ছেলেদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার - চুল পড়ার কারণ
ছেলে হোক কিংবা মেয়ে চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে উভয়েই ভোগেন। কিন্তু ছেলেরা চুলের যত্ন তেমন নেয় না যার ফলে চুলের নানাবিধ সমস্যা তাদের চুলে দেখা যায়। চুল পড়া কমাতে নিতে হবে চুলের যত্ন। ছেলেদের চুল পড়া কমাতে, চুলের যত্ন নিতে কি করতে হবে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো।
ছেলেদের চুল পড়ে যাচ্ছে? কি কারনে পড়ছে চুল এবং কিভাবে এর প্রতিকার করা যায় অনেকেই জানতে চান। আজকের আর্টিকেলে আমরা ছেলেদের চুল কেন পড়ে, চুল পড়া কিভাবে বন্ধ হবে এবং চুল কিভাবে ঘন হবে এসব তথ্য তুলে ধরেছি। চলুন আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিন ছেলেদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ
চুল আমাদের গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ। সুন্দর চুল শুধু কেবল নারীরায় চায় না, পুরুষরাও সুন্দর চুলের অধিকারী হতে চায়। তবে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে চুলের সমস্যা অল্প বয়স থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে। চুল কিন্তু সবার পড়ে, তবে প্রতিদিন যদি ৫০ থেকে ১০০ টিরও বেশি চুল পড়তে থাকে তখন সেটাকে চুল পড়ার সমস্যা বা রোগ বলা হয়। এ চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে চিন্তার শেষ থাকে না। সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে এ চুল পড়ার সমস্যা। কেন পড়ছে চুল? কি কারণে পড়ছে অল্প বয়সেই চুল? অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। বিভিন্ন কারণে অল্প বয়সে চুল পড়ে থাকে, তো জেনে নিন অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে।
- ছেলেদের চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা ধরেছেন-জিনগত কারণ। পরিবারের ইতিহাসে যদি কারও চুল পড়ে টাক হয়ে থাকে, তাহলে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- থাইরয়েডের সমস্যার কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। এ সমস্যা যদি কারও হয়ে থাকে তাহলে চুল ঠিকই পড়ে কিন্তু নতুন চুল গজাতে বাধাগ্রস্থ হয়।
- মাথার ত্বকে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে চুল পড়ে যায় এবং নতুন চুল গজায় না।
- অনেক ছেলেরাই চুলে রং করে, আর অতিরিক্ত চুলে রং করার কারণে চুল পড়ে যায়।
- অনেক ওষুধ আছে যেগুলো সেবন করার ফলে, পাশ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার কারনেও চুল পড়ে যায়।
- দীর্ঘদিন ধরে চুল অপরিষ্কার রাখার কারণে চুল পড়তে পারে।
- মাথার ত্বকে এলার্জি বা চর্মোরোগ থাকলে চুল পড়তে শুরু করে।
- অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য সেবন করার ফলে চুল পড়ে যায়।
- চুলের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকারক তেল ব্যবহারের কারণেও চুল পড়তে দেখা যায়।
- শরীরে পর্যাপ্ত পানির ঘাটতির কারনেও চুল পড়ে যায়।
- ভেজা চুল আঁচরালে অতিরিক্ত চুল পড়ে, কারণ ভেজা চুলের গোড়া নরম থাকে। যার কারণে ওই অবস্থাতে চুলে আঁচরালে চুল পড়ে যায়।
আরো পড়ুন: মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায় - মেছতা দূর করার ওষুধ
হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ
মানুষের সৌন্দর্যের একটি বিশেষ অংশ হলো চুল। অনেক ছেলেই আছে যাদের চুল পড়ে একেবারেই টাক হয়ে গেছে। তাই ছেলেদের চুল পড়তে শুরু করলে তাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে এবং চিন্তিত হয়ে পড়ে। চুল হঠাৎ করে পড়তে শুরু করছে, কেন পড়ছে বুঝতে পারছে না অনেকেই। চুল পড়া রোধ করতে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানা উচিত। তাহলে চুল পড়া প্রতিরোধ সহজেই করতে পারা যায়। চলুন তাহলে জেনে নিন হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি।
- বিশেষজ্ঞদের মতে হঠাৎ করে চুল পড়ার প্রধান কারণ হলো- অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন। এ হরমোন নারী অথবা পুরুষ সবার মধ্যে রয়েছে। তবে নারীদের তুলনায় পুরুষের এ হরমোন বেশি পরিমাণে রয়েছে আবার কোনো পুরুষের এ হরমোনের মাত্রা অতিরিক্ত থাকে। যার ফলে পুরুষের হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়তে দেখা যায়।
- চুলে ছত্রাক সংক্রামনের করলে চুলে খুশকি হতে দেখা যায়। চুলের একটি সমস্যা হলো চুলে খুশকি হওয়া। এ সমস্যা যদি প্রতিকার করা না যায়, তাহলে এক সময় হঠাৎ করে চুল পড়া শুরু করে।
- শরীরে যদি পুষ্টি ঠিকভাবে থাকে, তাহলে চুলের স্বাস্থও ভালো থাকে। তবে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পুষ্টিকর খাবার না থাকার কারণে হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়তে দেখা যায়।
- ক্ষতিকর ইউবি রশ্মি মুখের ত্বকের যেমন ক্ষতি করে, তেমনি চুলের জন্যও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সূর্যের আলো চুলের ওপর পড়লে, চুল ঝড়তে শুরু করে।
- অতিরিক্ত টেনশন আমাদের শরীরের স্বাস্থের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি চুলের স্বাস্থের জন্য সেটা ক্ষতিকর। অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তা করতে করতে এক সময় চুল পড়তে শুরু করে।
- চুলে ব্যবহৃত পন্যগুলো যদি ভালো না হয়, হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়তে শুরু করে।
- অনেকেই আছে চুলে কালার করতে পচ্ছন্দ করে এবং চুলে হিট দেয়। তবে চুলে হিট দেওয়া এবং চুলে কালার করাও চুল পড়ার একটি কারণ।
- দীর্ঘদিন ধরে কোনো রোগে আক্রান্ত হলে চুল উঠে যায়।
- এমন কিছু ওষুধ আছে যেমন প্রেসারের ওষুধ, হরমোনের ওষুধ, মানসিক অসুস্থতার ওষুধ ইত্যাদি এ জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে সেবন করলে হঠাৎ করে চুল পড়তে শুরু করে।
- জন্ডিস, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া এসব রোগ যদি হয়ে থাকে, তাহলে সে সময় হঠাৎ করে চুল পড়তে শুরু করে।
- দৈনন্দিন জীবনে পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম না করলে এবং অস্বাস্থকর জীবনযাপন করার ফলে চুল উঠে যায়।
- অতিরিক্ত ধুমপান ও মদ্যপান করার কারণে চুল পড়ে যায়।
উপরের কারণগুলো জেনে চুল পড়া প্রতিরোধ করার চেষ্টা করুন। এছারাও চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে কিছু বিষয় আছে যেগুলো আপনাদের জানতে হবে। তাই পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন আর এ বিষয়গুলো জেনে নিন।
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে প্রায় অনেকেই ভোগান্তিক। এ সমস্যার কোনো বয়স লাগে না, অল্প বয়স থেকেই চুল পড়া শুরু হয়ে যায় অনেকের। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে, কারণগুলো আগেই আলোচনা করেছি। তবে এ সমস্যার সমাধান কী? চুল পড়া সমস্যার সমাধানে বেশ কিছু নিয়ম আছে যেগুলো চুল পড়া কমাতে আমাদের জানতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান সম্পর্কে।
- অনেক সময় দেখা যায় শরীরে যদি পানির ঘাটতি থাকে তাহলে হঠাৎ করে চুল পড়া শুরু হয়ে যায়। তাই চুল পড়তে শুরু করলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন, চুল পড়ার সমাধান হবে।
- অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে জবা ফুল কার্যকারী একটি উপাদান। তাই চুল পড়া কমাতে জবা ফুলের পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়ায় নিয়মিত লাগাবেন, চুল পড়া কমে যাবে।
- অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যার সমাধানে ভিটামিন ই এর কার্যকারীতা অনেক। চুলের গড়ায় নিয়মিত ভিটামিন ই’ ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যাবে।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারনে চুল পড়ে যায়, সেটা আমরা অনেকেই জানি না। তবে এটি প্রমানিত যারা অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তা করে তাদের চুল পড়ে যায়। তাই চুল পড়তে শুরু করলে দুশ্চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন।
- পেঁয়াজের রস চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাই আপনি চুল পড়া কমাতে পেঁয়াজের রস চুলে ও চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন।
- চুল পড়া কমাতে মেহেদি পাতা ব্লেন্ড করে চুলে ও চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। এটি ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমবে আবার নতুন চুল গজাবে।
