সুন্দর বন ভ্রমন গাইড – সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময়

পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হলো সুন্দরবন। বাংলাদেশের সুন্দর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে সুন্দরবন একটি। আজকের আর্টিকেলে আমরা সুন্দরবন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি সুন্দরবন ভ্রমন করতে চান, তাহলে এ আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।

সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময়

প্রকৃতির বিভিন্ন রুপের  দেখা মেলে সুন্দরবনে। তাই প্রতিবছর লাখো পর্যটক এসে ভিড় জমায় এ সুন্দরবনে। সুন্দরবন ছাড়াও সুন্দরবনে দেখার মতো বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেগুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় ভ্রমনপ্রেমী মানুষেরা। আপনি কি সুন্দরবন ভ্রমন করতে চান? জানতে চান সুন্দর বনে দেখার মতো কি কি আছে? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়বেন। কারণ আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো সুন্দর বন ভ্রমন গাইড ও সুন্দর বন ভ্রমনের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে।

সুন্দর বন দেখার মতো কি আছে

বাংলাদেশের ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের জনপ্রিয় একটি জায়গা হলো সুন্দরবন। বাংলাদেশের ৫ টি জেলা নিয়ে সুন্দর বন অবস্থান করছে। এ পাঁচটি জেলার মধ্যে রয়েছে-খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি, বরগুনা ও সাতক্ষীরা। বাংলাদেশের খুলনার বালেশ্বর নদী থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি নদী পর্যন্ত পুরো সুন্দরবনের অবস্থান। সুন্দর বনের মোট আয়তন হলো ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার।

প্রতিবছর দেশ-বিদেশে থেকে আসা লাখো পর্যটকের দেখা মেলে এ সুন্দরবনে। সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় পর্যটকরা। সুন্দবনে বিভিন্ন পশু পাখি রয়েছে, সেখানে গেলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ, রঙ বেরঙের পাখি, হরিণ, কুমিরসহ আরও অনেক পশুপাখির দেখা মেলে। এসব পশুপাখিগুলো সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলোর সৌন্দর্যকে আরও ফুটিয়ে তোলে। সুন্দর বনের মধ্যে বিশেষ কিছু দেখার মতো দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেগুলো পর্যটকদের আকর্ষনী করে তোলে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সুন্দরবনে দেখার মতো কি কি আছে।

করমজল: সুন্দর বনের পশুর নদীর তীরে করমজল পর্যটনকেন্দ্র অবস্থিত। মংলা সমুন্দ্র বন্দর হতে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এটি ৩০ হেক্টর জমির ওপর স্থাপিত করা হয়েছে। এ পর্যটককেন্দ্রের প্রবেশ টিকিটের মূল্য ২০ টাকা তবে বিদেশিদের থেকে বেশি নেওয়া হয়। পশুপাখি যাদের প্রিয় তাদের জন্য এ পর্যটককেন্দ্রটি খুবই পচ্ছন্দের একটি জায়গা। কুমির, বানর, হরিণ, সরীসৃপসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে করমজলে। এছারাও সেখানে গেলে টেইলর ও ওয়াচ টাওয়ারের দেখা মিলবে যা দর্শনার্থীদের উপভোগ করার মতো।

কটকা: সুন্দর বনের দক্ষিনপূর্বকোনে কটকা সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অনত্যম একটি জায়গা হলো কটকা সমুদ্র সৈকত। মংলা বন্দর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষন  হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বেশি থাকে, তবে সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা ঝুঁকিপূর্ন। তাই পর্যটকরা কটকা সমুদ্র সৈকত থেকে খুব সহজেই  রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পায়, কটকা থেকে এটি দেখা নিরাপদ। এছারাও সমুদ্র সৈকতে গেলে অনান্য সব প্রানীর দেখা মেলে। কটকাতে আরও রয়েছে একটি রেস্ট হাউস, সেখান থেকে সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ ও ঢেউরের শব্দ সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যায়। কটাকায় আছে জামতলা ওয়াচটাওয়ার, সেখানে উঠে বন্য প্রানীগুলোর ছুটাছুটি ও বিচরনের অপরূপ দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়, যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

আরো পড়ুনঃ-  কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত - কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান সমূহ

হাড়বাড়িয়া: সুন্দর বনের  একটি আকর্ষনীয় স্থান হলো হাড়বাড়িয়া। তবে এটিকে বিপজ্জনক ও বাঘের বাড়ি নাম দেওয়া হয়েছে।  এখানে বাঘেদের চলাফেরা অনেক বেশি থাকে। মংলা বন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। জলপথে লঞ্চ বা নৌকায়  হাড়বাড়িয়া যেতে হয়। হাড়বাড়িয়া যাওয়ার পথে নদীর দুপাশের সৌন্দর্য্য , কাঠের তৈরি দুইটা ট্রেইলস গোলাঘর ও কাঠের তৈরি রাস্তা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর যা পর্যটকের আকর্ষিত করে। এছারাও সেখানে গেলে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির সাথে দেখা মেলে।

কচিখালি: কটকা নদীর পূর্ব তীরে কচিখালীর অবস্থান। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ ও বিভিন্ন রঙ বেরঙের পাখির সাথে দেখা মেলে। এছারাও মাঝে মাঝে বাঘেদের আনাগোনা চলতে থাকে কচিখালিতে। তবে মংলা থেকে কচিখালীর দুরত্বটা একটু বেশি, লঞ্চে যেতে ১০ ঘন্টা মতো সময় লেগে যায়। তাই সব পর্যটকরা এ দর্শনীয় স্থানটি উপভোগ করতে পারে না।

দুবলার চর: সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে দুবলার চর খুবই সুন্দর একটি জায়গা। সুন্দর বনের দক্ষিনে ১২০ কিলোমিটার দূরে দুবলার চরের অবস্থান। খুলনার লঞ্চঘাট থেকে লঞ্চে করে দুবলার চর যাওয়া যায়। এটি মূলত জেলেদের গ্রাম। জেলেদের মাছ ধরার জন্য এ গ্রাম বিখ্যাত। মাছ ধরার মৌসুমে জেলেদের বসতি এখানে গড়ে ওঠে। জেলেদের জীবনযাত্রা, তাদের মাছ ধরার দৃশ্য,  আহরিত মাছ শুঁটকি করার দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

হীল কমল, হিরনপয়েন্ট: সুন্দর বনের দক্ষিনে খুলনার কুঙ্গা নদীর তীরে হিরণ পয়েন্ট অবস্থিত। এর অপরনাম নীল কমল। এখানে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রানীর দেখা মেলে। এখানে সরীসৃপ, হরিণ, ধ্যানী বক, কাঁদা খোঁচা, বানর, রয়ের বেঙ্গল টাইগারসহ আর অনেক বন্য প্রানী দেখা যায়। হিরনপয়েন্টে কাঠের তৈরি সুন্দর রাস্তা রয়েছে, সেখানের উপর দিয়ে  হেটে গেলে বন্য প্রানীগুলোর সাথে দেখা মেলে। এছারাও হিরনপয়েন্টে একটি উঁচু ওয়াচটাওয়ার রয়েছে, সেখান থেকে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

মান্দার বাড়িয়া: সুন্দরবনের দক্ষিন পশ্চিম কোনে মান্দার বাড়িয়ার অবস্থান। এখানে ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির দেখা পাওয়া যায়। বাঘ, হরিণ, সাপ, কুমির, বানর, কাকড়া ইত্যাদি নানা ধরনের জীব দেখা যায়। আরও রয়েছে সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়া বিশাল বিশাল ঢেউ। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও বিভিন্ন প্রজাতির জিবের চলাফেরার দৃশ্য, পর্যটকদের মন কাড়ে এ স্থানটি।

শেখের টেক: শেখের টেক হলো একটি সুন্দর মন্দির। ধারনা করা হয় এ মন্দিরটি প্রায় ৪০০ বছর পুরোনো। ছোট ছোট ইট, চুন ও সুরকি গাঁথা দিয়ে এ মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে। অনেক পর্যটকদের এ মন্দিরের দৃশ্য আকৃষ্ট করে।

উপরের বলা সুন্দর দর্শনীয় স্থানগুলোর দেখা পাবেন, সুন্দরবনে ভ্রমন করলে। তবে এর জন্য আপনাকে হাতে বেশ কিছুদিন সময় নিয়ে ঘুরে আসতে হবে সুন্দরবন থেকে।

সুন্দর বনের ভ্রমন গাইড

বাংলাদেশ ও ভারতের এ দুটি দেশ নিয়ে অবস্থান করছে পৃথিবীর সবথেকে বড় ম্যানগ্রোভ বন, সুন্দরবন। সুন্দরবনের মূল আকর্ষনীয় বিষয় হলো, সুন্দর বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এছারাও  সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য পর্যটকদের আর্কর্ষিত করে। তাই প্রতিবছরই দেশের ও দেশের বাইরে থেকে অনেকেই সেখানে ভ্রমন করতে আগ্রহী।

আরো পড়ুনঃ-  সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত - সিলেট দর্শনীয় স্থান

সুন্দর বনে গেলে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান থেকে ঘুরে আসা যায়। সেখানে  উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে করমজল, কটকা, কচিখালি, হিরন পয়েন্ট, শেখের টেক, মান্দার বাড়িয়া, জামতলা, দুবলার চর।

