সম্মানিত পাঠক, আপনি কি অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই নিয়ে সঠিক সন্ধান পেতে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তো আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে থাকেন, তাহলে অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি জেনে নেওয়ার পাশাপাশি জমি খারিজ কি, জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে, জমির খারিজ চেক এবং জমি নামজারি করার নিয়ম জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে জমি খারিজ কি সেই সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
জমি খারিজ কি
জমি খারিজ বলতে কোন কারণবশত কোন ব্যক্তির জমি হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে খতিয়ানে পুরানো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম সংযোগ স্থাপন করেকেই বোঝানো হয়। মোট কথা আপনি যদি অন্য কারও নামে থাকা জমিটি ক্রয় করতে চান তাহলে আপনাকে জমি খারিজ করার মাধ্যমে উক্ত জমিটি আপনার নামে করে নিতে হবে। আর এই প্রক্রিয়াকেই জমি খারিজ বলা হয়।
জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে
জমি খারিজ করতে হলে আপনাকে যেসব কাগজপত্র কালেক্ট করতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হল
- ২০ টাকার কোর্ট ফি সহ মূল আবেদন ফরম
- খারিজ আবেদনকারীর ১ কপি পাসপোর্ট (PP) সাইজের ছবি ,
- একাধিক আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সকলের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- খতিয়ানের ফটোকপি
- ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বকেয়া রশিদ
- বায়া দলিলের ফটো কপি সর্বশেষ জমি জরিপের পর
- উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পাওয়ার পরে আগামী তিন মাসের মধ্যে মূল উত্তরাধিকার সনদ
- খারিজ আবেদনকারীর এন আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি
অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি
আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার কম্পিউটার থাকতে হবে এবং চাইলে আপনি কোন কম্পিউটারের দোকানে কেউ এটি করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমেই আপনার কম্পিউটার থেকে ক্রোম ব্রাউজারটি ওপেন করে নিতে হবে। তারপর আপনাকে সার্চ বক্সে টাইপ করতে হবে। www.mutationandgovbd.com প্রথমে যেই ওয়েবসাইটটি আসবে সেই ওয়েবসাইটিতে আপনি প্রবেশ করবেন। এরপর আপনাকে কিন্তু এই ওয়েবসাইটের ভেতর ঢুকেই কিন্তু যাবতীয় সকল কাজ করতে হবে। তো ওয়েবসাইটের ভিতরে কেমন হবে আপনাদেরকে দেখায় তাহলে আপনারা ভাল বুঝতে পারবেন।
এখান থেকে আপনি আপনার ইচ্ছা মত যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয় আপনি ইচ্ছা করলে টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখতে পারবেন তাহলে ভালো করে বুঝতে পারবেন। ওইখানে লেখা আছে দেখবেন একটি হচ্ছে নামজারির আবেদন আরেকটি হচ্ছে জমি খরসা করার আবেদন।
আপনি তো নিশ্চয়ই জমি নামজারি অর্থাৎ খারিজ করতে চাচ্ছেন । এজন্য আপনাকে নামজারি আবেদন ওই অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে প্রথমে। তারপর আপনাকে ওইখানে ক্লিক করার পর আরেকটি ইন্টারফেস এ নিয়ে চলে যাবে।
এখন এই ফর্মটি আপনি কিভাবে পূরণ করবেন তাই না। তো প্রথমে লেখা আছে আপনি কিভাবে জমিটির মালিক হতে চান এখানে বেশ কিছু অপশন রয়েছে যেকোনো একটি আপনি বেছে নিবেন। তারপরে লেখা আছে দেখুন ক্রেতা বাতি গ্রহীতার তথ্য এখানে যেকোনো একটি সিলেক্ট করবেন।
তারপর আপনার মৌজা কি এটা ভালোভাবে পূরণ করবেন। নিজে দেখবেন কিছু নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের মত প্রশ্ন রয়েছে সেখানে সঠিক তথ্যটি দিয়ে দিবেন। তারপর আপনাকে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করার পরে আপনার যেগুলো তথ্য চাইবে সেখানে সঠিকভাবে তথ্য দিয়ে দিলেই আপনার আবেদন সফল হয়েছে সেটি দেখতে পাবেন।
আপনি এই উপায়ে মাত্র 10 মিনিটের মধ্যেই অনলাইনে জমির খারিজ করার আবেদন করতে পারবেন। তারপর যদি আপনার ওইখানে দেখায় যে আবেদন করা সফল হয়েছে তাহলে ভাববেন এটি সত্যি কাজ করেছে।
অনলাইনে জমির খারিজ চেক
অনলাইনে জমির খারিজ চেক করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে মোবাইল অথবা ডেক্সটপ থেকে যেকোন একটি ব্রাউজার বেছে নিয়ে land.gov.bd এই ওয়েবসাইটে বা এই লিংকে ক্লিক করে ভিজিট করতে হবে।
এরপরে সেই পেইজ থেকে আপয়াঙ্কে ই-নামজারি এই অপশনে ক্লিক করতে হবে। সেখানে ক্লিক করার পরে আপনাকে পরবর্তী পেইজে নিয়ে যাবে। সেখানে খেয়াল করলে দেখবেন “আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা” এই অপশন রয়েছে সেখানে ক্লিক করলেই আপনি আপনার জমির খারিজ অনাইলেন চেক করতে পারবেন।
জমি নামজারি করার নিয়ম
২০২৪ সালের নিয়ম অনুযায়ী আপনি খুব সহজেই এখন নাম জারি করে নিতে পারবেন। আপনার সম্পত্তির। তা আপনি যদি নামজারি করতে চান তার আগে আপনাকে প্রফেশনাল ভাবে বুঝে শুনে সথিক নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে।
এগুলো করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার সঠিক যে নাম রয়েছে সেটি দিতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিতে হবে। কেননা আপনার ঠিকানা এবং নামে বিভিন্ন ধরনের নোটিশ আসতে পারে তারা তদন্ত করতে আসতে পারে। দ্বিতীয়ত আপনার যে দলিল আছে তার নাম্বার এবং সাল অবশ্যই সঠিক থাকতে হবে।
কেননা আপনার দলিলের ওপর অনেক তদন্ত হবে ঠিক তেমনভাবে যারা আপনার বিপরীতমুখী ব্যক্তি তারা কিন্তু কখনোই চাইবে না যে আপনার নামে নাম জারি করা হোক। তারা কিন্তু সব সময় ওই উকিলকে বলবে যে ওইটা উনার জমি না ওইটা আমার জমি ওটা ভুল আছে এরকম কথা সচরাচর তো সবাই বলে থাকে।
এখন আমি আপনাকে সঠিক দলিল নাম্বার এবং সালের কথা বললাম কেননা সেটি আপনার তো নকল হতে পারে তাই না। আপনি বিভিন্ন ধরনের কার্য করার মাধ্যমে জমিটি আপনার নামে করেও নিতে পারেন। আদালতের নিয়ম অনুযায়ী আপনার নামে যখন কোন জমি নাম জারি করা হবে।
অবশ্যই সেগুলো বেশ অনেকবার ধরে সত্যতা যাচাই করা হবে। সেজন্যই আপনাকে বললাম যে সব সময় সঠিক তথ্য দিতে হবে। তারপরে আপনাকে কিন্তু আপনার যে জমিটির নাম জারি হবে ওই জমিটির আগের কাগজের ফটোকপি দিতে হবে। এবং অনেকেই আছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে চুপ করে বসে থাকে কিন্তু এটি আসলে সঠিক নিয়ম না।
আপনাকে অবশ্যই দুদিন পর যেই অফিসে আপনি কাগজটি জমা দিয়েছেন সেখানে আপনাকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। তো এখন এর উপায় হচ্ছে আপনাকে একটি আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় এই বিষয়গুলো অনেক জটিল হয়ে যায়। এখন আপনি যে জমিটি নাম জারি করতে চাচ্ছেন সে জমিটির খতিয়ান কিন্তু আপনাকে জমা দিতে হবে।
এরপর অবশ্যই আপনাকে ভূমি অফিসে এই খাজনাটি দিয়েছেন তার রশিদ আপনার কাছে থাকতে হবে এবং এর এক কপি ফটোকপি আপনাকে জানাতে হবে। আপনি যদি এই নিয়ম মোতাবেক কাজ করলে অবশ্যই আপনার নামে নামজারি করে নিতে পারেবন।
জমি খারিজ সম্পর্কে লেখকের মতামত
আমরা ইতিমধ্যে অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি ২০২৪ সম্পর্কে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমার অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি নিয়ে লেখা এই পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই বিষয়ে আপনাদের মাঝে কোন মতামত কিংবা মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং এর পাশাপশি আপনি চাইলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি ও জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে তা বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।