বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য – ১৬ই ডিসেম্বর কেন পালন করা হয়

প্রিয় পাঠক আপনারা কি বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য এবং ১৬ই ডিসেম্বর কেন পালন করা হয় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই উপকার হতে চলেছে। কারন আমরা আজকের এই আর্টিকেলে বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য ও ১৬ই ডিসেম্বর কেন পালন করা হয় সেটা নিয়ে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি। তো আপনি যদি বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জেনে না থাকেন, তাহলে আমাদের আজকের এই ব্লগ পোস্টটি পড়ে জেনে নিন।

বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য

আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তবে আপনিও জানতে পারবেন বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য জেনে নেওয়ার পাশাপাশি বিজয় দিবস সম্পর্কে সূচনা  বিজয় দিবস কি ও কেন, ১৬ই ডিসেম্বর কেন পালন করা হয় ইত্যাদি জানতে পারবেন। এই আর্টিকেল পোড়ে উপকৃত হতে চাইলে নিচে স্টেপ বাই স্টেপ পড়ুন এবং জেনে নিন বিজয় দিবস সম্পর্কে। 

বিজয় দিবস সম্পর্কে সূচনা

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র যা বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে ১৬ই ডিসেম্বর 1971 সালে। 

বাইশে ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার মুজিবনগর সরকার শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে 1971 সালের ১০ই এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হতে শুরু করে। এই স্বাধীন রাষ্ট্র পাওয়ার পেছনে অনেক কারন রয়েছে যেমন অনেক ত্যাগ অক্লান্ত পরিশ্রম, বৈষম্য, শোষণ এবং নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তারপরেই বাঙ্গালীরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছে।

বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের প্রথম দেশ যে দেশ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খুবই তাৎপর্য পূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৩য় বিশ্বের ১ম দেশ যে দেশ সশস্ত্র।

আরো পড়ুনঃ-  ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন কেন - যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন ২০২৪

১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার যে ঘোষণা প্রদান করা হয় ১৬ ডিসেম্বর তা বাস্তবে পূর্ণতা পায় স্বাধীনতার মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের অনেক কষ্টের লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা পেয়েছি। সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তাদের জন্যই আমরা আজ স্বাধীন রাষ্ট্রে বসবাস করতে পারছি। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর প্রথম প্রভাতে সবাই শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে খালি পায়ে স্মৃতিসৌধে গিয়ে ফুল দিয়ে তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বিজয় দিবস কি ও কেন

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে র্দীঘ নয় মাস যুদ্ধ করার পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় পায়। তাই ১৯৭১ সাল ১৬ ডিসেম্বরকে বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেদিন থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সর্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশ প্রতি বছর বিজয়ের উল্লাস ও বিজয়ের আনন্দ করতে এই দিনকে উদযাপন করে। এই দিনটা বাংলাদেশের স্মরণীয় দিন হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে। 

অনেক শহীদের রক্ত ও পাক হানাদার বাহিনী নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ৩য় বিশ্বের ১ম দেশ যে দেশ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে মূলত ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জন সাধারণের সব ধরণের নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি অত্যাচার, শোষণ, বৈষম্য ইত্যাদি শিকার হয়েছে।

কিন্তু এই ভূখণ্ডের সংগ্রামী মানুষ এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে এর পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্য তিনি ডাক দেন। এবং ১৬ই ডিসেম্বর তা বাস্তবে পূর্ণতা পায় মূলত ২৬ শে মার্চ অনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার যে ঘোষণা প্রদান করে।

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বপ্রকার সহযোগিতা করে। ফলে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় বাঙালির শক্তিশালী জাতীয়বাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ মুক্তিযুদ্ধ এ অঞ্চলে বাঙালি এবং এ ভূখণ্ডে বসবাসকারী অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর জনগণের মধ্যে নতুন যে দেশপ্রেমের জন্ম দেয়।

আরো পড়ুনঃ-  শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অনুচ্ছেদ - শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা

তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধ শেষে জনগণ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যা বিষের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের নিপীড়িত স্বাধীনতা কামিজ জনগণকে অনুপ্রাণিত করে এর মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হয়েছে।

বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

  • ১। 1971 সালে ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ৯ মাস যুদ্ধ করার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রায় একানব্বই হাজার ছয়শত চৌত্রিশ সদস্য আত্মসমর্তন করে যার ফলে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। 
  • ২। ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা হয়। দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর সেই যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
  • ৩। বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর থেকে গঠিত হয়।
  • ৪। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহিদ হয়েছেন ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে অবস্থিত হয়।
  • ৫। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা, বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে থাকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
  • ৬। বিজয় দিবসের সূচনা হয় ১৬ই ডিসেম্বর ভরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে। বাংলাদেশের জাতীয় প্যারেড স্কায়ারে অনুষ্ঠিত সম্মানিত সামরিক কুচকাওয়াজে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন।
  • ৭। প্রতিবছর সারা দেশে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে যায় শহীদদের সম্মান জানাতে।
  • ৮। সরকার জাতীয়ভাবে এই দিনটি পালন করে এই দিনে সবাই ভোর বেলায় খালি পায়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারের ফুল নিয়ে যায়।
  • ৯। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস এটি আমাদের দেশের একটি লাল অক্ষরের দিন এই দিন আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল।
  • ১০। মানুষের এই দিনটি উদযাপন করার জন্য বিশেষভাবে আলোচনা মিটিং এবং বিভিন্ন রকমের খেলা অনুষ্ঠান করা হয়।
আরো পড়ুনঃ-  ২৬ মার্চ কি দিবস - ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য

১৬ই ডিসেম্বর পালন করা হয় কেন?

১৬ই ডিসেম্বর পালন করা হয় কারণ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আজকে মহান বিজয় দিবস, প্রতিটা বাঙালির জন্য হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবের দিন। আজকের এই দিন বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম সারা বিশ্বের মানচিত্রে জানান দেওয়ার দিন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্মরণ করে। যখন বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ অর্জিত বিজয় উদযাপন করে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করে। বাংলাদেশের ইতিহাস ও জাতীয় পরিচয়ে এই দুটি দিনই অনেক তাৎপর্য বহন করে।

বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য নিয়ে লেখকের মতামত

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আপনি যদি এই আর্টিকেল ইতিমধ্যে শুরু থেকে একেবারে শেষ অবদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে এতক্ষ্ণে নিশ্চয় বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য এবং ১৬ই ডিসেম্বর কেন পালন করা হয় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। 

আপনার কাছে যদি আমাদের এই আর্টিকেল ভালো লেগে থাকে তবে আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করুন। সকলকে ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপনের ছোঁয়া পৌঁছে দিন। সময় ধরে আমাদের এই পোস্টটি পাওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায়।আমাদের এই পোস্টটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।

আজকে আমরা আপনাদের মাঝে বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য এবং ১৬ ডিসেম্বর দিনটিকে ঘিরে বিশেষ কিছু বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment