ওমরা হজ করতে কত দিন লাগে ও ওমরা হজের খরচ কত

ওমরাহ হলো একটি পবিত্র সফর যা আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক দারুণ সুযোগ। এর মাধ্যমে একজন মুসলিম তার পাপ থেকে মুক্তি পায়, তার রিজিক বৃদ্ধি হয় এবং সে আল্লাহর সম্মানিত মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করে। এটি একজন মুমিনের ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং তাকে আরও ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরণা যোগায়।

ওমরা হজ করতে কত দিন লাগে

বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ পালনের খরচ নিয়ে আমাদের অনেকের মনে জাগে নানা প্রশ্ন, অনেকে আবার ওমরাহর খরচ নিয়ে বিভ্রান্তিতেও ভুগে থাকেন। বাংলাদেশ থেকে ওমরাহর খরচ নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর।এই আর্টিকেলে আমরা ওমরাহর খরচ নিয়ে সেসকল বিষয়ে সব প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

ওমরা হজ কি?

ওমরাহ হলো ইসলামের একটি বিশেষ ইবাদত, যা মূলত আল্লাহকে খুশি করার জন্য পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে কিছু নির্দিষ্ট কাজ করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। অনেকে এটিকে “ছোট হজ” হিসেবেও বলে থাকেন। এটি হজের মতো দীর্ঘ ও কঠিন নয়। ওমরাহ সাধারণত কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সম্পন্ন করা যায়। বছরের যেকোনো সময়ে করা যায়: হজের মতো এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। হজের সময় ছাড়া (যিলহজ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত) বছরের যেকোনো দিন ওমরাহ করা যায়। আর্থিকভাবে ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ বা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ওমরাহ হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, যা পালন করলে প্রচুর সওয়াব পাওয়া যায় এবং জীবনের পাপ মুছে ফেলা যায়।

ওমরা হজ করতে কত দিন লাগে

ওমরাহ হজ করতে আসলে খুব বেশি সময় লাগে না, কিন্তু ভ্রমণের পুরো প্রক্রিয়াটা নির্ভর করে আপনি কোন প্যাকেজ নিয়ে যাচ্ছেন তার উপর। ওমরাহর জন্য সাধারণত ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিভিন্ন প্যাকেজ থাকে। বেশিরভাগ প্যাকেজগুলো ৭ দিন থেকে শুরু করে ১৫ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সংক্ষিপ্ত প্যাকেজে অর্থাৎ যারা ৭-১০ দিন সময়ের মধ্যে ওমরাহ সেরে আসতে চান, তাদের জন্য এই প্যাকেজগুলো ভালো। এই প্যাকেজে মক্কা এবং মদিনায় নির্দিষ্ট কিছু দিন থাকার ব্যবস্থা থাকে। সাধারণ প্যাকেজ অর্থাৎ ১০-১৫ দিন সময়ে আপনি ওমরাহ পালনের পাশাপাশি মক্কা ও মদিনার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখার এবং ইবাদত করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন।

ওমরাহর মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে খুব কম সময় লাগে। কিন্তু সৌদি আরবে যাতায়াত, থাকা এবং অন্যান্য পবিত্র স্থানগুলো ঘুরে দেখার জন্য সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিনের একটি প্যাকেজ বেছে নেওয়া হয়। আপনি আপনার সময় ও সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো একটি প্যাকেজ পছন্দ করতে পারেন।

ওমরা হজ করতে কত টাকা লাগে

অনেকেই জানতে চান বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গেল কিংবা ফ্যামিলির সাথে ওমরাহ পালনে কত খরচ হতে পারে। প্যাকেজের ধরন অনুসারে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহর খরচে তারতম্য হয়ে থাকে। আমরা প্যাকেজের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন খরচ নিয়ে একটি পরিষ্কার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরো পড়ুনঃ-  গরু জবাই করার নিয়ম ও দোয়া - ছাগল জবাই করার নিয়ম