সুন্দরবন কীভাবে যাবেন ও ভ্রমন করবেন জেনে নিন:

সুন্দরবন যাওয়ার সুবিধার্তে আপনাকে খুলনা অথবা মোংলা থেকে যেতে হবে। তাই প্রথমে আপনাকে ঢাকা থেকে খুলনা অথবা মোংলা পৌঁছাতে হবে।  ঢাকা থেকে খুলনা অথবা ঢাকা থেকে মোংলা সরাসরি আপনি যেতে পারবেন।  ঢাকা থেকে খুলনা অথবা মোংলা যাওয়ার জন্য এসি অথবা নন এসি দুই ধরনের বাস পাওয়া যায়। পদ্মা সেতু হয়ে বাস  খুলনা অথবা মোংলা পৌঁছালে, সময় লাগবে ৫ ঘন্টা মতো।  সুন্দরবন একা অথবা গ্রুপ করে যেতে পারবেন, তবে একা আপনি সুন্দরবন ঘুরতে পারবেন না। সুন্দরবনে একা বা ২ থেকে ৩ জন মিলে যাওয়া নিষিদ্ধ। সেখানে ঘুরতে হলে ফরেস্ট অফিস থেকে অনুমতি ও নিরাপত্তারক্ষী সঙ্গে নিয়ে ঘুরে আসতে হবে।

সুন্দরবন ভ্রমনের খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন কোন জায়গাই ঘুরবেন, কেমনভাবে চলাফেরা করবেন, কেমন খাবেন এসব বিষয়ের ওপর। যদি আপনি মান সম্মত শীপে ভ্রমন করতে চান তাহলে একেক জনের জন্য খরচ হবে প্রায় ৫০০০ থেকে ১২০০০ মতো। আর বিলাসবহুল ভাবে ভ্রমন করলে একেকজনের ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা মতো খরচ হবে। গ্রুপে সুন্দরবন গেলে খরচ কম হবে এবং ভ্রমনে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। তাই আপনি চাইলে গ্রুপে ঘুরে আসুন সুন্দরকবন থেকে।

কোথায় থাকবেন:  গ্রুপ করে সুন্দরবন যেতে হলে লঞ্চ অথবা শীপে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে রাতে আপনি লঞ্চ অথবা শীপে থাকতে পারবেন। আর যদি আপনি একা ভ্রমন করতে চান, তাহলে রেস্টহাউজে আপনি রাত্রি যাপন করতে পারবেন। কচিখালি, নীলকমল ও কটকায় বনবিভাগের রেস্টহাউজ আছে, সেখানে থাকার সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। এছারাও সাধারণ মানের কিছু হোটেল রয়েছে কম খরচে সেগুলোতে থাকতে পারবেন।

সুন্দরবন ভ্রমন ফি: অভ্যায়ারণ্য এলাকা গুলোতে ভ্রমন করতে  একেক জনের কাছে একেক রকম ফি নেওয়া হয়। দেশি পর্যটকদের কাছে জন প্রতি ফি নেওয়া হয় ১৫০ টাকা, বিদেশি পর্যটকদের কাছে নেওয়া হয় ১৫০০ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের কাছে নেওয়া হয় ৩০ টাকা। আর যদি অভ্যায়রণ্যের বাইরের জায়গাগুলোতে ঘুরতে চান, তাহলে দেশি পর্যটকদের কাছে ফি নেওয়া হয় ৭০ টাকা, বিদেশিদের কাছে ১০০০ টাকা এবং ছাত্রছাত্রীর কাছে ২০ টাকা। ভ্রমন ফি ছাড়াও সুন্দরবন ভ্রমনে গাইড ফি,  লঞ্চ ক্রু ফি, নিরাপত্তা গাড ফি, ভিডিও ক্যামেরা ফি, ট্রলারের অবস্থান ফি এসব নেওয়া হয়।

সুন্দরবন ভ্রমনের আগে কিছু বিষয় জেনে নিন:

  • খাবার পানি সবসময় সাথে রাখবেন।
  • প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে নিয়ে নিবেন।
  • বনে ঢুকার সময় একা যাবেন না, নিপত্তারক্ষীদের সঙ্গে নিবেন। কারণ সুন্দরবনে বাঘসহ বিভিন্ন হিংস্র  জীব রয়েছে।
  • শীতকালে ভ্রমন করলে, শীতের কাপড় সাথে নিবেন।
  • ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি নিয়ে সঙ্গে রাখুন।
  • বনের পশুপাখি বিরক্ত হয় এমন কাজ সেখানে করা নিষিদ্ধ এবং বনের মধ্যে নিরাবতা পালন করতে হবে।
  • বনের প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ভ্রমনের খরচ কমাতে চাইলে ছুটির দিনগুলোতে ভ্রমন করবেন না, ছুটির দিনগুলোতে তুলনামূলকভাবে খরচ বেশি হয়।
  • বনের মধ্যে প্লাস্টিকের কোনো দ্রব্য ফেলা নিষিদ্ধ।
  • সুন্দরবন ভ্রমনের আগে বন বিভাগের অনুমতি নিতে হবে, যে দিন ভ্রমন করবেন তার কয়েকদিন আগে ট্যুর অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করে নিতে হবে।
  • সুন্দরবনে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকে না।
  • সুন্দরবন ভ্রমনে অবশ্যই ট্যুর গাইডের পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন।
আরো পড়ুনঃ-  রাজশাহীর বিখ্যাত খাবার - রাজশাহীর বিখ্যাত মিষ্টি

সুন্দরবন ভ্রমন জাহাজ

সুন্দরবন খুবই সুন্দর একটি জায়গা, নাম শুনেই বুঝতে পারছেন। তবে অনান্য জায়গায় ভ্রমনের থেকে সুন্দরবন ভ্রমনটা একটু আলাদা। কারণ এখানে ভ্রমন করতে হলে বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। তবে ট্রাভেল এজেন্সির সাহায্য নিয়ে ভ্রমন করলে, সুন্দরবন ভ্রমন সহজভাবে করা যায়। জাহাজে করে সুন্দরবন ভ্রমন খুবই চমৎকার একটি বিষয়। সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য ছোট বড় সুন্দর সুন্দর জাহাজ বা শীপ ভাড়া করতে হয়। থাকা খাওয়ার সুন্দর ব্যবস্থাপনা জাহাজেই করা থাকে। জাহাজের মধ্যেই রান্না করা হয়, তাই গরম গরম খাবার সেখানে পরিবেশন করা হয়।

জাহাজ বা শীপে সুন্দরবন ভ্রমন খরচ খাবারের মান ও কেমন জাহাজ ভ্রমনের জন্য নিবেন তার ওপর নির্ভর করে। মাঝারি ধরনের ট্যুর  করতে জাহাজ ভাড়া সাধারণত ৬ থেকে ৮ হাজার মতো খরচ হয়ে থাকে। এর  থেকে ভালো মানের জাহাজ নিলে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। তবে ৪০ জন মতো একটি লঞ্চ নিলে ভাড়া কম হবে। সেক্ষেত্রে ৫০০০ টাকার মধ্যে ৩ দিনের সফর করাও সম্ভব হবে।

সুন্দর বন ভ্রমন গাইড

সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময়

অরণ্যপ্রেমিদের জন্য খুবই পচ্ছন্দের একটি জায়গা হলো সুন্দরবন। চারদিকে সবুজের সমারহ, বাতাসে গাছের শব্দ, সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন, অসংখ্যা পশুপাখির আনাগোনায় অপরূপ রূপ নিয়ে সজ্জিত সুন্দরবন। সুন্দরবনে রয়েছে ৩৩০ প্রজাতির গাছ, ২৭০ প্রজাতির পাখি, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির বন্যপ্রানীসহ রয়েছে ২১০ প্রজাতির মাছ। এসব পশুপাখি ও বনের দৃশ্য দেখতে ছুটে আসে দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা। সুন্দরবন ভ্রমন যারা করতে চান, অনেকেই জানতে চান সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময় কখন। তো চলুন জেনে নিন সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময় কখন।

প্রত্যেক ঋতুতে সুন্দরবনের আলাদা আলাদা সৌন্দর্য ফুটে উঠে। তবে শীতকাল সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য উপযুক্ত সময়। এ সময় নদী ও সমুদ্র শান্ত থাকে যার কারণে ঘুরে বেড়ানো সুবিধা হয়। সুন্দরবনের সবগুলো দর্শনীয় স্থান ভালোভাবে ঘুরে দেখা সুবিধা হয় এ সময়। তাই শীতকালে, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস  পর্যন্ত সুন্দরবন ভ্রমন করার জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়।

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনিও উপভোগ করে আসুন। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন, বানরের খেলা, কুমিরের চলা, হরিণের সুন্দর চোখ, কাঠের তৈরি রাস্তায় হেঁটে বনের দৃশ্য দেখা একটি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, যেগুলোর স্মৃতি অন্তরে গেঁথে থাকবে আজীবন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

সুন্দর বন ভ্রমন গাইড – সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি সুন্দর বন ভ্রমন গাইড – সুন্দরবন ভ্রমনের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment