ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন – ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়

আজ-কাল ইসলামী ব্যাংক জনপ্রিয়তার শিখরে পোঁছে গেছে তাদের সুন্দর শরীয়ত সম্মত ব্যাংকিং প্রসেস-এর জন্যে। ঠিক এ কারনেই দেশের মানুষের কাছে তারা আস্থার জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। দেশের বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যের হার হ্রাস ঘটিয়ে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে দেশ ও জাতির অর্থনীতির উন্নয়নের দিগন্তে পৌঁছাতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। 

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন

এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে তারা বিভিন্ন খাতে লোন দিয়ে থাকেন। তার মাঝে একটি হলো প্রবাসী লোন। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি এ নিবন্ধনটিতে আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা করবো।

উপস্থাপনা

আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের ঋণ বা লোনের প্রয়োজন হয়। আর আমাদেরকে এই লোন দিতে পারে ইসলামী ব্যাংক। অন্যান্য আরো ব্যাংক রয়েছে যারা লোন দিয়ে থাকে কিন্তু ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিলে এখান থেকে অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। 

যেমন ইসলামী ব্যাংকের সুদের পরিমাণ কম এবং আপনি যদি অন্যান্য ব্যাংক থেকে নেন তাহলে সেই ব্যাংকগুলোর সুদের পরিমাণ আরো বেশি। যারা বিদেশে থাকেন তাদের জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন খুবই উপকারী। আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই লোনটি খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন। এবং আপনি এই লোনটি গ্রহণ করার সাথে সাথে আরো অনেক সুবিধা পাবেন এই ইসলামী ব্যাংক থেকে। তো চলুন ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে প্রথমে আপনাকে বিদেশে কাজ করতে হবে এবং আপনাকে বিদেশে কাজ করার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে কিংবা আপনি এখনো বিদেশে কাজ করছেন। প্রবাসী লোন নিতে পারে যে কেউ যেমন কোন ছেলে কিংবা মেয়ে আপনার এবং আপনি নিজেই। তবে প্রবাসী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার বয়স ১৮ ঊর্ধ্বে হতে হবে।

আপনার বয়স যদি ১৮ কম হয় তাহলে আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে পারবেন না। অবশ্যই আপনার ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে। এবং আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ইসলামী ব্যাংকে কি কি কারনে লোন নিতে পারবেন

ইসলামী ব্যাংক মূলত বিভিন্ন খাতে লোন দিয়ে থাকে আপনার নিম্নলিখিত সব কয়টি খাতে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।

  • প্রবাসী লোন
  • লোন স্ক্রিন ছোট্ট ব্যবসা
  • মহিলা উদ্যোক্তা
  • ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন
  • উদ্যোক্তা লোন
  • রিয়েল এস্টেট লোন
  • ট্রান্সপোর্ট লোন
  • গাড়ির লোন
  • কৃষি খেতে লোন
  • হোম লোন বা হাউজ লোন
  • ডক্টর লোন

উপরোক্ত এই কয়েকটি খাতে আপনি লোন নিতে পারবেন ইসলামিক ব্যাংক থেকে। 

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • এই লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী প্রার্থী যে দেশে বাস করছেন সে দেশের ভিসা এবং পাসপোর্ট থাকতে হবে নিজের সাথেই। যাতে করে যে কোনো সময় চাইলে সেগুলো দেখানো যায়।
  • প্রার্থী প্রবাসের যে কোম্পানীতে কর্মরত আছেন, ঐ কোম্পানীর নিয়োগ পত্র এবং বেতন রশিদ সমেত প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র। 
  • পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • ২ জন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল গ্যারেন্টার।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের উদ্দেশ্য

ইসলামী প্রবাসী লোন দেয়ার কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে এর জন্য প্রবাসীদের ইসলামী ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে তো এখন আমরা জানবো কি সেই উদ্দেশ্য।

  • বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকের গ্রাহকদের প্রধানের উৎসাহ করে।
  • বাংলাদেশের নতুন করে কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এবং অবৈধ লেনদেন বন্ধ করে।
  • এবং প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতা করা।
  • প্রবাসীদের দুঃখ কষ্ট এবং বিভিন্ন মানুষের চরিত্র বিবর্তন করা।
  • প্রবাসী উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা।

ইত্যাদি আরো অনেক উদ্দেশ্য রয়েছে যে কারণগুলির কারণে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক লোন দেয় আরো অনেক কারণ রয়েছে যে কারণগুলোর কারণে তারা লোন থাকে

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে জানা উচিত কি কি কাগজে লাগতে পারে কি কি ডকুমেন্ট থাকলে আপনি সেখানে আবেদন করতে পারবেন প্রবাসী লোনের জন্য।

আপনি যদি এই সমস্ত কাগজ বা তথ্য না জেনে সেখানে আবেদন করেন তাহলে আপনার আবেদন করতে গেলে অনেক হয়রানি হবে। তাই আগে থেকে জেনে রাখুন প্রবাসী লোনের জন্য কি কি কাগজ লাগে আবেদন করতে। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করতে নিম্নলিখিত কাগজগুলো প্রয়োজন হতে পারে।

  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • গ্রাহকের ভিসা
  • পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
  • গ্রাহকের মাসিক বেতনের রশিদ
আরো পড়ুনঃ-  বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়েবসাইট - বাংলাদেশ ব্যাংক নোটিশ

এবং তার সঙ্গে দুজন ব্যক্তিকে লাগবে যে ব্যক্তির অনেক টাকা-পয়সা আছে। এবং আপনি যদি সেদিন শোধ করতে না পারেন তারা যেন সেই ঋণশোধ করার দায়িত্ব নেয়। উপরোক্ত এই কয়েকটি কাগজ থাকলে আপনি খুব সহজে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন আবেদনের নিয়ম

লোন পাবার জন্য প্রথমে এই কিভাবে কি করবেন কি কিভাবে আবেদন করতে হয় এটুকু যদি আপনি না জানেন তাহলে আমি এখন আপনাকে জানাবো কিভাবে আবেদন করবেন প্রবাসী লোনের জন্য। মূলত নিম্নলিখিত ধাপ অনুযায়ী আবেদন করা হয় লোনের জন্য। 

তাই প্রবাসী লোনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি নিম্নলিখিত আবেদন করার ধাপ অনুসরণ করতে পারেন।

প্রথমেই আবেদনকারীকে অবশ্যই তার ডকুমেন্ট সকল সংগ্রহ করতে হবে। উপরে যে কয়েকটি ডকুমেন্ট বা কাগজের কথা বলেছি সেই সকল কাগজ সংগ্রহ করুন। এবং আরো কি কি কাগজ লাগতে পারে এই বিষয়ে বিস্তারিত আপনি ব্যাংক থেকে জেনে নিতে পারেন তাদের হেল্প লাইনে কল দেওয়ার মাধ্যমে।

আপনার সকল কাগজ সঙ্গে নেয়ার পর আপনি ইসলামী ব্যাংকের অফিসে গিয়ে বা শাখা থেকে প্রবাসী লোন আবেদনের ফরমটি সংগ্রহ করবেন। এরপর আপনি ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করবেন।

এরপর আপনার ডকুমেন্ট এবং সেই ফর্মটি সহকারে আপনি তাদের কাছে জমা দিবেন। অবশ্যই সকল কাগজ বা ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার আগে চেক করে নিবেন সকল তথ্য এবং সকল কাগজ ঠিক আছে কিনা। সকল ইনফরমেশন এবং সকল ডকুমেন্ট বা কাগজ যদি আপনার ঠিক থাকে তাহলে আপনি তাদের কাছে আপনার সেই আবেদন ফরম এবং কাগজ গুলি জমা দিবেন।

