মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো – গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর সুস্বাস্থ নিশ্চিত করতে হলে পরিমিত সুষম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের যত্নে কোনো ত্রুটি থাকলে পরবর্তীতে মা ও শিশুর স্বাস্থঝুকি দেখা দিতে পারে। মা ও শিশুর স্বাস্থঝুকি এড়াতে অনেকেই গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেয়ে থাকেন।

মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো

কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানিনা। প্রিয় পাঠক আজকেই এই আর্টিকেলটিতে মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো ও মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও আর্টিকেলটিতে গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয় ও মাদার হরলিক্স এর দাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলে চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো

বর্তমানে এখন বাজারে অনেক কোম্পানির মাদার হরলিক্স পাওয়া যাচ্ছে এজন্য আমরা সঠিকভাবে ধারণা করতে পারি না যে কোন কোম্পানির মাদার হরলিক্স ভালো বা কোনটা ভালো। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো হবে এ বিষয়ে আপনারা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে সব থেকে ভালো হবে। 

আপনারা চাইলে জিএসকে(gsk) কোম্পানির মাদার হরলিক্স কিনতে পারেন এবং খেতে পারেন। কারণ এখন বর্তমানে যে সকল কোম্পানির মাদার হরলিক্স পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে জিএসকে (gsk) কোম্পানির মাদার হরলিক্স এর গুণগত মান অন্যান্যদের চাইতে অনেক ভালো। এছাড়াও বেশিরভাগ ডাক্তাররা এখন এই জিএসকে কোম্পানির মাদার হরলিক্স কেনার এবং খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন গর্ভবতী মহিলাদের।

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয় 

আসলে গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স যে একজন গর্ভবতী মহিলাকে খেতেই হবে এরকম কোন কথা নেই। মাদার হরলিক্স হচ্ছে জনপ্রিয় মল্টেড মিল্ক পাউডার।  এটা একজন মায়ের একটি সম্পূরক খাদ্য বা ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যখন একজন গর্ভবতী মহিলা খাবারের রুচি থাকে না এবং অন্যান্য খাবার খেতে পারে না ভালোভাবে তখনই তাকে মাদার হরলিক্স খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে।

যাতে করে সে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ভিটামিন পায়। কারন গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারাই ঠিকমতো খাবার খেতে পারে না এতে করে তাদের পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।  গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী নারীকে অবশ্যই সব সময় পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার প্রোটিনযুক্ত ভিটামিন মিনারেল আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হয়। 

যাতে করে তার শরীরে কোন  জটিলতা দেখা দিতে না পারে পুষ্টির ঘাটতি না হয় এবং বাচ্চারও যাতে কোন সমস্যা না হয়। যাতে করে বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশ এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ভালোভাবে হয় এবং হাড় মজবুত ও শক্ত হয়।  যখন একজন গর্ভবতী মহিলা ঠিকমতো খাবার খেতে পারবেনা তখন সে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাদার হরলিক্স রাখতে পারবে। এতে করে তার পুষ্টি চাহিদা এবং ক্যালরি পূরণ করা সম্ভব হবে। 

এটা তারা হালকা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারবে সকালে নাস্তা সময় অথবা রাত্রে ঘুমানোর আগে। এতে করে বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ভালোভাবে হবে ওজন বৃদ্ধি পাবে ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট এ সাহায্য করে থাকবে। কারণ মায়ের পেটে বাচ্চার সবকিছুর গঠন হয়ে থাকে। তবে এটা খাওয়ার পড়বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন।

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়া অনেক উপকারী হতে পারে, কারণ এটি মা ও শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে তৈরি একটি পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট, যা গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য উপযোগী। নিচে মাদার হরলিক্সের উপকারিতা বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:

ব্রণের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়: মাদার হরলিক্স এ আছে ডিএইচএ অথবা ডোকোসাহেক্সায়েনোইক অ্যাসিড যা একটি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এই উপাদানটি নবজাতকের ভ্রনের মস্তিষ্ক ও চোখের বিকাশ এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও গর্ভের শিশুর স্নায়ুর বিকাশের জন্য ডিএইচএ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অপরিহার্য উপাদান। এটি গর্ভধারণের প্রথম দিক থেকে শুরু করে জীবনের প্রায় দুই বছর পর্যন্ত ধারাবাহিক চলতে থাকে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিএইচএ উপাদানটি গ্রহণের ফলে গর্ভের শিশুর জ্ঞানের পরিধি, দৃষ্টিশক্তি উন্নত ও তীক্ষ্ণ এবং স্মৃতিশক্তিকে আরও বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মা ও নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: গর্ভাবস্থায় অনেক সময় ইমিউন সিস্টেম অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের ও শিশুর পূর্ণ সংক্রমনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

মাদার হরলিক্স এ থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ও ভিটামিন ডি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি করে। যা গর্ভাবস্থায় অতীব জরুরী। গর্ভবতী মায়ের অনাক্রমতার শক্তির দ্বিগুণ করে যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত দ্বিগুণ হয় এবং ক্ষতিকর সংক্রমণ বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কি - গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস: গর্ভাবস্থায় শারীরিক দুর্বলতা, ক্লান্তি, অবসাদ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। তবে বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। ভিটামিন বি-৬ ও ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ইত্যাদি দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে যা মাদার হরলিক্স এর বিদ্যমান।

মাদার হরলিক্স এর ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবারের উপাদান বেশি থাকায় গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়ার ফলে দ্রুত শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তি দূর করে। উক্ত ভিটামিন গুলো খাদ্যকে দ্রুত শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে।

মাদার হরলিক্স এর আয়রন দিয়ে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে: গর্ভাবস্থায় আয়রনের প্রয়োজন হয়।আয়রন এর প্রয়োজনীয়তার কারণে গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা কারণ হতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় যদি মাদার হরলিক্স খাওয়া যায় তাহলে জ খনিজের চাহিদা পূরণ করে এবং হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে।

এছাড়াও আয়রন এর অভাব জনিত কারণে রক্তের স্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মাদার হরলিক্স গর্ভবতী মহিলার আয়রনের সঠিক পরিমাণ নিশ্চিত করে যা পর্যাপ্ত পরিমাণে গর্ভবতীর মহিলার অক্সিজেন রক্তকণিকা বহন করে। যা শিশুর বিকাশে সাহায্য করে।

মাদার হরলিক্স হাড় শক্ত ও মজবুত করে: গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়াম শিশুর দাঁত ও হাড় বিকাশের জন্য সহায়ক। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের অস্টিওপোরোসিস এবং হাড়ের ঘনত্বের ক্ষতির হওয়া থেকে রক্ষা করে। গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি দেহের শোষণ বৃদ্ধি করে যা গর্ভবতী মা ও শিশুর দাঁত ও হাড় শব্দ মজবুত করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় যদি নিয়মিত মাদার হরলিক্স খাওয়া যায় তাহলে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ করে যা মা ও নবজাতকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মাদার হরলিক্স স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখে: গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ও নবজাতকের স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় যদি মাদার হরলিক্স খাওয়া যায় তাহলে স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধির বাধা প্রদান করে। মাদার হরলিক্স এর চিনি ও চর্বির পরিমাণ কম থাকায় স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।

এছাড়াও মজার হরলিক্স সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের পরিপূর্ণ থাকে। যা গর্ভবতী মায়ের ও পেটের নবজাতকের স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধিতে এবং বজায় রাখে। মাদার হরলিক্স অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি ছাড়াই ওজন সম্পর্কিত ঝুঁকি কমায় এবং ভ্রনের সঠিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।

হজমের সমস্যার সমাধান করে মাদার হরলিক্স: গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার বমি বমি ভাব কোষ্ঠকাঠিন্য এসিড রিফ্লাক্স ও হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় যদি মাদার হরলিক্স খাওয়া যায় তাহলে হজমের স্বাস্থ্যের উপকারিতা পাওয়া যায়।

কেননা মাদার হরলিক্স পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার সহ হজমের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় যা হজমের জন্য উপকারী। গর্ভবতী মহিলাদের হজম শক্তি করতে গর্ভাবস্থায় মার্ডার হরলিক্স খাওয়ার অভ্যাস করুন।

মাদার হরলিক্স এ ফলিক এসিড পাওয়া যায়: গর্ভাবস্থায় নবজাতকের নিউরাল টিউব গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ফলিক এসিড। ফলিক এসিড শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ড বিকাশে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে মাদার হরলিক্স এর ফলিক এসিড খাওয়ার ফলে নিউরোল টিউব সম্পর্কিত যেকোনো সমস্যা প্রতিরোধ করে এবং শিশুর জ্ঞানী স্বাস্থ্য উন্নতি করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে মাদার হরলিক্স: গর্ভাবস্থায় কিছু মহিলাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, যা বিভিন্ন জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাদার হরলিক্স ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে। মাদার হরলিক্স এর ম্যাগনেসিয়াম খনিজ পদার্থটি স্বাস্থ্যকর রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ প্রসবের জন্য ভূমিকা রাখে।

মোটকথা, গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স পুষ্টির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তবে এটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স কত মাস থেকে খেতে হয়

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স সাধারণত প্রথম ত্রৈমাসিক (১-৩ মাস) থেকে শুরু করে পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে এটি নির্ভর করে মায়ের পুষ্টিগত চাহিদার উপর।

প্রথম ত্রৈমাসিক (১-৩ মাস): শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে, কারণ এতে ফোলিক অ্যাসিড ও ডিএইচএ (DHA) থাকে। মায়ের বমিভাব ও দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (৪-৬ মাস): শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে, কারণ এতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে।মায়ের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে আয়রন সহায়ক ভূমিকা রাখে।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয় জানুন

তৃতীয় ত্রৈমাসিক (৭-৯ মাস): শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং জন্মের সময় স্বাস্থ্যকর ওজন নিশ্চিত করে। মায়ের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে।

গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে মাদার হরলিক্স শুরু করা যেতে পারে, তবে প্রথম ত্রৈমাসিক থেকেই খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বাধ্যতামূলক নিয়ম নেই, তবে এটি সঠিকভাবে গ্রহণ করলে মা ও শিশুর জন্য বেশি উপকারী হতে পারে। নিচে খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:

১. কখন খাওয়া উচিত?

  • প্রথম ত্রৈমাসিক (১-৩ মাস): সকালে নাস্তার পর খেলে ভালো।
  • দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (৪-৬ মাস): দুপুরের খাবারের পর বা বিকেলে।
  • তৃতীয় ত্রৈমাসিক (৭-৯ মাস): রাতে খাওয়ার আগে বা ঘুমানোর আগে খেলে শক্তি বজায় থাকে।

২. দিনে কয়বার খাওয়া উচিত 

সাধারণত দিনে ১-২ বার খাওয়া যেতে পারে। চিকিৎসক পরামর্শ দিলে বিশেষ চাহিদার ভিত্তিতে পরিমাণ কমানো বা বাড়ানো যেতে পারে।

৩. কীভাবে মাদার হরলিক্স খাবেন 

দুধ বা গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করুন। ১ গ্লাস গরম দুধ বা কুসুম গরম পানিতে ২-৩ চামচ মাদার হরলিক্স মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে নাড়িয়ে পান করুন।

৪. কখন মাদার হরলিক্স না খাওয়া ভালো:

যদি ডায়াবেটিস থাকে, তবে সুগার ফ্রি বিকল্প বেছে নেওয়া উচিত। যদি ওজন খুব দ্রুত বেড়ে যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো।  যদি অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা হয়, তবে খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৫. কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস: 

মাদার হরলিক্সের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, যাতে হজমের সমস্যা না হয়। অতিরিক্ত মিষ্টি বা ক্যালোরিযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো, কারণ এতে ওজন দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় দিনে ১-২ বার, দুধ বা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবসময় উত্তম, বিশেষ করে যদি কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকে।

দৈনন্দিন খাবারের পাশাপাশি এক্সট্রা পুষ্টির জন্য গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ানো হয়ে থাকে। যেহেতু এটি একটি ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খাওয়া হয় এবং এটি কোনো প্রাকৃতিক খাবার নয় কৃত্তিম্ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে তাই মাদার হরলিক্স নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। 

মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না জেনে এটি মোটেও খাওয়া উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা যেমন আছে পাশাপাশি সঠিক নিয়ম না মানলে মাদার হরলিক্স খাওয়ার অপকারিতা দেখা দিতে পারে।

মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রতিদিন একবার থেকে দুইবার খাওয়া উচিত। তবে দুইবারের বেশী খাওয়া একেবারেই উচিত নয়, অন্যথায় এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন সকালে নাস্তায় অথবা রাতে ঘুমানোর আগে মাদার হরলিক্স খেতে পারেন।

মাদার হরলিক্স বানানোর নিয়ম

গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে মাদার হরলিক্স খাওয়ানো হয়। একজন নারীর জন্য গর্ভকালীন সময়টা বেশ সেনসিটিভ সময়। কারণ এই সময়ে করা ছোট্ট একটা ভুলের কারণে গর্ভবতী মা ও সন্তানের জীবন ঝুকিতে পড়তে পারে। তাই মাদার হরলিক্স খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও আমাদেরকে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সঠিক নিয়ম না মেনে, সঠিক ভাবে মাদার হরলিক্স বানানোর নিয়ম না জেনে কখনোই মাদার হরলিক্স বানানো বা খাওয়া উচিন নয়। মাদার হরলিক্স বানানোর নিয়ম সম্পর্কে মাদার হরলিক্সের প্যাকেটে যে নিয়ম-কানুন লিখা থাকে তা অনেকেই বুঝতে পারে না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই অংশে মাদার হরলিক্স বানানোর নিয়ম সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

মাদার হরলিক্স বানানোর জন্য প্রথমেই একটি গ্লাস নিয়ে তাতে গরম দুধ নিন। অনেকেই আছেন যারা গরম পানিতে মিশিয়েও মাদার হরলিক্স খাওয়ানোর কথা বলে থাকেন। তবে মাদার হরলিক্সের সর্বোত্তম কার্যকারিতা লাভের জন্য গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়াটাই উত্তম। গরম গরম এক গ্লাস দুধের সাথে ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম অর্থাৎ দুই থেকে তিন চামচ মাদার হরলিক্স ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ব্যাস আপনার মাদার হরলিক্স খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

মাদার হরলিক্স কখন খেতে হয়

গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা মেটাবার উদ্দেশ্যে মাদার হরলিক্স খাওয়ানো হয়। কিন্তু মাদার হরলিক্স কখন খেতে হয় তা অনেকেরই জানা নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যতামূলক নিয়ম নেই। অর্থাৎ গর্ভকালীন সময়ে যে মাদার হরলিক্স খাওয়াই লাগবে এরকম কোনো কথা নেই। গর্ভবতী মায়ের সুস্বাস্থের জন্য প্রাকৃতিক ফল, শাক-সবজি তথা সুষম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোই উত্তম।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া যাবে কিনা - গর্ভাবস্থায় কদবেল খেলে কি হয়

যখন কোনো কারণবশত গর্ভবতী মা তার স্বাভাবিক খাবার পরিমাণ মতো খেতে পারেন না তখন তাকে দেহের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য এই মাদার হরলিক্স খেতে হয়। গর্ভবতী মা মাদার হরলিক্স খাবেন তার দৈনন্দিন খাবারের পাশাপাশি ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে। গর্ভধারণের শুরু থেকেই মাদার হরলিক্স খাওয়া যায়। মাদার হরলিক্স কখন খেতে হয় তা জানতে চাইলে বেশিরভাগ ডাক্তাররা গর্ভধারণের তিন মাস অতিক্রম করার পর থেকে মাদার হরলিক্স খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

মাদার হরলিক্স খেলে কি বাচ্চার ওজন বাড়ে

হ্যাঁ, মাদার হরলিক্স খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে, কারণ এতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা গর্ভস্থ শিশুর সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করে।

তবে এটি সরাসরি শিশুর ওজন বাড়ায় না, বরং সুষম পুষ্টি সরবরাহের মাধ্যমে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

  • প্রোটিন: শিশুর কোষ গঠন ও পেশির বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
  • ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি: শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে, যা ওজন বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড: শিশুর রক্ত তৈরির প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, যা সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
  • ওমেগা-৩ (DHA) ও কোলিন: শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক, যা সামগ্রিক বৃদ্ধির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
  • কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট: এটি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে, যা শিশুর ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
  • তবে মনে রাখতে হবে: শুধুমাত্র মাদার হরলিক্স খেলেই শিশুর ওজন স্বাভাবিক হবে বা বাড়বে—এটি নিশ্চিত নয়। মায়ের সম্পূর্ণ খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টিকর খাবারের পরিমাণ শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • যদি বাচ্চার ওজন কম থাকে বা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

মাদার হরলিক্স শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে, তবে এটি একমাত্র সমাধান নয়। সঠিক পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই সবচেয়ে ভালো উপায়।

মাদার হরলিক্স ৫০০ গ্রাম দাম বাংলাদেশে

বাংলাদেশের বাজারে প্রায় সকল ফার্মেসি ও মুদি দোকান গুলোতে মাদার হরলিক্স পাওয়া যায়। কারণ বর্তমানে প্রায় সকল দম্পতিই গর্ভকালীন সময়ে মাদার হরলিক্স খাওয়ানোর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। তাই এটি প্রায় সকল দোকানেই পাওয়া যায়। মাদার হরলিক্স এর সঠিক দাম না জানার কারণে মাদার হরলিক্স কেনার সময় আমরা প্রতারিত হই।

বাংলাদেশে মাদার হরলিক্স ৫০০ গ্রাম প্যাকেটের দাম বিক্রেতা ও স্থান অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। নিচে কিছু অনলাইন স্টোরের তথ্য প্রদান করা হলো:

  • দারাজ (Daraz): ৫০০ গ্রাম মাদার হরলিক্স ভ্যানিলা ফ্লেভারের দাম প্রায় ১,১৫০ টাকা।
  • কাটপ্রাইস বিডি (Cut price BD): এখানে মাদার হরলিক্স প্লাস ৫০০ গ্রাম পাওয়া যায়, তবে সঠিক মূল্য ও স্টক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে সরাসরি চেক করতে হবে।
  • রকমারি (Rokomari): ৩৫০ গ্রাম মাদার হরলিক্স প্লাসের দাম ৫৮৫ টাকা।

দ্রষ্টব্য, বিভিন্ন সময়ে মূল্য পরিবর্তন হতে পারে এবং বিভিন্ন বিক্রেতার মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। সর্বশেষ ও সঠিক মূল্যের জন্য নির্দিষ্ট অনলাইন স্টোর বা স্থানীয় দোকানে যোগাযোগ করা পরামর্শ দেওয়া হয়।

লেখকের শেষ মতামত

গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালীন পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য প্রাকৃতিক খাবার যেমন, বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি, রঙিন ফল, দুধ, ডিম ইত্যাদি খাওয়ার বিকল্প নেই। এসকল খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই গর্ভবতী মা ও গর্ভের বাচ্চার সুস্বাস্থ নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার উদ্দেশ্যে বাড়তি টাকা খরচ করা উচিত না।

এই ছিল আজকের মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো এবং গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয় সম্পর্কিত সকল তথ্য এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।

তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে মাদার হরলিক্স কোনটা ভালো এবং গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয় তা জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও মাদার হরলিক্স কোনটা ভালোে এবং গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment