অনলাইনে আয় করার দীর্ঘমেয়াদী উপায়গুলির মধ্যে একটি হল প্যাসিভ ইনকাম। প্যাসিভ ইনকাম এমন একটি উপায় যেখানে আপনি প্রতিদিন কাজ না করেও উপার্জন করতে পারবেন। প্যাসিভ ইনকামের বহু আইডিয়া রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে আপনি অনলাইন থেকে প্যাসিভ ইনকাম করা শুরু করতে পারেন। বর্তমান সময়ে আর শুধু অফিসে গিয়ে আয় করার দিন নেই।
প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন ঘরে বসেই তৈরি করা যায় প্যাসিভ ইনকাম, এমন একটি আয় যেখানে আপনি নিয়মিত সময় না দিয়েও আয় করতে পারেন। টাকা উপার্জন করতে কে না চায়। সকলেই চাই নিজের হাতে টাকা উপার্জন করতে। কিন্তু সেটা যদি ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করার উপায় জেনে ইনকাম করা যায় তাহলে ব্যাপারটা কিন্তু মন্দ হয় না।
তবে এজন্য আপনাকে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করার উপায় ও প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আজকে আপনাদের ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করার উপায় জানাবো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা উপায় গুলো আলোচনা করব তাই ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
প্যাসিভ ইনকাম কি?
প্যাসিভ ইনকাম হচ্ছে মূলত একটি আয়ের মাধ্যম, যেখানে প্রতিদিন কাজ না করেও ইনকাম করা যায়। মোটকথা এখানে আপনি একবার কাজ শুরু করে, পরে আবার যদি কাজ না-ও করেন তবুও ইনকাম আসবে। বর্তমান যুগে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করা খুবই সহজ হয়েছে।
বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও মাধ্যম রয়েছে যার সাহায্যে আপনি ঘরে বসে দীর্ঘমেয়াদি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। প্যাসিভ ইনকাম এর ক্ষেত্রে খুব একটা বেশি পরিশ্রম করতে হয় না।
এভাবে কম পরিশ্রমে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়। আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন এবং একবার সেটআপ করলে নিয়মিত আয় আসতে থাকবে। এখানে আমরা ৭টি সেরা প্যাসিভ ইনকাম করার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করুন ৭টি উপায়ে
প্যাসিভ ইনকাম এমন একটি ইনকাম, যেখানে আপনার প্রতিদিন কাজ না করেও ইনকাম হচ্ছে। অর্থাৎ আপনি বিভিন্ন উপায়ে প্রতিদিন কাজ না করেও ইনকাম করতে পারছেন। একদিন শুধুমাত্র কাজটি করে রাখলেন এবং পরবর্তীতে সে কাজটি খুব কম পরিমাণে করেও ইনকাম করতে পারছেন।
এভাবে অনেক উপায়ে প্যাসিভ ইনকাম শুরু করা যায়। আর অনলাইন মাধ্যমে সহজেই প্যাসিভ ইনকাম শুরু করতে পারবেন। এবার চলুন নিম্নে সেরা ৭টি প্যাসিভ ইনকামের উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে আসা যাক।
১। ব্লগিং করে প্যাসিভ ইনকাম
ব্লগিং মূলত হলো ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে ইনকাম করা। আপনি নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে নিয়মিত বাংলা কন্টেন লিখে উপার্জন করতে পারেন। ব্লগিং এমন একটি সেক্টর যেখানে দীর্ঘদিন কাজ করে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়। ব্লগিং ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখালেখি করে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে সহজে আয় করতে পারবেন। তবে এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসে ব্লগিং করে কিভাবে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়? আমি এখন সেই বিষয়টি নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব।
ব্লগিং ওয়েবসাইট খুলে সেখানে আপনি প্রথমদিকে প্রতিদিন কনটেন্ট লিখে পাবলিশ করবেন। এরপর গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেয়ে গেলে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। যখন আপনার ইনকাম শুরু হবে তখন আপনি ব্লগিং ওয়েবসাইটে রেগুলার কনটেন্ট পাবলিশ না করেও ইনকাম করতে পারবেন। একবার আপনার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম শুরু হলে তখন আপনার প্রতিদিন কাজ করতে হবে না, ধরুন আপনি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন কাজ করলেন।
এর পরে বুঝতে পারছেন ব্লগিং করে প্রতিদিন কাজ না করেও ইনকাম করা যায়। আর এভাবে প্যাসিভ ইনকাম করা সম্ভব। আবার ধরুন আপনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন, এখন আপনি এক সপ্তাহ ধরে কোন ধরনের কনটেন্ট লিখলেন না।
তারপরেও আপনার ব্লগিং ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম হতে থাকবে। আপনি যে কোন মাধ্যমে ব্লগিং ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। Blogger মাধ্যমে ফ্রিতে কম খরচের ডোমেন ক্রয় করে সাইট তৈরি করতে পারবেন।পাশাপাশি প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং করতে চাইলে WordPress দিয়ে সাইট তৈরি করতে পারেন।
প্যাসিভ ইনকাম মানে হল কম কাজ করে ইনকাম করা অর্থাৎ মাঝে মাঝে কাজ না করলেও ইনকাম করা যায় এই ধরনের সোর্স। তাই দেরি না করে আজই প্যাসিভ ইনকাম করার জন্য ব্লগিং ওয়েবসাইট খুলুন প্রথমদিকে হয়তো পরিশ্রম করে নিয়মিত কাজ করা লাগতে পারে। এর পর ইনকাম শুরু হলে ধীরে ধীরে কাজ করেও আপনি আয় করতে পারবেন।
সুবিধাঃ
- শুরু করা সহজ এবং কম খরচে।
- আপনার পছন্দের বিষয়ে কাজ করার সুযোগ।
- দীর্ঘমেয়াদী আয়ের সম্ভাবনা।
অসুবিধাঃ
- প্রথমদিকে প্রচুর সময় এবং প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
- ট্র্যাফিক পেতে ধৈর্য প্রয়োজন।
২। ইউটিউব চ্যানেল খুলে প্যাসিভ ইনকাম
ইউটিউব একটি শক্তিশালী প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম। একবার ভিডিও আপলোড করলে সেটি বছর বছর দেখা যায়, আর সেখান থেকেই ইনকাম আসতে থাকে। মূলত আপনি একবার ভিডিও আপলোড করলেই সেটি সকলেই সারা বছর দেখতে পারবে।
আর মানুষ আপনার ভিডিও ইউটিউবে দেখলেই আপনি ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য আপনি প্রথমে অনেকগুলো আকর্ষণীয় কনটেন্ট ভিডিও তৈরি করে আপলোড করবেন। যখন আপনার ইনকাম শুরু হবে, তখন আপনি রেগুলার ভিডিও না বানিয়েও মাঝে মাঝে ভিডিও বানিয়ে আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন। নির্দিষ্ট টাইম অনুযায়ী ভিডিও আপলোড করতে পারেন।
এই যেমন ধরুন এক সপ্তাহ পর পর ভিডিও আপলোড করলেন। এছাড়াও যাদের বড় ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তারা প্রায় ১ মাস পর পর ভিডিও আপলোড করে থাকে। তাদের খুব একটা বেশি কাজ না করেও প্রতিদিন ইনকাম হচ্ছে। ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও বানিয়ে বিভিন্নভাবে ইনকাম করতে পারবেন।
একবার youtube চ্যানেল খুলে সেখানে যদি ভিডিও বানিয়ে আপনি মনিটাইজেশন পেয়ে যান এবং আপনার ইনকাম শুরু হয় তাহলে দীর্ঘদিন ভিডিও না বানিয়ে আয় করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল খুলে ইনকাম করার জন্য প্রথম থেকে আপনার প্রচুর পরিশ্রম করে একাধিক আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতে হবে।
যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রচুর সাবস্ক্রাইবার এবং ফলোয়ার হবে তখন আপনি সহজেই মনিটাইজেশনে এপ্লাই করে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে প্রতিদিন আয় করতে পারবেন। আপনার চ্যানেল বেশ পরিচিতি লাভ করলে আপনি প্রতিদিন ভিডিও না বানিয়েও ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। আপনি ইউটিউব চ্যানেলে আগে যেই ভিডিওগুলো আপলোড করেছেন সেই ভিডিওর ভিউজ থেকেই আপনার ইনকাম হতে থাকবে।
এভাবে আপনি প্রতিদিন ভিডিও আপলোড না করেও সপ্তাহে একদিন ভিডিও আপলোড করে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে প্রতি মাসে একটি ভিডিও বানিয়েও ইনকাম করতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্যাসিভ ইনকাম করা খুবই সোজা।
কারণ এখানে ভিডিওর ভিউজ থেকে ইনকাম হয়। আপনার ভিডিওটি পপুলার হলে আপনার দৈনিক ভিউজ আসতেই থাকবে এবং আপনার ইনকাম হতে থাকবে। আমার জানা মতে এমন অনেক ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে যাদের লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার হয়েছে তারা প্রতি মাসে ১টিমাত্র ভিডিও আপলোড করেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকে।
আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন, প্রথম থেকে হয়তো ধৈর্য সহকারে কাজ করতে হবে। যারা প্রথম থেকে পরিশ্রম করে ধৈর্য নিয়ে কাজ করবে তারাই ইউটিউব চ্যানেল খুলে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবে।
৩। ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম
আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল পণ্য তৈরি করতে পারেন যেমন ধরুন ওয়েবসাইটের টেমপ্লেট , ই-বুক , কোর্স ইত্যাদি বিক্রি করেও রেগুলার ইনকাম করতে পারবেন। এটি প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম একটি আইডিয়া। কারণ এই অনলাইন প্রোডাক্টগুলো একবার তৈরি করলে বারবার বিক্রি করা যায়। তাই আপনি একবার তৈরি করেই বারবার বিক্রি করে সারা জীবন এর থেকে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি যদি ই-বুক একবার তৈরি করে রাখেন তাহলে সেখান থেকে অনেকবার বিক্রি হুওয়া সম্ভব। কোর্স বিক্রি করার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছেঃ
- Udemy,
- Gumroad,
- Teachable ইত্যাদি ।
সুবিধাঃ
- একবার তৈরি করে বারবার আয় করার সুযোগ।
- উচ্চ মুনাফার সম্ভাবনা।
- বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ।
অসুবিধাঃ
- শুরুতে সময় এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
৪। এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্যাসিভ ইনকাম
বর্তমান সময়ে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করুন ৭টি উপায়ের মধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং উপায়টি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর অন্যতম কারণ হলো এই উপায়ে ঘরে বসে অনলাইনে সহজেই দীর্ঘদিন উপার্জন করা যায়।
অনেক সময় দীর্ঘদিন কাজ না করেও এই সেক্টর থেকে আয় করা যায় যার কারণে এটি প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম উৎস। এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো সাধারণত অন্যের পণ্য বা সেবা প্রচার করে কমিশন আয় করা। এই কাজটি করে দীর্ঘদিন ইনকাম করা যায়।
যেমন ধরুন আপনার একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট রয়েছে সেখানে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। সেখানে আপনি তাদের সেবা ও পণ্য গুলো প্রচার করে কমিশনের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরে রেজিস্ট্রেশন করে এফিলিয়েট মার্কেটিং লিংক সংগ্রহ করে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সোশ্যাল শেয়ারিং সাইটে শেয়ার করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনি নিজস্ব ব্লগিং সাইট , ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে দীর্ঘদিন কাজ না করেও নিজের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন এফিলিয়েট মার্কেটিং সার্ভিস দিয়ে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়।
আপনার শেয়ার করা এফিলিয়েট মার্কেটিং লিংক থেকে যতজন ব্যক্তি তাদের সেবা নিবে অথবা প্রোডাক্টগুলো ক্রয় করবে আপনি তার বিনিময়ে কমিশন পেতে থাকবেন। এভাবে আপনি কাজ না করেও শুধুমাত্র লিংক শেয়ার করে ইনকাম করতে পারছেন।
৫। ড্রপশিপিং বিজনেস করে প্যাসিভ ইনকাম
এখানে আপনি বিনিয়োগ ছাড়াই সরাসরি প্রোডাক্ট বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। আপনি নিজে প্রোডাক্ট স্টক না করে সরাসরি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রোডাক্ট নিয়ে ডেলিভারি করে আয় করতে পারবেন। এই কাজটি ঘরে বসেই করা যায়। শুধুমাত্র আপনার নিজস্ব ব্লগিং সাইট অথবা নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট থাকতে হবে, যেখানে আপনি প্রোডাক্টগুলো নিজের ইচ্ছামত দামের লিস্টিং করবেন।
আপনি শুধু আপনার নিজের দামে প্রোডাক্টগুলোর অর্ডার গ্রহণ করবেন এবং প্রোডাক্ট এর কমিশন রেখে দিয়ে সেই অর্ডারটি সরাসরি সাপ্লাইয়ের কাছে প্রেরণ করবেন। তারা গ্রাহকদের প্রোডাক্ট ডেলিভারি করবে। আর সেই প্রোডাক্ট এর কমিশন নিতে পারছেন।
এক্ষেত্রে আপনার রেগুলার কাজ করার প্রয়োজন হচ্ছে না। এই পদ্ধতি গুলোকে সাধারণত ড্রপশিপিং বিজনেস বলা হয়। এই উপায়ে ইনকাম করার জন্য আপনার ই-কমার্স সাইটটির প্রচুর মার্কেটিং করতে হবে এবং আপনি যে প্রোডাক্ট বিক্রি করেন তার প্রচার করতে হবে।
৬। 2D Cartoon Animation তৈরি করে
একটি বড় মাধ্যম হলো অ্যানিমেশন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু করে টিভি বিজ্ঞাপন সহ এখন থেকে কোন পন্যের মার্কেটিং এনিমেশন এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেক চ্যালেনে একবার একটা এনিমেশন তৈরি করে শুধু ভাষার ট্রান্সফার করে বাংলা টু ইংলিশে হিন্দিতে কনভার্ট করে একাধিক চ্যানেলে রান করছে এবং সহজে প্রচুর টাকা ইনকাম করছে।
৭। App Development করে প্যাসিভ ইনকাম
যদি আপনার কোডিং বা অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের জ্ঞান থাকে, তবে আপনি একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে পারেন। অ্যাপটি একবার তৈরি হয়ে গেলে, এটি থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে, ইন-অ্যাপ পারচেজ বা সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম আসতে পারে।
সুবিধাঃ
- উচ্চ আয়ের সম্ভাবনা।
- নিজের সৃজনশীলতা প্রয়োগের সুযোগ।
- বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ।
অসুবিধাঃ
- অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে উচ্চ দক্ষতা এবং সময় প্রয়োজন।
- মার্কেটিং এবং প্রচারের প্রয়োজন।
- প্রতিযোগিতা বেশি।
প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া
আপনি যদি প্যাসিভ ইনকামের আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে বেশি ইনকামের কয়েকটি আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নিন।
অনলাইন ডিজাইন বিক্রয়: যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হয়ে থাকেন। তবে আপনি মাইক্রো স্ট্রাক সাইড গুলোতে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে প্যাসি আর্নিং শুরু করতে পারবেন। বর্তমানে এ ধরনের প্লাটফর্ম গুলো বেস জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এবং প্ল্যাটফর্ম গুলি থেকে সকলের প্রত্যাশা বাড়ছে।
স্টোক ইমেজ: আপনি যদি ছবি তোলার বিষয়ে প্রফেশনাল হয়ে থাকেন তবে আপনি আপনার ছবিগুলোকে স্টোক সাইড গুলোতে সেল করতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: আপনার যদি ধৈর্য পর্যাপ্ত থেকে থাকে। তবে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বিক্রয়ের কাজ করতে পারেন এটিতে তুলনামূলক প্যাসিভ আর্নিং বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ই-বুক রাইটিং: ই বুক বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিশ্বব্যাপী সুতরাং আপনি এই সেক্টরে দক্ষ হয়ে ভালোভাবে ইনকাম জেনারেট করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি: বিনা অর্থ একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে সেখানে বিভিন্ন রকমের ভিডিও ক্রিয়েট করে আপনি কিন্তু অর্থ উপার্জন করতে পারেন গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে সেখানে এফিলেট মার্কেটিং এর লিংকু যুক্ত করে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।
ড্রপশিপিং: ড্রপ শিপিং বলতে মূলত পণ্য নির্দিষ্ট স্থান থেকে স্বল্পমূল্য ক্রয় করে নিজের সাইডে বেশি মূল্যে বিক্রয় করার পদ্ধতিকে বোঝায় এটি থেকে আপনি ইনকাম করতে পারেন।
অনলাইন সার্ভে: অনলাইন ছাড়বে মূলত বিভিন্ন কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ফিডব্যাক গ্রহণ করে থাকে এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো সার্ভে পরিচালনায় বেশ কিছু মানুষকে অনলাইনে নিয়োগ করে সুতরাং এটিও আপনার জন্য হতে পারে আই এর একটি ভালো পথ।
ইনফ্লয়েন্সার হিসেবে আয়: আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে যদি অনেক ফলোয়ার থাকে। তবে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
প্যাসিভ ইনকাম কিভাবে করা যায়
অনেকেই জানতে চাই যে প্যাসিভ ইনকাম কিভাবে শুরু করা যায় আসলে প্যাসিভ ইনকাম শুরু করার জন্য কিন্তু কিছু বিষয় আপনাদের মানতে হবে এবং জানতে হবে ইনকাম কিসের সম্পর্কে আপনার জানা থাকতে হবে এবং প্যাসেজ ইনকাম কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে আপনি যদি বুঝে থাকেন তাহলে কিন্তু আপনারা ইতিমধ্যে প্যাসিভ ইনকাম কিভাবে করবেন সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন।
১। রেন্টাল প্রপার্টি দিয়ে
আপনার নিজস্ব পাঁচ থেকে ছয় তলা বাড়ি থাকলে আপনি সেটি ভাড়া দিয়েই সারা জীবন ইনকাম করতে পারবেন। এটি প্যাসিভ ইনকামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সোর্স। কারণ এখানে আপনার কোন পরিশ্রম করতে হচ্ছে না আপনি ঘরে বসে কোন কাজ না করা ছাড়াই বাড়ি ভাড়া থেকে ইনকাম করতে পারছেন।
এজন্য আমার মতে আপনার কাছে যদি অনেক টাকা পয়সা থাকে এবং আপনার যদি বাড়ি বানানোর সক্ষমতা থাকে তাহলে বড় বড় বাড়ি তৈরি করুন অথবা ফ্ল্যাট কিনুন। আর সেগুলো ভাড়া দিয়ে অর্থাৎ রেন্টাল দিয়ে প্রতি মাসে ইনকাম করুন। এক্ষেত্রে আপনার কাজ করার প্রয়োজন নেই, আপনি বাড়িতে বসে প্রতি মাসে ইনকাম পেয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এই উপায়ে সকলেই ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করে আসছে।
২। অনলাইন কোর্স তৈরি করে
আপনার দক্ষতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নির্দিষ্ট একটি কোর্স তৈরি করুন এবং সেই কোর্স বিক্রি করে আপনি প্রতি মাসে ইনকাম করতে পারবেন। যদি আকর্ষণীয় কোর্স হয় তাহলে রেগুলার বিক্রি করে ইনকাম করা যায়।
আর কোর্স একবার তৈরি করলে বারবার বিক্রি করতে পারবেন। আর এমন কোর্স তৈরি করুন যেটি দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করা যায় এবং ঘরে বসেই ইনকাম আসে। অনলাইন কোর্স তৈরি করে কিন্তু প্যাসিভ ইনকাম করা যায় তার কারণ কোর্স দীর্ঘদিন কোন কাজ না করেই বিক্রি করা যায়।
