সম্মানিত পাঠক, আপনি কি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই নিয়ে সঠিক সন্ধান পেতে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
কেননা আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে তা নিয়ে উল্লেখ করেছি। এর পাশাপাশি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট এবং বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা নিয়ে জানতে পারবেন। তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আমরা প্রথমে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নেই।
উপস্থাপনা – শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের একটি উদযাপিত বিশেষ দিবস। অন্যান্য দিবসের মতো এই দিবসটি ও জাতীয় জীবনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য সকল দিবসের সাথেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিশেষ দিবস।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষের দিকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা চেয়েছিল বাংলাদেশ মেধাশূন্য করার জন্য তারই পরিপ্রেক্ষিতে তারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ধরে নিয়ে গিয়ে বিজয় ঠিক দুই দিন আগে তাদেরকে হত্যা করে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয় তা হয়তো আমরা জানি না। মূলত তাদের সুবিধার কথা ভেবেই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে
আমরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানি তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস সম্পর্কে অবগত রয়েছি। কারণ বাচ্চাদের ছোট থেকেই এগুলো শিক্ষা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের দুইদিন আগে পাকহানাদার বাহিনী পরিকল্পনা করে বাংলাদেশে যত বুদ্ধিজীবী ছিল তারা সকলকেই হত্যা করেছিল। জেনে নিন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয়?
পাক হানাদার বাহিনীরা বাংলাদেশকে সম্পূর্ণরূপে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল। তারা বাংলাদেশকে যতদিন শাসন করেছিল বাংলাদেশের ধন-সম্পদ সবকিছু তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে তাদের সোনার এই দেশকে উন্নত করেছিল। বাংলাদেশকে একেবারে মেধাশূন্য করার জন্য ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করার পরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।
তাই প্রতিবছর বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। এ দিনটিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে আপনাদের কাংখিত প্রশ্ন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে তার উত্তর জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
১৯৭১ সালে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছিল এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে। মোস্তফা হারুন কুদ্দুস হিলি ছিলেন স্মৃতিসৌধ টি স্থাপতি। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরও একটি স্মৃতিসৌধ বানান শুরু হয়। যেটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন।
আল সাফি ও ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এর একটি প্রিস্কার নকশা করেছিলেন। তারপর একটি স্মারক ডাকটিকেট সিরিজ প্রকাশ করা হয়েছিল বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করার জন্য। তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিস্তারিত তথ্যাদি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর এর সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সাথে রাজাকার থেকে শুরু করে আলবদর, আল সামস সহ এই দেশের অনেক সাংবাদিক, কবি , শিক্ষাবিদ, গবেষক সাহিত্যিকদের তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করে।
চূড়ান্ত বিজয়ের প্রক্কালে থাকায় স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুরে, রায়বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরের তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৬ ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের পর নিকটাত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে স্বজনের মৃতদেহ সনাক্ত করেন।
অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। এছারা অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন, কারও চোখ বাধা, কারও কারু হাত-পা বাঁধা, আবার কারপো দেহে একাধিক গুলি। এগুলো তাদের মেরে ফেলার আগে নির্যাতন করা হয়েছিল। আর এই তথ্যগুলি পরে বের হয়ে আসে।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা যায় যে বুদ্ধিজীবী সংখ্যা ছিলেন মোট ১ হাজার ৭০ জন। সেই প্রত্রিকার নাম ছিল মূলত পত্রিকা প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক। আর এটি জাতীয় ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শহীদ বুদ্ধিজীবী দের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা হয়।
কিন্তু আসলে এ পরিকল্পনা অনুযায়ী ততখন হত্যাযজ্ঞ হয়নি। আর অপরদিকে কার্বন ফরমান আলী যেটা লক্ষ্য সেটা হচ্ছে ছিল গভর্নর হাউসে শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের কে নিমন্ত্রণ করার পরে সেখানে হত্যা করা। তবে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি জহির রায়হান নিখোঁজ হন। তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেন ১৯৭১ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর । কিন্তু তার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।
আর এতে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ও ছাত্র সংঘ। এ হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন বি.জে আসলাম, ডক্টর মোহর আলী, ভিসি প্রফেসর ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, এবিএম খালেক মজুমদার, ক্যাপ্টেন তারেক, কর্নেল তাজ, কর্নেল তাহের, আশরাফুজ্জামান খান ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী আর এদের নেতৃত্ব দেন চৌধুরী মাঈনুদ্দীন। বুদ্ধিজীবী হত্যা ঘটনায় ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয়। এতে করে চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান কে আলবদর বাহিনীর চৌধুরী আসামি করা হয়। আর এই মামলাটি ফরিদা বানু দায়ের করেন। তিনি ছিলেন অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিনের বোন।
তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত তথ্যাদি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মূলত ১৯৭১ সালে সারা বছরব্যাপী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। এমনকি তারা ১৪ই ডিসেম্বর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বুদ্ধিজীবীদের অতি নির্মম ভাবে হত্যা করেছিলেন। আর এই হত্যা অবশ্য পরিকল্পিতভাবে করেছিলেন। তাজউদ্দিন আহমেদ যিনি আমাদের বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন তখন তিনি এই দিনকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয় বা হবে এটা নিয়ে ইতিমধ্যে আগে প্রশ্ন হয়েছিল যা স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ১৪ ই ডিসেম্বর পালিত হয়। তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা নিয়ে বিস্তারিত তথ্যাদি জানতে পেরেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে নিয়ে লেখকের মতামত
সম্মানিত পাঠক আশা করছি আমার লেখা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে আলোচনা করার পাশাপাশি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট এবং বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা ইত্যাদি সহ আরও প্রয়োজনীয় বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছি।
আপনাদের যদি এই ব্লগ পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনাদের মাঝে কোন মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং চাইলে শেয়ার করে অন্যদের জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।