১। সিঙ্গেল প্যাকেজ

সিংগেল প্যাকেজের আনুমানিক খরচ অনেকটা নিম্নরূপ হয়ে থাকে:-

সিংগেল প্যাকেজসর্বনিম্ন খরচসর্বোচ্চ খরচ
৭ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৩০,০০০ টাকা২,৫৫,০০০ টাকা
১০ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৫০,০০০ টাকা৩,৫৫,০০০ টাকা
১৩ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৫০,০০০ টাকা৩,২০,০০০ টাকা
১৪ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৩০,৫০০ টাকা৩,৬০,০০০ টাকা
১৫ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৩০,০০০ টাকা৩,৭০,০০০ টাকা
১৭ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৭০,০০০ টাকা৪,২৫,০০০ টাকা

চলুন, সিংগেল ওমরাহ প্যাকেজ গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

৭ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৩০,০০০ টাকা থেকে ১,৬৫,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ১,৫৫,০০০ টাকা থেকে ২,৩০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ১,৯৫,০০০ টাকা থেকে ২,৫৫,০০০ টাকা।

১০ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ১,৬০,০০০ টাকা থেকে ২,৩৫,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার বা তার চেয়ে বেশি। 

১৩ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ:- ১,৩০,০০০ টাকা থেকে ২,০০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ:- ১,৬০,০০০ টাকা থেকে ২,৩৫,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ:-  ১,৯৫,০০০ টাকা থেকে ৩,২০,০০০ টাকা।

১৪ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৩০,৫০০ টাকা থেকে ২,৫৫,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ২,০০,০০০ টাকা থেকে ৩,৪০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ:  ২,৫০,০০০ টাকা থেকে ৩,৬০,০০০ টাকা।

১৫ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৩০,০০০ টাকা থেকে ২,২০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ১,৬০,০০০ টাকা থেকে ৩,০০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ২,০০,০০০ টাকা থেকে ৩,৭০,০০০ টাকা।

১৭ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৭০,০০০ টাকা থেকে ১,৮০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ১,৯০,০০০ টাকা থেকে ২,০০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ২,১০,০০০ টাকা থেকে ৪,২৫,০০০ টাকা।

২। গ্রুপ বা ফ্যামিলি প্যাকেজ

গ্রুপ প্যাকেজে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন খরচ অনেকটা নিম্নরুপঃ

গ্রুপ প্যাকেজসর্বনিম্ন খরচসর্বোচ্চ খরচ
১৩ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,২০,০০০৩,২৫,০০০
১৪ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৮৫,০০০৮,২৫,০০০
১৫ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,২০,০০০২,৬০,০০০
১৬ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ১,৭৫,০০০৯,০০,০০০

চলুন, সিংগেল ওমরাহ গ্রুপ গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

১৩ দিনের গ্রুপ প্যাকেজ

  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,২০,০০০ টাকা থেকে ১,৮০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ:১,৬০,০০০ টাকা থেকে ২,৩৫,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ২,০০,০০০ টাকা থেকে ৩,২৫,০০০ টাকা

১৪ দিনের গ্রুপ প্যাকেজ

  • ইকোনমি প্যাকেজ: ১,৮৫,০০০ টাকা থেকে ৩,০০,০০০ টাকা।
  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ২,১৫,০০০ টাকা থেকে ৩,৬০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ২,৮৫,০০০ টাকা থেকে ৫,৩০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ৩,৬৫,০০০ টাকা থেকে ৮,২৫,০০০ টাকা।

১৫ দিনের গ্রুপ প্যাকেজ

  • ইকোনমি প্যাকেজ: ১,২০,০০০ টাকা থেকে ১,৯৫,০০০ টাকা।
  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ১,৯৫,০০০ টাকা থেকে ২,৫৫,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র ও প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ২,৬০,০০০ টাকা বা তার বেশি।
আরো পড়ুনঃ-  ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় - দ্রুত ধনী হওয়ার আমল

