: বিভিন্ন ধরনের ডালের মধ্যে ছোলা, মটর, মুগডাল ও খেসারির ডাল থেকে পর্যাপ্ত আঁশ পাওয়া যায়। সুস্থ থাকতে আঁশজাতীয় ডালগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
আঁশজাতীয় সবজি: আঁশজাতীয় সবজিগুলো হলো মিষ্টি আলু, ফুলকপি, শিম, বাঁধাকপি, ওলকপি, কলার মোচা, গাজর, বিট, ব্রকলি, প্রভৃতি।
শরীরকে সুস্থ রাখতে উপরের বলা আঁশজাতীয় খাবারগুলো বেছে নিন। এ খাবারগুলোর মধ্যে শুধু আঁশ রয়েছে তা না, অনান্য ভিটামিনও রয়েছে যার কারনে পরিমিত যদি সেগুলো খাওয়া যায় তাহলে সুস্বাস্থ বজায় থাকবে।
আঁশযুক্ত ফল কি কি
আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন আঁশজাতীয় খাবারগুলো। ইতিমধ্যে আমরা আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা থেকে নিশ্চয় জেনে গেছি। তাই এটি খাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞরা দিয়ে থাকেন। আর স্বাস্থ সচেতন মানুষেরাও আঁশযুক্ত খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে পচ্ছন্দ করেন। ফল থেকেও খাদ্যআঁশ আমারা পেতে পারি, এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলোর মধ্যে আঁশের অংশ রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আঁশযুক্ত ফলগুলো কি কি।
স্ট্রবেরি: আঁশযুক্ত ফলগুলোর মধ্যে স্ট্রবেরি একটি ফল। এ ফলটি স্বাস্থকর একটি ফল, যা নিয়মিত খেলে স্বাস্থ সুন্দর ও সুস্থ থাকে। প্রতি এক কাপ তাজা স্ট্রবেরি যদি আপনি খান তাহলে এর মধ্য থেকে ৩ গ্রাম ফাইবার আপনি পাবেন।
নাশপাতি: বর্তমানে নাশপাতি পুষ্টিকর খাবার তালিকার মধ্যে রয়েছে। পুষ্টিকরের পাশাপাশি এ ফল খেতেও সুস্বাদু। আঁশযুক্ত ফলগুলো অন্যতম উৎস হলো নাশপাতি। মাঝারি সাইজের একটি নাশপাতিতে আঁশের অংশ থাকে ৫.৫ গ্রাম।
আপেল: আপেল অনেকেই তৃপ্তিসহকারে খায়। এটি আঁশযুক্ত একটি ফল, একটি মাঝারি সাইজের আপেল থেকে খাদ্যআঁশ পাওয়া যায় ৪.৪ গ্রাম ।
পেয়ারা: পেয়ারা আমাদের পরিচিত একটি ফল। তবে শুধু পরিচিত নয় এটি পুষ্টিকর একটি ফলও। এ ফলটিতে থেকে প্রচুর আঁশ রয়েছে। ১০০ গ্রাম পেয়ারা থেকে ৫.৪ গ্রাম আঁশ পাওয়া যায়।
অ্যাভোকাডো: আঁশজাতীয় একটি ফল হলো অ্যাভোকাডো। আঁশ ছাড়াও এ ফল থেকে বিভিন্ন ভিটামিন পাওয়া যায়, যা স্বাস্থের জন্য উপকারী। ১০০ গ্রাম অ্যাভোকাডো থেকে ৬.৭ গ্রাম আঁশ বা ফাইবার পাওয়া যায়।
কলা: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল হলো কলা, যা বারোমাস আমরা পেয়ে থাকি। পাশাপাশি কলা হলো ফাইবার বা আঁশযুক্ত ফল। ১০০ গ্রাম কলা থেকে ২.৬ গ্রাম আঁশ পাওয়া যায়।
কামরাঙ্গা: টকজাতীয় ফল হলো কামরাঙ্গা, টক জাতীয় এ ফলটি থেকে আঁশও পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গার মধ্যে খাদ্যআঁশ রয়েছে ২.৮ গ্রাম।
কাঁঠাল: জাতীয় ফল কাঁঠাল, সুমিষ্ট একটি ফল। এ ফল থেকেও আঁশ পাওয়া যায়, তবে আঁশের পরিমাণটা কম। ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল থেকে খাদ্যআঁশ পাওয়া যায় ২ গ্রাম।
উপরের আলোচিত ফলগুলো থেকে খাদ্যআঁশ পাওয়া যায়। তাই আঁশজাতীয় ফলগুলো খেতে চাইলে এ ফলগুলো বেছে নিন।
আঁশযুক্ত মাছ কি কি
স্বাস্থ রক্ষা করতে চান? তাহলে বেছে নিতে হবে আঁশযুক্ত খাবারগুলো। খাদ্য তালিকায় অবশ্যই আঁশযুক্ত খাবারগুলো বেছে নিতে হবে। আঁশযুক্ত খাবারগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, চর্বির মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। খাদ্যআঁশ আমরা শাকসবজি, ফলমূল ও মাছ থেকে পেতে পারি। আঁশযুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত মাছগুলোও রাখতে হবে। আঁশযুক্ত মাছগুলো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আঁশযুক্ত মাছগুলোর মধ্য থেকে প্রেটিন, ওমেগো৩, ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায়। তাহলে জেনে নিন আঁশযুক্ত মাছগুলো কি কি।
- কৈ মাছ
- গ্লাস কার্প
- সিলভার কার্প
- বিগহেড
- রুই মাছ
- ইলিশ মাছ
- সিঙ্গি মাছ
ইত্যাদি এ মাছগুলো খাদ্যআঁশ রয়েছে। মানবশরীরের জন্য এ মাছগুলো বেশ উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আরও বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায় এ মাছগুলো নিয়মিত খেলে। তাই আপনারা এ আঁশযুক্ত মাছগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
পরিশেষে বলতে চাই, আঁশযুক্ত খাবারগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হলেও অবশ্যই এটি পরিমিত খেতে হবে। নয়তো উপকারের থেকে ক্ষতি বেশি হয়ে যাবে। তাই বাচ্চাদের বয়স ২ থেকে ৫ বছর হলে দৈনিক আঁশের পরিমাণ হবে ১৫ গ্রাম। ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের দৈনিক আঁশের পরিমাণ হবে ২০ গ্রাম। ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের দৈনিক আঁশের পরিমাণ হবে ২৫ গ্রাম এবং ১৭ বছরের উপরের বয়সীদের জন্য দৈনিক ৩০ গ্রাম খাদ্য তালিকায় আঁশ রাখতে হবে।
আঁশযুক্ত খাবারগুলো খাওয়ার পাশাপাশি সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার – আঁশযুক্ত খাবার কি কি সে সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার – আঁশযুক্ত খাবার কি কি সে সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।