‘শিক্ষা’ পৃথিবীর মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক আধিকার। একটি ভূখন্ডের প্রতিটি মানুষের মাঝে শিক্ষার জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া দ্বায়িত্ব সেই ভূখন্ডের সরকার, স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের। আর বিভিন্ন সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কারনে শিক্ষা খাতে কিছুটা পিছিয়ে পড়া শিক্ষা গ্রহনে আগ্রহী লোকদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার আগ্রনায়ক হচ্ছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষাকে সর্বস্থরের মানুষের নিকট পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার ২১ অক্টোবর ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ সব ধরনের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই সাজানো হয়েছে। যাতে যে কোন বয়সের আগ্রহী শিক্ষার্থী তার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহন করতে পারে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ সম্বন্ধে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পূর্বে। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অনস্বীকার্য অবদান রেখে চলেছে। শিক্ষা আমাদের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের অন্যতম একটি অংশ। মানব সভ্যতায় নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হলে শিক্ষা গ্রহণের কোনো বিকল্প নাই। শিক্ষা বিশ্বজুড়ে মানুষের প্রয়োজনে অসংখ্য স্তরে বিন্যস্ত।
সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক, ভৌগলিক, আইনগত, ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি গত সহ বিভিন্ন স্তর ও উপস্তরে বিন্যস্ত। একটি জাতি পৃথিবীতে সফল হতে প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষাগ্রহণ করে, সেই শিক্ষার যথাযথ পর্যায়ে সর্বোচ্চ প্রয়োগ করলেই কেবল সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি ও উন্মুক্ত পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণের অজস্র সুযোগ লাভ করছে, এই দেশের লক্ষ-কোটি শিক্ষার্থী। আজকের আলোচনায় আমরা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কী
১৯৯২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষা আইন কতৃক প্রণীত ও জাতির সংসদে পাশকৃত একটি বিশ্ববিদ্যালয়। যেটি দেশের সর্বোস্তরের মানুষের নিকট সর্বোচ্চ শিক্ষা পৌছে দেওয়ার জন্য গাজীপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে আধুনিক সৃজনশীল ও বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা দিয়ে ও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে দেশ কে এগিয়ে নিতেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুচনা হয়।
সারা দেশের ১২ টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে ৮০ টি কো-অর্ডিনেশন অফিস ও ১০০০ টি টিউটোরিয়াল কেন্দ্র রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় রয়েছে সাতটি একাডেমিক অনুষদ ও ১১ টি প্রশাসনিক ভবন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট বা স্নাতক সম্মান ও তিন বছর মেয়াদি ডিগ্রির কোর্স রয়েছে। সারা দেশের কলেজ সমূহ তে এই কোর্স করার সুযোগ রয়েছে।
১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর থেকে যাত্রা শুরু করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। এর মূল অবস্থান ঢাকা শহরের উত্তরে গাজীপুর জেলার বোর্ড বাজারে হলেও সারা বাংলাদেশে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র রয়েছে।
বিভিন্ন কারণে যারা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়েছে তাদের সুবিধামতো প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট অর্জনে এবং শিক্ষিত উঠার মিশনে সাহায্য করে থাকে এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। চলুন তবে আজকের এই আর্টিকেলের সাহায্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ জেনে নিই।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Open University) বিভিন্ন দেশে রয়েছে এবং এগুলো সাধারণত দূরশিক্ষণ (Distance Learning) পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন স্তরের কোর্স অফার করে, যেমন স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডিপ্লোমা, এবং সার্টিফিকেট কোর্স। নিচে কিছু সাধারণ বিষয় এবং কোর্সের উদাহরণ দেওয়া হলো:
