শক্তি ফাউন্ডেশন লোন (আপডেট তথ্য) – শক্তি ফাউন্ডেশন লোন আবেদন

শক্তি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং ক্ষুদ্রলোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মূলত সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে। এটি একটি বহুমুখী উন্নয়ন সংস্থা যা ক্ষুদ্রলোনকে কেন্দ্র করে দরিদ্র, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন সহ শক্তি ফাউন্ডেশন লোন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল। তাই আপনারা যারা শক্তি ফাউন্ডেশন এর লোন সম্পর্কে জানতে চান কিংবা এই ফাউন্ডেশন থেকে লোন নিতে চাচ্ছেন তাদের এই আর্টিকেলটি অনেক উপকার হতে চলেছে। 

কারণ আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা শক্তি ফাউন্ডেশন লোন সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। তাই বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন কি

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন হলো একটি বিশেষ লোন যা বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হলো নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেয়া এবং তাদের ব্যবসায়িক সক্ষমতা বাড়ানো। শক্তি ফাউন্ডেশন নারীদের উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকে। 

এই ফাউন্ডেশনটি লোনের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও পরামর্শও দিয়ে থাকেন। যাতে নারীরা তাদের ব্যবসায়িক দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারে এবং লোন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। 

শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের প্রকারভেদ

শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের প্রকারভেদ মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। এই লোন নারীদের বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। এই ক্যাটাগরিগুলো নিচে ব্যাখ্যা করা হলো।

  • মাইক্রো লোন
  • মিডিয়াম ও লং টার্ম লোন
  • এন্টারপ্রাইজ লোন
  • বিশেষ প্রকল্প লোন

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন কারা পাবে?

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন হলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি দ্রুত, ডিজিটাল এবং সহজ শর্তের লোন সুবিধা, যা তাদের ব্যবসার চলতি মূলধন সংকট মেটাতে এবং ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারে সহায়তা করে। শক্তি ফাউন্ডেশন লোন মূলত বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে বা সম্প্রসারণ করতে চান। 

এই লোন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য আবেদনকারীদের নারী হতে হবে এবং তাদের যেকোন ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে। এছাড়াও শক্তি ফাউন্ডেশনের ই-লোন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা এবং শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং নিয়মিত লোন পরিশোধের সক্ষমতা।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন পাওয়ার যোগ্যতা

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। শক্তি ফাউন্ডেশন এই সংস্থা থেকে লোন পেতে হলে আবেদনকারীর যে সমস্ত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন তা নিতে ব্যাখ্যা করা হলো।

আরো পড়ুনঃ দিশা এনজিও লোন নেওয়ার যোগ্যতা দেখুন

  • আবেদনকারীকে নারী হতে হবে কেননা শক্তি ফাউন্ডেশন লোন নারীদের উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে।
  • আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • সাধারণত ১৮ থেকে ৫৫/৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন।
  • আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসায়ে যুক্ত থাকতে হবে।
  • ব্যবসার একটি ডিজিটাল উপস্থিতি এবং কার্যক্রমের প্রমাণ থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীকে একটি স্পষ্ট এবং বাস্তবসম্মত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর ব্যবসায়িক পরিকল্পনার স্বচ্ছ হতে হবে। 

উল্লিখিত যোগ্যতা পূরণ করলে যেকোন নারী শক্তি ফাউন্ডেশন ই-লোনের জন্য উপযুক্ত হতে পারবে। এবং তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপান্তর করে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন লাভ করতে পারেন।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন পাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের জন্যকিছু মৌলিক তথ্য ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। প্রাপ্ত তথ্য এবং সাধারণ ক্ষুদ্রলোন প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে, ই-লোন পাওয়ার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে:

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে।
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • ব্যবসা ইতিমধ্যে পরিচালনা করলে ব্যবসার নিবন্ধন কপি প্রদান করতে হবে।
  • একটি সক্রিয় ব্যাংক হিসাবের গত ৬ মাসের স্টেট্মেন্ট প্রদান করতে হবে। 
  • ব্যবসায়িক আয় প্রমাণ হিসেবে আপনাকে উপযুক্ত সনদপত্র প্রদান করতে হবে।
  • আপনি লোন কোন উদ্দেশ্য নিবেন এবং ব্যবসার পরিকল্পনা লিখিত প্রদান করতে হবে। 

এই কাগজপত্রগুলো সংগৃহীত হলে আবেদনকারীরা শক্তি ফাউন্ডেশনের অফিসে জমা দিতে পারেন। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ফাউন্ডেশন প্রয়োজনীয় যাচাইকরণ ও পর্যালোচনা করে লোন অনুমোদন করবে।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন আবেদন 

শক্তি ফাউন্ডেশন থেকে লোন নিতে হলে, প্রথমে তাদের শাখা অফিসে যোগাযোগ করে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পর, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্যাদি জমা দিতে হবে এবং যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে, লোন অনুমোদন করা হবে এবং লোন গ্রহীতাকে প্রদান করা হবে।  আসুন এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য ধাপে ধাপে জেনে নেই। 

আরো পড়ুনঃ পপি এনজিও লোন পদ্ধতি

নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করা: প্রথমে আপনার নিকটস্থ শক্তি ফাউন্ডেশনের শাখা অফিসে যা। এরপরে শাখা অফিসের কর্মীদের সাথে কথা বলুন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কোন ধরনের লোন আপনার জন্য উপযুক্ত হবে, লোনের উদ্দেশ্য, পরিমাণ, পরিশোধের মেয়াদ, সুদের হার এবং যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

সদস্য হওয়া ও দল গঠন করা: শক্তি ফাউন্ডেশন মূলত দলভিত্তিক লোন প্রদান করে, বিশেষ করে তাদের সাধারণ ক্ষুদ্র লোনের ক্ষেত্রে। লোন পাওয়ার আগে আপনাকে তাদের সদস্য হতে হবে। এর জন্য কিছু প্রাথমিক সঞ্চয় জমা দিতে হতে পারে।

আবেদনপত্র পূরণ করা: প্রাথমিক যোগাযোগের পরে লোনের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে ফরমটি সাধারণত মাঠকর্মীর সহায়তায় পূরণ করতে হয়। ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য, আয়ের উৎস, লোনের উদ্দেশ্য এবং পরিশোধের পরিকল্পনা উল্লেখ করতে হয়।

কাগজপত্র জমা দেওয়া: পূরণ করা আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সাধারণত যে কাগজপত্রগুলো চাওয়া হয় তা আমরা ইতিমধ্যে উপরে আলোচনা করেছি। আপনারা ভালোভাবে দেখে নিবেন কিংবা প্রয়োজনে মাঠকর্মীর সাথে কথা বলে আরও অন্যান্য কাগজপত্র লাগবে কিনা তা জেনে নিতে হবে। 

যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া: আবেদনপত্র ও কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর, শক্তি ফাউন্ডেশনের একজন মাঠকর্মী আপনার বাড়ি, পরিবার এবং আপনি যে কাজের জন্য লোন নিতে চান সেই স্থান পরিদর্শন করবেন।

লোন অনুমোদন ও বিতরণ: সকল যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে এবং আপনার লোনের আবেদন অনুমোদন করে, লোনের অর্থ প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় কার্যালয়ে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে, bKash এর মতো ডিজিটাল মাধ্যমেও লোনের অর্থ বিতরণ করা হয়, যা প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করেছে। কিছু লোনের ক্ষেত্রে ৭ দিনের মধ্যে ঋণ বিতরণ সম্ভব।

লোন পরিশোধ: লোন বিতরণের পর, চুক্তি অনুযায়ী সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে লোনের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিস্তিগুলো সাধারণত প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত দিনে বা সাপ্তাহিক সভায় মাঠকর্মীর কাছে জমা দেওয়া হয়। আপনি bKash অ্যাপের “মাইক্রোফাইন্যান্স” অপশন ব্যবহার করেও আপনার লোনের কিস্তি এবং সঞ্চয় জমা দিতে পারবেন। তবে এই লোন গ্রহণের পূর্বে আবেদনকারীরা ফাউন্ডেশনের অফিসে গিয়ে সরাসরি পরামর্শও করে নিবেন। এছাড়াও লোন পরিশোধের শর্তাবলী এবং সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করা উচিত।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের সুদের হার

শক্তি ফাউন্ডেশন, অন্যান্য ক্ষুদ্রলোন প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে ক্ষুদ্রলোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি এর নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। শক্তি ফাউন্ডেশন ই-লোনের সুদের হার কয়েকটি বিষয়ে নির্ভর করে যথা;

আরো পড়ুনঃ পপি এনজিও লোন সুদের হার ও পরিশোধ পদ্ধতি

  • লোনের প্রকারঃ আপনি কি ধরনের লোন গ্রহণ করতে চাচ্ছেন সেটার উপরে ভিত্তি করে সুদের হার ভিন্ন হতে পারে।
  • আর্থিক অবস্থাঃ আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা এবং ব্যবসায়িক পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে সুদের হার পরিবর্তিত হতে পারে।
  • বাজারের পরিস্থিতিঃ এছাড়াও বাজারের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করেও সুদের হার পরিবর্তিত হতে পারে।

সাধারণত, শক্তি ফাউন্ডেশন নারীদের জন্য অপেক্ষাকৃত কম সুদের হার প্রদান করে যাতে তারা সহজে লোন পরিশোধ করতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নির্দিষ্ট সুদের হার এবং অন্যান্য শর্তাবলী জানার জন্য আবেদনকারীদের শক্তি ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন পরিশোধের নিয়ম

শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের পরিশোধের নিয়ম সুবিধাজনক এবং এই লোন গ্রাহকদের সামর্থ্য অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। লোন গ্রহণকারীরা সাধারণত মাসিক কিস্তিতে লোন পরিশোধ করে থাকে যেটা তাদের আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও এই লোনের কিস্তির পরিমাণ ও সময়সীমা ব্যবসার ধরণ, আয় এবং লোনের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

