অমিডন ১০ এর কাজ কি বিষয়টি যদি আপনার না জানা থাকে তাহলে এখনি জেনে নিন আমাদের আজকের এই আলোচনায়। কারণ আজকের পুরো আলোচনা জুড়ে থাকছে অমিডন ১০ এর কাজ কি, কিসের ঔষধ খাওয়ার নিয়মসহ অমিডন ট্যাবলেট সম্পর্কে একাধিক তথ্য। অমিডন যে শুধু উপকারিতা নিয়ে আসে তা কিন্তু নয় বরং অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
যে বিষয়গুলো সম্পর্কেও আপনি জানবেন আমাদের আজকের এই আলোচনায়। স্বাভাবিকভাবে যখন পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তখন কিন্তু চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকি অমিডন খেতে। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় অমিডন ১০ ট্যাবলেট সেবন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অমিডন ১০ এ থাকা মূল উপাদান ডমপেরিডন বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। মানব শরীরে অমিডন এর উপকারিতা অনেক।
অমিডন ১০ এর কাজ কি সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। অমিডন কিসের ঔষধ, কেন খায়, এর উপকারিতা, অমিডন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় কিনা, অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয়ে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অমিডন কিসের ঔষধ
অমিডন মূলত পাকস্থলী বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে চিকিৎসকেরা সেবন করার পরামর্শ দেন। অমিডন মূলত পাচনতন্ত্রের ঔষধ। অমিডন পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যারা পাকস্থলীর নানাবিধ সমস্যায় ভোগেন চিকিৎসকেরা তাদেরকে অমিডন ঔষধ সেবন করার পরামর্শ দেন। অমিডন ঔষধে থাকা উপাদান ডমপেরিডন পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে বমি বমি ভাব, অম্বল ও গ্যাসের সমস্যা দূর করতে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে, পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিকের প্রদাহ হ্রাস করতে, পাকস্থলীর চাপ কমাতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে, পাকস্থলীর কার্যক্রম উন্নত করতে অমিডন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অমিডন কেন খায়
অমিডন সাধারণত বমি ও বমি বমি ভাব কমানোর জন্য খাওয়া হয়। এর প্রধান কাজ হলো হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে পেটের অস্বস্তি দূর করা। সহজ কথায়, যখন আপনার পেটের কোনো সমস্যার কারণে বমি পেতে থাকে বা বমি হয়, তখন ডাক্তাররা এই ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দেন।
এই ঔষধটি সেবন করার ফলে এটি ‘বমি কেন্দ্র’ নামে পরিচিত মস্তিষ্কের অংশে উদ্দীপনাকে রাস বা ব্লক করে। এটি আপনার অন্তর থেকে আসা স্নায়ু বার্তা দমন করে এবং বমি ভাব বমি বমি অনুভব করা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অমিডন সাধারণত বমি ও বমি বমি ভাব কমানোর জন্য খাওয়া হয়। এর প্রধান কাজ হলো হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে পেটের অস্বস্তি দূর করা। সহজ কথায়, যখন আপনার পেটের কোনো সমস্যার কারণে বমি পেতে থাকে বা বমি হয়, তখন ডাক্তাররা এই ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দেন।
এক কথায়, অমিডন হলো এমন একটি ওষুধ যা বমি ও বমি বমি ভাবের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং হজমের প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে। এটি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়।
অমিডন ১০ এর কাজ কি
অমিডন আমাদের দেহের একাধিক সমস্যা সমাধান করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। চলুন বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে
- পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে
- পাকস্থলীতে চাপ কম করে
- ডোপামিনের প্রভাব কমায়
- মাথা ঘোরা সমস্যা গুলো প্রতিরোধ করতে পারে
- বমি বমি ভাব দূর করতে রয়েছে ভূমিকা
- গ্যাস্ট্রিকজনিত ব্যাথা গুলো কম করে
- গ্যাস্ট্রিক জাতীয় রিফ্লেক্স গুলোকে কম করতে পারে
- পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধি করতে রয়েছে বিশেষ ভূমিকা
অমিডন ট্যাবলেটের এর চাইতেও অনেক বেশি গুনাগুন রয়েছে। অমিডন ট্যাবলেট আমাদের শরীরের এ সমস্যাগুলোর চাইতেও অনেক বেশি সমস্যা দূর করে যা বলে শেষ করার মত নয়।
অমিডন এর উপকারিতা
অমিডন এর উপকারিতা অনেক যা বলে শেষ করার মত নয়। অমিডন ট্যাবলেটে থাকা উপাদান আমাদের পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসকেরা অমিডন ট্যাবলেট সেবন করার পরামর্শ দেন।
অমিডন একটি কার্যকর ওষুধ যা সাধারণত বমি এবং হজমজনিত সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এর উপকারিতাগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
বমি বমি ভাব দূর করে: অমিডন মস্তিষ্কের সেই অংশে কাজ করে যা বমি হওয়ার সংকেত পাঠায়। এটি সেই সংকেতকে আটকে দেয়, ফলে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার অনুভূতি কমে যায়। এটি মাইগ্রেন, বদহজম, বা অন্য যেকোনো কারণে হওয়া বমি ভাবের জন্য খুবই কার্যকর।
পাকস্থলীর অম্বল ও গ্যাস দূর করে: অমিডন পাকস্থলীর গতিশীলতা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়ে অন্ত্রের দিকে চলে যায়। খাবার পাকস্থলীতে বেশিক্ষণ জমে না থাকলে সেখানে গ্যাস বা অম্বল তৈরি হওয়ার সুযোগ কমে যায়।
পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে: এটি পাকস্থলী এবং অন্ত্রের পেশীগুলোকে সঠিকভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে সাহায্য করে। এর ফলে পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়, এবং খাবার হজম প্রক্রিয়া আরও মসৃণ হয়।
হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে: অমিডন পাকস্থলী থেকে খাবার দ্রুত এবং মসৃণভাবে অন্ত্রের দিকে ঠেলে দেয়। এর ফলে বদহজমের সমস্যা, যেমন—পেটে অস্বস্তি, ভরা ভরা ভাব, বা পেট ফাঁপার মতো লক্ষণগুলো কমে যায় এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
গ্যাস্ট্রিকের রিফ্লেক্স কমাতে সাহায্য করে: গ্যাস্ট্রিক রিফ্লেক্স বা GERD-এর কারণে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীর উপরের দিকে উঠে আসে, যার ফলে বুক জ্বালাপোড়া হয়। অমিডন খাদ্যনালীর নিচের দিকের পেশীকে শক্তিশালী করে, ফলে অ্যাসিড সহজে উপরে উঠে আসতে পারে না।
মাথা ঘোরা প্রতিরোধ করে: অনেকের ক্ষেত্রে মাইগ্রেন বা অন্যান্য রোগের কারণে মাথা ঘোরা এবং এর সাথে বমি বমি ভাব হয়। অমিডন বমির এই উপসর্গটি প্রতিরোধ করে, ফলে মাইগ্রেনের কষ্ট কিছুটা কম হয়।
পাকস্থলীতে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমায়: অমিডন বদহজম বা গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণে পাকস্থলীতে যে অস্বস্তি বা ব্যথা হয়, তা কমাতে সাহায্য করে। এটি হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রেখে ব্যথার কারণ দূর করে।
গ্যাস্ট্রিক ও বুকের জ্বালাপোড়া কমায়: গ্যাস্ট্রিকের কারণে অ্যাসিড যখন খাদ্যনালীতে ফিরে আসে, তখন বুকে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। অমিডন সেই অ্যাসিড ফিরে আসা প্রতিরোধ করে, ফলে বুকের জ্বালাপোড়া কমে যায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: এটি পাকস্থলীর কার্যকারিতা বাড়ানোর মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত এবং সঠিক হজম প্রক্রিয়া শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণ সহজ করে তোলে।
পাকস্থলীর হজম শক্তি উন্নত করে: অমিডন পাকস্থলীর পেশীগুলোকে ঠিকঠাক কাজ করতে সাহায্য করে, ফলে খাবার ভালোভাবে হজম হয়। এটি শুধু উপসর্গ কমায় না, বরং হজম প্রক্রিয়ার মূল সমস্যাটিরও সমাধান করে।
আপনার যদি উল্লিখিত সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই সেবন করার পূর্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। তাহলে আশা করি এই ওষুধের সঠিক উপকারিতা পেয়ে যাবেন।
অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
প্রতিটা ওষুধ সেবনের একটি সঠিক নিয়ম রয়েছে ঠিক তেমনি অমিডন ট্যাবলেট সেবনেরও সঠিক নিয়ম রয়েছে যা মেনে চলা জরুরি। অমিডন ট্যাবলেট কতটুকু খাবেন, কখন খাবেন এবং কতদিন খাবেন সেই বিষয়ে সহজ ভাষায় জেনে নেওয়া যাক।
কখন খাবেন? অমিডন ট্যাবলেট সাধারণত খাবারের ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে খেতে হয়। এটি খালি পেটে খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। কারণ, খালি পেটে ওষুধটি দ্রুত শোষিত হয় এবং এর কার্যকারিতা বেশি হয়। যদি আপনি এটি খাবারের পরে খান, তাহলে এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।
কতটুকু খাবেন?
- প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য: সাধারণত, একটি করে ট্যাবলেট (১০ মিলিগ্রাম) দিনে তিনবার খাওয়া হয়। তবে আপনার চিকিৎসক যদি অন্য কোনো পরামর্শ দেন, তাহলে সেই অনুযায়ী সেবন করা উচিত।
- শিশুদের জন্য: শিশুদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এটি তাদের ওজন ও বয়স অনুযায়ী নির্ভর করে। তাই শিশুদের অমিডন দেওয়ার আগে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। সিরাপ বা সাসপেনশন আকারে শিশুদের জন্য এটি বেশি প্রচলিত।
কতদিন খাবেন? সাধারণত, অমিডন ট্যাবলেট অল্প সময়ের জন্য, যেমন এক সপ্তাহের বেশি সেবন করা উচিত নয়, যদি না ডাক্তার আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য খেতে বলেন। বমি বা বমি ভাব কমে গেলে ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া ভালো। বেশিদিন ধরে বা বেশি মাত্রায় খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, অমিডন সেবনের আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা এবং রোগের ধরণ অনুযায়ী সঠিক মাত্রা ও সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবেন। আপনি যদি অন্য কোনো ওষুধ সেবন করে থাকেন, তবে তা ডাক্তারকে জানান। কারণ কিছু ওষুধের সাথে অমিডনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
অমিডন খাওয়ার আগে না পরে
অমিডন বা ডমপেরিডোন জাতীয় ওষুধ সাধারণত খাওয়ার আগে সেবন করা সবচেয়ে ভালো। কেন খাবার খাওয়ার আগে সেবন করবেন আসুন এই বিষয়ে ক্লিয়ার হয়ে নেই। এই ওষুধটি পেটের ভেতরের অংশকে দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করে। যদি আপনি এটি খাবারের আগে খান, তাহলে এটি পাকস্থলীকে খাবার হজমের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। ফলে খাবার হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং বমি বা বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
যখন পেট খালি থাকে, তখন ওষুধটি দ্রুত শোষিত হয় এবং কার্যকরভাবে কাজ করতে শুরু করে। খাবারের সাথে খেলে এর শোষণ প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, যার ফলে ওষুধের কার্যকারিতাও কমে যেতে পারে। বদহজমের কারণে বুক জ্বালাপোড়া বা বমি বমি ভাব হলে, এটি খাবারের ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে খেলে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং অস্বস্তি হয় না।
তাই, ডাক্তাররা সাধারণত পরামর্শ দেন যে, অমিডন ট্যাবলেট বা সিরাপ খাবারের ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে সেবন করা উচিত। তবে, যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা এবং রোগের ধরণ অনুযায়ী সঠিক সময় এবং মাত্রা নির্ধারণ করে দেবেন।
অমিডন খেলে কি মোটা হয়
অমিডন বা ডমপেরিডোন জাতীয় ওষুধ খেলে সাধারণত মোটা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই ধরনের ওষুধ শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য সরাসরি কোনো প্রভাব ফেলে না।
কেন ওজন বাড়ে না?
- হজমে সাহায্য: অমিডন মূলত বমি ও বমি বমি ভাব কমানোর জন্য কাজ করে। এটি পাকস্থলীর খাবারকে দ্রুত হজম করতে এবং অন্ত্রের দিকে ঠেলে দিতে সাহায্য করে। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, কিন্তু ওজন বাড়ানোর মতো কোনো কাজ এটি করে না।
- ক্ষুধা বৃদ্ধি করে না: কিছু ওষুধ আছে যা ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়, ফলে মানুষ বেশি খায় এবং মোটা হয়। কিন্তু অমিডন ক্ষুধা বাড়ানোর মতো কোনো কাজ করে না। তাই এটি খেলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
- শরীরের মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলে না: এই ওষুধটি শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়ায় এমন কোনো পরিবর্তন আনে না, যার ফলে চর্বি জমা হতে পারে বা ওজন বাড়তে পারে।
অমিডন ট্যাবলেট খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নেই। কেননা অমিডন ট্যাবলেটে সাধারণত কম পরিমাণে অমিডন থাকে যা শরীরের ওজন বাড়াতে উপযোগী নয়। শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য ক্যালরির প্রয়োজন হয়। আর এই ওষুধের কোন প্রকারের ক্যালোরি নেই বিধায় মোটা হওয়ার জন্য কার্যকরী নয়।
অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অমিডন একটি কার্যকর ওষুধ হলেও, এটি ব্যবহারের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে এসব সমস্যা দেখা যায় না। সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কম থাকে। অমিডনের সাধারণ ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো-
সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- রক্তে প্রােল্যাকটিনের মাত্রা বৃদ্ধি
- মেয়েদের স্তনের আকার বেড়ে যাওয়া
- মুখ শুকিয়ে যাওয়া
- মাথাব্যথা
- নার্ভাসভাব
- ঝিমুনি
- পাতলা পায়খানা
- ত্বকে লালচে ভাব বা চুলকানি
- হৃদরোগের সমস্যা ইত্যাদি।
অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অমিডন শরীরে প্রোল্যাকটিন নামক হরমোনের মাত্রা বাড়াতে পারে। এর ফলে পুরুষদের ক্ষেত্রে স্তন বড় হওয়া বা স্তন থেকে তরল নিঃসরণ হওয়া এবং নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্রে অনিয়ম বা স্তন থেকে দুধ নিঃসরণ হওয়া। কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। যেমন-
- অস্বাভাবিক পেশী সংকোচন বা নিয়ন্ত্রণ হারানো।
- কাঁপুনি বা হাত-পায়ের অস্বাভাবিক নড়াচড়া।
হৃদপিণ্ডের সমস্যা: এটি সবচেয়ে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। অতিরিক্ত মাত্রায় বা দীর্ঘ সময় ধরে অমিডন সেবন করলে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে, যা খুব বিপজ্জনক। বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ আছে, তাদের এই ঝুঁকি বেশি। যেকোনো ওষুধের মতো অমিডনেও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন-
- ত্বকে ফুসকুড়ি বা চুলকানি।
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
- মুখ, জিহ্বা বা গলা ফুলে যাওয়া।
যদি এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে ওষুধ সেবন বন্ধ করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
অমিডন সেবন করার সময় যদি আপনি কোনো অস্বাভাবিক বা গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় এবং সীমিত সময়ের জন্য ওষুধ সেবন করলে এই ধরনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
অমিডন এর দাম কত
অমিডন ১০ মিলিগ্রাম প্রতি পিচ এর দাম মাত্র ৩.৫০ টাকা। এটি ১৫টি ট্যাবলেটের একটি স্ট্রিপ হিসেবে বিক্রি করা হয় যার দাম ৫২ টাকা। তবে অমিডন এর মূল্য আমাদের দেশে বিভিন্ন দোকানে একটু কম বেশি হতে পারে।এই দামগুলো আনুমানিক এবং সময়, স্থান, বা ফার্মেসি ভেদে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। কেনার আগে ওষুধের দোকানে দাম জিজ্ঞেস করে নেওয়া ভালো।
লেখকের শেষ মতামত
অমিডন ১০ ট্যাবলেট একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ওষুধ, কিন্তু এটি কেবল তখনই ব্যবহার করা উচিত যখন আপনার ডাক্তার এটি ব্যবহারের পরামর্শ দেন। সঠিক মাত্রা এবং সময় মেনে চললে এটি বমি, বদহজম এবং পেটের অস্বস্তি থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। তবে, যদি আপনার কোনো গুরুতর বা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তবে এই ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নেওয়া উচিত।