অনার্স সমতুল্য বিবিএ প্রোগ্রাম, ডিগ্রি কোর্স, এসএসসি কোর্স, এইচএসসি কোর্স কি নেই এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে? মোটামুটি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একজন ব্যাক্তির সকল শিক্ষাগত সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য প্রায় সকল কোর্স নিয়েই কাজ করছে এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ চালু রয়েছে সেসমস্ত কোর্স হলোঃ
১। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি কোর্স
মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখা থেকে যারা এসএসসি সার্টিফিকেট চাচ্ছেন তারা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
এক্ষেত্রে ভর্তি হতে চাইলে যোগাযোগ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের ই-মেইলে, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রে অথবা সংশ্লিষ্ট স্টাডি সেন্টারে।
এসএসসি কোর্সে ভর্তি যোগ্যতা
অন্যান্য কলেজগুলির মতো উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে থাকা কলেজে ভর্তি হতে হলেও আপনাকে জেএসসি, জেডিসি, অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত যেকোনো সমমানের পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।
এক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে সেই পরীক্ষার সার্টিফিকেট। আর যাদের সার্টিফিকেট নেই তাদের বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর। তাছাড়া জেনে রাখতে হবে:
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি কোর্সের ভর্তি ফি বিকাশ, ডিবিবিএল বা রকেটের মাধ্যমে পে করা যাবে
বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে উন্মুক্তের এই এসএসসি কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে না
উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণ দুই মাধ্যমেই আপনি চাইলে এই কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন
২। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্স
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এইচএসসি কোর্সেরও ব্যবস্থা রেখেছে। যে কোর্সটি করতে হলে আপনাকে অনলাইনের সাহায্যে আবেদন করতে হবে। আবার আপনি চাইলে রিজিওনাল বা সাব রিজিওনাল যেকোনো ক্যাম্পাসে সরাসরি গিয়েও আবেদন করতে পারেন৷
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো গত বছর এই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্স ফির ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের ৬০% ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিলো। আশা করি এই বছরও তার ব্যাতিক্রম হবে না।
এইচএসসি কোর্স ভর্তি যোগ্যতা
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্স ভর্তি যোগ্যতা হিসাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো শিক্ষার্থীর এসএসসি সার্টিফিকেট। যেখানে শিক্ষার্থীর রেজাল্ট, সঠিক নাম এবং ঠিকানা থাকা জরুরি।
কারণ একই নাম ঠিকানায় ভবিষ্যতে এইচএসসি সার্টিফিকেট বেরুবে। যারা অনলাইনে ভর্তি হবেন তারা আবেদন করার পর যদি কোনো জটিলতা দেখেন বা কোনোকিছু যদি ঠিক করার প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরাসরি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প লাইনে যোগাযোগ করবে এবং মনে রাখবেন:
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্স ভর্তি হতে অনলাইন আবেদন ফি ১০০/- এবং রেজিষ্ট্রেশন ফি ১৫০/- পে করতে হবে
- এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্সের ভর্তি ফি মূলত ৪,৫২৩/- পড়ে
- আবেদন করার সময় সকর তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে এবং এসএসসি সার্টিফিকেটে থাকা তথ্যের সাথে উক্ত তথ্যসমূহের মিল থাকতে হবে
- সবশেষে বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে পেমেন্ট ক্লিয়ার করতে হবে এবং SMS ও email এ “payment successful” ম্যাসেজ এলে তবেই ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে
৩। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্স
এইচএসসি পাশের পর যাদের অনার্স পড়ার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু পড়তে পারেন নাই তারা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্স করতে পারেন৷ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্স প্রোগ্রামে আপনি মোট ৮ টি সাবজেক্ট অপশন পাবেন।
সেখান থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী এটি সাবজেক্টে পড়াশোনা শুরু করে দিতে পারেন। তবে হ্যাঁ আপনার নিকটবর্তী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কোন সাবজেক্টে পড়ার সুযোগ রয়েছে তা আপনাকেই চেক করে নিতে হবে।
অনার্স কোর্সে ভর্তি যোগ্যতা
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সে ভর্তি হওয়ার আলাদা কোনো যোগ্যতা নেই। তবে আপনাকে অনার্সে পড়তে হলে অবশ্যই এইচএসসি পাশ করতে হবে। বলে রাখা ভালো উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহের আন্ডারে এইচএসসি কোর্সও রয়েছে।
সুতরাং যারা এইচএসসি পাশ করেননি তারা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এইচএসসি সার্টিফিকেট কালেক্ট করে নিতে পারেন। এছাড়াও মাথায় রাখতে হবে:
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সে ভর্তির শুরুতে আপনাকে ৫০০০/- পে করতে হবে
- অনার্সে প্রতি বছর ২ সেমিস্টার থাকে
- প্রতি ২ টি সেমিস্টারের জন্য ২ বার করে ৪০০০/- পে করতে হবে
- ৩ বছরের অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে সর্বমোট খরচ পড়বে ২৪,০০০/-
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে সরাসরি ক্যাম্পাসে, রিজিওনাল বা সাব রিজিওনাল ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে পারেন
৪। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি কোর্স
যারা সময়ের কারণে বা বিভিন্ন সমস্যার কারণে ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করতে পারেননি তারা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে ডিগ্রি বিএ ও বিএসএস প্রোগ্রামে জয়েন হতে পারেন। বলে রাখা ভালো বিএ এবং বিএসএস কোর্স শেষ করতে আপনার ৩ বছরের মতো সময় লাগবে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে এই ডিগ্রি কোর্স করার ক্ষেত্রে আপনাকে সাবজেক্ট হিসাবে পড়তে হবে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, জনপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, নারী ও জেন্ডার স্টাডিজ ইত্যাদি সাবজেক্ট!
ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি যোগ্যতা
মূলত উন্মুক্তের এই ডিগ্রি কোর্সে পড়তে আপনাকে ৩১ জুলাই থেকে শুরু করে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেকোনো একটি দিনে আবেদন করতে হবে। আর আবেদন করতে হবে কাছের কোনো আঞ্চলিক অথবা উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রে সরাসরি উপস্থিত থেকে। এছাড়াও মনে রাখতে হবে:
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হওয়ার ফি আগেভাগেই অনলাইন পেমেন্টের সাহায্যে পে করতে হবে
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি ফি একাডেমিক বছর অনুযায়ী ৩৮৯০-৪০০০/-
- হতে পারে
- চাইলে শিক্ষার্থীরা নিজের মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানার সাহায্যে ঘরে বসে আবেদন সম্পন্ন করতে পারবে
৫। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্স
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্সকে মূলত ২ ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো মাস্টার্স অব সায়েন্স (এমএসসি) এবং অন্যটি হলো মাস্টার্স অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স (এমএসএস) কোর্স। বাউবির মাস্টার্স অব সায়েন্স (এমএসসি) কোর্সটি করলে আপনি পাবেন ১৪টি বিভাগ থেকে যেকোনো একটি পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ।
অন্যদিকে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স (এমএসএস) কোর্স করতে চাইলে পাবেন এর ১১টি বিভাগ থেকে যেকোনো একটি বিভাগে ডিগ্রি অর্জন করার সুযোগ।
মাস্টার্স কোর্স ভর্তি যোগ্যতা
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হতে হলে বাংলাদেশের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে বিষয়ে মাস্টার্স করতে চাচ্ছেন সেই বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। আর রেজাল্ট হিসাবে পূর্বের কোর্সগুলিতে থাকতে হবে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ। এছাড়াও মাথায় রাখবেন:
- কোর্সটিতে ভর্তি হতে চাইলে বাউবির ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে এবং ১০০০/- ফি পরিশোধ করতে হবে
- যেহেতু বাউবির মাস্টার্স পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি ও আগস্ট মাসে হয় সেহেতু সময়টুকু মাথায় রেখে সার্কুলার অনুযায়ী ভর্তি হতে হবে
- বাউবির মাস্টার্সে আপনাকে প্রতি সেমিস্টারে ৮টির মতো কোর্স কমপ্লিট করতে হবে
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সগুলো সাধারণত নমনীয় সময়সূচী এবং স্বল্প খরচে শিক্ষা প্রদান করে, যা চাকরিজীবী এবং অন্যান্য ব্যস্ত ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার নিয়ম
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার নিয়ম হলো সংশ্লিষ্ট কোর্সের জন্য নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন করতে হবে এবং নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ক্লাস করার জন্যে প্রস্তুতি নিতে হবে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) বা অন্যান্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
১. বাউবি সম্পর্কে সাধারণ তথ্য
- স্থাপন: ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত।
- মূল ক্যাম্পাস: গাজীপুর।
- উদ্দেশ্য: দূরশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ প্রসারিত করা, বিশেষ করে যারা নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেন না তাদের জন্য।
২. পড়ার নিয়ম ও ভর্তির শর্তাবলী
বাউবিতে বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আলাদা শর্ত রয়েছে:
ক. এসএসসি/এইচএসসি প্রোগ্রাম
- এসএসসি: ন্যূনতম ৮ম শ্রেণি পাস।
- এইচএসসি: এসএসসি পাস।
খ. স্নাতক (অনার্স/পাস) প্রোগ্রাম
- বিএ, বিএসএস, বিএসসি (পাস): এইচএসসি বা সমতুল্য পাস।
- অনার্স প্রোগ্রাম (যেমন: বিএ, বিএসএস, বিএসসি, বিবিএ):
- এইচএসসি বা সমতুল্য পরীক্ষায় ন্যূনতম ২য় বিভাগ বা GPA 2.0।
- কিছু প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা প্রয়োজন।
গ. স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) প্রোগ্রাম
- সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন।
- কিছু প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ লাগে।
ঘ. ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স
- ডিপ্লোমা: এইচএসসি পাস।
- সার্টিফিকেট: এসএসসি পাস।
৩. ভর্তির প্রক্রিয়া
অনলাইনে আবেদন:
- বাউবির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.bou.ac.bd-এ গিয়ে ভর্তি ফর্ম পূরণ করুন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- শিক্ষাগত সনদ ও মার্কশিটের attested কপি।
- জাতীয় ID কার্ড বা জন্ম নিবন্ধনের কপি।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
ফি জমা:
- অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে ভর্তি ফি পরিশোধ করুন।
কনফার্মেশন:
- ভর্তি নিশ্চিত হলে স্টাডি ম্যাটেরিয়াল ও রোল নম্বর দেওয়া হবে।
৪. পড়াশোনার পদ্ধতি
- দূরশিক্ষণ (Distance Learning): বই, অনলাইন লেকচার, অডিও-ভিডিও ম্যাটেরিয়ালের মাধ্যমে।
- টিউটোরিয়াল ক্লাস: নির্দিষ্ট কেন্দ্রে সপ্তাহান্তে বা সন্ধ্যায় ক্লাস হয়।
- অ্যাসাইনমেন্ট জমা: প্রতি কোর্সে নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হয়।
- পরীক্ষা: সেমিস্টার বা বার্ষিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।
৫. খরচ
- প্রোগ্রামভেদে খরচ ভিন্ন (সাধারণত ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত)।
- ফি কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।
৬. ডিগ্রির স্বীকৃতি
- বাউবির ডিগ্রি বাংলাদেশ সরকার ও UGC দ্বারা স্বীকৃত।
- সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষার জন্য গ্রহণযোগ্য।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা হলো এটি চাকরিজীবী বা ব্যস্ত ব্যক্তিদের জন্য নমনীয় সময়সূচি প্রদান করে। ভর্তির আগে প্রোগ্রামের বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইট বা রিজিওনাল সেন্টার থেকে জেনে নিন।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য
আমি অনেকের কাছে শুনেছি যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য থেকে অনেকটাই কম। কিন্তু এটি সবার ভুল ধারণা। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন অনেক ভালো পড়াশোনা হয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য দিয়ে এখন অনেকেই অনেক জায়গায় চাকরি করছে।
আমাদের আশেপাশে এমনও অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরি করছে। তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় যে সকল শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তারা অধিকাংশই বিভিন্ন ধরনের ব্যস্ততার মাঝে সময় বের করে। তারা তাদের পড়াশোনাটি চালিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে তারা পড়াশোনা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সময়টা পায় না।
আরো অনেক ধরনের কারণ রয়েছে। কিন্তু যারা জেনারেলে পড়াশোনা করে তারা অধিকাংশই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এই ক্ষেত্রে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য কেমন, একটু কম। তবে আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, সম্মানিত শিক্ষামন্ত্রীর কাছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য এবং জেনারেল এর সার্টিফিকেটের মূল্য সমান।
আপনি যদি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে। ভালো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। তাহলে আপনার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য উপরে থাকবে। আপনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন সেটা ভাবার বিষয় না। আপনি যেখানে পড়াশোনা করেছেন।
ঐখানে পড়াশোনা করে কি যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এটি হলো ভাবার বিষয়। শুধু উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য নিয়ে যাচাই-বাছাই করে লাভ হবে না। যদি আপনি সেখান থেকে পড়াশোনা করে কোন যোগ্যতা অর্জন না করতে পারেন। অতএব, আপনি যেখানেই পড়াশোনা করেন না কেন। আপনাকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
তাহলে, আপনার সার্টিফিকেটের মূল্যের সাথে আপনার যোগ্যতা কেউ বিচার করবে। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য কেমন। এটি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কি বিসিএস দেয়া যায়
হ্যাঁ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Open University) থেকে পড়াশোনা করে বিসিএস (Bangladesh Civil Service) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়, তবে কিছু শর্ত ও বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। নিচে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
১. বিসিএসের সাধারণ যোগ্যতা:
বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের জন্য স্নাতক (অনার্স) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিগ্রি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (NU) বা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (UGC) কর্তৃক স্বীকৃত হলে তা বিসিএসের জন্য গ্রহণযোগ্য।
২. উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির স্বীকৃতি:
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (BOU) একটি সরকারি ও UGC-স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। তাই এখানকার ডিগ্রি বিসিএসসহ সকল সরকারি চাকরির জন্য গ্রহণযোগ্য।
শর্ত: আপনার ডিগ্রি প্রথম শ্রেণী বা দ্বিতীয় শ্রেণী (CGPA 2.5 বা তার বেশি) হতে হবে (বিভিন্ন ক্যাডারে ন্যূনতম জিপিএর ভিন্নতা থাকতে পারে)।
৩. বিশেষ বিবেচ্য বিষয়:
- ক্যাডার নির্বাচন: কিছু ক্যাডার (যেমন প্রশাসন, বিদেশ, পুলিশ ইত্যাদি) প্রতিযোগিতামূলক হওয়ায় উচ্চতর জিপিএ ও লিখিত পরীক্ষায় ভালো স্কোর প্রয়োজন।
- বয়স সীমা: বিসিএসের বয়সসীমা সাধারণত ৩০ বছর (সাধারণ কোটায়) এবং ৩২ বছর (কোটা থাকলে)।
- অন্যান্য যোগ্যতা: যেমন শারীরিক সুস্থতা, চরিত্র সনদ ইত্যাদি পূরণ করতে হবে।
৪. উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ:
সুবিধা:
- কর্মজীবী বা দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য নমনীয় পড়ার সুযোগ।
- খরচ তুলনামূলক কম।
চ্যালেঞ্জ:
- কিছু ক্ষেত্রে প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির তুলনায় ভিন্ন ধারণা থাকতে পারে (তবে UGC স্বীকৃতি থাকলে সমস্যা নেই)।
- স্নাতকোত্তর ডিগ্রি না থাকলে বিসিএসের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারে না (কারণ বিসিএসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা সমতুল্য প্রয়োজন)।
৫. প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন?
- একাডেমিক ফোকাস: জিপিএ ৩.০+ রাখার চেষ্টা করুন।
- বিসিএস সিলেবাস: সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি ও বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিন।
- মক টেস্ট: নিয়মিত মক টেস্ট দিয়ে সময় ব্যবস্থাপনা রপ্ত করুন।
যদি আপনি BOU থেকে পড়ে বিসিএস দিতে চান, তবে ডিগ্রির স্বীকৃতি নিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন এবং প্রস্তুতির পাশাপাশি বিসিএসের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি ভালোভাবে পড়ুন। অনেকেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন—সঠিক পরিকল্পনা ও অধ্যবসায় সাফল্য সম্ভব!
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Open University) থেকে ক্যারিয়ার গঠন: একটি সম্পূর্ণ গাইড
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (BOU) থেকে পড়াশোনা করে আপনি যেমন বিসিএস বা অন্যান্য সরকারি চাকরির জন্য যোগ্য হবেন, তেমনি ব্যক্তি বা পেশাভিত্তিক ক্যারিয়ার গঠনেরও সুযোগ পাবেন। নিচে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি দিয়ে ক্যারিয়ার গঠনের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
BOU (Bangladesh Open University) বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি দূরশিক্ষণ ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়, যা UGC ও সরকার দ্বারা স্বীকৃত। এখানে ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমনকি পিএইচডি পর্যন্ত প্রোগ্রাম রয়েছে।
বিশেষ সুবিধা: নিয়মিত ক্লাস না করে দূর থেকে পড়ার সুযোগ, যা চাকরিজীবী বা ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ।
১। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন ডিগ্রিগুলো ক্যারিয়ারে সহায়ক?
BOU-তে বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রি দেওয়া হয়, যেমন:
প্রোগ্রাম | ক্যারিয়ার অপশন |
BBA / MBA | ব্যাংক, কর্পোরেট জব, মার্কেটিং, এমএনসি |
B.Sc / M.Sc (CSE, IT) | সফটওয়্যার ডেভেলপার, ডেটা অ্যানালিস্ট, আইটি এক্সপার্ট |
BA / MA (ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান) | বিসিএস, শিক্ষকতা, এনজিও, গবেষণা |
ডিপ্লোমা ইন ল অ্যান্ড জুডিশিয়ারি | আইন সংশ্লিষ্ট চাকরি, আদালত কর্মকর্তা |
B.Ed / M.Ed | স্কুল-কলেজ শিক্ষক, শিক্ষা অফিসার |
এগ্রিকালচার | কৃষি কর্মকর্তা, এগ্রো-বিজনেস |
২। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি দিয়ে কোন চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন?
