স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

মুখের দুর্গন্ধ, যা হ্যালিটোসিস নামেও পরিচিত, একটি সমস্যা যা অনেকেই ভোগেন। কথা বলার সময় বা হাসির সময় মুখ থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধ সামাজিকভাবে বিব্রতকর এবং আত্মবিশ্বাসের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিন্তা নেই! এই আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাকে স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার কিছু কার্যকর উপায় সম্পর্কে জানাবো।

স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি দীর্ঘস্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে সকলের সাথে কথা বলতে পারবেন।

মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

মুখের দুর্গন্ধ, বা “হ্যালিটোসিস,” সাধারণ একটি সমস্যা যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। এই লেখায় আমরা মুখের দুর্গন্ধের কারণগুলো এবং তার চিকিৎসার উপায়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

মুখের দুর্গন্ধের কারণ

  • দাঁতের সমস্যা: দাঁতে পোকা, ক্যাভিটি বা দাঁতের গাম রোগ হলে সেখান থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে।
  • মাড়ির রোগ: মাড়ির ইনফেকশন বা গাম রোগের ফলে মুখে দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে।
  • মৌখিক স্বাস্থ্যের অভাব: দাঁত পরিষ্কার না করা, প্লাক এবং খাবারের বাকি অংশ জমে থাকার কারণে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে।
  • শুকনো মুখ: মুখ শুকিয়ে গেলে লালা উৎপাদন কমে যায়, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।
  • খাবারের প্রভাব: রসুন, পেঁয়াজ, এবং কিছু মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর মুখের দুর্গন্ধ বাড়তে পারে।
  • ধূমপান এবং অ্যালকোহল: ধূমপান এবং অ্যালকোহল মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধের প্রতিকার

  • নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা: দিনে দুবার দাঁত ব্রাশ করলে এবং ফ্লস ব্যবহার করলে দাঁতের মধ্যে জমে থাকা খাবারের অংশ ও প্লাক পরিষ্কার হয়।
  • মাউথওয়াশ ব্যবহার: অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং দুর্গন্ধ কমে।
  • সঠিক খাবার নির্বাচন: চিনিযুক্ত এবং সোডা জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান, যেমন ফলমূল ও সবজি, যা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ডেন্টিস্টের কাছে নিয়মিত চেকআপ: দাঁতের সমস্যাগুলো সনাক্ত করার জন্য এবং প্রতিকার করার জন্য নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে যান।
  • লালা উৎপাদন বাড়ানো: জল বেশি পান করুন এবং চিউংগাম চিবিয়ে মুখের লালার পরিমাণ বাড়ান।
  • স্ট্রেস কমানো: স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন, কারণ এটি মুখের শুকনো ভাবকে কমাতে সাহায্য করতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি খুবই বিরক্তিকর। সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা নিলে এই সমস্যা সহজেই মোকাবেলা করা সম্ভব। আপনার মৌখিক স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজন মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

মুখের দুর্গন্ধ একটি বিরক্তিকর সমস্যা যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কেবল বিরক্তিকরই নয়, বরং আত্মবিশ্বাসেরও বড় বাধা। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, মিটিংয়ে উপস্থাপনা, এমনকি প্রিয়জনের সাথে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত – সবকিছুতেই এই সমস্যা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই! নিয়মিত যত্ন ও কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারেন।

নিচে স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় গুলো পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। যেমনঃ

১। মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করুন

  • দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ করুনঃ ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করে দুই মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করুন।
  • জিহ্বা পরিষ্কার করুনঃ জিহ্বার উপর জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে প্রতিদিন জিহ্বা পরিষ্কারকারী ব্যবহার করুন।
  • মাউথওয়াশ ব্যবহার করুনঃ অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার মুখের ব্যাকটেরিয়া হ্রাস করতে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
  • ফ্লস ব্যবহার করুনঃ দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের কণা দূর করতে নিয়মিত ফ্লস ব্যবহার করুন।
  • মাউথ গার্ড ব্যবহার করুনঃ যদি আপনি রাতে দাঁত বেড়ে থাকেন তবে মাউথ গার্ড ব্যবহার মুখের শুষ্কতা রোধ করতে সাহায্য করবে।

২। জীবনধারা পরিবর্তন

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনঃ পানিশূন্যতা মুখের শুষ্কতা এবং দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। তাই প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খানঃ শাকসবজি, ফল, এবং শস্যযুক্ত খাবার বেশি খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয় এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুনঃ ধূমপান মুখের শুষ্কতা এবং দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ-  কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম

৩। চিকিৎসাগত সহায়তা

  • নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা করিয়ে নিনঃ আপনার দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য প্রতি ৬ মাস অন্তর একজন দাঁতের চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন।
  • অন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসা করুনঃ ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) এর মতো অন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়

মুখের দুর্গন্ধ, যা আমাদের সামাজিক জীবনে বিরাট বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য আমরা প্রায়শই কৃত্রিম মুখ ধোয়ার উপর নির্ভর করি। কিন্তু জানেন কি, প্রকৃতি আমাদের দান করেছে এমন অসাধারণ কিছু উপাদান যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর?

হ্যাঁ, আজকের আলোচনার এই অংশে আমরা প্রকৃতির কোষাগার থেকে সংগ্রহ করা কিছু সহজলভ্য উপাদানের ব্যবহার সম্পর্কে জানবো যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি পাবেন স্থায়ী সমাধান এবং একই সাথে এড়িয়ে চলতে পারবেন ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত মুখ ধোয়ার উপর নির্ভরশীলতা।

স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে প্রকৃতির উপহারগুলো কেবল নিরাপদই নয়, তুলনামূলকভাবে সস্তাও বটে। তাহলে দেরী কিসের? চলুন, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো দেখে নেয়া যাক। 

১। বেকিং সোডা

বেকিং সোডা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক যা মুখের ব্যাকটেরিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণ দিয়ে দুবার দাঁত ব্রাশ করুন এবং কুলকুচি করুন।

২। লবণ 

লবণ মুখের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ লবণ এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণ দিয়ে দুবার কুলকুচি করুন।

৩। অ্যাপল সিডার ভিনেগার

অ্যাপল সিডার ভিনেগারের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণ দিয়ে দুবার কুলকুচি করুন।

৪। পুদিনা

পুদিনা পাতায় অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য থাকে যা মুখের ব্যাকটেরিয়া হ্রাস করে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে নিন বা পুদিনা পাতার চা তৈরি করে পান করুন।

৫। এলাচ

এলাচ মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং মুখের গন্ধকে তাজা করতে সাহায্য করে। কিছু এলাচ দানা চিবিয়ে নিন বা এলাচ দানা দিয়ে চা তৈরি করে পান করুন।

তবে মনে রাখবেন, এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে সর্বোত্তম ফলাফল পাবেন। যদি আপনার মুখের দুর্গন্ধের সাথে অন্যান্য উপসর্গ থাকে, যেমন ব্যথা, ফোলাভাব বা রক্তপাত, তাহলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। মুখের দুর্গন্ধের স্থায়ী সমাধানের জন্য আপনার দাঁতের যত্ন নিয়মিতভাবে গ্রহণ করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার খাবার

অনেক খাবার আছে যেগুলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু খাবারের নাম। 

১) কাঁচা ফল ও সবজি 

পেয়ারা, আপেল, গাজর ইত্যাদি মুখের ভেতর দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধে সাহায্য করে। এছাড়া মুখের ভেতরে থাকা খাবার কণা অপসারণে ও ভূমিকা রাখে। নিয়মিত সবুজ ফল ও সবজি গ্রহণে দাঁতের মাড়ি শক্ত এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়। 

আপেল, তরমুজে থাকা ম্যালিক এসিড দাঁতের দাগ অপসারণে ভূমিকা রাখে এবং মুখের লালা বৃদ্ধি করে যার ফলে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ হয়। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন ব্রকলি, লাল মরিচ, কমলা ইত্যাদি মুখের ব্যাকটেরিয়া রোধী পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক।

২) টক দই 

টক দইয়ের মধ্যে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া মুখের দুর্গন্ধ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। তাই যাদের মুখে দুর্গন্ধ তাদের খাবার শেষে কিছু পরিমাণ টক দই খাওয়া উচিৎ। 

৩) লবঙ্গ 

লবঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া নিরাময়ের একাধিক উপাদান রয়েছে। লবঙ্গ শুধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে না বরং নিয়মিত লবঙ্গ ব্যবহার করলে দাঁত এবং মাড়িতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে না।  লবঙ্গ নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ নির্মূলের পাশাপাশি দাঁতকে মজবুত ও অক্ষত রাখতে সাহায্য করে।

৪) আদা

অনেক চিকিৎসক মন্তব্য করেন ব্যাকটেরিয়া হতে দুর্গন্ধ দূর করণে আদা খুবই উপকারী। এর ভিতর থাকা উপাদান এনজাইমের উৎপাদন বাড়িয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ-  বেলি ফুল কখন ফোটে - বেলি ফুলের উপকারিতা

৫) মিষ্টিহীন চুইংগাম

কিছু গবেষকের মতে, নিয়মিত মিষ্টিহীন চুইংগাম চাবানোর মাধ্যমে লালা নিঃসরণের হার বৃদ্ধি পায়। যা দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ করতে সাহায্য করে। তাই খাদ্য গ্রহণের ২০ মিনিট পর চাইংগাম চাবান। এটি দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া নির্মূলের পাশাপাশি মুখে থাকা ছোট ছোট খাদ্য কণাও অপসারণে ভূমিকা রাখে। 

৬) গ্রিন-টি

গ্রিন-টি শরীর সতেজ রাখা, ত্বক উজ্জ্বল করার পাশাপাশি দাঁতের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া নিরাময়েও সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট  ‘পলিফেনল্স’ ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন রোধ করে। মুখের পরিচর্যার পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে গ্রিন-টি সেবনের অভ্যাস করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

৭) পানি 

মুখের অভ্যন্তর ভাগ হাইড্রেট রাখতে কিছুক্ষণ পরপর পানি পান করুন। এতে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন হতে পারবে না। 

মুখের দুর্গন্ধ নিরাময়ে কিছু খাবার খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত

মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে এমন খাবার খাওয়ার পর আমাদের ব্রাশ করা উচিৎ। এরকম কিছু খাবার হলো:- 

  • পেঁয়াজ ও রসুনে সালফার যৌগ থাকায় এটি মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি, এগুলো খাওয়ার পর রক্তের সাথে মিশে যায় ফলে দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস বের হতে থাকে।
  • চিনি বা উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘক্ষণ মুখে থাকলে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এছাড়া এগুলো দাঁতের ক্ষয় করে থাকে।
  • কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় পদার্থ মুখের অভ্যন্তর ভাগ হাইড্রেট করে ফেলে। 
  • অ্যালকোহল কফির ন্যায় মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। 
  • এছাড়া দুধ, ঘি ও বিভিন্ন শর্করা জাতীয় খাবার দীর্ঘক্ষন মুখে থাকলে ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। 

এজন্য যেকোনো খাবার খাওয়ার পর ভালো করে মুখের অভ্যন্তর ভাগ টুথপেস্ট এবং ব্রাশের মাধ্যমে পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরী। সব সময় এটি সম্ভব না হলে অবশ্যই খাবার শেষে ভালো করে মুখ কুলকুচি করে ফেলতে হবে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম

সাধারণত যাদের মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ বের হয় তারা কিন্তু আপেল সিডার ভিনেগার খেয়ে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারেন।আবার মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম সম্পর্কে আপনাদের কিছু ধারনা দেওয়া হবে।সাধারণত মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে হলে অবশ্যই আপনাদের ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে হবে নাহলে ডাক্তারি উপায়ে ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে তা ভালো করতে হবে।

যখন কোন মানুষের পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাস থাকে বা কোন মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান করে আবার কোন মানুষ আছে যারা খাবার খাওয়ার পরে কোনভাবেই দাঁত ব্রাশ করে না।তাদের ওই কিন্তু এই মুখের দুর্গন্ধ অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যাই বা হয়ে থাকে।তখন কিন্তু এই মানুষেরা অনেকে লজ্জার মধ্যে থাকে ভালোভাবে কথা বলতে পারে না।

কারো সাথে কথা বলতে পারে না আবার কোথাও যে ভালোভাবে কথা বলতে পারে না তাইতো আপনাদের এই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে গুলো ব্যবহার করতে হবে তাহলে দেখবেন যে খুব ভালো উপকার পেয়ে যাবেন।মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে হলে স্প্রে হিসেবে আপনারা মাউথ ওয়াশ স্প্রে ব্যবহার করবেন।এই স্প্রেটা খুব ভালো ব্যবহার করলে আপনারা ভালো ফলাফল পেয়ে যাবেন।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বাজারে অনেক রকম স্প্রে পাওয়া যায়। তবে কোনগুলো আপনার জন্য ভালো হবে তা অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন। তাই এই অংশ থেকে জেনে নিন মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম নামগুলো যেগুলো আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। 

  • কুলমিন্ট
  • লিস্টা কেয়ার
  • ওরাকল
  • ওরোক্লিন
  • ওরোস্টার

মুখে দুর্গন্ধ দূর করার জন্য এইগুলা স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এগুলো স্প্রে ব্যবহার করার চেয়ে ঘরোয়া উপায় গুলো বেশি নিরাপদ হয়ে থাকে। তাও যদি এগুলো ব্যবহার করতে চান তাহলে আগে ব্যবহার বিধি সম্পর্কে জেনে নিবেন।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট আমরা অনেকেই খুবই সস্তা অথবা নন ব্যান্ডের টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি। এর ফলে কি হয় আমরা মুখে দুর্গন্ধ সহ দাঁতের ক্যাভিটি জনিত সমস্যা তে ভুগে থাকি। তাই আমাদের ব্র্যান্ডের টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া মুখে যেন গন্ধ না হয় সেজন্য বিভিন্নভাবে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। মুখে দুর্গন্ধ থাকার কারণে আপনিও লোক সমাজের মধ্যে কথা বলতে সমস্যায় পড়ে থাকেন হয়তো।

স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট। মুখের দুর্গন্ধ, দূর করার জন্য টুথপেস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। বাজারে বিভিন্ন ধরণের টুথপেস্ট পাওয়া যায়, তবে সব টুথপেস্টই কি সমানভাবে কার্যকর?

নিশ্চিন্ত থাকুন, আলোচনার এই অংশে আমরা আপনাকে বিভিন্ন ধরণের মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট সম্পর্কে জানাবো। টুথপেস্টের উপাদান, কার্যকারিতা এবং আপনার জন্য কোনটি সবচেয়ে উপযোগী সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেব। মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বাজারে অনেক ধরণের টুথপেস্ট রয়েছে। আপনার জন্য সেরা টুথপেস্ট নির্বাচন করার সময়, নিম্নলিখিত উপাদানগুলি সন্ধান করুন।

আরো পড়ুনঃ-  নিয়মিত খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খেজুর খাওয়ার নিয়ম

টুথপেস্ট এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের রয়েছে। কিছু টুথপেস্ট রয়েছে সেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় আবার কিছু টুথপেস্ট সেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

Medi Plus DS Toothpaste: এই টুথপেস্ট টি বাংলাদেশ একটি পণ্য। এই টুথপেস্ট এ মুখের ভেতরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য যে সকল উপাদান থাকা প্রয়োজন সে সকল উপাদান রয়েছে। এছাড়াও দাঁত কে সুরক্ষা রাখতে এবং দাঁতের ক্যাভিটি ধ্বংস করার বিভিন্ন অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান গুলো বিদ্যমান রয়েছে। আপনি যদি মেডি প্লাস ডি এস টুথপেস্ট ব্যবহার করেন তাহলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে এবং দাঁতের ক্যাভিটিজনিত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।

Colgate Total Toothpaste: Colgate Total টুথপেস্ট এ রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ট্রাইকোসান যেটি মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই টুথপেস্ট টি ব্যবহার করার ফলে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেয় এবং মুখকে ঠান্ডা এবং সজীব রাখে। আপনি যদি এই টুথপেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রান পাবেন।

Pepsodent Toothpaste: পেপসোডেন্ট এই বাংলাদেশি টুথপেস্ট টি বাংলাদেশের এমন কোন মানুষ নাই যে এই টুথপেস্টের নাম জানা নাই। এটি খুবই কার্যকরী একটি টুথপেস্ট। এইট টুথপেস্ট দাঁতের মাড়ির সমস্যা এবং ক্যাভিটি থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে বেশ কার্যকর।

Crest Gum Detoxify: এই টুথপেস্টে হাইড্রোজেন পারক্সাইড এবং সক্রিয় কার্বন রয়েছে যা মুখের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে এবং দাগ এবং দুর্গন্ধ শোষণ করতে সাহায্য করে।

Parodontax Complete Protection: এই টুথপেস্টে স্ট্যানাস ফ্লোরাইড এবং অ্যালোভেরা রয়েছে যা মাড়ির স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

আপনার দাঁত ব্রাশ করার সময়, নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুনঃ

দুই মিনিট ধরে নরম-ব্রিসলযুক্ত টুথব্রাশ দিয়ে আপনার দাঁত ব্রাশ করুন। আপনার জিহ্বা পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। দিনে দুবার, বিশেষ করে খাওয়ার পরে, ব্রাশ করুন। নিয়মিত ফ্লস করুন। আপনার নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা করানো এবং পরিষ্কার করাও গুরুত্বপূর্ণ।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম

অনেকেই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম জানতে চেয়ে থাকেন আসলে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য ঔষধ সেবন করা বা ব্যবহার করা ঠিক নয়। তারপরেও আপনারা যেহেতু জানতে চাইছেন তাই এই অংশে আপনাদের জন্য কিছু কার্যকরী এবং ভালো মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম দেওয়া হলোঃ

  • মারকুরিয়াস
  • এসিড নাইট
  • ব্রায়োনিয়া
  • সিফিলিনাম
  • আরাম মেট
  • আর্সেনিক
  • মার্কুরিয়াস সল
  • পালসেটিল্লা
  • কার্বোভেজ

মুখে দুর্গন্ধ দূর করতেই ওষুধগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে যে কোন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই যে কোন ঔষধ সেবন করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। নয়তো উপকারের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। 

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার মাউথ ওয়াশ

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বাজারে অনেক রকমের মাউথ ওয়াশ পাওয়া যায় যেমন সুগন্ধি যুক্ত মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে এটা আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। তবে এগুলো মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে মুখের এবং দাঁতের ক্ষতি হতে পারে যেমন এই মাউথ ওয়াশ গুলো দাঁতে দাগ ফেলে দিতে পারে এবং মুখের স্বাদ নষ্ট করে দিতে পারে। 

তাই আপনার জন্য কোন মাউথ ওয়াশ ভালো হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় এজন্য আপনাকে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটি মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনি যদি ভালো মানের মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার দাঁত এবং মুখের জন্য এগুলো ভালো কাজ করবে অর্থাৎ উপকারী হবে।

লেখকের শেষ মতামত

মূল কথা হলো আপনি যদি আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে। এছাড়া কোন ধরনের মাদকদ্রব্য বা যেসব খাবার খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয় সেসব খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। সবচেয়ে ভালো পন্থা হলো একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা নেওয়া এবং তার কাছে আপনার মুখের দুর্গন্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা। 

শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকই আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করার সবচেয়ে ভালো উপায় বলতে পারবেন। মাড়ির রোগ থেকে কখনো কখনো মুখে দুর্গন্ধ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ ছাড়া কখনো কখনো শরীরের ভেতরকার সমস্যার জন্যও মুখে দুর্গন্ধ হয়। তাই গন্ধ কোনোভাবেই না কমলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। এই পোষ্টটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিতে পারেন। 

Leave a Comment