সম্মানিত পাঠক, আপনি যদি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? আর এই বিষয়ে নিয়ে সঠিক সন্ধান পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সাইটে খোজাখুজি করে আমাদের এই পোষ্টে ভিজিট করেছেন? তাহলে আপনি একদম ঠিক স্থানের এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে থাকেন তাহলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ তা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর গুরুত্ব এবংবুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিসংখ্যান নিয়ে জানতে পারবেন। তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আমরা প্রথমে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নেই।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস মূলত ১৪ ডিসেম্বর পালন করা হয়। যারা মূলত দৈহিক শ্রমের পরিবর্তে মানসিক শ্রম বা বুদ্ধি ভিত্তিক শ্রম দিয়ে পুরো বাংজ্ঞালি জাতির গঠনে সহায়তা করেছিল তাদেরকেই বুদ্ধিজীবী বোঝানো হয় করে থাকে। আর বুদ্ধিজীবীরা অবশ্যই মেধা সম্পন্ন লোক হয়ে থাকে। এক কথায় বুদ্ধিজীবীর অর্থ হলো লেখক যারা লেখনের মাধ্যমে বাংলাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিলেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাকে মেধাশূন্য করার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। যখন তারা বুঝতে পারে তাদের পরাজয় নিশ্চিত তখন তারা পরিকল্পনা করে বাংলার বুদ্ধিজীবী অর্থাৎ বাংলার কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী, চলচ্চিত্র নাটক ও সঙ্গীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যাক্তিদের তারা চিহ্নিত করে এবং তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে। অর্থাৎ ২০ হাজার বুদ্ধিজীবীকে চিহ্নিত করা হয় তাদের হত্যা করার জন্য। তবে বুদ্ধিজীবীদের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হত্যা করা হলেও বাংলাকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করা হয় ১০ ডিসেম্বর আর এজন্য ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় নতুন করে কারফিউজারি করা হয় এবং ১০ ডিসেম্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয় ১৪ই ডিসেম্বর।
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের প্রধান ছিলেন জহির রায়হান। তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক বুদ্ধিজীবী হত্যা করতে পারেনি আর তারা বাংলাকে মেধাশূন্য করার জন্যই বুদ্ধিজীবীদের নির্ভুলভাবে তালিকা করেছিল।
তবে জহির রায়হান ১৯৭২ সালে ৩০ জানুয়ারি নিখোঁজ হন। বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ১৪ই ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন আর সেই থেকেই ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা
ভুমিকাঃ আজকে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের রচনা সম্পর্কে আলোচনা করব। যারা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের রচনা স্বচ্ছ তাদের জন্য আজকের পোস্ট। প্রতিবছর এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা সম্পর্কে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তাই যারা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা করেছে তাদের জন্য এই পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে।
১৯৭১ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডঃ ১৯৭১ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড নামে পরিচিত । বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয় । স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়।
অনেকের লাশ সেই সময়ে শনাক্ত করা হয়েছিল না, মানে মোট কথা এখন অবদি পাওয়া যায়নি। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পালিত হয়। আর সকল বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে বাংলাদেশের ঢাকায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এই বাংলাদেশ এর ডাক বিভাগ একটি স্মারক ডাকটিকিটের সিরিজ বের করছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা একই দিনে সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ রায়ের বাজারে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে অর্পণ করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের মামলাঃ একাত্তরের সেই যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় ঘোষিত হয়েছে। মানবতাবিরোধী হত্যা মামলায় দণ্ডিত জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা যিনি ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি। তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
উপসংহারঃ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর আল-বদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দু’টি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিসংখ্যান নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিসংখ্যান
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১০ ডিসেম্বর হতে ১৪ ই ডিসেম্বর বাংলাকে মেধাশূন্য করার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলার বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে আর তাদের তালিকা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবী ছিলেন তাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী-
- শিক্ষাবিদ ১৯১ জন
- চিকিৎসক ৪৯ জন
- আইনজীবী ৪২ জন
- সাংবাদিক ১৩ জন
অন্যান্য সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব এবং শিল্পী কবি সাহিত্যিক প্রকৌশলী ১৬ জন
তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিসংখ্যান গুলো জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর গুরুত্ব কি সেই বিষয়ে এংক্ষেপে ক্লিয়ার ধারণা নিয়ে নেই।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর গুরুত্ব
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর গুরুত্ব আমাদের বাঙ্গালীদের জীবনে অনেক রয়েছে । কারণ তারা আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিজয়ের কিছুদিন আগে পরিকল্পনা করে দেশকে মেধাশূন্য করার। তবে বাংলার কিছু বিশ্বাসঘাতক তাদের এই পরিকল্পনায় যোগদান করে ছিলেন।
যারা তাদের বাহিনী বা তাদের দোসর হয়ে এদেশের মানুষের উপর অত্যাচার চালায়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয় এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে এ দিবসটি পালিত হয়। মূলত এই দিবসটি প্রতিবছর ১৪ ই ডিসেম্বর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের উৎসর্গ করে পালন করা হয়। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান দের মধ্য কেউ ছিল ডাক্তার, কেউ ছিল ইঞ্জিনিয়ার, কেউবা সাংবাদিক, আবার কেউ গীতিকার সুরকার ইত্যাদি। মূলত পাকিস্তানিদের রোষের মুখে প্রায় সকলকেই পড়তে হয়।
দেশের সব জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারসহ আরও অন্যান্য যেগুলো বেসরকারি টিভি চ্যানেল রয়েছে মূলত সেগুলোতে দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে লেখকের মতামত
সম্মানিত পাঠক আশা করছি আমার লেখাশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটিতে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ আলোচনা করার পাশাপাশি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর গুরুত্ব এবং বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিসংখ্যান ইত্যাদি সহ আরও প্রয়োজনীয় বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছি।
আপনাদের যদি এই ব্লগ পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনাদের মাঝে কোন মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং চাইলে শেয়ার করে অন্যদের জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ – শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনানিয়ে বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।