✅ সরকারি চাকরি:
- বিসিএস (প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা, কৃষি ক্যাডার)।
- ব্যাংক জব (প্রাইমারি, সোনালী, অগ্রণী ব্যাংক)।
- শিক্ষক নিবন্ধন (এনটিআরসিএ) ও স্কুল-কলেজ শিক্ষকতা।
✅ প্রাইভেট সেক্টর:
- কর্পোরেট (মার্কেটিং, ফাইন্যান্স, HR)।
- আইটি ফার্ম, টেলিকমিউনিকেশন, ডেটা সায়েন্স।
- এনজিও, গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্র্যাক, প্রশিকা)।
✅ উদ্যোক্তা (Entrepreneurship):
- ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সিং (গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং)।
৩। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা
- BOU-র ডিগ্রি UGC ও সরকারি চাকরিতে স্বীকৃত (বিসিএস, ব্যাংক, শিক্ষকতা)।
- কিছু প্রাইভেট কোম্পানি প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিকে প্রাধান্য দিলেও, দক্ষতা প্রমাণ করলে চাকরি পাওয়া যায়।
৪। ক্যারিয়ার গঠনে করণীয়
- ডিগ্রি প্ল্যানিং: চাকরির মার্কেট দেখে প্রোগ্রাম নির্বাচন করুন (যেমন: বিসিএসের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যাংকের জন্য ফাইন্যান্স)।
- স্কিল ডেভেলপমেন্ট: কোর্সের পাশাপাশি কম্পিউটার, ইংরেজি, কমিউনিকেশন স্কিল শিখুন।
- ইন্টার্নশিপ / নেটওয়ার্কিং: LinkedIn, চাকরির ফেয়ারে যুক্ত হোন।
- প্রস্তুতি: বিসিএস বা ব্যাংক জবের জন্য প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার গাইডলাইন ফলো করুন।
৫। সাফল্যের উদাহরণ
অনেক BOU শিক্ষার্থী বিসিএস ক্যাডার, ব্যাংক কর্মকর্তা, স্কুল শিক্ষক বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফল।
উদাহরণ: BOU-র MBA করে কেউ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার হয়েছেন, আবার B.Sc in CSE করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
সর্বোত্তম পরামর্শ:
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিকে সঠিকভাবে প্ল্যান করে কাজে লাগালে যেকোনো ক্যারিয়ারেই সাফল্য সম্ভব। চাকরির জন্য ডিগ্রির পাশাপাশি স্কিল ও নেটওয়ার্কিং গুরুত্বপূর্ণ।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা
সব ধরনের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় তাদের একাডেমিক পোগ্রামে বিভিন্ন ধরনের কোর্স চালু রেখেছে। যা পূর্বের আলোচনা থেকে আপনারা অবগত হয়েছেন। তাই বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্স সমূহে ভর্তি হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন হয়। যেমন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (SSC) কোর্সে এডমিশনের জন্য একজন শিক্ষার্থীর নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে অষ্টম শ্রেনী পাশ।
আবার স্নাতক (অনার্স বা ডিগ্রি) কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (HSC) পাশ আবশ্যক। তেমনি ভাবে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তির জন্য স্নাতক পাশ আবশ্যক। এরূপ প্রতিটি কোর্সে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বয়সের কোন শর্ত নেই। যে কোন বয়সের যে কোন ব্যক্তি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট যোগ্যতা সাপেক্ষে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবার সুবাদে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য এম ফিল এবং পি এইচ ডি ডিগ্রি করারও ব্যবস্থা রেখেছে। আগ্রহী ব্যক্তিগন নির্দিষ্ট যোগ্যতা সাপেক্ষে বিভিন্ন বিষয়ে এম ফিল এবং পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন।
লেখকের শেষ মতামত
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ নিয়ে উপরোক্ত আলোচনায় বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যায়ের অবদান দেশের শিক্ষাঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অধিষ্ঠিত আছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মতো উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েও গবেষণা ও বিজ্ঞান ভিত্তিক সুযোগ প্রদান করলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান আরও অনেক উন্নত হবে।
ফলাফল স্বরুপ, একটি আদর্শ ও উন্নত জাতি হিসেবে আমরা পৃথিবীর মানচিত্রে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবো। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ডিগ্রি ১ম বর্ষের বইয়ের তালিকা সম্পর্কে পড়তে পারেন। যে জন পৃথিবীর মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়েছে শিক্ষা গ্রহন করা তার নৈতিক অধিকার।
আর এই অধিকার যাতে বয়সের কারন বাধাগ্রস্থ না হয় সে জন্য বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা স্বর্তেও যারা শিক্ষার আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে চায় সেসব আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ সর্বদা চালু রয়েছে।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মূলত মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, ডিপ্লোমা, ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, এম ফিল, পি এইচ ডি সব ধরনের কোর্সই অফার করে। দেশের চাহিদা সম্পূর্ন সাবজেক্ট গুলোতেই মূলত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পাঠদান করা হয়।