৩। রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট করে
আপনি যদি বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক হন, তাহলে সেটি ভাড়া দিয়ে স্থায়ীভাবে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও আপনার বিনিয়োগ করার সক্ষমতা থাকলে, বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।
আবার জমি ক্রয় করে সেই জমি ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে ইনকাম করতে পারেন। এভাবে ঘরে বসে আপনি কোন কাজ করা ছাড়াই প্রতি মাসে ইনকাম করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথম দিকে প্রাথমিকভাবে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।
৪। গ্রাফিক ডিজাইন করে
গ্রাফিক ডিজাইন আপনি যদি প্রফেশনাল মানের একজন ডিজাইনার হতে পারেন তাহলে আপনার ক্রিয়েটিভ এর মেধাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে ইনকাম করতে পারেন বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে যেমন ডলার ইনকাম করতে পারবেন ঠিক তেমনি আপনার করার ডিজাইন বিভিন্ন microstock সাইটগুলোতে সেল করে পাইছি ইনকাম করতে পারবেন।
তাই যারা গ্রাফিক ডিজাইন হিসেবে গতানুগতিকভাবে ইনকামের বাইরে নিজের ডিজাইন বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম করতে চান তাদের জন্য এই কোর্সটি বেস্ট হতে পারে।
প্যাসিভ ইনকাম বই pdf
আপনি কি প্যাসিভ ইনকাম সম্পর্কিত কোনো নির্দিষ্ট বই বা লেখকের নাম জানতে চাচ্ছেন? নাকি সাধারণভাবে প্যাসিভ ইনকাম সম্পর্কিত কোনো ভালো বইয়ের PDF খুঁজছেন?
আপনার জন্য কিছু জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম সম্পর্কিত বইয়ের নাম বলছি, যেগুলো থেকে PDF পাওয়া যেতে পারে:
- “Rich Dad Poor Dad” – Robert Kiyosaki
- “The 4-Hour Workweek” – Tim Ferriss
প্যাসিভ ইনকাম কেন প্রয়োজন
এখন আপনাদেরকে জানাবো ইনকাম কেন প্রয়োজন আসলে আমাদের জীবনের সকলেরই টাকার প্রয়োজন। তাহলে টাকার প্রয়োজন নেই এমন কিন্তু মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কোন ইনকাম সহজ নয় তবে অন্য সকল ইনকাম থেকে প্যাসিভ ইনকামের বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে।
তার মধ্যে বিশেষ সুবিধা হল এখানে আপনাকে সবসময় কাজ করতে হবে না একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করে সবকিছু সাজিয়ে রাখলে সেখান থেকে ইনকাম আসতে থাকবে। আপনার ইনকাম চলতেই থাকবে।
আশা করি এবার আপনারা বুঝতে পেরেছেন প্যাসিভ ইনকাম আপনাদের জন্য কতটা জরুরী এবং কেন প্যাসিভ ইনকাম করা আমাদের মনে হয় যে জরুরী। ইনকামের মাধ্যমে আপনি নিয়মিত ইনকাম করতে পারবেন এবং সেখানে আপনাকে সবসময় শ্রম ও কাজ করতে হবে না একটা সময় শ্রম ও কাজ দিলে সেখান থেকে নিয়মিত ইনকাম চালু থাকবে।
লেখকের শেষ মতামত
ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করার এই ৭টি উপায় যেকোনো বয়সের মানুষই শুরু করতে পারেন। শুরুতে হয়তো একটু সময় ও প্রচেষ্টা লাগবে, কিন্তু একবার সেটআপ হয়ে গেলে বছরের পর বছর আয় করা সম্ভব। তবে একটা কথা মনে রাখুন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাসিভ ইনকাম করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু স্কিল ও দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে।
আজকের আর্টিকেলটিতে উল্লেখিত প্যাসিভ ইনকামের ৭টি উপায় এর মধ্যে যেকোনো একটি অথবা একাধিক বেছে নিয়ে আপনি ঘরে বসে ইনকাম করা শুরু করতে পারেন। সঠিক পরিকল্পনা ও ধৈর্য নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে এগিয়ে গেলে অবশ্যই সফলতা অর্জন করবেন।