গ্রাহকরা লোন পরিশোধের জণ্য সাধারণত ৬ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত সময় পাবে। তবে লোন সময়মতো পরিশোধ না করলে জরিমানা বা অতিরিক্ত সুদের হার প্রযোজ্য হতে পারে।

শক্তি ফাউন্ডেশন লোন এর সুবিধা

শক্তি ফাউন্ডেশন থেকে লোন নিলে কিছু বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- দ্রুত লোন প্রাপ্তি, কম সার্ভিস চার্জ, ট্রেড লাইসেন্স না থাকলেও লোন পাওয়ার সুযোগ এবং অনলাইন খুচরা ব্যবসায়ীদের জন্য কার্যকরী মূলধন সুবিধা। এছাড়াও, লোন পরিশোধের জন্য মাসিক ভিত্তিতে সুবিধা রয়েছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।

শক্তি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের একটি বৃহৎ ক্ষুদ্রলোন প্রদানকারী সংস্থা, যা মূলত সুবিধাবঞ্চিত নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে। তাদের বিভিন্ন ধরনের লোনের সুবিধা রয়েছে, যা গ্রাহকদের অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করে।

শক্তি ফাউন্ডেশন শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা প্রদান করে না, বরং তাদের লোনের মাধ্যমে গ্রাহকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং তাদের ক্ষমতায়নেও গুরুত্ব দেয়। তাদের লোনের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা নিচে তুলে ধরা হলো:

দারিদ্র্য বিমোচন ও আয় বৃদ্ধি: শক্তি ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের লোন প্রদান করে, যা দরিদ্র মানুষকে ছোট ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণ, কৃষি কাজ, পশুপালন, কুটির শিল্প বা অন্যান্য আয়বর্ধক কার্যক্রমে বিনিয়োগ করতে সাহায্য করে।

নারীর ক্ষমতায়ন: শক্তি ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো নারী ক্ষমতায়ন। তাদের অধিকাংশ লোন নারীদের দেওয়া হয়, যা নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে, পারিবারিক ও সামাজিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের ভূমিকা বাড়াতে এবং সামগ্রিকভাবে তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

জামানতবিহীন লোন: সাধারণত, শক্তি ফাউন্ডেশনের লোনগুলো কোনো জামানত ছাড়াই দেওয়া হয়। এটি দরিদ্র মানুষদের জন্য একটি বড় সুবিধা, কারণ তাদের মূল্যবান সম্পত্তি বন্ধক রাখার মতো থাকে না। দলগত দায়বদ্ধতা এক্ষেত্রে লোনের সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।

সহজ ও দ্রুত লোন প্রক্রিয়া: প্রচলিত ব্যাংক লোনের তুলনায় শক্তি ফাউন্ডেশনের লোন প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন হয়। জটিল কাগজপত্র বা দীর্ঘ অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সুবিধাজনক। তাদের লোন-এর ক্ষেত্রে তো আরও দ্রুত, সাধারণত ৫-৭ কার্যদিবসের মধ্যেই লোন পাওয়া সম্ভব হয়।

নমনীয় পরিশোধের শর্ত: লোনের কিস্তিগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হয়, যা গ্রাহকদের আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং পরিশোধের চাপ কমায়।

সঞ্চয় সুবিধা: লোনের পাশাপাশি, শক্তি ফাউন্ডেশন সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় স্কিম অফার করে। এতে গ্রাহকদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

বীমা ও আর্থিক সহায়তা: লোনগ্রহীতার মৃত্যুতে লোন মওকুফ সহ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। নারী লোনগ্রহীতার স্বামী/অভিভাবকের মৃত্যুতে বা জটিল রোগে আক্রান্ত হলে লোনস্থিতি মওকুফ সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

শক্তি ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা কে?

শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হলেন ড. হুমায়রা ইসলাম।

শক্তি ফাউন্ডেশন হেড অফিস কোথায়?

শক্তি ফাউন্ডেশন-এর প্রধান কার্যালয় বা হেড অফিস “শক্তি ভবন”-এ অবস্থিত, যা ঢাকা শহরের মিরপুর-১১, ব্লক এ, বাড়ি ৪, রোড ১-এ অবস্থিত। এছাড়া, মিরপুর-১০, ১৯/৩ বড়বাগ-এও শক্তি ফাউন্ডেশনের একটি শাখা রয়েছে।

শক্তি ফাউন্ডেশন এর কাজ কি?

শক্তি ফাউন্ডেশন মূলত সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে। এটি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মূলত রাজধানী কেন্দ্রিক কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে এটি সারা দেশে বিস্তৃত। শক্তি ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্রলোন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। 

লেখকের শেষ মতামত

পরিশেষে বলতে চাই, আপনি যদি এমন একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বা সুবিধাবঞ্চিত নারী হয়ে থাকেন, অথবা এমন কোনো পারিবারিক প্রয়োজন মেটাতে চান যা প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পূরণ করা কঠিন, তাহলে শক্তি ফাউন্ডেশন আপনার জন্য প্রথম পছন্দ হতে পারে। তাদের বহুমুখী সেবা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা ঋণগ্রহীতাদের শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, সামাজিকভাবেও এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment