পিজি হাসপাতাল বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং বড় একটি হাসপাতাল। পিজি হাসপাতালে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় বড় ডাক্তারগন আমাদেরকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন, তবে এই পিজি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা পাওয়াটা খুবই কঠিন কারণ পিজি হসপিটাল সরকারি হওয়ার জন্য এর চিকিৎসা খরচ খুবই কম, এজন্সকল প্রকৃতির মানুষ এই হসপিটালের টিকেট এর জন্য মগ্ন হয়ে থাকে।
তাই আপনারা ঘরে বসেই পিজি হসপিটালের অনলাইন টিকেট সংগ্রহ কিভাবে করবেন,পিজি হাসপাতালের ডাক্তারের তালিকা, মোবাইল নাম্বার সহ পিজি হাসপাতাল সম্পর্কিত বিষয়গুলো জানাবো। যেহেতু পিজি হাসপাতাল একটি সরকারি হাসপাতাল। সেহেতু এখানে চিকিৎসার জন্য হাজারো মানুষের জমায়েত হয়। আগেকার সময় উন্নত চিকিৎসা করার জন্য বাহিরের দেশে যেতে হতো।
কিন্তু বর্তমানে তার উল্টো। উন্নত চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই সম্ভব। এর প্রধান কারণ হচ্ছে যে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সরঞ্জাম খুবই উন্নত এমনকি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অগ্রগতি। আর এ কারণেই মূলত মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যায় না বাংলাদেশেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। পিজি হাসপাতাল ঢাকায় অবস্থিত। ঢাকার পরিবেশ সম্পর্কে হয়তো সকলেরই জানা আছে।
সেখানে ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো। এমনকি এতটাই মানুষের জ্যাম যে মাঝে মাঝে এই সময়কে উপেক্ষা করে যেতে হয়। তাহলে বুঝতেই পারতেছেন যদি আপনি পিজি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গিয়ে থাকেন। কিংবা চিকিৎসা নিতে যান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে আগে থেকেই এই হাসপাতালের টিকিট অনলাইনের মাধ্যমে বুকিং করে নিতে হবে। তাহলে চলুন আর অপেক্ষা না করে আমরা মূল আলোচনায় ফিরে যাই।
ঘরে বসে ঢাকা পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং
এই হাসপাতালে এপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার বিশেষ একটি সুবিধা রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন, যাকে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বলা হয়। যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে এই হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা গ্রহণ করতে আসে তাই রোগীদের সুবিধার্থে পিজি হাসপাতালে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর সুব্যবস্থা রয়েছে। এই কাজটি আপনি আপনার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার দিয়ে খুব সহজে করতে পারবেন।
তো এজন্য আপনাকে চলে যেতে হবে একটি ওয়েবসাইটে, আর ওয়েবসাইটের লিংক আমি এখানে দিয়ে দিচ্ছি আপনারা শুধুমাত্র এর উপরে ক্লিক করলেই ওই নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে চলে যেতে পারবেন। ওয়েবসাইটঃ https://appointment.bsmmu.ac.bd/ticketing/f/opd_appointment ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কয়েকটি অপশন বেছে নিতে হবে।
তার মধ্যে প্রথম অপশনে রয়েছে “আপনি কি ইতোমধ্যে কোন চিকিৎসককে দেখিয়েছেন কিনা” সেখানে না সিলেক্ট করতে হবে, এরপরে তার নিচে আরেকটি অপশন দেখতে পাবেন সেখানে “আপনার অসুস্থতায় কোন বিভাগের চিকিৎসক প্রয়োজন তা নির্বাচনে আপনি কি সক্ষম?” এই অপশনে আপনাকে হ্যাঁ সিলেক্ট করতে হবে।
এরপরে আপনার অসুস্থতার জন্য কোন বিভাগের চিকিৎসকের নির্দেশনা প্রয়োজন সেটি সিলেক্ট করতে হবে, এরপর সাক্ষাৎকারের তারিখ, আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার, আপনার বয়স এবং আপনার লিঙ্গ সঠিকভাবে সিলেক্ট করতে হবে।
এরপর এর নিচের ডান দিকে দেখবেন “এপয়েন্টমেন্ট এর নিশ্চিত করুন” লেখা রয়েছে, সেখানে ক্লিক করতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে এই তথ্যগুলো পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি যে নাম্বারটি দিয়েছিলেন ওই নাম্বারে একটি নিশ্চিত করুন এসএমএস আসবে।