সকল ইনফরমেশন আপনার ফর্ম এবং ডকুমেন্ট কাগজ জমা দেওয়ার পর তারা আপনার আবেদন এর সকল কাগজ চেক করবে এবং আপনার আবেদনটি সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা সেটি চেক করবে। 

এরপর তারা যদি দেখে আপনাকে লোন দেওয়া প্রয়োজন কিংবা তারা লোন দিতে পারবে এবং লোন নেওয়ার আপনার যোগ্যতা রয়েছে তাহলে আপনি খুব সহজেই তাদের কাছ থেকে লোন নিতে পারবেন এরপরে তারাই আপনাকে জানাবে যে কিভাবে কখন আপনি লোন নিতে চান।

তাদের কাছে কাগজ জমা দেয়ার পর অবশ্যই তাদের থেকে বিস্তারিত জেনে নিবেন তারপরে আপনার পদক্ষেপ গুলো কি কি হতে পারে সেই সম্পর্কে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নির্দিষ্ট করে কাউকে কিছু বলেন। ইসলামিক ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা পাবেন সেটি নির্ভর করবে আপনি যে কাজ করছেন আপনার কাজের উপর নির্ভর করে। মূলত এই প্রবাসীর লোন শুধু তারাই পায় যারা বিদেশে কাজ করে অনেক বছর ধরে এবং বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন করে বিদেশ থেকে বাংলাদেশ। শুধুমাত্র তারাই এই লোনটি গ্রহণ করতে পারবে।

আরো পড়ুনঃ-  কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি - কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন আবেদন ফরম

প্রবাসী লোন গ্রহণ করতে হলে আপনি কত টাকা নিবেন প্রথমের সিডি ঠিক করতে হবে এবং সেটা ঠিক করার আগে আপনি কি কাজ করছেন সেটি আপনাকে জানতে হবে। আপনার কাজের অনুযায়ী তারা আপনাকে লোন দিবে আপনি যদি বড় কোন কাজ করেন কিংবা মাসিক অনেক টাকা বেতন পান তাহলে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন আপনাকে অনেক টাকা দিবে।

এবং আপনার যদি ছোটখাটো কোন চাকরি বা অল্প টাকার কোন চাকরি করে থাকেন তাহলে তারা আপনাকে অল্প টাকায় দিবে। প্রবাসী ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলে অবশ্যই তারা আপনার আয়ের দিকটা দেখতেছে। আপনার আয় যদি ভালো থাকে তাহলে আপনাকে তারা অনেক টাকা ঋণ দিবে।

আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান কত টাকা দেয় এইটা যদি আপনি বিস্তারিত নির্দিষ্ট করে জানতে চান তাহলে আপনি সরাসরি তাদের অফিসে কি কথা বলতে পারেন। তবে এখান থেকে আপনি ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রবাসী লোন নিতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের মেয়াদ

আপনি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিতে পারবেন ১ থেকে ১০ বছরের জন্য। আপনি কত টাকা রোল বা ঋণ নিবেন সেটার উপর নির্ভর করে আপনার কিস্তি এবং আপনার কিস্তির বছর বলে দেওয়া হবে।

লেখকের শেষ মতামত

বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি ব্যাংক। আর দিন দিন এর জনপ্রিয়তা কেবল বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। উন্নত গ্রাহক সেবা বা সুদহীন ব্যাংকিং প্রসেস বলুন কিংবা বিভিন্ন সুবিধার দিক বলুন, ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশের মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি করতে।

আপনি চাইলে প্রবাসে থেকেই এখান থেকে প্রবাসী লোন নিতে পারেন আপনার নিজের এবং সন্তানদের স্বাবলম্বী করে তুলতে। আজকের এই আর্টিকেলে প্রবাসীদের ইসলামী ব্যাংক লোন নিয়ে মোটামোটি যাবতীয় ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি তা বুঝতে পেরেছেন। 

এই ছিল আজকের ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য। এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকি।

তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment