ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় – ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব কেন হয়

আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যাদের প্রস্রাব করার পরেও ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়তে থাকে, এটা আসলে খুবই বিরক্তিকর ও বিব্রতকর হয়ে উঠতে পারে। এই সমস্যাটি বয়স নির্বিশেষে অনেক পুরুষরাই ভুগে থাকেন। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, কারণ এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। 

ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়

ছোট থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কের একটি বিশেষ সমস্যা হচ্ছে ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়া। উঠতে বসতে চলতে ফিরতে মাঝেমধ্যে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে যাই যা অনেক বিরক্তিকর। এটি বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের হয়ে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আমাদের মধ্যে অনেক মানুষই আছেন যারা প্রস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু লজ্জায় কাউকে বলতে পারেন না। আপনি যদি ফোটা ফোটা প্রস্রাব বের হওয়ার সমস্যাই ভুগে থাকেন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়লে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

যাদের ফোঁটা ফোটা প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে তারাই একমাত্র বুঝে এটি কি বিরক্তিকর। চলতে ফিরতে উঠতে বসতে কখন যে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে যায় তা বোঝা যায় না। এটি খুবই বিরক্তকর এই সমস্যার কারণে আমরা অনেকেই ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারি না। এই ফোটা ফোটা প্রসাবের অনেক কারণ রয়েছে যা এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন। 

ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব কেন হয়

পুরুষদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোন পরিমাণ কমার ফলে প্রোস্টেট গ্রন্থিতে কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে যার দরুন প্রোস্টের আকার বৃদ্ধি পায়। প্রোস্টেট প্রস্তুতের আকার বারার ফলে মূত্রনালীতে চাপের সৃষ্টি হয়।  মূত্রনালীতে চাপের সৃষ্টি হওয়ার জন্য প্রসবের সময় এক বা একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি হওয়ার কারণে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলি হলঃ 

  • বারবার প্রসাব পাওয়া।
  • প্রসাবের বেগ আটকে রাখা সম্ভব হয় না।
  • প্রসাবের গতিতে দুর্বলতা এবং মাঝপথে প্রসাব থেমে যাওয়া।
  • প্রসব করার পর ফোটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া।
  • অনেক সময় প্রসাবের সাথে রক্ত আসতে পারে।

আপনার মধ্যে যদি এই সমস্যাগুলি থেকে থাকে তাহলে এর পিছনের কারণ হতে পারে প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি। এবং কিছু স্নায়ু ঘটিত রোগ রয়েছে যেগুলি থাকলে আপনার ফোটা ফোটা প্রসাব হতে পারে যেমনঃ পেরাপ্লেজিয়া, স্পানালী স্নায়ু। এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ু স্থান ত্রুটি হয় সে ক্ষেত্রেও ফোটা ফোটা প্রসাব বের হতে পারে। 

তবে এছাড়া আরো কারণ রয়েছে যেমনঃ

  • প্রোস্টেট ক্যান্সার
  • অতিরিক্ত ওজন
  • ব্রেন টিউমার
  • স্ট্রোক
  • পারকিনসন
  • সন্তান প্রসব
  • গর্ভধারণ
  • জরায়ু ফেলে দেওয়া
  • ইউরিনারি ব্লাডার বা ইনফেকশন
  • মূত্রনালি সংকুচিত হওয়া
  • মূত্রনালিতে তরল জমে থাকা
  • প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া
  • পেলভিক ফ্লোর মাংসপেশির দুর্বলতা
  • স্নায়বিক রোগ যেমন পারকিনসন, স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার ইত্যাদি
  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
  • প্রস্রাবের সংক্রমণ

এছাড়াও অনেক সময় প্রস্রাব হওয়ার সময় মুত্রাশয় খালি না হয়ে কিছু প্রস্রাব আটকে থাকে। যার কারণে পরবর্তীতে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হয়। আবার অনেকের পেলভিক পেশি দুর্বতার কারণে কিছু প্রস্রাব আটকে থেকে ফোঁটা ফোটা হয়ে বাহিরর হয়। যার কারণে ব্যায়ামের মাধ্যমে পেসি গুলো শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়

ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়া বয়স্কদের এটি একটি খুবই বিরক্তিকর সমস্যা। এই সমস্যাটি পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক, জরায়ু ফেলে দেওয়া, গর্ভধারণ ইত্যাদি কারণে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে যার ফলে এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ-  ছেলেদের গোপনাঙ্গের পাশে চুলকানি হলে করনীয়

এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট বড় হওয়া অথবা প্রোস্টেট এ ক্যান্সার হওয়ার কারণে ফোঁটা ফোটা প্রসাবের সমস্যা হতে পারে। আপনার যদি ফোটা ফোটা প্রসাবের সমস্যাই ভুগে থাকেন চিন্তার কোন কারণ নেই কিছু উপায় জানাবো যেগুলি অনুসরণ করলে এটা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন তাহলে ফোটা ফোটা প্রসাব বন্ধের উপায় গুলি জেনে নেওয়া যাক।

নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ ফোটা ফোটা প্রসাব হওয়া দূর করতে ব্যায়াম অত্যান্ত কার্যকরী। কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করলে এই ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। যেমনঃ শুয়ে থেকে পা দুইটা উঁচু করে ১০ মিনিট পর্যন্ত থাকুন এভাবে প্রতিদিন ১০ বার করে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ পর্যন্ত করলে দেখবেন ফোটা ফোটা প্রসাবের সমস্যা অনেকটাই কমে গেছে।

বদ অভ্যাস ত্যাগ করাঃ আমাদের মধ্যে অনেক মানুষই যারা নিয়মিত হস্তমৈথুন করে আর এই হস্তমৈথুন ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়ার প্রধান কারণ।

আশযুক্ত খাবার খাওয়াঃ ফটো ফোটা প্রসাব দূর করতে আশযুক্ত খাবার খাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে মৌসুমী, তিলের বীজ, ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। 

কাঁচা রসুনঃ প্রসাবের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে রসুন অত্যন্ত কার্যকর। তাই আপনি যদি সকালবেলায় খালি পেটে রসুনের একটি কোষ চিবিয়ে ৭ দিন খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকারিতা পাবেন।

নিয়মিত ডুমুর খাওয়াঃ ডুমুর ফল আমরা প্রায় সকলেই চিনি। এই ডুমুর ফল অনেকেই খাই আবার অনেকেই খাই না। তাই যাদের ফটো ফোটা প্রসাবের সমস্যা আছে তারা যদি প্রতিদিন কাঁচা ডুমুর রান্না করে অথবা কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে প্রসাব হওয়া সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।তবে রান্না করে খাওয়ার চাইতে কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি।

বেশি বেশি পানি খাওয়াঃ বেশি বেশি পানি খেলে মূত্রথলিতে বিভিন্ন রকম খারাপ ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা বেরিয়ে যাবে।

চিকিৎসা নেওয়াঃ এই সমস্যাটা যদি দীর্ঘদিন যাবত হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নিন। যেহেতু ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যাটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে বেশি হয় তাই এই সমস্যাটি নিয়ে কখনোই বাসাতে বসে থাকবেন না ভালো একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

প্রস্রাবের পরও ফোঁটা ফোঁটা পড়ে কেন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিষয়টি খুব একটা চিন্তার নয়। কিন্তু কিছু কিছু সময় এটি বিপদের সংকেত হতে পারে। মূত্রনালি সরু হয়ে গেলে অনেক সময় এই ঘটনা ঘটতে পারে। 

কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলেও এই সমস্যা হতে পারে। আবার অনেক সময় প্রস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও অনিয়ন্ত্রিতভাবে কিছুটা মূত্র বেরিয়ে আসে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে থাকে এই সমস্যা। মূত্রত্যাগের সময় কিছু পেশির সুসংহত সংকোচন ও প্রসারণের ফলে মূত্র দেহের বাইরে নির্গত হয়। স্নায়বিক নিয়ন্ত্রণ কমে এলে কিংবা পেশিগুলো দুর্বল হয়ে গেলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিন্তু কখন সাধারণভাবে বিন্দু বিন্দু মূত্র নির্গত হচ্ছে, আর কখন প্রস্টেট ও স্নায়ু বা পেশির সমস্যা থেকে এমন হচ্ছে, সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বুঝে ওঠা কার্যত অসম্ভব। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে এই ধরণের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

প্রস্রাব ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়

কারো কারো প্রসব করতে গিয়ে মাঝপথে আটকে যাই অথবা প্রসাব হলুদ রঙের হয় এবং প্রসাব করার পর ফোঁটা ফোঁটা পোশাক বেরিয়ে যায়। আপনি যদি এই সকল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আমাদের দেওয়া উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ-  দাঁত ফাঁকা হওয়ার কারণ ও প্রতিকার বিস্তারিত জানুন

