হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় – পরীক্ষায় দ্রুত লেখার উপায়

সুন্দর হাতের লিখা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর পচ্ছন্দ তার সাথে শিক্ষকদেরও নজর কাড়ে। হাতের লেখা সুন্দর হলে পরীক্ষায় ভালো নম্বরও পাওয়া যায়। হাতের লেখা সুন্দর না হলে পরীক্ষায় সব উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও ভালো নাম্বার পাওয়া যায় না। তাই যাদের হাতের লেখা ভালো নয় তাদের উচিত হাতের লিখা সুন্দর করার জন্য চেষ্টা করা। হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য অনেকেই উপায় খুজছেন, জানতে চাচ্ছেন হাতের লেখা কিভাবে সুন্দর করবেন, কিভাবে লাইন সোজা করে হাতের লেখাকে আকর্ষনীয় করা যায়, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে এসব বিষয় জানতে পারবেন। এসব বিষয় নিয়েই আজকের আর্টিকেল।

হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়

পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে হলে অবশ্যই হাতের লেখা সুন্দর করতে হবে। কারন একজন পরীক্ষক খাতা দেখার সময় সবার আগে হাতের লেখা খেয়াল করেন। তাই যদি আপনার হাতের লেখা সুন্দর এবং স্পষ্ট হয় তাহলে পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং প্রবল ইচ্ছশক্তি থাকলেই হাতের লেখাকে সুন্দর করতে পারবেন। আজ আপনাদের জানাবো কিভাবে অনুশীলন করলে হাতের লেখা সুন্দর করা যায়। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিই হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় কি।

হাতের লিখা সুন্দর করার উপায়

সুন্দর হাতের লেখা কেনা চায়? সুন্দর হাতের লেখা দেখতে ভালো লাগে, তাই সবাই চাই হাতের লেখা সুন্দর করতে। হাতের লেখা সুন্দর করতে হলে আমাদের কিছু উপায় অথবা কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সেগুলো সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো:

  • এমন  কিছু অক্ষর আছে যেগুলোর কারনে আমাদের হাতের লিখা খারাপ দেখায়। তাই সবার প্রথমে সেই অক্ষর গুলো খুঁজে বের করতে হবে। এরপর সেই অক্ষরগুলো ধিরে এবং বার বার লিখার চেষ্টা করতে হবে। এভাকে কিছুদিন চেষ্টা করবেন আপনার হাতের লিখার উন্নতি হবে।
  • লেখা খারাপ হওয়ার আরেকটি কারন হলো লেখার সময় অক্ষরগুলোকে সঠিক সাইজে না লেখা। অর্থাৎ লিখার সময় আপনি যদি কোনো অক্ষর ছোট বা কোন অক্ষর বড় করে লিখেন তাহলে হাতের লিখা খারাপ দেখায়। তাই লিখার সময় আপনাকে লেখার সাইজ ঠিক রাখতে হবে।
  • হাতের লিখা সুন্দর করতে হলে আপনাকে, লিখার সময় সুন্দর স্পেস ব্যবহার করতে হবে।
  • লাইন সোজা করে লিখার চেষ্টা করতে হবে। আঁকাবাকা লাইন করে হাতের লিখা লিখলে সেটা দেখতে ভালো লাগবেনা, তাই লাইন সোজা করে লিখতে হবে। কয়েকদিন অভ্যাস করলেই লাইন সোজা হয়ে যাবে।
  • হাতের লিখা সুন্দর করতে চাইলে সুন্দর এবং সঠিক কলম ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর বলতে দামি বা দেখতে সুন্দর এমন কলম নই, হালকা কলম লেখা সুন্দর করতে ব্যবহার করবেন। তাই হাতের লিখা সুন্দর করতে চাইলে আপনাকে সুন্দর, কলমের যাতে কালি না ছড়ায় সে কলমগুলো ব্যবহার করতে হবে।
  • অনেক ক্ষেত্রে আপনার বসার ধরনের ওপর হাতের লিখা সুন্দর নির্ভর করে। এর জন্য আপনাকে সঠিকভাবে বসতে হবে এবং লিখার সময় আলসেমি ভাব দূর করতে হবে।
  • হাতের লিখা সুন্দর করার জন্য আপনি কারও হাতের লিখা ফলো করতে পারেন, যার হাতের লিখা আপনার ভালোলাগে। তার হাতের লিখা আপনি নিয়মিত প্র্যাকটিস করুন, হাতের লিখা ভালো হবে।
  • লম্বা আকারে টেনে টেনে লিখার চেষ্টা করতে হবে।
  • লিখার সময় খেয়াল করে লিখবেন যাতে লিখা ভূল না হয়। কারন ভুল লিখায় কাটাকাটি বেশি হয়, ফলে হাতের লিখা দেখতে খারাপ লাগে।
  • বর্নের মাত্রা ঠিক করে লিখতে হবে। অনেক বর্ন মাত্রা ছাড়া, আবার কোনো বর্নে অর্ধমাত্রা এসব জেনে সঠিক করে লিখতে হবে।
  • এক শব্দ থেকে আরেক শব্দ লিখার কিছুটা দূরত্ব থাকতে হবে।
  • কলম ধরার ধরন ঠিক রাখতে হবে ভালো হাতের লিখা করতে চাইলে। সঠিকভাবে কলম না ধরার কারনে আপনার হাতের লিখা খারাপ হতে পারে। তাই বেশি করে চাপ দিয়ে লিখবেন না হালকা চাপ দিয়ে লিখার চেষ্টা করবেন।
আরো পড়ুনঃ-  নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি - বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা

নিয়মিত লিখার অনুসরন করবেন, সময় ধরে বার বার লিখবেন। একবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে আবার লিখবেন, অবশ্যই ফল পাবেন। আশা করি  হাতের লিখা সুন্দর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

হাতের লিখা সোজা করার উপায়

হাতের লিখা, লিখার সময় সবথেকে একটি গুরত্বপূর্ন একটি বিষয় হলো লাইন সোজা করা। অনেকের হাতের লিখা অনেক সুন্দর কিন্তু লাইন সোজা হয় না ফলে দেখতে খারাপ লাগে। তাই  হাতের লিখা সুন্দর করতে হলে আমাদের লিখার লাইন সোজা রাখতে হবে। অনেকের দেখা যায় লিখার সময়, হাতের লিখা খাতার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যায়। এইভাবে হাতের লিখা দেখতে ভিষন বাজে লাগে। তাই হাতের লেখা সুন্দর করতে হলে আপনাকে অবশ্যই লাইন সোজা করে লিখতে হবে।

হাতের লিখা সোজা করার জন্য প্রথমে আপনাক যেটা করতে হবে সেটা হলো বেশি বেশি প্র্যাকটিস করা। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে প্র্যাকটিস করবো। চলুন জেনে নিন কিভাবে প্রাকটিস করবেন।

হাতের লিখা সোজা করতে হলে আপনাকে লাইন সোজা করতে হবে। কোনো অক্ষরের লাইন অথবা মাত্রার লাইন কিংবা যেকোনো লাইন আপনাকে সোজা করতে হবে। যেমন ধরুন অপনি ক’ লিখবেন এজন্য প্রথমেই আমরা লম্বা একটা দাগ টানি সেই  লম্বা দাগটা আমাদের সোজা করে টানতে হবে। তাহলে লিখা সোজা করা যাবে।

লিখার সময় আপনার লিখা যদি, উপর থেকে লিখতে গিয়ে নিচে নেমে যায় বা নিচ থেকে উপরে চলে যায় তাহলে আপনার লিখা যেদিকে যাবে তার উল্টো দিকে লিখাটা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে লিখার লাইন সোজা হতে পারে।

একটা শব্দ লিখার পর যখন আরেকটা শব্দ লিখবেন, তথন একটা শব্দ শেষ করার পর মাত্রার শেষে একটু টান দিবেন আবার যখন তার পাশে আরেকটা শব্দ লিখবেন তখন সেই শব্দের মাত্রার শুরুতে একটু টান দিবেন। এইভাবে টান দিয়ে লিখলে হাতের লিখা সোজা হবে। এভাবে বাংলা লিখা সোজা করা যায়। ইংরেজি লিখা সোজা করতে হলে আপনাকে ইংলিশ ওয়ার্ডয়ের নিচের দিকে লক্ষ্য রেখে লিখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  পড়ালেখায় সফল হওয়ার উপায় - একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য

স্কেল ও পেন্সিল দিয়ে আপনি আপনার খাতায় হালকা করে সোজা দাগ টেনে তার ওপর লিখার প্র্যাকটিস করুন। কয়েকদিন এভাবে চেষ্টা করলে দেখবেন, লাইন সোজা হবে।

প্রতিদিন ধৈর্য সহকারে নিয়মিত প্র্যাকটিস করবেন। তাহলেই দেখবেন হাতের লিখা সোজা হয়েগেছে।

পরিক্ষায় দ্রুত লিখার উপায়

পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে না পারা এটি একটি ছাত্র-ছাত্রীর সমস্যা। যতই ভালো ছাত্র- ছাত্রী হন না কেন পরীক্ষায় অবশ্যই দ্রুত লিখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় জানা প্রশ্ন গুলো লিখে শেষ করার আগেই সময় পার হয়ে যায়,ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় নাম্বার কম পেয়ে থাকে। এ নিয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা চিন্তিত, তবে চিন্তার কোনো কারন নেই এর জন্য সমাধান রয়েছে। পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে হলে কিছু কৌশল আছে যারা পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে চান তাদের সেই কৌশলগুলো ফলো করতে হবে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কৌশল গুলোর সম্পর্কে।

পরীক্ষার সময় প্রথম ৫ মিনিটে, কয়টি প্রশ্নের মধ্যে কয়টি লিখতে হবে, কোন প্রশ্নগুলো উত্তর করা আপনাদের জন্য সহজ সেটি যাচাই করে নেওয়া এবং প্রশ্নগুলো এমনভাবে পড়তে হবে যাতে দ্বিতীয়বার পড়া না লাগে এসব বিষয় প্রথম ৫ মিনিটে খুবই গুরত্বপূর্ন।

প্রশ্নপড়া শেষ হওয়ার পরে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিতে হবে, কিভাবে লিখা শুরু করবেন। এরপর সকল প্রশ্নর জন্য সময় ভাগ করে নিতে হবে। মনে করেন ৭ টি প্রশ্নের জন্য আপনাকে ১৫০ ঘন্টা সময় দেয়া হয়েছে, তাহলে প্রত্যেক প্রশ্নের জন্য ২০ মিনিট করে ধার্য করে নিন। বাকি ১০ মিনিট, শুরতে ৫ মিনিট প্রশ্ন পড়তে এবং শেষে ৫ মিনিট রিভিশন দেওয়ার জন্য।

যে প্রশ্নটি আপনার কমন সে প্রশ্নের উত্তরের আগে হালকা দাগ দিয়ে দিন। কারন সহজ প্রশ্নগুলো আপনি দ্রুত লিখতে পারবেন। পরীক্ষার জন্য সঠিক কলম নির্ধারন করবেন এবং সঠিক ভাবে কলম ধরবেন তাহলে লিখার গতি বাড়বে।

আরো পড়ুনঃ-  নতুন কারিকুলাম নিয়ে বিতর্ক - নতুন কারিকুলাম কেন প্রয়োজন

পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে না পারার একটি কারন হলো ভালোভাবে পরীক্ষায় প্রস্তুতি না নেওয়া। এর ফলে পরীক্ষার খাতায় থেমে থেমে লিখতে হয়। পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শুধু বই পড়লে হবে না, পড়ার পাশাপাশি লিখার অভ্যাস করতে হবে। তাহলে পরীক্ষার খাতায় দ্রুত লিখতে পারা যাবে।

ঘড়ি দেখে লিখবেন কারন একটা প্রশ্নেই সময় পার করে দিলে চলবেনা।

পরীক্ষা দিতে বসার সময় দেহের অবস্থান ঠিক করে বসবেন। অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক করে না বসার কারনে দ্রুত লিখতে পারা যায় না। তাই পরীক্ষার খাতাই দ্রুত লিখতে হলে ঠিক করে বসতে হবে।

পরিশেষে বলতে চায় পরীক্ষার হলে দুশ্চিন্তা করা যাবে না, এর প্রভাব আপনার লিখার গতির ওপর পড়বে। দুশ্চিন্তা করার ফলে সময়ের অপচয় হয়।  তাই দুশ্চিন্তা না করে ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে প্রশ্ন পড়ে উত্তর করার চেষ্টা করবেন। এতে পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে পারবেন এবং পরীক্ষাও ভালো হবে।

উপরে হাতের লিখা সুন্দর করার উপায় এবং পরীক্ষায় কিভাবে দ্রুত লিখা যায় তা নিয়ে বিশেষ কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি সেগুলো পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

হাতের  লেখা  সুন্দর করার উপায় – পরীক্ষায় দ্রুত লেখার উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি হাতের  লেখা  সুন্দর করার উপায় – পরীক্ষায় দ্রুত লেখার উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment