প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা হয়তো কম্পিউটারের জনক কে ও কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি অনেকেই জানেন না। তাই আজ আপনাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে কম্পিউটারের জনক কে ও কম্পিউটার আবিষ্কারক কে সহ এই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করব। তাহলে কথা না বাড়িয়ে প্রথমে কম্পিউটারের জনক কে তা জেনে নেই।
কম্পিউটারের জনক কে
চার্ল্স ব্যাভেজ (Charles Babbage) কে কম্পিউটারের জনক বলা হয়। চার্ল্স ব্যাভেজ একজন ব্রিটিশ গণিতবিদ,পদার্থবিদ,প্রকৌশলী এবং মেকানিক্যাল প্রকাশক ছিলেন, যিনি ১৭৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর এ জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৭১ সালের ১৭ অক্টোবর তার মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞানের জনক হিসাবে পরিচিত হন কারণ তার ধারাবাহিক ব্যক্তিগত কম্পিউটারের ব্লুপ্রিন ছিল এবং তিনি প্রথম মেকানিক্যাল কম্পিউটার ডিজাইন করার চেষ্টা করেন। তার প্রধান কম্পিউটার ডিজাইন ছিল “অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন” নামে যা প্রাকৃতিক সংখ্যা বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয় এবং সাধারণ গণনা প্রক্রিয়ার প্রযুক্তির মাধ্যমে গণনা করতে সক্ষম ছিল।
এই ইঞ্জিন মেকানিক্যাল বিভিন্ন গ্যারিং,সাম এবং ক্যামেরা ব্যবহার করে গঠিত করা হয়ে ছিল। ব্যাভেজ এছাড়াও মেমরি কার্ড এবং অপারেশন রিসার্চে প্রচারিত ছিলেন। তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিন ও অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের জন্য প্রকাশিত “টেবিউল অফ লজিক” নামক একটি বই লেখেন, যা গণিতীয় তালিকা এবং লজিক অপারেশনের প্রয়োজনীয় বেসিক বিধিগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করে।
চার্ল্স ব্যাভেজ একজন উৎকৃষ্ট বিজ্ঞানী এবং উদ্ভাবক ছিলেন, যার কারণে তার গবেষণা এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটার ডিজাইন বহু দশক পরেও বৃদ্ধি এবং বিকাশ পেয়েছে। এই কারণেই চার্ল্স ব্যাভেজ আজও কম্পিউটারের জনক হিসাবে সম্মানিত হয়।
কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে
কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে ? এ বিষয়ে অনেকে ভাবেন কম্পিউটারের আবিষ্কারক চার্লস ব্যাবেজ কিন্তু সেই তথ্যটি ভুল। চার্লস ব্যাবেজ হলে কম্পিউটারের জনক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে এর প্রকৃত উত্তরটি জানতে হলে নিচের অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
তাহলে চলুন জেনে আসি কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে সে সম্পর্কে- কম্পিউটারের আবিষ্কারক (the discoverer) হাওয়ার্ড আইকেন কে বলা হয়। তিনি একজন আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী হিসেবে বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন, যার মাধ্যমে ১৯৪০ সালে মডেল ১ (Model-1) নামক একটি বিশাল গণনা যন্ত্র আবিস্কার করা হয়েছিল।
হাওয়ার্ড আইকেনের প্রধান কাজ ছিল হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাবে একটি বিশাল গণনা যন্ত্র তৈরি করা। এই যন্ত্রটির নাম ছিল “এইচএসএস মার্ক ১” (IBM Automatic Sequence Controlled Calculator), যা পরিচিত হয়েছিল হারভার্ড মার্ক ১ হিসেবে।
এটি সাধারণত মিক্সড সামান্যিক গণনা যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে গণনা যন্ত্র বিশ্বের সবচেয়ে স্বতন্ত্র এবং গণনার নির্দেশিত হিসেবে পরিচিত হয়। হারভার্ড মার্ক ১ তৈরির পর থেকে, আইকেন অন্যান্য ব্যাক্তিগত যন্ত্রগুলির উন্নয়নে কাজ করেন।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি সংগ্রহ করতে পেরেছে। তাছাড়া হাওয়ার্ড আইকেনের যান্ত্রিক উদ্যোগ এবং কম্পিউটারের বিজ্ঞানে প্রয়োগ করা সেই কারণে, তিনি একজন কম্পিউটারের আবিষ্কারক হিসেবে পরিচিত হন।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে
আধুনিক কম্পিউটার এর জনক জন ভন নিউম্যান কে বলে। তিনি ছিলেন একজন সুপরামর্শ মার্টিয়াল হাংরিয়ান (Martial Hungarian) যিনি মূলত কম্পিউটার বিজ্ঞানী পদার্থবিদ হিসেবে এবং এর পাশাপাশি উপাধ্যায় হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি একটি নিবন্ধন লিখেছিলেন ১৯৪০ এর দশকের মাঝখানের দিকে। যেখানে কম্পিউটার যন্ত্রের জন্য বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এই ধারণাটি তিনি অনেক সুক্ষভাবে সংরক্ষণ করেন এবং যেটি “প্রোগ্রাম” নামে রচিত ছিল। তা মূলত সক্রিয়ভাবে জন ভন নিউম্যান এর প্রস্তাবনায় আজও অবদি আধুনিক কম্পিউটারে ব্যবহার হচ্ছে।
এজন্যই জন ভন নিউম্যান কে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। উপরোক্ত কারণগুলো দ্বারা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে। আশা করি আমার আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন।
পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে
পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে হয়তো অনেকেই জানেন না। পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে এই প্রশ্নের সঠিক তথ্যটি আজকে আপনাদের মাঝে প্রকাশ করব। তাহলে চলুন জেনে আসি পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে –
হেনরি এডওয়ার্ড রবার্ট (Henry Edward Robert) অভিযান কেসন বা এইসিকে (H.E.R.) কে মানা হয় পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক। তিনি ব্রিটিশ ম্যাথেমেটিকিয়ান ছিলেন এবং ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ রয়েল কম্পিউটিং মেশিনস (RRE) সংস্থায় একটি কম্পিউটার নিয়োজিত করার জন্য একটি প্রস্তাবনা করেন। এটি একটি প্রয়োগকারী পার্সোনাল কম্পিউটার হিসেবে মনে করা যায়, যা প্রোগ্রাম চালাতে একজন অপারেটরের সাথে সমন্বিত ছিল।
এই সিস্টেমটি কোম্পানি “এল্লেন ব্রেডলি আইবিএম” (Allen Bradley IBM) দ্বারা তৈরি হয়েছিল, এবং এটি একটি ডাস্টেক কার্ড পাঞ্চ সিস্টেমে ভিত্তি করে ছিল। এই সিস্টেমে ক্যালকুলেটরের মতো নামকরণের প্রয়োজন ছিল না, এবং প্রোগ্রাম একটি নেপস্টিক নোটবুকে লেখা হয়েছিল যাতে সংবেদনশীল মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি কার্ডে সংগ্রহ করা হয়।
এই প্রথম প্রয়োগকারী পার্সোনাল কম্পিউটার হিসেবে, এইসিকেকে পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক বলা হয় যে তিনি এই ধরনের কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা স্থাপন করেন। এই প্রথম প্রয়োগকারী কম্পিউটার এবং তার বৈশিষ্ট্যগুলি পরবর্তী পার্সোনাল কম্পিউটারগুলির উন্নতির উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সুতরাং উপরক্ত আলোচনার মাধ্যমে হয়তো বুঝতে পেরেছেন পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে সম্পূর্ণ তথ্যটি দেওয়া হয়েছে। আশা করি পার্সোনাল কম্পিউটারের জনক কে এই সম্পর্কে আপনাদের মধ্যে আর কোন অস্পষ্ট কথা থাকার কথা না।
সুপার কম্পিউটারের জনক কে
সুপার কম্পিউটার অনেক শক্তিশালী কম্পিউটার প্রযুক্তি। তবে সুপার কম্পিউটার জনক কে সে সম্পর্কে কারো সঠিক জ্ঞান নেই। তাই আজ আপনাদের মাঝে সুপার কম্পিউটারের জনক কে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে আসি সুপার কম্পিউটারের জনক কে সে সম্পর্কে –
সুপার কম্পিউটার এর জনক হচ্ছে মূলত সেমোর ক্রে। তিনি একজন কম্পিউটার এর অনেক সুদক্ষ আর্কিটেক্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এর পাশাপাশি সেমোর ক্রে সুপার কম্পিউটারের ক্রিয়াশীলতা পরিবর্তন করে তাতে অনেক আধুনিক ও উন্নত ডিজাইন করেন।
সেমোর ক্রে প্রথমে ক্রে-১ (Cray-1) নামের সুপার কম্পিউটার তৈরি করেন, যা ১৯৭৬ সালে মার্কেটে প্রকাশিত হয়। এই সিস্টেমটি তিনি নিজের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি করেন এবং এর সাথে বিল এবং ক্রিত বিধির প্রয়োজন ছিল না। ক্রে-১ একটি সুপার কম্পিউটারের রূপান্তর করা যেতে পারে যা তথ্য প্রসেসিং ও সাইন্টিফিক গণিত অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উপযুক্ত ছিল।
তারপরে সেমোর ক্রে অন্যান্য সুপার কম্পিউটারগুলি তৈরি করেন, যেগুলির মধ্যে ক্রে-২, ক্রে-৩, ক্রে-৪, ক্রে-৫ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এই সুপার কম্পিউটারগুলি মহাবিশালকার গণনার শক্তি এবং তাদের উচ্চ গতি এবং দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিচিত।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা নিশ্চয় সুপার কম্পিউটারের জনক কে সে সম্পর্কে অবগত হয়েছে। কেননা তাঁর কার্যকালে তিনি সুপার কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা এবং উচ্চ গণনা ক্ষমতা প্রমাণ করেন, যা পরবর্তী সুপার কম্পিউটার গুলির উন্নতির উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কম্পিউটারের জনক নিয়ে লেখকের মতামত
প্রিয় বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে কম্পিউটারের জনক কে ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক কে সেই আলোচনা সম্পর্কে করার পাশাপাশি কম্পিউটারের অদ্যপন্ত নিয়ে আলোচনা করছি এতক্ষণে আপনারা কম্পিউটারের জনক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।
তাই আমাদের আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি যদি আপনাদের ভালো লাগে কিংবা উপকারি মনে হয় তাহলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং এরকম আরো আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।