বেশি বেশি পানি পান করাঃ আমরা সবাই জানি যে পানির অপর নাম জীবন। তাই প্রসাবের সমস্যার ক্ষেত্রে পানির কোনো তুলনা হয় না। আপনাকে অন্তত প্রতিদিন ২ থেকে ২.৫ লিটার পানি পান করতে হবে তাহলে প্রসাব ক্লিয়ার হবে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারঃ প্রস্রাবে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে ভিটামিন সি এর তুলনা হয় না। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খান যেমন কমলালেবু, টমেটো, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, আলু এবং ব্রকোলি ইত্যাদি। এইসব খাবার যদি আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখেন তাহলে দ্রুত প্রসাবের সমস্যা দূর হবে।

আদা ও রসুনঃ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আদা এবং রসুনের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোষ কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান তাহলে অনেক উপকারিতা পাবেন কারণ এই আদা এবং রসুন এ প্রচুর পরিমাণে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল রয়েছে।

আখের রসঃ প্রস্রাব ক্লিয়ার করার অন্যতম উপায় হচ্ছে প্রতিদিন আখের রস খাওয়া। আপনি যদি প্রতিদিন এক গ্লাস করে আখের রস খান তাহলে আপনার প্রসাব ক্লিয়ার হবে এবং আপনার প্রসাবে যদি ইনফেকশন থেকে থাকে তাহলে সেটির বিরুদ্ধে লড়াই করবে এই আখের রস। এই আখের রসের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না।

বেকিং সোডাঃ প্রসাবে ইনফেকশন হলেও প্রসাব ক্লিয়ার হয় না আর এই প্রসাবে ইনফেকশন দূর করতে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকারী। আপনি যদি কয়েকদিন ১ গ্লাস পানিতে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে খান তাহলে দ্রুত উপকারিতা পাবেন। তবে খুব বেশি বেকিং সোডা খেতে যাবেন না কারণ এতে ক্ষতিও রয়েছে।

পানীয় দ্রব্য কম খাওয়াঃ অতিরিক্ত মাত্রায় কোল্ড ড্রিংকস কিংবা চা,কফি খাওয়া যাবে না কেননা এসব পানীয় সেবনের ফলে প্রসাবের রং গাঢ় হতে পারে। এজন্য প্রসাব ক্লিয়ার রাখতে চাইলে অতিমাত্রায় পানীয় দ্রব্য পান করা থেকে বিরত থাকুন।

অভ্যাস পরিবর্তনঃ ঘুমাতে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে তরল খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন। 

ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ বর্তমান সময়ে আমরা এখন একটু গা ব্যথা বা মাথাব্যথা করলেই বিভিন্ন রকম ওষুধ খেয়ে ফেলে এটা একদম উচিত নয়। বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারণেও প্রসাবের রং হলুদ অথবা গাঢ় হতে পারে। তাই প্রয়োজন ছাড়া বিভিন্ন রকম ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

বাচ্চাদের ফোটা ফোটা প্রস্রাব কেন হয়

অনেক বাবা মায়েরা আছেন তারা বলে আমার ছোট বাচ্চা সব সময় তার প্রস্রাবের রাস্তার মুখ দিয়ে ফোটা ফোটা প্রসাব বের হতে থাকে এ কারণে কাপড় নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ কাপড়টা সব সময় প্রসাব দিয়ে ভিজা থাকে এর কারণ কি। বাচ্চার ফোটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া এটার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

  • বাচ্চার জন্মগতভাবে কোন রোগ থাকলে 
  • বাচ্চার প্রসাবের রাস্তায় জন্মগত ভাবে কোন পর্দার মতো জিনিস থাকে 
  • বাচ্চার যদি নিউরোপ্যাথি বাধা হয় 
  • এছাড়া বাচ্চার যদি প্রসাবের রাস্তায় ইনফেকশন থাকে 
  • বাচ্চা যদি দীর্ঘ সময় ধরে প্রসাব আটকে রাখে এবং
  • বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে 

তাহলে ফোঁটা ফোটা প্রসাববের সমস্যা হতে পারে। তাই কোন বাচ্চার যদি এই সমস্যা গুলো থেকে থাকে তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আপনার বাচ্চাকে একজন ভালো চিকিৎসকে দেখান।

আরো পড়ুনঃ-  কিভাবে দ্রুত sgpt কমাতে হয় - Sgpt কমানোর উপায় কি

ফোটা ফোটা প্রস্রাবে হোমিও চিকিৎসা

ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা দূর করতে হোমিও চিকিৎসা কেমন কাজ করে এবং ওষুধ কি কি। ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা দূর করতে হোমিও চিকিৎসা অনেক কার্যকরী। এই ফোঁটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন ইউরিনারি ইনফেকশন, ইউরিনারি ব্লাডার এবং মূত্রথলী আশারতা কারণে এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। 

আজকে আমি আপনাদের কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ এর নাম জানাবো যেগুলি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন তাহলে হোমিও ওষুধের নাম গুলি জেনে নেওয়া যাক।

১. Equisetum Hyemale 30 CH: আপনার যদি ফোঁটা ফোটা প্রসাব পরে তাহলে এই হোমিওপ্যাথি ওষুধ আপনার জন্য খুবই কার্যকারী হতে পারে। এটি জিহ্বায় ৩ ফোঁটা করে দিয়ে দিনে তিনবার খাবেন এবং খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খাবেন অথবা খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে খাবেন।

২. Caustium 200 CH: এই হোমিওপ্যাথি ওষুধটিও এই সমস্যা দূরকরণে বেশ ভালো সহায়তা করে থাকে। এই ওষুধটি সেবনের সঠিক নিয়ম হচ্ছে একদিন গ্যাপ দিয়ে দিয়ে সপ্তাহে ৩ বার খেতে হবে। এইভাবে প্রতিদিন রাতে একবার করে একদিন পরপর খাবেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

এইভাবে আপনি যদি এই হোমিও ওষুধ দুটি এক মাস খান তাহলে আপনার ফোটা ফোটা প্রসাব করা এবং ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে ওষুধটি খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

প্রস্রাবের সাথে রক্ত আসার কারণ

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন প্রস্রাবের শেষে এক ফোঁটা করে রক্ত আশার কারণ সম্পর্কে। প্রস্রাবের শেষে এক ফোটা করে রক্ত আসার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ নারীদের মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রসাবের রাস্তা দিয়ে রক্ত ঝরতে পারে আর এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।

তবে কোন শিশু, পুরুষ, বৃদ্ধ এবং যেকোন নারীর যদি প্রসাবের সঙ্গে ফোটা ফোটা রক্ত বের হয় সে ক্ষেত্রে মারাত্মক কোন রোগের কারণে হতে পারে। তাই প্রসাবের শেষে ফোটা ফোটা রক্ত বের হলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া উচিত। প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোটা রক্ত আসার কারণ গুলি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • মূত্রথলিতে যদি সংক্রমণ হয় সে ক্ষেত্রেও প্রসাবে রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হতে পারে এবং প্রসাব করার সময় জ্বালাপোড়া করা ও দুর্গন্ধ ব্যথা, ইত্যাদি হতে পারে।
  •  কিডনিতে পাথর কিংবা সংক্রমণ হয়ে থাকলে প্রস্রাব করার পরে ফোটা ফোটা রক্ত আসতে পারে এবং এর পাশাপাশি কোমরের পিছে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
  • প্রসাবের থলিতে ইনফেকশন হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে প্রসবের পর ফোঁটা ফোটা রক্ত বের হতে পারে।
  • কিডনিতে অথবা মূত্রথলিতে টিউমার থাকলে প্রসবের পর ফোঁটা ফোটা রক্ত বের হতে পারে।
  • বয়স্কদের প্রসাবে রক্ত আসার প্রধান কারণ হচ্ছে প্রোস্টেট। প্রোস্টেট থেকে অনেক সময় রক্ত আসে এবং প্রোস্টেট এ যদি ক্যান্সার হয় সে ক্ষেত্রে রক্ত আসতে পারে।

লেখকের শেষ মতামত

তবে যদি এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করেও কোনো উন্নতি না হয়, তাহলে অবশ্যই একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, এই সমস্যা নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, কারণ এটি একটি চিকিৎসাযোগ্য অবস্থা।

এই ছিল আজকের ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় জানতে পেরেছেন।

এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় সম্পর্কে জানতে পারবে।

Leave a Comment