আপনি কি ভালো রাউটার চেনার উপায় ও সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এসমস্ত তথ্য পেতে একেবারে সঠিক স্থানেই এসেছেন। কেননা আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে ভালো রাউটার চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের মাঝে এমন অনেকেই নতুন রাউটার ক্রয় করতে চাচ্ছেন কিন্তু আসলে কোন রাউটার সবচেয়ে ভাল হবে সেই বিষয়ে অবগত নন।
মূলত তাদের সুবিধার কথা ভেবেই আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে ভালো রাউটার চেনার উপায় এবং সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি তা জানিয়ে দিব ইনশাল্লাহ। একটি ভালো রাউটারই পারবে ইন্টারনেট স্পিডকে বাড়িয়ে তুলতে। তাই ওয়াইফাই ইউজের জন্য একটি ভাল মানের রাউটার লাগবে।
ভালো রাউটার চেনার উপায়
আপনি যখন রাউটার ক্রয় করবেন তখন আপনাকে কিছু বিষয় বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাউটার ক্রয় করতে হবে। আসুন সেই বিষয়গুলো কি তা জেনে নেই।
- ডিভাইস সংখ্যা
- কভারেজ এরিয়া
- নেটওয়ার্ক রেঞ্জ
- রাউটার অ্যান্টেনা
এগুলো বিষয় বিবেচনা করে আপনাকে রাউটার পছন্দ করতে হবে। এবার আসুন আমরা এগুলো বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।
ডিভাইসের সংখ্যা
ভালো রাউটার চেনার জন্য কিছু বিষয় জানা উচিত সে সকল বিষয়ের মধ্য পড়ে কভারেজ এরিয়া, ডিভাইস সংখ্য , রোম সংখ্যা, রেঞ্জ সংখ্যা, এন্টেনা সংখ্যা ইত্যাদি এই সকল জানা অত্যন্ত জরুরী। যেমন ডিভাইসের সংখ্যা নেটওয়ার্ক সংযোগ দেওয়ার জন্য রাউটারের গতিও অনেক বেশি হতে হবে এবং ডিভাইসের সংখ্যা অনুযায়ী রাউটার নির্বাচন করতে হবে।
সাধারণত হোম রাউটারের গতি হতে হবে ১৫০ এমবিপিএস এর থেকে ৩০০ এমবিবিএস পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে দেশ যত উন্নতি লাভ করছে, তত সবকিছুই উন্নত হচ্ছে যেমন বর্তমানে বাজারের ১৯০০ এমবিপিএস গতির রাউটার পাওয়া যাচ্ছে আগে তা পাওয়া যেত না তাই দেশের উন্নতির সঙ্গে সবকিছুই উন্নত হচ্ছে।
কভারেজ এরিয়া
কভারেজ এরিয়া বলতে বোঝানো হয় যতটুকু জায়গায় আপনি রাউটারের সার্ভিস নিতে চাইছেন ততটুকু জায়গাকে কভারেজ এরিয়া বলা হয়। আপনার কভারেজ এরিয়া যদি ও হয়ে থাকে এক থেকে দুইটি রুম এবং দুই থেকে তিনটি ডিভাইস, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার আপনার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।
আবার কভারেজ এরিয়া যদি হয়ে থাকে তিন থেকে চারটি রুম এবং চার থেকে ছয়টি ডিভাইস তবে সেক্ষেত্রে ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার আপনার জন্য কার্যকরী রাউটার হিসেবে গণ্য করা হবে। এর থেকে যদি বেশি জায়গার জন্য নিয়ে থাকেন, তাহলে আরো ভালো মানের বা উন্নত মানের রাউটারের পাশাপাশি রিপিটার ব্যবহার করতে হবে তাহলে এতে সঠিক মাত্রায় নেট দিবে।
রেঞ্জ সংখ্যা
রাউটারের রেঞ্জের দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে, কারণ রাউটারের রেঞ্জ যত বড় হবে তত বেশি এরিয়া নিয়ে নেটওয়ার্ক দিতে পারবে। একটি ওয়ার্ড রাউটারের রেঞ্জ মূলত হয়ে থাকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত। আর ওয়ারলেস রাউটারের রেঞ্জ ইনডোর ১৫০ ফুট এবং আউটডোরের ৩০০ ফুট হয়ে থাকে। এর চাইতে বেশি নিতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন রিপিটার অথবা ম্যাস।
রাউটার অ্যান্টেনা
রাউটার নেওয়ার সময় এন্টেনার দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এন্টেনা যত বেশি হবে তত সার্ভিস ভালো দেবে এবং নেট দিবে বেশি নেটের কাজে অনেক গুলো ডিভাইস ব্যবহারের জন্য আমি সাজেস্ট করব বেশি এন্টেনাযুক্ত রাউটার নেওয়ার। এতে নেট দিবে দ্রুত এবং যেকোনো নেটের প্রবলেম থেকে মুক্তি দেবে।
সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনগুলো
নেটওয়ার্কিং এর যুগে রাউটার এবং ওয়াইফাই এর প্রচুর পরিমাণের প্রচলন চলে আসছে। এমন একটি সময় আসবে যেখানে শুধু রাউটার এবং ওয়াইফাই এর প্রচলন চলবে। এখন প্রায় তার ৯৫ ভাগ শুরু হয়ে গেছে। কারণ গুনতে গেলে প্রতিটা বাড়িতে এখন ওয়াইফাই সংযোগ দেখা যায় এবং যাদের বাসায় এখনো নাই, তাদের জানা উচিত সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনগুলো সেই সম্পর্কে তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশের সবচাইতে ভালো রাউটার কোনগুলো এবং দাম কেমন সেই রাউটারগুলোর সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায় ভালো রাউটার সম্পর্কে জানতে হলে বিস্তারিত নিচে দেখুন।
- DIR-615 N300
- Tenda F-3
- TP-Link TL-WR840N (V2)
- TL-WR820N
- ASUS RT-N12+
- Netgear WNR614
টেন্ডা: এই রাউটারে ব্যান্ডউইথ থাকে জুয়াল ব্যান্ড 2.4GHZ-300Mbps o 5.0 GHZ-1733MBPS
MU-MIMO: সাপোর্টেড
ওয়াইফাই রেঞ্জ; 6 এন্টেনা3000 বর্গফুট
দাম: ৩৬০০ প্লাস এবং এর রাউটারটি অন্যান্য রাউটারের তুলনায় অনেক ভালো যে কোন ফেসবুক এবং ইউটিউবে ব্রাউজিং বেশি করলে এই রাউটারটি একদম পারফেক্ট।
টিপিলিংক: ব্যান্ডউইথ ডুয়াল ব্যান্ড 2.4GHZ-300MBPS O 5.0GHZ-867MBPS
MU-MIMO; সাপোর্টেড রেঞ্জ; ৪ এন্টেনা ২০০০ বর্গফুট
দাম: ৩৫০০ এই রাউটারটি অনেক টিকসই এবং এটি ব্যবহারে আপনি ভালো একটি কানেকশনের রাউটার পেয়ে থাকবেন যেকোনো গেম খেলার জন্য এই রাউটারটি অন্যতম একটি রাউটার হিসেবে গণ্য করা যায়।
আরো অন্যান্য রাউটার রয়েছে যেগুলো অন্যতম এবং ভালো মানের। তবে সেগুলো ব্যয়বহুল এজন্যএই সকল রাউটার আপনারা চাইলে ব্যবহার করতে পারেন। আমি নিজেই যেমন ব্যবহার করি টেন্ডা। আর আমি এ পর্যন্ত কোন সমস্যা পাইনি বললেই চলে। অনেকে ভাল স্পীডে এ পর্যন্ত আমি ব্যবহার করে চলেছি কোন সমস্যা দেখতে পাই নাই। তাই আমি সাজেস্ট করব টেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
ভালো রাউটারের দাম কত
আমরা অনেকেই রাউটার ব্যবহার করে থাকি। তবে অনেকেই আছেন যারা নতুন রাউটার ক্রয় করতে চান তারা রাউটার ব্যবহার করার জন্য দাম জানতে চান। তাই তাদের জন্য পোষ্টের এই অংশে বিভিন্ন রকমের রাউটারের দাম কত সে সম্পর্কে তুলে ধরেছি। আর্টিকেল এর এই অংশটুকু পড়ে ভাল রাউটার গুলোর দাম সম্পর্কে জানুন।
- টেন্ডা সিঙ্গেল ব্র্যান্ড ২.৪ জিএস জেড ৩০০ এমবিপিএস দুইটি ফাইভ ডিবি এন্টেনা হাজার ৯৯ টাকা
- ডিলিংক সিঙ্গেল ব্যান্ড ২.৪ জি এস জেড ৩০০ এমবিপিএস দুটি ফাইভ ডিবি অ্যান্টেনা ১৩৩০ টাকা
- টিপি লিংক সিঙ্গেল ব্যান্ড ২.৪ জে এইচ জেড ৩০০এমবিপিএস ডিপি অ্যান্টেন ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা প্রায়
- Tenda f3 সিঙ্গেল ব্যান্ড ২.৪ জে এইচ জেড ৩০০ এম পিপিএস তিনটি ফাইভ ডিপি এন্টেনা ১৭৭৫ টাকা
- শাওমি ৩০০এমপিপিএস সিঙ্গেল ব্যান্ড ২.৪জিএস z ৪৫ ডিপি অ্যান্টেনা ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা প্রায়
- টিপি লিংক সিঙ্গেল ব্যান্ড 2.4gs z ৩০০ এমবিপিএস তিনটি ফাইভ ডিবি এন্টেনা ১৮১৫ টাকা
এটা মূলত ভাল ভাল রাউটারের দাম সমূহ ওপরে যে সকল রাউটার গুলো উল্লেখ করা হলো এগুলো সকল রাউটার ব্র্যান্ডের এর মধ্যে আমি নিজে ব্যবহার করে থাকি। টেন্ডা একটি ব্র্যান্ডের রাউটার এটি ব্যবহারে এ পর্যন্ত আমি কোন ঝামেলা দেখি নাই তাই আমি সাজেস্ট করব এই সকল রাউটার গুলো ইউজ করার জন্য এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি রাউটার।
রাউটার ও ওয়াইফাই এর মধ্যে পার্থক্য কি
রাউটার এর কাজ হচ্ছে মূলত ওয়াইফাই সিগনাল প্রদান করা। যার সাহায্যে ওয়াইফাই সিগন্যাল কানেক্ট ইন্টারনেট ব্যবহার করি। আর অন্যদিকে ওয়াইফাই এর কাজ হচ্ছে একটি সিগনাল যার মাধ্যমে নেট কানেকশন আআসে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। তার মানে রাউটার না থাকলে ইন্টারনেট চলবে না। আর ইন্টার নেট না থাকলে রাউতার চলবে না।
ভালো রাউটার সম্পর্কে লেখকের মতামত
আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা ভালো রাউটার চেনার উপায়, সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি, ভালো রাউটারের দাম কত এবং রাউটার ও ওয়াইফাই এর মধ্যে পার্থক্য কি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি এই পর্যন্তই। বিভিন্ন তথ্যবহুল সম্পর্কিত অন্যেন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করার অনুরোধ রইল।