এসএমএসের মধ্যে আপনার এপয়েন্টমেন্ট এর তারিখ, সময়, আইডি এবং বিভাগ উল্লেখ করা থাকবে। তাই অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুসারে আপনি যদি ডাক্তার দেখাতে চান তাহলে ওই নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে পিজি হাসপাতালে যেতে হবে।
পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম
যারা প্রথম অবস্থায় পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কিংবা দেখাতে যাচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারাই জানতে চাই পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম কি? আপনি যদি জীবনের প্রথম পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে এই হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম সম্পর্কে।
কারণ এটি জেনে রাখলে আপনি নির্ভয়ে এবং অল্প সময়ের মধ্যে সঠিক নিয়মে ডাক্তার দেখাতে পারবেন এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন। যেহেতু এই হাসপাতালের বিভিন্ন সেক্টর রয়েছে এবং সেক্টর অনুসারে বিভিন্ন চিকিৎসকেরা চিকিৎসা প্রদান করে তাই সঠিক নির্দেশনা না পেলে আপনি কখনোই আপনার নির্দিষ্ট রোগের জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারবেন না।
যেহেতু এই হাসপাতালের বিভিন্ন সেক্টর রয়েছে এবং সেক্টর অনুসারে বিভিন্ন চিকিৎসকেরা চিকিৎসা প্রদান করে তাই সঠিক নির্দেশনা না পেলে আপনি কখনোই আপনার নির্দিষ্ট রোগের জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারবেন না।
পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম হচ্ছেঃ
- রেফারাল এবং পূর্ববর্তী অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও প্রেসক্রিপশন প্রদান
- রেজিস্ট্রেশন করা
- ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্ট
- ফি পেমেন্ট
- নির্দিষ্ট দিনে ডাক্তার দেখানো
- ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ
১। রেফারাল এবং পূর্ববর্তী অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও প্রেসক্রিপশন প্রদান
পিজি হাসপাতাল যেহেতু বাংলাদেশের সব থেকে বড় সরকারি মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণাগার এবং চিকিৎসা কেন্দ্র তাই প্রথমে সাধারণ কোন রোগের জন্য এখানে চিকিৎসা প্রদান করা হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষ অন্যান্য মেডিকেলে কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসা গ্রহণ করার পরে যখন পরিপূর্ণ সুস্থ লাভ করতে পারে না তখন তারা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে।
তবে আপনি যদি অন্যত্র বিভিন্ন হাসপাতালে এমআরআই করানোর পরেও পিজি হাসপাতালে এটি করাতে চান তাহলে এই আর্টিকেল থেকে অবশ্যই পিজি হাসপাতালে এম আর আই খরচ সম্পর্কে জেনে নিবেন। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা পিজি হাসপাতালে যায় শুধুমাত্র চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণ করার জন্য।
এজন্য প্রথম কথা হচ্ছে আপনি ঢাকা পিজি হাসপাতাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার পূর্ববর্তী চিকিৎসালয় থেকে রেফারেল বা টোকন গ্রহণ করতে হবে। এই টোকন প্রশংসা পত্র বা রিলিজ স্লিপের কাজ করে। এছাড়া আপনাকে এই ধরনের এ রেফারেল বাদেও পূর্ববর্তী চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন এবং আপনার রোগের পরীক্ষাকৃত ফলাফল নিয়ে আসতে হবে।
তাই এগুলো যদি আপনার না থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সংগ্রহ করবেন এবং অবহেলা না করে সেগুলো ভালোভাবে সংরক্ষিত রাখবেন।
২। রেজিস্ট্রেশন করা
অন্যান্য হাসপাতালে যেমন শুধুমাত্র অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করলেই ডাক্তার দেখানো যায় কিন্তু আপনি যদি জীবনে প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