১৬ দিনের গ্রুপ প্যাকেজ

  • ইকোনমি প্যাকেজ: ১,৭৫,০০০ টাকা থেকে ২,৯০,০০০ টাকা।
  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ২,০০,০০০  টাকা থেকে ৩,৩০,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ৩,০৫,০০০ টাকা থেকে ৫,৮০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ৩,৮০,০০০ টাকা থেকে ৯,০০,০০০ টাকা।

১৭ দিনের গ্রুপ প্যাকেজ

  • ইকোনমি প্যাকেজ: ১,৯০,০০০ টাকা থেকে ৩,৭০,০০০ টাকা।
  • স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ: ২৪০,০০০  টাকা থেকে ৪,৮৫,০০০ টাকা।
  • সুপেরিয়র প্যাকেজ: ৪,৮০,০০০ টাকা থেকে ১০,৭০,০০০ টাকা।
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ৫,৬৫,০০০  টাকা থেকে ১৫,৬০,০০০ টাকা।

ওমরা হজ পালনের নিয়ম

ওমরাহ পালন করা আসলে খুবই সহজ এবং সুন্দর একটি ইবাদত। চলুন, আমরা সংক্ষেপে ওমরাহ পালনের নিয়মগুলো জেনে নিই। ওমরাহ মূলত চারটি প্রধান স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে:

  • ইহরাম বাঁধা
  • তাওয়াফ করা
  • সা’ঈ করা
  • মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা

এই ধাপগুলো শেষ করতে পারলেই আপনার ওমরাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

ইহরাম বাঁধা:

  • ওমরাহর প্রথম কাজ হলো নিয়ত করে ইহরামের পোশাক পরা।
  • পুরুষদের জন্য সেলাইবিহীন দুটি সাদা কাপড় পরতে হয়। একটি কোমরের নিচের অংশে এবং অন্যটি শরীরের উপরের অংশে পরতে হয়।
  • নারীদের জন্য নারীরা তাদের স্বাভাবিক শালীন পোশাকেই ইহরাম বাঁধতে পারেন।
  • পোশাক পরার পর ওমরাহর নিয়ত করতে হয় এবং মক্কায় পৌঁছানো পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে হয়।

তাওয়াফ করা

  • মক্কায় পৌঁছে মসজিদে হারামে গিয়ে তাওয়াফ শুরু করতে হয়।
  • কাবার পবিত্র হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করে কাবা শরিফকে আপনার বাম পাশে রেখে সাতবার প্রদক্ষিণ করতে হয়।
  • তাওয়াফ করার সময় যেকোনো দু’আ, জিকির বা কুরআন তিলাওয়াত করা যায়।
  • সাত চক্কর শেষ হলে মাকামে ইব্রাহীমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়।

সা’ঈ করা

  • তাওয়াফ শেষ হওয়ার পর সা’ঈ করতে যেতে হয়।
  • প্রথমে সাফা পাহাড় থেকে শুরু করে মারওয়া পাহাড়ের দিকে হেঁটে যেতে হয়।
  • সাতবার আসা-যাওয়া করার মাধ্যমে সা’ঈ সম্পন্ন হয়। সাফা থেকে মারওয়া গেলে একটি চক্কর হয়, এভাবে মোট সাত চক্কর দিতে হয়।

মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা

  • সা’ঈ শেষ হওয়ার পর ওমরাহর সর্বশেষ ধাপ হলো চুল কাটা।
  • পুরুষদের জন্য চুল পুরোপুরি মুণ্ডন করা (টাক করা) অথবা মাথার চুল ছোট করে ফেলা।
  • নারীদের জন্য চুলের ডগা থেকে সামান্য পরিমাণ চুল কেটে ফেলা।
  • চুল কাটার পর ওমরাহ সম্পন্ন হয়ে যায় এবং আপনি ইহরামের সব নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হয়ে যান।

এই চারটি ধাপ সঠিকভাবে পালন করলেই আপনার ওমরাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

ওমরা হজ পালনকারীরা যেসব প্রতিদান পাবেন 

ওমরাহ হজ পালন করলে একজন মুসলমান অনেক বড় প্রতিদান পান, যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হাদিসে বর্ণনা করে গেছেন। এই প্রতিদানগুলো শুধু পরকালের জন্যই নয়, দুনিয়ার জীবনেও এর প্রভাব দেখা যায়। চলুন, জেনে নিই ওমরাহ পালনকারীদের জন্য কী কী প্রতিদান অপেক্ষা করছে:

আরো পড়ুনঃ-  আরবিতে ১২ মাসের নাম - আরবি মাসের নাম সমূহ

পাপ মোচন: ওমরাহর সবচেয়ে বড় প্রতিদান হলো পাপ মোচন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “এক ওমরাহর পর আরেক ওমরাহ, উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের জন্য কাফফারাস্বরূপ।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) এর মানে হলো, যদি আপনি একবার ওমরাহ করার পর আবার ওমরাহ করেন, তবে এই দুই ওমরাহর মধ্যবর্তী সময়ে আপনার যত ছোটখাটো পাপ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা সেগুলো মাফ করে দেবেন। এটি এমন এক সুযোগ যা মানুষকে পাপমুক্ত হয়ে নতুন করে জীবন শুরু করার প্রেরণা জোগায়।

আল্লাহর মেহমান হিসেবে মর্যাদা লাভ: হজ ও ওমরাহ পালনকারীরা আল্লাহর সম্মানিত মেহমান। রাসুল (সা.) বলেছেন, “হজ ও ওমরাহ পালনকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। আল্লাহ তাদের আহ্বান করেছেন, তারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আর তারা তাঁর কাছে চেয়েছেন এবং তিনি তাদের দিয়েছেন।” (ইবনে মাজাহ) আপনি যখন আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর ঘরে যান, তখন তিনি আপনাকে বিশেষ সম্মান দেন। সেখানে আপনার করা প্রতিটি দোয়া তিনি কবুল করেন এবং আপনার চাওয়াগুলো পূরণ করেন।

দারিদ্র্য দূর ও রিজিক বৃদ্ধি: ওমরাহ শুধু আধ্যাত্মিক উপকারই দেয় না, বরং দুনিয়ার জীবনেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা ধারাবাহিকভাবে হজ ও ওমরাহ আদায় করতে থাকো। কেননা, এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেভাবে ভাটির আগুন লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।” (তিরমিজি) অর্থাৎ, ওমরাহ পালনের জন্য যে অর্থ খরচ হয়, আল্লাহ তাআলা তার চেয়ে বহুগুণ বেশি বরকত দিয়ে তা পূরণ করে দেন। এতে আমাদের জীবনে আর্থিক সচ্ছলতা আসে।

রমজানে ওমরাহ করলে হজের সমান সওয়াব: ওমরাহ সারা বছর করা গেলেও রমজান মাসে ওমরাহর বিশেষ ফজিলত রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “রমজান মাসে একটি ওমরাহ আদায় করা আমার সঙ্গে একটি হজ করার সমতুল্য।” (বুখারি ও মুসলিম) এর অর্থ এই নয় যে এটি ফরজ হজের বিকল্প, বরং সওয়াবের দিক থেকে এটি হজের সমান। তাই রমজান মাসে ওমরাহ করার জন্য মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়।

জিহাদের সমান মর্যাদা: একবার এক আনসারি সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে জিহাদের জন্য অনুমতি চাইলে, তিনি তাকে ওমরাহ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “ওমরাহ করা জিহাদের সমান।” এটি ওমরাহর গুরুত্বকে তুলে ধরে।

লেখকের শেষ মতামত

ওমরাহ করতে কত দিন লাগবে বা কত টাকা খরচ হবে, তা আমরা উপরে একটি কমপ্লিট ধারণা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। তবে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ, বাজেট এবং সময়ের ওপর নির্ভরশীল। আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে, যদি আপনি বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে প্যাকেজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি প্যাকেজ বেছে নিন।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment