পিএইচডি করার যোগ্যতা কি, পিএইচডি করার খরচ কত এ সম্পর্কিত তথ্যগুলো অনেকেই খুঁজে থাকেন। তাই তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের আজকের আর্টিকেল। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন পিএইচডি করার যোগ্যতা কি, পিএইচডি করার খরচ সম্পর্কে।
আপনিও কি পিএইচডি করার কথা ভাবছেন, তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ুনন। আপনি যদি পিএইচডি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে না থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন পিএইচডি করার যোগ্যতা কি, পিএইচডি করার সুবিধা, পিএইচডি করতে কত বছর লাগে, পিএইচডি করার খরচ, পিএইচডি করে চাকরি করা যায় কি না এসব গুরুত্বপূর্ন তথ্যগুলো।
পিএইচডি করার যোগ্যতা কি
পিএইচডি এর পূর্নরূপ হলো ডক্টর অফ ফিলোসফি (Doctorate of Philosophy)। শিক্ষা জগতের খুবই উচ্চপদস্থ ডিগ্রি হলো পিএইচডি। মাস্টার ডিগ্রি কোনো একটি বিষয়ের ওপর সম্পন্ন করার পর, পিএইচডি ওই বিষয়ের ওপর করা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন হওয়ার পর পিএইচডি করতে হয়। পিএইচডি করার মাধ্যমে সম্মানিত হওয়া যায়। যে ব্যক্তি পিএইচডি সম্পূর্ন করবে তার নামের আগে উৎ. উপাধি দেওয়া হয়। পিএইচডি যাদের করার ইচ্ছা আছে তারা জানতে চেয়ে থাকেন পিএইচডি করার যোগ্যতা সম্পর্কে। জেনে নিন পিএইচডি করার যোগ্যতাগুলো কি কি।
পিএইচডি করার যোগ্যতা: পিএইচডি করার জন্য, যিনি পিএইচডি করবেন তাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা এমফিল থেকে চার বছরের স্নাতক সম্মান ও এক বছর মেয়াদে মাস্টার্স ডিগ্রিতে উত্তীর্ণ হতে হবে। অর্থ্যাৎ অনার্স কমপ্লিট করতে হবে পিএইচডি ভর্তির জন্য।
একাডেমিক যোগ্যতা:
- পিএইচডিতে ভর্তির জন্য প্রার্থীকে প্রতিটি দ্বিতীয় বিভাগ বা শ্রেনীতে নূন্যতম ৫০% নম্বর পেতে হবে।
- সিজিপিএ যদি ৫ হয় তাহলে প্রার্থীকে ৩.৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে আর সিজিপিএ যদি ৪ হয় তাহলে ৩.০০ পেতে হবে।
পিএইচডি করার সুবিধা-
আপনি কি পিএইচডি করার সিধান্ত নিচ্ছেন? তাহলে আপনাকে প্রথমে জেনে নিতে হবে পিএইচডি করার সুবিধা সম্পর্কে। যেকোনো বিষয়ের ওপর সিধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত সে বিষয়ের সুবিধা সম্পর্কে। তাই জেনে নিন পিএইচডি করার সুবিধাগুলো কি কি-
- পিএইচডি করার ফলে, যিনি পিএইচডি সম্পূর্ন করবে তার নামের শুরুতে ডক্টর শব্দটি জুড়ে যায়।
- পিএইচডি শেষে দেশের মধ্যে অথবা বাইরে উচ্চপদে চাকরি করার সুযোগ পাওয়া যায়।
- নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে রিসার্চ করার সুযোগ আসে পিএইচডি করার কারনে।
- নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর যদি রিসার্চ করতে চান, তাহলে এর পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাওয়া যায়।
- কলেজে প্রফেসর হওয়ার যার ইচ্ছা আছে, তাদের ইচ্ছা সহজেই পূরন হয় পিএইচডি সম্পূর্ন করার মাধ্যমে।
- পিএইচডি করলে সব জায়গায় সম্মানিত হওয়া যায়।
- পিএইচডি করার ফলে মর্যাদাপূর্ন চাকরির সুযোগ আসে।
এ ছিল পিএইচডি করার সুবিধাসমূহ। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে পিএইচডি করার সুবিধাগুলো বুঝে গেছেন।
পিএইচডি করতে কত বছর লাগে
পিএইচডি হলো এমন একটি কোর্স যেখানে রিসার্চ করানো হয়। স্নাতক উত্তীর্ণ গবেষককে বিজ্ঞান ও কলার বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে গবেষনার জন্য পিএইচডি করানো হয়ে থাকে। যে বিষয় নিয়ে আপনি পিএইচডি করতে চাইছেন সে বিষয়ে গভিরভাবে জানা যায় পিএইচডি করার মাধ্যমে। যে বিষয় নিয়ে আপনি পিএইচডি করবেন সে বিষয়ে আপনি এক্সপার্ট হয়ে যাবেন। পিএইচডি করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন পিএইচডি করতে কত বছর সময় লাগে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক পিএইচডি করতে কত বছর সময় লাগে।
পিএইচডি করতে কত বছর সময় লাগে সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে পিএইচডি করতে অন্তত ৩ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। অনেক সময় আবার এক বছর বেশি সময় লেগে যেতে পারে। পিএইচডিতে অনেক বিষয় গভিরভাবে জেনে রিসার্চ করতে হয়, ফলে বেশি সময় লেগে যায়। তবে যারা পিএইচডি করার সময় নিয়ে ভাবছেন তারা ধরে নিতে পারেন কোনো বিষয়ের ওপর ভালোভাবে জানতে সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং রিসার্চ করার জন্য এর সাথে আরও দুই থেকে তিন বছর সময় বেশি লাগবে।
বাংলাদেশে পিএইচডি করার খরচ
অত্যান্ত মর্যাদাসম্পন্ন ডিগ্রি হলো পিএইচডি। তাই অনেকেই পিএইচডি করতে আগ্রহী। পিএইচডি যাদের করার ইচ্ছা আছে, তাদের মনে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন মাথায় আসে। যার মধ্যে পরিচিত একটি প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে পিএইচডি করার খরচ কত হয়ে থাকে। তবে পিএইচডি করার আগে অবশ্যই প্রশ্নের উত্তরগুলো জেনে নেওয়া উচিত। তাই জেনে নিন বাংলাদেশে পিএইচডি করার খরচ সম্পর্কে।
পিএইচডি যারা করতে চাইছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, পিএইচডি করার খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন ভার্সিটি থেকে পিএইচডি করতে চাইছেন তার উপর। তাই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, যে বাংলাদেশে পিএইচডি করতে কত খরচ হয়। তবে খরচ সম্পর্কে একটি ধারনা আপনাদের দিতে পারি। বাংলাদেশে পিএইচডি করতে চাইলে নূন্যতম খরচ ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে খরচ একটু বেশি হয়ে থাকে। তাই যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করতে চান, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি নোটিশ দেখে তারপর ভর্তি হবেন।
পিএইচডি করে কি চাকরি করা যায়
আমাদের প্রত্যেকের ইচ্ছা শিক্ষাজীবন শেষ করে ভালো একটি চাকরি করার এবং ভালো কিছু করার। পিএইচডি হলো শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর, যেটা করার মাধ্যমে পিএইচডি ধারীরা নিজেদের ডাক্তার বলতে পারবেন। পিএইচডি যারা করার সিধান্ত নিয়েছেন, তাদের সিধান্তের সাথে কয়েকটি বিষয়জড়িত থাকে যার একট হলো চাকরির সুযোগ। পিএইচডি করতে গিয়ে আপনাকে সময়, শ্রম এবং অর্থ ব্যয় করতে হবে। তাই পিএইচডি করে চাকরি করতে পারবেন কি না বিষয়টি জেনে নেওয়া উচিত।
পিএইচডি করার বড় ধরনের একটি সুবিধা হচ্ছে, পিএইচডি শেষ করার পর মর্যাদাপূর্ন এবং ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ পর্যায়ে চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়। ইঞ্জিনিয়ারিং ও সায়েন্স এর ক্ষেত্রে লিডারশিপ, ইংরেজি সাহিত্য অথবা আর্টসের যেকোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা যায়। এছারাও যারা পিএইচডি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করে থাকে তারা রিসার্চার পোস্টে ভালো মানের চাকরির সুযোগ পেয়ে থাকে। পদার্থবিজ্ঞান, গনিত,্ অর্গ্যানিক কেমিস্ট্রিতে যারা পিএইচডি করবে তারা ভালো বেতনের জায়গায় চাকরির সুযোগ পাবেন। পিএইচডি করে ভালো মানের চাকরির সুযোগ যেমন পাওয়া যায় তেমনি এর বেতনও ভালো।
পরিশিষে বলতে চাই যারা পিএইচডি করার সিধান্ত নিচ্ছেন, তাদের সিধান্ত সঠিক। শুধু প্রচুর অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে পিএইচডি করে জীবনে সফলতা আনতে পারবেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
পিএইচডি করার যোগ্যতা কি – পিএইচডি করার খরচ সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি পিএইচডি করার যোগ্যতা কি – পিএইচডি করার খরচ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।