- অ্যালোভেরা জেল চুলের জন্য খুবই উপকারি একটি উপাদান। চুল পড়া কমাতে একদিন পর পর অ্যালোভেরা জেল চুলে লাগাবেন এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে নিবেন।
- মেথি চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। সারারাত মেথিকে ভিজিয়ে রেখে সকালে ভেজানো মেথি ব্লেন্ড করে চুলে ও স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ব্যবহার করবেন। এরপর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন, চুল পড়া কমে যাবে।
- অপরিষ্কার চুলে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায়, তাই চুল পড়া কমাতে চুল সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
- চুল পড়া কমাতে গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারেন। গবেষনায় প্রমানিত স্ক্যাল্পে গ্রিন টি মাসাজ করার ফলে চুল পড়া রোধ হয়।
- চুলে অতিরিক্ত খুশকি থাকলে চুল পড়ে যায়, তাই খুশকি দূর করতে অলিভ অয়েল তেল গরম করে নিয়ে তার সাথে পাতি লেবুর রস মিশিয়ে, মিশ্রনটি চুলের স্ক্যাল্পে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এটি লাগানোর পর ১ ঘন্টা মতো রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। চুলের খুশকি দূর হবে এবং চুল হবে ঝলমলে।
- চুল পড়া কমাতে খাবার তালিকায় বিশেষভাবে নজর দেওয়া জরুরি। কোন কোন খাবারগুলো চুল পড়া কমায় তা নিচের আলোচনা করেছি সে খাবারগুলো খাবার তালিকায় রাখবেন।
অতিরিক্ত চুল পড়তে শুরু করলে উপরের বলা নিয়মগুলো সঠিকভাবে করবেন। নিয়মিত নিয়মগুলো ফলো করলে খবু তাড়াতাড়ি চুল পড়া সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। যদি এ নিয়মগুলো করেও আপনার চুল পড়া না কমে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
আরো পড়ুন: স্থায়ীভাবে শ্যামলা ত্বক ফরসা করার উপায়
কি খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়
চুলের সমস্যা নিয়ে প্রায় অনেকেই চিন্তিত। কিন্তু চুল পড়ার অনেক কারণগুলো মধ্যে আমরা নিজেরাই দায়ী। অস্বাস্থকর জীবনযাপন ও শরীরে পুষ্টির ঘাটতি আমাদের চুল পড়ার একটি কারণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার না থাকলে আমাদের শরীর যেমন অসুস্থ হয়ে যায়, তেমনি চুলও পড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এমন খাবার রাখতে হবে, যাতে আমাদের চুল পড়া বন্ধ হয় আবার শরীরও সুস্থ থাকে। এমন অনেক পুষ্টিকর খাবার আছে যেগুলো চুল পড়া বন্ধ করে, আর সে খাবারগুলো আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। আসুন জেনে নিই সে খাবারগুলোর সম্পর্কে যেগুলো খাওয়ার ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
মাছ: মাছ চুল পড়া বন্ধ করতে কার্যকারী একটি খাদ্য উপাদান, বিশেষ করে যে মাছগুলোতে ওমেগো থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে খাবার তালিকায় ওমেগো থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ রাখুন।
পালংশাক: পালংশাক শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থকর একটি সবজি। শুধু শরীরের জন্য এ সবজি উপকারি নয়, চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে এ খাবার বিশেষ ভাবে ভূমিকা রাখে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পালংশাক রাখবেন।
ওটস: ওটস এর মধ্যে ওমেগো ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের স্বাস্থের জন্য উপকারি। খাবার তালিকায় এ খাবার রাখলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুলের গোড়া মজবুত হয়।
বাদাম ও বিভিন্ন বীজ: কাঠবাদাম, আখরোট, তিসির বীজ, চিয়া বীজ এ ধরনের খাদ্য উপাদানগুলো খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়। এ খাবারগুলোতে থাকা ওমেগো ৬ ফ্যাটি এসিড চুল পড়া কমায়। তবে এ খাবারগুলো অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।
হলুদ ও কমলা রঙের সবজি এবং ফলমূল: চুল পড়া বন্ধ করতে এ জাতীয় খাবারগুলোর মধ্যে মিষ্টি আলু, গাজর, আম, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়ো খাবেন। এ জাতীয় খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ’ রয়েছে যা চুল পড়া বন্ধ করে এবং নতুন চুল গজায়।
দই: দই এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি’ ও প্রোটিন যা নিয়মিত খেলে চুল ওঠা বন্ধ হবে।
সবুজ শাকসবজি: চুলে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে, চুল ঝড়ে যায়। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। টাটকা ও সবুজ শাকসবজি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে এ জাতীয় খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
গাজর: গাজর খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি, শরীরের সাথে সাথে চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে গাজরের ভূমিকা রয়েছে। গাজরে থাকা বেটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ’ চুলের গড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোর মধ্যে প্রচুর পরিমানে ফলিক এডিস রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
উপরের খাবার গুলো খাবার তালিকায় রাখবেন, চুল পড়াসহ চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে এবং চুলের স্বাস্থ ভালো থাকবে।
চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়
চুল ভালো রাখতে নিতে হবে চুলের সঠিক যত্ন। যত্নের অভাব ও আমাদের ভুল জীবনযাপন চুল পড়ার প্রধান কারন। চুলের সঠিক যত্নের অভাবে চুল রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে ঝড়ে যায় এবং মাথা টাক হয়ে যায়। অল্প বয়সে চুল পড়া, মাথায় টাক খুবই অস্বস্থিকর ও লজ্জাজনক বিষয়। তাই চুল পড়া কমাতে নিতে হবে চুলের সঠিক যত্ন। আপনিও কি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাই ভুগছেন? চুল পড়ে যাচ্ছে, কিভাবে চুলের যত্ন নিবেন এবং চুল ঘন করবেন , নিশ্চয় জানতে চান? তো চলুন জেনে নিন চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায় কি।
- নারিকেল অথবা অলিভ অয়েল তেলের সাথে মেথি কিছুক্ষন ভিজিয়ে রেখে, সে তেল চুলে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ করার পর কিছুক্ষন রেখে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল ঘন হবে।
- একটি ডিম ভেঙে তার সাথে ২ চা চামচ অলিভ অয়েল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে হেয়ার প্যাক বানিয়ে নিন। এরপর এ প্যাকটি আপনার চুল ও চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে ৪০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এ প্যাকটি ব্যবহারে আপনার চুল পড়া কমবে এবং চুল ঘন হবে।
- চুলপড়া কমাতে আমলকি খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। আমলকি ব্লেন্ড করে চুলে ও চুলের গোড়ায় নিয়মিত লাগালে চুল পড়া কমে যাবে, নতুন চুল গজাতে শুরু করে এবং চুল ঘন হবে।
- চুল পড়া কমাতে ক্যাস্টর অয়েল রাতে চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এরপর সকালে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। নিয়মিত এ টিপসটি ফলো করলে চুল পড়া কমবে সাথে নতুন চুল গজিয়ে চুল ঘন হবে।
- চুল পড়া কমাতে চুলের গোড়ায় আলুর রস ব্যবহার করবেন। আলুর রস চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিট মতো রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন চুল পড়া কমবে ও চুল ঘন হবে।
- চুল ঘন করতে আদা বেশ ভূমিকা রাখে। তাই চুল পড়া কমাতে ও চুল ঘন করতে আদার রস বের করে চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এরপর ১৫ মিনিট মতো রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
- চুল ঘন করতে চাইলে চুল সবসময় পরিষ্কার রাখুন। কারণ চুল অপরিষ্কার থাকার কারণে ঝড়ে যায় এবং চুল পাতলা হয়ে যায়।
- অ্যামন্ড অয়েল চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে খুবই উপকারি একটি তেল। চুল পড়া কমাতে এ তেল হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ করবেন এবং ২০ মতো রেখে ধুয়ে নিবেন।
- চুল ঘন করতে প্রোটিন ও পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখুন।
উপরের বলা টিপসগুলো চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুল ঘন করতে ব্যবহার করুন, কিছুদিনের মধ্যে চুল পড়া কমে যাবে এবং চুল ঘন হবে।
আরো পড়ুন: চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়
কি কি খাবার খেলে চুল গজায়
আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে যেমন পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন তেমনি চুলের স্বাস্থ ঠিক রাখতেও পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। চুল স্বাভাবিকভাবে ঝড়ে পড়লে চিন্তার কোনো কারন নেই, তবে চুল ঝড়ে পড়ছে কিন্তু নতুন চুল গজায় না তখন সেটা চিন্তার বিষয়। কিছু খাবার আছে যেগুলো খাবার তালিকায় রাখলে নতুন চুল গজানো সম্ভব। খাবারগুলো খাওয়ার ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে হয় এবং নতুন চুল গজায়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি খাবার খেলে চুল গজায়।
বাদাম: চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম, কাজুবাদাম ইত্যাদি এগুলোর মধ্যে ওমেগো-৬ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। যা খাওয়ার ফলে নতুন চুল গজায় এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে।
ভিটামিন সি জাতীয় ফল: এ ধরনে যেকোনো ফল যেমন-পেয়ারা, লেবু, মালটা, আনারস, কামরাঙা এগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে চুল গজায়।
শসা: শসাতে থাকা সিলিকন ও সালফার চুল গজাতে সহায়তা করে। তাই নতুন চুল গজাতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় শসা রাখবেন।
মাংস: নতুন চুল গজাতে প্রোটিন খুবই ভালো কাজ করে। আর মাংস হলো প্রোটিনের একটি বড় উৎস তাই চুল গজাতে মাংস খাবার তালিকায় রাখবেন।
ডাল: নতুন চুল গজাতে ডাল খুবই কার্যকারী একটি খাবার। ডালে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন বি, ফলিক এসিড, প্রোটিন যা খাওয়ার ফলে নতুন চুল গজায়।
ডিম: নতুন চুল গজাতে ডিম খুবই ভালো কাজ করে। তাই নতুন চুল গজাতে ডিম খাবার তালিকায় রাখবেন।
পালংশাক: চুলের স্বাস্থ ভালো রাখতে পালংশাক চমৎকার একটি খাবার। পালংশাকের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান চুলের স্বাস্থ ভালো রাখে এবং নতুন চুল গজাতে ভূমিকা পালন করে থাকে।
আখরোট: আখারোটে প্রচুর পরিমাণে ওমোগে ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে, যা চুলের জন্য খুবই উপকারি একটি পুষ্টি উপাদান। আখরোট নিয়মিত খেলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন করে আবার চুল গজাতে সাহয্য করে।
নাশপাতি: চুল গজাতে নাশপাতি খুবই উপকারি একটি খাদ্য উপাদান, তাই খাবার তালিকায় নাশপাতি রাখবেন।
ছোলা: ছোলার মধ্যে আয়রন, প্রোটিন এবং জিংক রয়েছে, ছোলার মধ্যে এসব উপাদান থাকার ফলে ছোলা খেলে নতুন চুল গজায়। তাই আপনার চুল গজাতে খাবার তালিকায় ছোলা রাখুন।
পাকা টমেটো: পাকা টমেটো চুলের জন্য খুবই উপকারি একটি খাবার। চুল গজাতে পাকা টমেটোর জুস বানিয়ে খেতে পারেন।
আমলকি: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে, যা খাওয়ার ফলে নতুন চুল গজায়। তাই কয়েকটি আমলকি লবন দিয়ে চিবিয়ে খান চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারগুলো চুল বেড়ে ওঠা ও নতুন চুল গজাতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনার চুল গজাতে প্রতিদিন এ জাতীয় খাবারগুলো খাবেন।
মিষ্টি আলু: নতুন চুল গজাতে ভিটামিন এ’ ও বিটা ক্যারোটিন খুবই উপকারি পুষ্টি উপাদান। আর মিষ্টি আলুর মধ্যে এ পুষ্টি উপাদানগুলো থাকায়, এটি খেলে নতুন চুল গজায়।
স্বাস্থ্যোজ্জল চুলের জন্য, চুলের যত্নের পাশপাশি উপরের বলা খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন। শুধু চুলের যত্ন নিলে, চুলে তেল, শ্যাম্পু ব্যবহার করলেই সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জল চুল পাওয়া যায় না। চুলের যত্নের পাশাপাশি চুলকে সঠিক পুষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। তাই চুলের পুষ্টি জোগাতে উপরের বলা খাবারগুলো নিয়মিত খাবেন, চুলের স্বাস্থ ভালো থাকবে।
আরো পড়ুন: মুখের ব্রন দূর করার উপায় - ব্রন দূর করার ক্রিম
লেখকের শেষ বক্তব্য
ছেলেদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার - চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি ছেলেদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার - চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।