একটি নতুন জীবনের শুরু সবসময়ই আনন্দের এবং কৌতূহলের। অনেক নারী গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহেই নিজের শরীরে কিছু পরিবর্তন অনুভব করেন। যদিও এই সময়টি খুবই প্রাথমিক, তবে শরীরে ঘটে যাওয়া কিছু পরিবর্তন থেকেই বোঝা যায় যে নতুন জীবনের শুরু হয়েছে। গর্ভাবস্থার লক্ষণ হল কিছু শারীরিক পরিবর্তন। সাধারণত সবচেয়ে সুস্পষ্ট লক্ষণ হল মাসিকের অনুপস্থিতি (অ্যামেনোরিয়া)।
আবার কিছু কিছু মহিলা গর্ভাবস্থা জুড়ে রক্তপাত অব্যাহত রাখে। এখানে শুরুর দিকে গর্ভাবস্থার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। বেশিরভাগ মহিলার গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি ভিন্ন রকম ভাবে অনুভব করতে পারে পিরিয়ড মিস হওয়ার কাছাকাছি সময়ে বা এক দুসপ্তাহের মদ্ধে কিছু গর্ভধারণের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহের মদ্ধেই প্রায় ৬০ ভাগ মহিলার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয় এবং ৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ মহিলা এসব লক্ষণ অনুভব করতে পারেন। আজকের এই লেখায় আমরা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এখানে আপনি জানতে পারবেন কীভাবে গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহের এই ক্ষুদ্র অথচ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলো চিনতে পারবেন, যাতে আপনি নিজেকে এবং আপনার বাচ্চাকে শুরু থেকেই যত্ন নিতে পারেন।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়
সাধারণত গর্ভধারণের ১-২ সপ্তাহের মধ্যে কিছু সূক্ষ্ম লক্ষণ দেখা দিতে পারে, তবে সেগুলো সবসময় সুস্পষ্ট নয়। এই পোস্টে আমরা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো কত দিন পর বোঝা যায় এবং কোন লক্ষণগুলো শুরুতে প্রকাশ পায় তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণসমূহ:
১. মাসিকের বিলম্ব
এটি গর্ভধারণের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রাথমিক লক্ষণ। যদি আপনার নিয়মিত মাসিক সাইকেল থাকে এবং মাসিকের সময় পেরিয়ে যায়, তবে এটি গর্ভধারণের ইঙ্গিত হতে পারে। মাসিকের দেরি হওয়ার ১-২ সপ্তাহ পর গর্ভধারণের পরীক্ষা করলে সঠিক ফল পাওয়া যায়।
২. অস্থিরতা বা বমি বমি ভাব (মর্নিং সিকনেস)
গর্ভধারণের ২-৮ সপ্তাহ পর অনেক মহিলাই বমি বমি ভাব অনুভব করেন, বিশেষত সকালবেলা। এটি “মর্নিং সিকনেস” নামে পরিচিত এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ঘটে।
৩. স্তনের পরিবর্তন
গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহগুলোতে স্তন ফুলে যায়, কোমল হয়ে ওঠে এবং অনেক সময় ব্যথা অনুভূত হয়। স্তনের নিপলও গাঢ় রঙ ধারণ করতে পারে।
৪. অতিরিক্ত ক্লান্তি
গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অলসতার কারণ হতে পারে। ১-২ সপ্তাহের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৫. বারবার প্রস্রাব করা
গর্ভধারণের পর হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শরীরে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হতে শুরু করে, যা কিডনিকে বেশি প্রস্রাব তৈরি করতে প্রভাবিত করে। গর্ভধারণের ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে আপনি এই লক্ষণটি লক্ষ্য করতে পারেন।
৬. পেট ব্যথা বা হালকা রক্তপাত (ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং)
কিছু মহিলার ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রাথমিক ধাপে হালকা রক্তপাত হতে পারে, যা প্রায় ১০-১৪ দিনের মধ্যে ঘটে। এটি ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং নামে পরিচিত এবং এটি তখন ঘটে যখন নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুর প্রাচীরে আটকে যায়।
গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু লক্ষণ স্বাভাবিক হলেও, যদি আপনি তীব্র পেট ব্যথা, ভারী রক্তপাত বা অন্যান্য অস্বস্তিকর লক্ষণ অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। গর্ভধারণের বিভিন্ন ধাপে শারীরিক পরিবর্তন এবং হরমোনের ওঠানামা আপনার শরীরকে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক যত্ন এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভধারণের লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভধারণের পর ১-২ সপ্তাহের মধ্যে বোঝা যায়। তবে সঠিকভাবে গর্ভধারণ নির্ণয় করতে হলে প্রেগনেন্সি টেস্ট বা রক্ত পরীক্ষার সাহায্য নিতে হবে। গর্ভধারণের সময় শারীরিক পরিবর্তনগুলো ধৈর্য ধরে পর্যবেক্ষণ করা এবং ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে চলা খুবই জরুরি।
গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ
গর্ভাবস্থার লক্ষণ হল কিছু শারীরিক পরিবর্তন। সাধারণত সবচেয়ে সুস্পষ্ট লক্ষণ হল মাসিকের অনুপস্থিতি (অ্যামেনোরিয়া)। আবার কিছু কিছু মহিলা গর্ভাবস্থা জুড়ে রক্তপাত অব্যাহত রাখে। এখানে শুরুর দিকে গর্ভাবস্থার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। বেশিরভাগ মহিলার গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি ভিন্ন রকম ভাবে অনুভব করতে পারে। যেমন:
- চরম ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।
- স্তনের আকার বড়ো হয়ে যাওয়া এবং স্তনের বোঁটা বেশি কালো হয়ে যাওয়া।
- বমি বা বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন (যাকে মর্নিং সিকনেসও বলা হয়)।
- শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এবং জরায়ু বাড়তে থাকায় মাত্রারিক্ত প্রস্রাবের বেগ অনেক বাড়তে পারে।
- প্রিয় কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
- পেট ফুলে যাওয়া।
- স্তনের চারপাশের ত্বক কালো হয়ে যাওয়া (যাকে অ্যারিওলাও বলা হয়)।
- অনেক সময় গর্ভধারণের প্রথম থেকেই বুক ভারী এবং সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।
- প্রথম সপ্তাহে শরীরে হরমোনের উচ্চমাত্রার কারণে কিছু নারী ক্লান্তি এবং হালকা মাথাব্যথা অনুভব করতে পারেন।
- প্রথম সপ্তাহেই কিছু নারী মেজাজ পরিবর্তন বা ‘মুড সুইং’ লক্ষ্য করতে পারেন।
- প্রোজেস্টেরন হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, যার ফলে বুক বা পেটে হালকা জ্বালাপোড়া দেখা যেতে পারে।
- অনেকের ক্ষেত্রে কিছুটা ওজন বৃদ্ধি দেখা যায়।
- সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
- প্রিয় কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
এই সমস্ত লক্ষণগুলি গর্ভাবস্থার ইঙ্গিত নাও হতে পারে, বরং অন্য একটি শারীরিক প্রক্রিয়া। একটি গর্ভাবস্থা পরীক্ষা আরও সঠিক ফলাফল প্রদান করতে পারে।
প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার সাথে কোন কিছুরই তুলনা চলে না। প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমুহ পরবর্তী সব বার থেকে কিছুটা ভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেয়ে থাকে। পোষ্টের এই অংশে আমরা প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পর্যালোচনা করবো।
১। স্বাভাবিক পিরিয়ডে ছেদ পড়া
মেয়েদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর (সাধারনত ২৮ দিন) মাসিক বা পিরিয়ড হয়ে থাকে। প্রথমবার গর্ভবতী হলে এই স্বাভাবিক সময়ক্রমে ব্যাঘাত ঘটবে। অর্থ্যাৎ নির্দিষ্ট সময় পরেও মাসিক হবে না। সাধারন অবস্থায় মাসিকের স্বাভাবিক সময়ের ১৫-২০ দিন পরে টেষ্ট করে গর্ভধারন সম্পর্কে ধারনা লাভ করা যায়।
২। মর্নিং সিকনেস আসা
সকালে ঘুম থেকে উঠেই অস্বস্তি লাগছে? শরিরে রাজ্যের ক্লান্তি ভর করে আছে? স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক দুর্বল লাগছে? হ্যা এই মর্নিং সিকনেস প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ।
৩। বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি হওয়া
স্বাভাবিক ভাবে মেয়েরা যত বার গর্ভধারন করে প্রায় ততবারই এই লক্ষণটি প্রায়শই দেখা যায়, তবে প্রথম বার গর্ভধারনের সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার মাত্রাটা একটি বেশি দেখা যায়। প্রায়ই কোন কারন ছাড়াই এমন হয়ে থাকে।
৪। স্তন কোমল হওয়া ও স্তন ফোলা
শিশুর জন্য জন্মের পর আদর্শ খাবার হলো মায়ের বুকের দুধ। হঠাৎ করেই এই দুধ স্তনে আসে না। গর্ভধারনের শুরুর লক্ষণ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো স্তনে স্বাভাবিক পরিবর্তন আসা। সাধারনত নারীদের স্তন এমনিতেই শরীরের সবচেয়ে কোমল অংশ হয়ে থাকে। প্রথমবার গর্ভধারন করলে মেয়েদের এই আকর্ষনীয় স্তন ধীরে ধীরে আরো নরম, কোমল ও ফুলে তাকে। এই শারিরিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়।
৫। সাদা স্রাব
সাধারনত স্রাব হওয়া মেয়েদের একটি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হলেও অধিক পরিমানে সাদা স্রাব হওয়া প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ। একজন নারী প্রথমবার গর্ভবতী হলে তার সাদা স্রাব হতে থাকে। এর মাধ্যমে বুঝে নেওয়া যায় আপনি মা হতে চলেছেন।
৬। মেজাজে বড় ধরনের পরিবর্তন আসা
মানুষের মন মেজাজ যে কোন সময়ই পরিবর্তন হতে পারে। তবে যখন কোন নারী প্রথমবার গর্ভধারন করে তখন অতি দ্রুত তার মন ও মননে পরিবর্তন আসে। প্রায়ই পরিচিত প্রিয়জন দের সাথে বিরুপ আচরন করতে দেখা যেতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই একজন মেয়ে প্রথমবার গর্ভবতী হলে তার এরুপ লক্ষণ সমুহকে স্বাভাবিক ভাবেই নিতে হবে। মন ও মেজাজের এই বৃহৎ পরিবর্তন প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ।
৭। খাবারে অনীহা তৈরী হওয়া
প্রথমবার গর্ভবতী হলে সবচেয়ে কমন যে লক্ষণটি একজন মায়ের মধ্যে দেখা যায় তা হলো খাবারের প্রতি স্বাভাবিকের তুলনায় অনীহা তৈরী। যে খাবারগুলি মুখরোচক বা অতি পছন্দের সেই খাবারের প্রতিও অনীহা লক্ষণীয়। ক্ষুদামন্দা বা খাদ্যে অরুচি দেখা দিতে পারে। পরিচিত খাবারেও বিশেষ ধরনের অপছন্দনীয় গন্ধ অনুভুত হয়।
মা হওয়া খুব সহজ পথ নয়। এই পথ বন্ধুর, কন্টকাকীর্ণ। অনেক ত্যাগ, কষ্ট, ধৈর্য ও সাধনার ফল প্রথমবার গর্ভধারন করা। আর এই গর্ভধারন তখনই সার্থক যখন সুস্থ সন্তানের জন্ম হয় তবে অবশ্যই মা ও শিশু উভয়েরই সুস্থতা কাম্য।
প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমুহ বুঝে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা এবং সুস্থ্যতার মাধ্যমে জন্মহোক প্রতিটি নবজাতক অনাগত শিশুর।
পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
একটি পিরিয়ড মিস হলে সেটি নিশ্চিতভাবে গর্ভাবস্থার সবচেয়ে সুস্পষ্ট লক্ষণ। কিন্তু এটিই একমাত্র লক্ষণ নয়। আপনি আপনার পিরিয়ড মিস করার অনেক আগেই ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং জরায়ুর দেওয়ালে রোপিত হয়। রোপিত হওয়ার সাথে সাথেই আপনি গর্ভবতী হন। আপনার গর্ভাবস্থায় কয়েক দিন বা সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে, মাসিকের দিনের আগেও শরীর গর্ভাবস্থার ইঙ্গিত দিতে শুরু করে।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহে দেখা যায়। কিন্তু, উত্তেজিত এবং উদ্বিগ্ন প্রত্যাশী মায়েরা সেগুলিকে লক্ষ্য করেন না। আপনি আপনার পিরিয়ড মিস করার আগেও কি আপনি গর্ভবতী কিনা জানার উপায় আছে? খুঁজে বের করতে পড়ুন।
১. গর্ভরোপণ, রক্তপাত এবং খিঁচুনি
মাসিকের খিঁচুনি, হালকা রক্তপাত, এবং দাগ লাগা যা গর্ভরোপণের রক্তপাত নামে সাধারণত অভিহিত হয় তা গর্ভাবস্থার কিছু প্রাথমিক ও স্পষ্ট লক্ষণ। নিষিক্ত ডিম নিজেকে জরায়ুর দেওয়ালে সংযুক্ত করে যার ফলে গর্ভরোপণ হয়। যদি আপনার মাসিক চক্র নিয়মিত থাকে, তবে গর্ভরোপণ রক্তপাতের লক্ষণগুলি পিরিয়ড মিস করার এক সপ্তাহ বা ওইরকম সময় আগে ঘটে।
২. শরীরের মৌলিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
বাকী উপসর্গের চেয়ে প্রায়শই বেশী সঠিক, মৌলিক দেহ তাপমাত্রা অনেক মাস ধরে নজরদারি করতে হবে যাতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সনাক্ত করা যায়। ডিম্বস্ফোটনের আগে, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং আপনার পিরিয়ড চক্রের পরে স্বাভাবিকে ফিরে আসে।
৩. ব্যাথাযুক্ত, কোমল এবং ভারী স্তন
ব্যাথাযুক্ত, কোমল, ভারী স্তন বা গাঢ়তর এরিওলা হল পিরিয়ড মিস করার এক সপ্তাহ আগে লক্ষনীয় গর্ভাবস্থার লক্ষণ। গর্ভধারণের পর এস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে, মহিলারা স্তনে ব্যথা, পূর্ণতা অনুভব করেন এবং স্তনে তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করেন।
৪. অবসাদ এবং ক্লান্তি
হরমোনের পরিবর্তন আপনাকে সারাক্ষণ ক্লান্ত এবং অবসন্ন রাখবে। অবসাদ এবং ঘুম ঘুম ভাব গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক চিহ্ন। ছোট টুকিটাকি কাজ করার পর ক্লান্ত বোধ করা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
৫. বমি বমি ভাব
বমি ভাব বা বমি করা, একটি খুব সাধারণ উপসর্গ, যাকে প্রায়ই “সকালের অসুস্থতা” বলা হয়, এটি একটি স্পষ্ট উপসর্গ এবং আপনি যে গর্ভবতী তা নির্দেশ করতে পারে। গর্ভধারণের কয়েক দিনের মধ্যে, আপনি অস্বস্তি এবং বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন।
৬. পেট ফোলা এবং আঁটসাঁট ভাব
পিরিয়ড মিস করার আগে গর্ভধারণের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হল পেট ফোলা বা পেট কনকন করা এবং টান ধরা। এটি প্রজেস্টেরোনের বৃদ্ধির ফল। হরমোনের বর্ধিত মাত্রা পাচনকে বাধা দেয় যার ফলে অন্ত্রে গ্যাস আটকে থাকে।
৭. প্রস্রাব করার তাড়না
ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া আরেকটি বিশিষ্ট চিহ্ন। ক্রমবর্ধমান জরায়ু মূত্রাশয়ে ধাক্কা দিতে শুরু করলে, তখনই শুধুমাত্র এই প্রবণতা ক্রমশ বাড়তে থাকবে। হরমোন পরিবর্তন এবং রক্তের অতিরিক্ত উত্পাদনের সাথে, ঘন ঘন প্রস্রাব একটি সাধারণ উপসর্গ যা সমগ্র গর্ভাবস্থা ধরে চলতে থাকবে।
৮. মেজাজের হেলদোল
হরমোনের পরিবর্তনের ফলে আপনি হয় খুব প্রফুল্ল অথবা খুব মনমরা থাকবেন। আপনার পিরিয়ড মিস করার আগে আরেকটি প্রাথমিক চিহ্ন, মেজাজের হেলদোল রহস্যময় উপায়ে কাজ করে, এবং আপনি ক্ষুদ্রতম বা তুচ্ছ সমস্যা নিয়েও চেঁচিয়ে উঠবেন।
৯.মাথা ঘোরা
মাথা ঘোরা এবং হালকা মাথার অনুভূতি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক উপসর্গ যা অনেক হবু মায়েদের দেখা দেয়। রক্তবাহী নালীগুলি স্ফীত হয়ে যায়, ফলে রক্তচাপ হ্রাস পায় যার ফলে মাথা ঘোরা এবং ভারসাম্যহীনতার অনুভূতি হয়। এই উপসর্গ প্রথম ত্রৈমাসিক জুড়ে চলতে থাকে এবং পরবর্তী পর্যায়ে ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
১০. মুখের মধ্যে অদ্ভুত স্বাদ
হরমোন অদ্ভুত খেলা খেলতে পারে এবং আপনি আপনার মুখের মধ্যে একটি অদ্ভুত বাজে স্বাদ অনুভব করতে পারেন। আপনি কোনো বিস্বাদ ধাতু খেয়ে ফেলেছেন বলে আপনার মনে হতে পারে। এই ধাতব স্বাদটি একটি প্রাথমিক চিহ্ন হতে পারে যা আপনাকে জানায় যে আপনি মাতৃত্বের পথে যাত্রা শুরু করেছেন। প্রথম ত্রৈমাসিকের পরে এই উপসর্গটি সাধারণত অদৃশ্য হয়ে যায়, তবে কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
লক্ষন ছাড়া গর্ভবতী
অনেক মহিলা যারা তাদের গর্ভাবস্থার পরীক্ষার ইতিবাচক ফল পান কিন্তু তার কোনওরকম লক্ষণই দেখতে পান না তারা প্রায়শই একটা প্রশ্নের ধাঁধায় পড়েন যে, কোনওরকম লক্ষণ ছাড়াই কি আমি গর্ভবতী হতে পারি।ছোট্ট উত্তর হল-হ্যাঁ। কোনরকম লক্ষণ ছাড়া গর্ভাবস্থা হল ভীষণ সাধারণ একটা ঘটনা এবং তা নয়, এটার অর্থ কখনও এই হতে পারে না যে আপনার বাচ্চা সমস্যায় আছে।
প্রত্যেক মহিলাই গর্ভাবস্থার সময় বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন এমনকি তাদের দুটো গর্ভাবস্থার মধ্যেও অনুরূপ লক্ষণ প্রকাশ পায় না।কিছু গর্ভবতী মহিলা তো আবার তাদের গর্ভাবস্থার 7 সপ্তাহে পৌঁছিয়েও কোনরকম লক্ষণ বুঝতে পারেন না।এরপর থেকে তারা কিছু লক্ষণ বুঝতে শুরু করেন যেমন খিদে বেড়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব,বেদনা এবং অন্যান্য আরো।
কিছুজনের মধ্যে লক্ষণ-গুলির সূত্রপাত ধীরে ধীরে হতে থাকে, কিন্তু অন্যদের মধ্যে কোনওরকম পূর্বাভাষ ছাড়াই লক্ষণগুলির প্রকাশ ঘটে। এটারও সম্ভাবনা থাকে যে,যদি আপনি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে অবস্থান করেন,আপনি কোনরকম লক্ষণ বুঝতে নাও পারেন যেহেতু নিষিক্ত ভ্রূণ জরায়ুর মধ্যে শুধুমাত্র প্রতিস্থাপিত হতেই সময় নেয় ওভুলেশনের পর 6-12 দিন।
এই সময়ে শরীর সচেতন থাকে না গর্ভাবস্থার ফলে দেহের পরিবর্তনের কোনও লক্ষণ-গুলিকে বুঝতে পারার জন্য।আবার সেই রকমই কখনও যদি আপনার গর্ভাবস্থার প্রাথনিক পর্যায়ে আপনি কোনওরকম লক্ষণই দেখতে না পান, তার অর্থ কখনই এটা নয় যে,আপনি এর পরেও সেটা দেখতে পাবেন না।আপনার গর্ভাবস্থার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার হঠাৎ করেই বমি বমি ভাব, মর্নিং সিকনেস এর মত লক্ষণগুলির অভিজ্ঞতা হবে।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ নিয়ে আমাদের মতামত
গর্ভধারণের লক্ষণ বোঝার সময় একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। সাধারণত মাসিক বন্ধ হওয়ার ৭-১৪ দিনের মধ্যে কিছু লক্ষণ বোঝা যায়, তবে কেউ কেউ আরও আগে বা পরে লক্ষণ অনুভব করতে পারেন। আপনার যদি গর্ভধারণ সম্পর্কে সন্দেহ থাকে, তাহলে সময়মতো প্রেগনেন্সি টেস্ট করুন এবং একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিরাপদ ও সুস্থ গর্ভাবস্থার জন্য সঠিক জীবনযাত্রা ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন।
আশা করি গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই পোষ্টটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায় সেই সম্পর্কে জানতে পারবে। এমন প্রয়োজনীয় ব্লগ পড়তে লার্ন-বিডি.কম ভিজিট করার অনুরোধ রইলো ধন্যবাদ।