তবে আপনি যদি একবার রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন তাহলে পরবর্তীতে যতবারই ডাক্তার দেখান না কেন আপনাকে অতিরিক্ত ভাবে আর কখনোই এই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। অর্থাৎ একজন রোগের জন্য শুধুমাত্র একবারই রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
যেহেতু এটি বাংলাদেশের একমাত্র বড়মাপের চিকিৎসালয় এবং গবেষণাকেন্দ্র তাই এখানে এই কাজ বাদেও বেশ কয়েকটি ব্যতিক্রম ধর্মী নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। তো যাই হোক, এটি আপনি বিভিন্নভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনারা ৫টি পদ্ধতির মধ্যে আপনাদের যেটি পছন্দ হবে সেটি অনুসরণ করতে পারেন।
সশরীরে হাসপাতালে গিয়েঃ
আপনি যদি পিজি হাসপাতালের সন্নিকটে অবস্থান করেন কিংবা আপনার পরিচিত যদি কেউ থাকে তাহলে তার মাধ্যমে সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে নির্দিষ্ট বিভাগের আন্ডারে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন।
তবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করার জন্য অবশ্যই আপনার কয়েকটি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে, যেমনঃ আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, পূর্ববর্তী চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন এবং নির্দিষ্ট রোগের পরীক্ষাকৃত ফলাফল।
অনলাইনের মাধ্যমেঃ এই বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করেঃ
পিজি হাসপাতালের রিসিপশনে যারা রয়েছে আপনি চাইলে তাদের ফোন নাম্বার যোগাযোগ করে কিংবা হাসপাতালে হট লাইন নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার উপায় না থাকলে আপনি এই মাধ্যমে খুব সহজেই ডাক্তার এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন।
৩। ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে
ইতিপূর্বে রেজিস্ট্রেশনের করে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে থাকলে পরবর্তী সময়ে এপয়েন্টমেন্ট নেয়াটা খুবই সহজ। কারণ প্রথমবারের পরে পরবর্তী সময়ে আপনি যতবার ডাক্তার দেখাবেন সে সময় আপনার শুধুমাত্র ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।
এটি গ্রহণ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার পূর্ববর্তী চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে। এটি গ্রহণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওই ডাক্তারের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে গ্রহণ করতে হবে যেটি ডাক্তারই আপনাকে বলে দিবে।
৪। ফি পেমেন্ট
এপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার ফি নির্ভর করছে আপনি কোন সময়ে অর্থাৎ পিজি হাসপাতালের কোন সময়সূচি অনুসারে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিচ্ছেন তার উপরে। অর্থাৎ আপনি যদি সকাল ৮ টা থেকে দুপুর দুইটার মধ্যে ডাক্তার দেখাতে চাইলে মাত্র ৩০ টাকা দিতে হবে। আর দুপুর ৩ – ৬ টার মধ্যে ডাক্তার দেখাতে চাইলে ২০০ টাকা দিতে হবে।
সকালের তুলনায় বিকেলে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেওয়ার খরচ বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে সকালে মূলত বিভিন্ন ট্রেনিং এ অংশগ্রহণকারী নতুন ডাক্তার এবং প্রশিক্ষকরা রোগী দেখে থাকে। আর বিকেলে এপয়েন্টমেন্ট এর খরচ বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে ওই সময় অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা রোগী দেখে থাকেন। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে অভিমত জানাবো যে, আপনারা সব সময় বিকেলের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখানোর জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করবেন। আপনি এই ফি ৫ টি মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।
মাধ্যমগুলো হচ্ছেঃ
- রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে,
- ক্যাশ কাউন্টারে,
- বিভাগীয় কাউন্টারে,
- অনলাইনে এবং যেখানে ইনডোর ভর্তি ফি গ্রহণ করে সেখানে।
তবে আপনি চাইলে উপরোক্ত পদ্ধতিগুলোর যেকোনোটির মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারবেন। তবে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারের মাধ্যমে পরিশোধ করলে কোন ঝামেলা হয় না।
৫। নির্দিষ্ট দিনে ডাক্তার দেখানো
এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করার পরে সেখানে দেখবেন আপনার চিকিৎসকের নাম উল্লেখ করা রয়েছে। এবং আপনি কোন দিন ওই চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন তার তারিখ এবং সময় উল্লেখ করা রয়েছে।
৬। ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ
আপনার রোগের ধরন এবং শারীরিক পরিস্থিতি অনুসারে চিকিৎসকেরা যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণের পরামর্শ দিবেন। আপনি যদি সুস্থতা অর্জন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের দেওয়া সকল নির্দেশনা পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে অনুসরণ করতে হবে। অনেক সময় চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট সময় পরে পুনরায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে বলে। সেক্ষেত্রে আপনি ফলো-আপ অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করবেন।
পিজি হাসপাতালে বিকালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম
যেহেতু বিকেলে বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা রোগী দেখে থাকে তাই বিকেলে চিকিৎসকদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গেলে আপনাকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এটিকে মূলত আউটডোর সেবাও বলে থাকা হয়।
বিকেলে আউটডোর সেবা প্রদান করার জন্য যেহেতু দুইটি ভবন রয়েছে তাই দুইটি ভবনে আলাদা আলাদা রোগের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ দুইটি ভবনের মধ্যে একটি হচ্ছে মেডিসিন ভবন এবং আরেকটি হচ্ছে সার্জারি ভবন। আপনার রোগের ধরন অনুসারে এই দুইটি বিল্ডিং এর মধ্যে একটি বিল্ডিংকে আপনার চিকিৎসা গ্রহণের জন্য নির্ধারণ করা হবে।
তবে এখানে চিকিৎসা গ্রহণ করতে গেলে ইনডোর এর মত ঠিক একই ভাবে আপনাকে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। আর এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সিরিয়াল দিতে হবে। আউটডোরে যেহেতু চিকিৎসকেরা দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রোগীর দেখে থাকে তাই সিরিয়ালের জন্য আপনাকে অবশ্যই দুপুর বারোটার সময় আউটডোর ভবনে উপস্থিত হতে হবে।
দুপুর ১২ টার সময় থেকে টিকিট নেওয়ার জন্য মানুষের লাইন লেগে যায় তাই আপনি যদি আগেভাগে টিকিট গ্রহণ করতে চান তাহলে বারোটার সময় থেকেই আপনাকে লাইনে দাঁড়াতে হবে। কর্তৃপক্ষরা টিকিট ছাড়া শুরু করে দুই টার পরে। আপনাকে আগেই লাইনে দাঁড়াতে হবে কারণ অনেক ক্ষেত্রে টিকিট ফুরিয়ে যায়।
বিকেল বেলায় প্রতিটি চিকিৎসক ধরে ১৫ থেকে ২০ টি রোগী দেখে থাকে তাই আপনি যদি প্রথম দিকের সিরিয়াল নাম্বারের টিকিট সংগ্রহ করতে না পারেন তাহলে ঐদিন আপনি হয়তো বা ডাক্তার দেখাতে পারবেন না। আপনাকে হয়তো আবার পরবর্তী সময়ে আসা লাগতে পারে, এজন্য আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন দুপুর বারোটার সময় থেকেই টিকিট গ্রহণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যাওয়া।
যেহেতু বিকেলে বিভিন্ন স্পেশালিস্ট এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা রোগী দেখে থাকে তাই আপনাকে টিকিট নিতে হলে খরচ করতে হবে মাত্র ৩০০ টাকা। তবে বলে রাখা ভালো, প্রতিদিনই একই ডাক্তার রোগী দেখেনা। রোগের ক্যাটাগরি অনুসারে নির্দিষ্ট রোগের বিশেষজ্ঞেরা নির্দিষ্ট সিডিউল অনুসারে আউটডোর সেবা প্রদান করে থাকে।
তাই আপনি আপনার রোগের ধরন অনুসারে নির্দিষ্ট শিডিউল অনুসারে কাঙ্খিত দিনে ওই ডাক্তার দেখাতে আসবেন। তবে কোন ডাক্তার কোন দিন বসে এটি আপনি রিসিপশনে যোগাযোগ করলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনি এই তথ্যটি জানার পরে নির্দ্বিধায় এই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন কারণ এখানে সর্বাধিক প্রযুক্তিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকেট করার পর করণীয় কি?
পিজি হাসপাতাল অনলাইনের মাধ্যমে টিকেট বুকিং করা হয়ে গেলে, আপনাকে যেটি করতে হবে তা হচ্ছে সাধারণ আউটডোর টিকিট কেটে তা জমা দিতে হবে নির্দিষ্ট কাউন্টারে। সেখানে বারকোড স্ক্যান করে আপনার টিকেট তারা কনফার্ম করে দিবে। এই টিকেট নিয়ে সরাসরি ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাবেন। প্রতিটা রোগী স্ক্যানিংয়ের জন্য জনসাধারণের পিছনে অপেক্ষা করার প্রয়োজন থাকবেনা।
পিজি হাসপাতাল কবে ছুটি থাকে?
সাধারণত শুক্রবারে বাংলাদেশের সব সরকারি হাসপাতাল বন্ধ থাকে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার পিজি হাসপাতাল ও তাদের চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। যাইহোক, জরুরী বিভাগটি 24 ঘন্টা, সপ্তাহের 7 দিন খোলা থাকে।
পিজি হাসপাতাল সাধারণত সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। সপ্তাহের সাত দিন শুক্রবারও অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে আপনি সবসময় একজন ডাক্তার পাবেন। এছাড়া জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টা/৭ দিন পাবেন।
পিজি হাসপাতাল কোথায়
পিজি হাসপাতাল বাংলাদেশের প্রথম ইস্নাতকোত্তর স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৫ সালে এটি ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এটি IPGMR নামে নামকরণ করা হয়। পরে ১৯৯৮ সালে দেশে মেডিকেল উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার সুবিধার্থে IPGMR কে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। দেশের শিক্ষা এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে এই হাসপাতালটি।
(BSMMU), যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগ এলাকায় অবস্থিত। এর পূর্ব পাশে বারডেম, পশ্চিম পাশে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসনের একাডেমিক ভবন এবং দক্ষিণে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দক্ষিণ কোণে A ব্লকের পূর্ব পাশে ১ নম্বর গেট এবং এর আরেকটু দূরে রয়েছে ২, ৩ ও ৪ নম্বর গেট। হাসপাতালের পশ্চিম দিকে রয়েছে একটি মসজিদ যার সামনে রয়েছে ৫ নাম্বার গেট। আপনারা এই ৫টি গেটের যেকোনোটা দিয়ে সুবিধা মত প্রবেশ করতে পারবেন। আশা করি জানতে পেরেছেন পিজি হাসপাতাল কোথায় অর্থাৎ এর অবস্থান সম্পর্কে।
পিজি হাসপাতাল মোবাইল নাম্বার
হাসপাতালের পরিসেবা পেতে হলে হাসপাতালের ঠিকানা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। পিজি হাসপাতালের সম্পূর্ণ ঠিকানা নিচে দেওয়া হল। যেখান থেকে সহজেই ঢাকা পিজি হাসপাতালে আসা যায়। কোনো সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ নম্বরও রয়েছে। তাদের সাথে কথা বললে হাসপাতালে আসা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
নাম্বার খোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ডাক্তার দেখানো। তবে আপনারা যদি পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম, সময় এবং খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন তাহলে আপনাদের আর বিভ্রান্তিতে ভুগতে হবে না।
ঠিকানাঃ হাসপাতালটি শাহবাগের শাহবাগ মোরে জাতীয় জাদুঘরের উত্তরে অবস্থিত।
ওয়েবসাইটঃ www.bsmmu.edu.bd
ফোন:
- + 8-02-961051-58,
- + 8-02-961058-60,
- + 6-02-614545-49
- + 6-02-612550-54
সেন্ট্রাল টেলিফোন নম্বরঃ +88-02-55165760-94
পিজি হাসপাতালের আউটডোর সময়সূচী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সকাল ৮ টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আপনি যদি সকালবেলা অর্থাৎ ৮ টা থেকে বেলা ১০ টার মধ্যে চিকিৎসা নিতে চান তাহলে আপনাকে ৩০ টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করতে হবে।
আর আপনি যদি দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্য ডাক্তার দেখাতে চান তাহলে আপনাকে ২০০ টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করতে হবে। সকলের চেয়ে বিকেলের টিকিটের দাম বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে বিকেলে স্পেশালিস্ট অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা রোগী দেখে থাকেন। তাই আপনার রোগের ধরন অনুসারে পিজি হাসপাতালের আউটডোর সময়সূচী মেন্টেন করে ডাক্তার দেখাবেন।
পিজি হাসপাতালে কেবিন ভাড়া কত?
পিজি হাসপাতাল বাংলাদেশের অন্য সকল সরকারি মেডিকেল কলেজ গুলোর মতো নয় । এখানে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বেডরুম ও উন্নত । অন্য সরকারি মেডিকেলগুলোতে বেড ছাড়া ফ্লোরে কিংবা বারান্দায় ও রোগী দেখে চিকিৎসা করানো হয় ।
কিন্তু পিজি হাসপাতালে এরকম করা হয় না। এখানে বরাদ্দকৃত সিটের বাইরে কোন রোগী ভর্তি করানো হয় না অর্থাৎ ভালো চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের বরাদ্দ সিটের বাইরে কাউকে ভর্তি করানো হয় না । পিজি হাসপাতালে মূলত চার ধরনের সিট আছেঃ
১. জেনারেল ওয়ার্ড
জেনারেল ওয়ার্ড হচ্ছে যেখানে সাত থেকে দশটি বেড থাকে । এ ধরনের সিটের ভাড়া প্রতিদিন ৬০০ টাকা।
২.ডাবল বেড কাবিন
ডাবল বেড কেবিন হচ্ছে এরকম রুম যেখানে মাত্র দুইটি রোগীর সীট থাকে । এক্ষেত্রে রোগীর বেড ছাড়াও বসার জন্য প্রশস্ত জায়গা থাকে । এ ধরনের সিট ভাড়া দিনে ১০২৫ টাকা।
৩. কেবিন
কেবিন হচ্ছে যেখানে একটি মাত্র সিট থাকে । রোগীর বেড ছাড়াও রোগীদের জন্য আলাদা লকার, আত্মীয়দের বসার জন্য প্রশস্ত জায়গা রয়েছে । এরকম কেবিনের ভাড়া দৈনিক ২০৫০ টাকা।
৪.ডিলাক্স রুম
ডিলাক্সে রুম হচ্ছে কেবিনের চেয়ে আরো উন্নত । আরো প্রশস্ত । আরো সুন্দর । এর প্রতিদিন ভাড়া ৩ হাজার টাকার মধ্যে ।
পিজি হাসপাতাল রিপোর্ট ডেলিভারি টাইম
পিজি হাসপাতাল বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (BSMMU) ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাসপাতাল। পিজি হাসপাতালে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেন এবং পরীক্ষার রিপোর্ট সংগ্রহ করেন।
সাধারণত, সকাল ৮:৩০ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পিজি হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়। তবে, রিপোর্ট সংগ্রহের সময়কাল নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপরও। এটি নিশ্চিত করতে চাইলে আগে ফোনে যোগাযোগ করাই ভালো।
পিজি হাসপাতাল কি সরকারি
পিজি হাসপাতাল একটি সরকারি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। সরকারি হাসপাতাল হিসাবে পিজি হাসপাতালে সেবা গ্রহণের খরচও তুলনামূলক ভাবে কম।
পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং
পিজি হাসপাতালের বহির্বিভাগে (আউটডোর) চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্য আপনি চাইলে অনলাইনে অগ্রিম টিকেট বুকিং করতে পারেন। পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং করতে এই লিংক ক্লিক করুন। উক্ত লিংক ক্লিক করে আপনার PG Hospital এর অনলাইন টিকেট বুকিং করতে পারবেন।
লেখকের শেষ মতামত
পিজি হাসপাতাল বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পিজি হাসপাতাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা থাকলে রোগীরা থেকে আরও সহজে এবং সঠিক ভাবে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
এই ছিল আজকের ঘরে বসে ঢাকা পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি ঘরে বসে ঢাকা পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং করার নিয়ম জানতে পেরেছেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ঘরে বসে ঢাকা পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকেট বুকিং সম্পর্কে জানতে পারবে।