রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন – কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত

সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম আমাদের সুস্থ শরীরের চাবিকাঠি। ব্যস্ত জীবনে  অনেকেই ঘুম নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। পুষ্টি ও ব্যয়ামের পাশাপাশি ঘুম আমাদের শরীর সুস্থ রাখে। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে , কাজ ভালো করতে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম শরীর , মন, মস্তিষ্ক ঠিক রাখে। তবে শুধু ঘুমালেই শরীর সুস্থ থাকবে তা নয়। ঘুমানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক সময় এবং পর্যাপ্ত ঘুম। রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন? শরীর ফিট রাখতে ঠিক কতক্ষন ঘুম দরকার? আমাদের অনেকের এসব বিষয়ে ধারনা নেই। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ঘুমানোর সঠিক সময় ও কত ঘন্টা ঘুমাবেন বিষয়গুলো জানতে পারবেন। চলুন বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি।

রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন

সুস্থ মানুষের কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত

সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থকর ঘুম। কিন্তু মানসিক দুশ্চিন্তা, অস্বাস্থকর খাদ্যভ্যাস, কর্মজীবনের ব্যস্ততা বিভিন্ন কারনে ঘুমের ওপর প্রভাব পড়ে। শরীর পর্যাপ্ত ঘুম পায় না। ঘুম কম হবার কারনে শারিরিক ভাবে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কম ঘুমের কারনে ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, মোটা হয়ে যাওয়া, শরীর দূর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া যেন আধুনিক তারুন্যের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট। রাত ১২ টা, ২ টা এমনকি অনেকেই আছে যারা সকালের দিকে ঘুমায় আর দুপুরে ঘুম থেকে উঠে। ঘুম আমাদের জীবনে স্থিতি দেয়। হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়। শারিরিক, ,মানসিক ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। শরীর সুস্থ থাকতে মোট সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ ঘুমানো উচিত। আমরা অনেকেই ঘুমের চেয়ে পরিশ্রমকে বেশি গুরত্ব দিয়ে থাকি। তবে এটা ভূল ধারনা। সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখতে ঘুম অত্যান্ত গুরত্বপূর্ন। বয়সভেদে ঘুমের চাহিদা আলাদা আলাদা। শিশুদের একটু বেশি ঘুমাতে হয় প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়। চলুন জেনে নিই বয়স অনুযায়ী  প্রতিদিন কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

  • নবজাত থেকে ৩ মাস বয়সি শিশুদের  ১৪ থেকে ১৭ ঘন্টা ঘুমানো উচিত, ১৯ ঘন্টার বেশি নয়
  • ৪  থেকে ১১  মাস বয়সের শিশুদের জন্য ১০ ঘন্টা ঘুমানো উচিত, সর্বচ্চো ১৮ ঘন্টা
  • ৩ থেকে ৫ বছর বয়সিদের জন্য  ১০ থেকে ১৩ ঘন্টা ঘুমানো উচিত
  • ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সিদের জন্য ৯ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমানো উচিত
  • ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের জন্য ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমানো উচিত
  • ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সিদের জন্য ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত
  • ২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সিদের জন্য ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত
  • ৬৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সিদের জন্য ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত

রাতে দেরি করে ঘুমালে কী কী ক্ষতি হয়

সারাদিনের পরিশ্রম শরীরকে ক্লান্ত করে ফেলে। রাতে ঘুমালে সেই ক্লান্তি দূর হয়। সঠিক ঘুম আপনার শরীরে শক্তি এনে দেয়। রাত ৯ টার মধ্যে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ভোর ৪ টায় ঘুম থেকে ওঠা বিজ্ঞান সম্মত। সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে ঘুমালে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। অনেক ভাবেই আমরা ঘুমিয়ে থাকি। একেক জনের ঘুমের ধরন একেক রকম। তবে বেশিশর ভাগ মানুষ পাশ ফিরে বেশি ঘুমায়। কেউ ডান দিকে আবার কেউ বাম দিক হয়ে ঘুমায়।

আরো পড়ুনঃ-  দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা - মুরগির ডিমের পুষ্টিগুন

কোনো কোনো গবেষকদের মতে ডান দিকে ফিরে ঘুমানো স্বাস্থের জন্যে ভালো। আবার  কোনো গবেষক বলে থাকেন বাম পাশ হয়ে ঘুমানো উচিত।  সুতরাং ডান অথবা বাম দুদিকেই ঘুমানো যায়। এতে আমাদের মস্তিষ্ক ভালো থাকে, হজম কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হয়।  তবে উপুড় হয়ে ঘুমানো ঠিক নয়। সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময় ঘুমালে আমাদের স্বাস্থের কোনো ক্ষতি হয়না। তবে এর ব্যতিক্রম হলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। চলুন জানা যাক রাত করে ঘুমালে শরীরের কি কি ক্ষতি হয়-

১. রাতে দেরি করে ঘুমালে দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডায়বেটিকস স্ট্র্রোক, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, উচ্চরক্তচাপ হয়ে থাকে। অনিয়মিত ঘুমের কারনে এসব সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

২. ওজন বৃদ্ধি পায়- নিয়মিত রাত জাগলে, রাতে দেরি করে ঘুমালে অস্বাস্থকর ওজন বৃদ্ধি পায়। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রাত জাগার কারনে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। ফলে ওজন বেড়ে যায়। ওজন বাড়ার ফলে শরীরে মারাত্মক রোগ বাসা বাঁধে।

৩. রাতে দেরি করে ঘুমালে মস্তিষ্কের ক্ষমতা হ্রাস পায়। সারাদিনের পরিশ্রম করে মানুষের যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন তেমনি রাতের বেলা মস্তিষ্কের আরাম নেওয়া প্রয়োজন। রাতের বেলা কাজ করলে, জেগে থাকলে ব্রেনের সমস্যা হয়।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়- রাতে দেরি করে ঘুমালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে খুব তারাতারি শরীরে বিভিন্ন  রোগের জন্ম নেয়।

৫. যৌন সমস্যা- শরীরে পর্যাপ্ত ঘুম না পেলে জন্ম নেয় বিভিন্ন যৌন সমস্যা। সঙ্গীর প্রতি তৈরি হয় অনীহা। পর্যাপ্ত ঘুম যৌন জীবনের উদ্দীপনা বাড়ায়।

৬. চেহারার সৌন্দর্য হারিয়ে যায় দেরি করে ঘুমালে নিয়মিক ত্বকের যত্ন নিলেও রাত জাগার ফলে মুখে ব্রন ও চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে।

৭. সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায় রাতে দেরি করে ঘুমালে। অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে মাস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়না। কর্মক্ষমতা কমে যায়। যেকোনো বিষয়ে জলদি সিধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।

দেরি করে ঘুমালে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। তাই চেষ্টা করবো দিনে সব কাজ শেষ করে, রাতে সঠিক সময় ঘুমাতে যাওয়া।

রাতে ঘুম না আসলে কি করা উচিত

সঠিক সময়ে সঠিক ঘুম স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারি। রাত ৯ টায় ঘুমিয়ে ভোর ৪ টার মধ্যে উঠে যাওয়া উচিত। পৃথিবীর প্রায় অনেকেই ঘুম না আসার সমস্যায় ভোগান্তিক। যারা রাত জেগে পড়াশোনা করে কিংবা অফিসের কাজ করে তাদের ঘুমাতে যেতে দেরি হয়। যখন ঘুম আসে তখন জোর করে জেগে থাকার চেষ্টা করে ফলে দেরি করে পড়ে আর ঘুম আসেনা। একজন স্বাভাবিক মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ঘুম আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং পরের দিনের জন্য প্রস্তুত করে। ঘুমের অভাবে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই বিশেষজ্ঞ আমাদের বারবার ঠিক সময়ে ঘুমাতে বলেছেন। রাতে ঘুম না আসলে নিচে বলা টিপসগুলো ফলো করবেন। তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে।

আরো পড়ুনঃ-  নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা - নিম পাতার ব্যবহার

১. যখন ঘুম আসবে সেই সময় ঘুমাতে যাবেন। তাহলে আপনার ঘুম হবে।

২. দিনের বেলা ৩০ মিনিট ঘুমানো উচিত। তবে ৯০ মিনিটের বেশি ঘুমাবেন না। দিনের ঘুম রাতের ঘুমে ব্যঘাত ঘটায়।

