ক্ষুদ্র ঋণ হচ্ছে মূলত ছোট অংকের ঋণ যা সাধারণত দরিদ্র বা কম আয়ের মানুষজনকে দেওয়া হয়, যাদের ঐতিহ্যবাহী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন। এই ঋণগুলো উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বা ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য ব্যবহার করা হয়, যা তাদের দারিদ্র্য থেকে বের হতে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করে এটি সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষ বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে দেওয়া ঋণ।
এটি সাধারণত ব্যাংক বা ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে পাওয়া যায়। আজকের এই পোষ্টে ক্ষুদ্র ঋণ পেতে হলে আপনার কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, এরপরে আপনাকে কি কি কাগজপত্র যোগাড় করতে হবে এবং কিভাবে এই ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ক্ষুদ্র ঋণ কি?
ক্ষুদ্র ঋণ হল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প পরিমাণে ঋণ সুবিধা, যা তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করে। সাধারণত, এই ঋণগুলো জামানতবিহীন হয়ে থাকে এবং ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।
আরও বিস্তারিত বললে, ক্ষুদ্র ঋণ হলো স্বল্প আয়ের বা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ছোট আকারের ঋণ, যা তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করে। এই ঋণ সাধারণত প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আওতার বাইরে থাকা মানুষদের জন্য, যাদের কাছে জামানত বা ব্যাংকের অন্যান্য কঠোর শর্ত পূরণের সক্ষমতা থাকে না।
ক্ষুদ্র ঋণের মূল বৈশিষ্ট্য
- এই লোন মূলত দরিদ্র, ভূমিহীন, বিত্তহীন, বেকার যুবক এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এর প্রধান লক্ষ্য।
- ঋণের পরিমাণ সাধারণত খুব কম হয়, যা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু, কৃষি কাজ, পশুপালন, কুটির শিল্প কার্যক্রমে বিনিয়োগের জন্য দেয়া হয়।
- এই ঋণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিনা জামানতে প্রদান করা হয়।
- এই লোন এর মূল উদ্দেশ্য দারিদ্র্য বিমোচন করা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারীদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
- এই লোন সাধারনত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান এবং কিছু বিশেষায়িত ব্যাংক দিয়ে থাকে।
- এই লোনের কিস্তিগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হয়।
ক্ষুদ্র ঋণ হলো দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য একটি আর্থিক হাতিয়ার, যা তাদের ছোট আকারের বিনিয়োগের মাধ্যমে আয় বাড়াতে এবং দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে।
ক্ষুদ্র ঋণ কত প্রকার
ক্ষুদ্র ঋণ সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যা ব্যক্তি ও ছোট ব্যবসার আর্থিক চাহিদা মেটাতে সহায়তা করে। এর মধ্যে প্রধান প্রকারভেদগুলো হলো:
- মাইক্রো ক্রেডিট
- মাইক্রো সেভিংস
- মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স
- রেমিট্যান্স সেবা
উল্লিখিত চারটি ক্ষুদ্রঋণ ছাড়াও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে যেমন- কৃষি, ব্যবসা সম্প্রসারণ, শিক্ষা, আবাসন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও প্রদান করা হয়ে থাকে।
ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা
ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা প্রচলিত ব্যাংক ঋণের চেয়ে অনেক সহজ এবং মূলত দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য। জামানত বা জটিল কাগজপত্র ছাড়াই সাধারণত এই ঋণ পাওয়া যায়। আসুন ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার জন্য সাধারনত আপনার যেগুলো যোগ্যতা থাকতে হবে তা জেনে নেই।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- সাধারণত ১৮ থেকে ৫৫/৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন।
- আবেদনকারীর কাজের সাথে জড়িত থাকা প্রয়োজন, তা ক্ষুদ্র ব্যবসা, কৃষি, পশুপালন, কুটির শিল্প বা অন্য কোনো উৎপাদনশীল কার্যক্রম হোক।
- গ্রামীণ ব্যাংক বা ব্র্যাকের ক্ষেত্রে, ঋণ পাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়া আবশ্যক। এর জন্য প্রাথমিক কিছু সঞ্চয় জমা দিতে হয়।
- কোনো গুরুতর অপরাধমূলক কাজে জড়িত না থাকার শর্ত থাকতে পারে।
ক্ষুদ্র ঋণের মূল ভিত্তি হলো আস্থা এবং ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি। যেহেতু জামানত লাগে না, তাই আবেদনকারীর সততা এবং ছোট ব্যবসা পরিচালনার আগ্রহকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আপনি যে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী, তাদের নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করে বিস্তারিত যোগ্যতা এবং শর্তাবলী জেনে নেওয়া উচিত।
ক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার জন্য অনেক বেশি কাগজপত্র লাগে না। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ঋণ প্রক্রিয়া সহজ রাখতে সহায়তা করে থাকে। তবে, কিছু সাধারন কাগজপত্র এবং তথ্য অবশ্যই প্রয়োজন হবে। যেমনঃ
- আবেদনকারী জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২-৩ কপি ছবি
- আপনার ইউটিলিটি বিলের কপি লাগবে
- ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত পূরণকৃত আবেদন ফরম ।
- যদি একটু বড় অঙ্কের ঋণের জন্য জামিনদার প্রয়োজন পড়ে তাহলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবির প্রয়োজন হবে।
ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে আয়ের প্রমাণ হিসেবে সাধারণত বেতন স্লিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্টের প্রয়োজন হয় না। তবে, ঋণ আবেদনকারীকে তার আয়ের উৎস সম্পর্কে তথ্য দিতে হয়।
আবার ঋণটি যদি কোনো নির্দিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসা বা প্রকল্পের জন্য নেওয়া হয়, তবে সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত মৌখিক বর্ণনা বা একটি লিখিত চাওয়া হতে পারে। যেমন: আপনি কী ধরনের ব্যবসা করতে চান, কত টাকা বিনিয়োগ করবেন, কীভাবে আয় হবে ইত্যাদি।
ক্ষুদ্র ঋণ কিভাবে পাওয়া যায়
ক্ষুদ্র ঋণ মূলত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান এবং কিছু বিশেষায়িত ব্যাংক এর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এই ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। ক্ষুদ্র ঋণ যেভাবে পাবেন তা নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলঃ
নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করা: প্রথমে আপনার এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন। এরপরে সেখানে গিয়ে ক্ষুদ্র ঋণের ধরন, উদ্দেশ্য, সুদের হার, পরিশোধের মেয়াদ এবং যোগ্যতা সম্পর্কে জেনে নিন।
সদস্য হওয়া ও দল গঠন করা: গ্রামীণ ব্যাংক বা ব্র্যাকের মতো অনেক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে ঋণ পেতে হলে আপনাকে তাদের সদস্য হতে হবে। এর জন্য সাধারণত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রাথমিক সঞ্চয় জমা দিতে হয়।
আবেদনপত্র পূরণ করা: প্রাথমিক যোগাযোগের পরে ঋণের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে ফরমটি সাধারণত মাঠকর্মীর সহায়তায় পূরণ করতে হয়। ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য, আয়ের উৎস, ঋণের উদ্দেশ্য এবং পরিশোধের পরিকল্পনা উল্লেখ করতে হয়।
কাগজপত্র জমা দেওয়া: পূরণ করা আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সাধারণত যে কাগজপত্রগুলো চাওয়া হয় তা আমরা ইতিমধ্যে উপরে আলোচনা করেছি। আপনারা ভালোভাবে দেখে নিবেন কিংবা প্রয়োজনে মাঠকর্মীর সাথে কথা বলে আরও অন্যান্য কাগজপত্র লাগবে কিনা তা জেনে নিতে হবে।
যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া: ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আবেদনকারীর বাড়ি, পরিবার এবং প্রস্তাবিত ব্যবসার স্থান পরিদর্শন করে থাকেন। তারা আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা, ঋণের প্রকৃত প্রয়োজনীয়তা এবং পরিশোধের সক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করেন।
ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ: সকল যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সন্তুষ্ট হলে ঋণের আবেদন অনুমোদন করে ঋণের অর্থ নগদ বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঋণ পরিশোধ: ঋণ বিতরণ হওয়ার পর, চুক্তি অনুযায়ী সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিস্তিগুলো সাধারণত প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত দিনে জমা দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সততা, ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি এবং দলের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো প্রশ্ন বা উদ্বেগের জন্য সরাসরি সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে যেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান / এনজিও: এগুলোই বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের প্রধান মাধ্যম। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (MRA) কর্তৃক নিবন্ধিত হয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়। কিছু উল্লেখযোগ্য এবং শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান হলো:
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ব্র্যাক
- আশা
- টিএমএসএস
- ব্যুরো বাংলাদেশ
- উদ্দীপন
- শক্তি ফাউন্ডেশন
- জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন
- আরডিআরএস বাংলাদেশ
- সিদীপ
- প্রশিকা
- ইপসা
- পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন
বিশেষায়িত ব্যাংক
- কর্মসংস্থান ব্যাংক
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
- রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক
- বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড
কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে যেমন সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক – এরাও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দিতে এবং তাদের অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ক্ষুদ্র ঋণের সুবিধা
ক্ষুদ্র ঋণ দরিদ্র এবং স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক হাতিয়ার। প্রচলিত ব্যাংক ঋণের সুবিধা থেকে বঞ্চিতদের জন্য এটি নতুন সুযোগ তৈরি করে। ক্ষুদ্র ঋণের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা রয়েছে, যা নিচে আলোচনা করা হলো:
দারিদ্র্য বিমোচন করে: ক্ষুদ্র ঋণের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো দরিদ্র মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা। এটি ছোট ছোট বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে, যেমন – ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণ, কৃষি কাজ, পশুপালন বা কুটির শিল্পে অর্থায়ন। এর মাধ্যমে যারা লোন নেয় তারা নিজের আয় বাড়াতে পারেন, যার ফলে দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
আর্থিক সুবিধা: অন্তর্ভুক্তি যাদের জামানত বা ব্যাংকের কঠোর শর্ত পূরণের সক্ষমতা নেই, তারাও এই ঋণের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা পান। এটি সমাজে আর্থিক সমস্যা কমিয়ে নিয়ে আসতে ভূমিকা রাখে।
নারীর ক্ষমতায়ন: বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের প্রধান সুবিধাভোগী হলেন নারীরা। ক্ষুদ্র ঋণ নারীদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করে। এই লোনের মাধ্যমে নারীরা ঘরে বসেই ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যা তাদের জন্য আয়ের অন্যতম একটি উৎস তৈরি করে।
জামানতবিহীন ঋণ: ক্ষুদ্র ঋণের একটি বড় সুবিধা হলো বিনা জামানতে লোন গ্রহণ করা যায়। ফলে দরিদ্র মানুষ, যাদের কোনো সম্পত্তি বন্ধক রাখার মতো নেই, তারাও ঋণ পেতে পারেন।
সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়া: প্রচলিত ব্যাংক ঋণের তুলনায় ক্ষুদ্র ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং দ্রুত হয়। জটিল কাগজপত্র বা দীর্ঘ অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না। স্থানীয় কার্যালয় বা মাঠকর্মীদের মাধ্যমে ঋণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সুবিধাজনক।
নিয়মিত কিস্তি পরিশোধের নমনীয়তা: ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তিগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হয়। ছোট ছোট কিস্তি পরিশোধ করা দরিদ্র মানুষের জন্য তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি হয়: এই ঋণ অসংখ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করতে সাহায্য করে, যারা স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখেন। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয় এবং গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।
ক্ষুদ্র ঋণ একটি শক্তিশালী হাতিয়ার যা দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
লেখকের শেষ মতামত
পরিশেষে বলব, ক্ষুদ্র ঋণের মূল ভিত্তি হলো আস্থা এবং ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি। এই লোন নিতে যেহেতু জামানত লাগে না, তাই আবেদনকারীর সততা এবং ছোট ব্যবসা পরিচালনার আগ্রহকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আপনি যে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী, তাদের নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করে বিস্তারিত যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং শর্তাবলী জেনে নেওয়া উত্তম।