৩. ঘুম না আসলে শুয়ে শুয়ে বই পড়বেন। আশা করি ঘুমের সমস্যা দূর হবে এবং তারাতারি ঘুম আসবে।

৪. ঘুমানোর আগে শরীরকে প্রস্তুত করুন। ১ ঘন্টা আগে মোবাইল , ল্যাপটপ, টিভি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

৫. শোয়ার সময় ঘরে আলো জালাবেন না। ঘর অন্ধকার রাখুন। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন আশা করি অল্পসময়ের মধ্যে ঘুম আসবে।

৬. প্রতিদিন সময় করে যোগব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন।

ইসলামে ঘুমানো সঠিক নিয়ম

ঘুম আল্লাহর দেয়া একটি নেয়ামত। যাদের ঘুমের সমস্যা তারাই কেবল জানে ঘুম কত বড় নেয়ামত। একদিন না ঘুমালে আমাদের শরীর অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা ঘুমকে আমাদের বিশ্রামের বাহন করে পাঠিয়েছেন। আমাদের  প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ স. রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা অপছন্দ করতেন। রাত হলো বিশ্রামের জন্য উপযোগি সময়। আল্লাহ তায়ালা রাতকে বিশ্রামের উপযোগি করেই পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন-

আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরনস্বরূপ আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য। (সূরা নাবা, আয়াত: ৯-১১) 

ইসলামে ঘুমের সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জানা যাক। আমরা অনেকেই উপুড় হয়ে ঘুমাতে পছন্দ করি। মহান আল্লাহ তায়ালা এভাবে শোয়া পছন্দ করেন না। রাসূল সা. বলেছেন এভাবে জাহান্নামিরা শয়ন করে। চিত হয়ে শোয়া জায়েয রয়েছে। তবে ইসলাতে শোয়ার সঠিক পদ্ধতি হলো ডান কাত হয়ে শোয়া। রাসূল সা. সবমসময় ডান কাত হয়ে শুয়ে বিশ্রাম করতেন। ডান কাত হয়ে শুলে খাবার পরিপাকে সুবিধা হয় এবং বিজ্ঞানও তাই বলে।

সুন্নত নিয়মে ঘুমানো উচিত সুন্নতগুলো হলো-

১. ভালোভাবে ওজু করে ঘুমাতে যাওয়া

২. ভালোভাবে বিছানা ঝেড়ে নেওয়া

৩. ঘরের দরজা আল্লাহর নামে বন্ধ করা

৪. ঘুমানোর সময় , ঘুমাতে যাওয়ার দোয়া পড়ে ঘুমানো। দোয়াটি হলো- আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহয়িয়া

৫.ডান কাত হয়ে শোয়া, উপুড় হয়ে না শোয়া

৬. আল্লাহর তায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে ঘুমানো

৭. ঘুমানোর সময় আগুনের বাতি জালিয়ে না রাখা

৮. দুঃস্বপ্ন দেখলে পাস পরিবর্তন করে শোয়া, বাম দিকে তিন বার থুথু ফেলে, আয়ুযুবিল্লাহ হিমিনাশ সাইতুয়ানির রজিম পড়া।

এছারাও দোয়া, বিভিন্ন যিকির, সাইয়েদ্যুল ইস্তেগফার পাঠ করে ঘুমানো উচিত। এসব সুন্নত মেনে ঘুমানো উচিত। এশার সালাতের পর তারাতারি ঘুমিয়ে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি করে উঠে তাহাজ্জুদ ও ফজর সালাতের পর আর না ঘুমা। মহান আল্লাহ তায়ালা ভোরবেলা তার বান্দাদের বরকত ও প্রাচুর্য দান করে। যারা ভোরবেলা ঘুমায় তারা আল্লাহর বরকত থেকে বঞ্চিত হবে। তাই ফজর নামাজের পর ইসলামে ঘুমানো নিষেধ।

কোন কোন সময়ে ঘুমানো উচিত নয়

ঘুম আমাদের স্বাস্থের জন্য অনেক গুরত্বপূর্ন। ঘুম আমাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়। শারিরিক, মানসিক ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখে পর্যাপ্ত ঘুম। অনেকেই  আছে যাদের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসেনা আবার অনেকেই আছে যারা ইচ্ছে করে রাতে দেরিতে ঘুমায়। প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত এর কম ঘুমালে ক্যানসার, ডায়বেটিকস, স্থুলতা, উচ্চরক্তচাপ, হতাশা, স্মৃতি হারিয়ে ফেলা এমনকি আত্মহত্যার প্রবনতা বেড়ে যায়। রাত ৯টার মধ্যে ঘুমানো উচিত এর থেকে বেশি রাতে ঘুমানো ঠিক নয়। স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। সারারাত জেগে ভোরে ঘুমানো উচিত নয় রাতেই ঘুমানো উচিত।

আরো পড়ুনঃ-  দাঁতের রুট ক্যানেল কেন করা হয় - দাঁতের রুট ক্যানেল খরচ

এমন অনেক মানুষ যারা বিকেলে ঘুম ছাড়া থাকতে পারেনা। এ যেন প্রতিদিনের রুটিন। এটা মূলত তাদের ক্ষেত্রে বেশি হয় যারা রাতে ঠিক করে ঘুমায় না। যারা স্থুলতায় ভুগছেন তাদের বিকেলে ঘুমের কোনো উপকার নেই বরং আরও ক্ষতি। দিনের বেলায় ঘুমানো উচিত নয়। তবে দুপুরে খাওয়ার পর অল্প পরিমানে ৩০ মিনিট মতো বিশ্রাম নিবেন। দিনে স্বল্প পরিমানে ঘুমালে শরীরে কোনো সমস্যা হবেনা। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাবেন একই সময় ঘুম থেকে উঠবেন। রাতেই ঘুম উত্তম। দিনে ঘুমানো ঠিক নয় দিনের ঘুম রাতের ঘুমকে কেড়ে নেয়।

সকালে কখন ঘুম থেকে ওঠা উচিত

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া যেমন স্বাস্থের জন্য ভালো ঠিক তেমনি সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা স্বাস্থের জন্য ভালো। তবে সকালে সবাই ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে পারি না। এর কারন হলো রাতে দেরি করে ঘুমানো। আপনার শরীর পর্যাপ্ত ঘুম না পেলে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় ফলে সকালে উঠতে দেরি হয়ে যায়। তবে চেষ্টা করবেন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠার। সকালে তাড়াতাড়ি উঠলে আপনার শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে, নিজেকে পরের দিনের জন্য তৈরি করার সুযোগ পান। সুস্থ থাকার জন্য সকালে হাঁটা, ব্যায়াম করা, সময় নিয়ে নাস্তা করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই প্রয়োজন। আর এটা সম্ভব হয় সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে আপনার শরীর ফুরফুরে থাকবে। আলসেমি দূর হবে কাজে মন দিতে পারবেন।

প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা আলাদা, তাদের কাজকর্ম, শারিরিক গঠন, বয়স আলাদা তাই ঘুমের চাহিদাও আলাদা। আপনার বয়স যেমন সে অনুযায়ী ঘুমাবেন এবং সকালে সে অনুযায়ী ঘুম থেকে উঠবেন। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে না উঠলে আপনার শরীরে স্থায়ী ক্ষতি হয়। সকালে তাড়াতাড়ি উঠবেন এর মানে এটা না, যে আপনি কম সময় ধরে ঘুমাবেন। পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমাবেন। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।

ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকেও সকাল ঘুম থেকে ওঠা কল্যানময়। কারন ভোরবেলা বা দিনের শুরুটা হলো বরকতের সময়। রাসূল সা. বলেছেন-হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুর অংশ হলো বরকতময়।

সময় অনুযায়ী রাতে ঘুমাবেন এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠবেন। তবে ফজরের সালাত মিস করা যাবেনা। তার আগেই ঘুম থেকে উঠা জরুরি। যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে তারা সবার চেয়ে আলাদা। সফল ব্যক্তি তারা যারা সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস তৈরি করুন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন – কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত সেই সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন – কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত সেই সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment