সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস সম্পর্কে তথ্য খুঁজছেন? তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়লে সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংকে যদি আপনি টাকা রাখতে চান, তাহলে আপনার জেনে রাখা উচিত সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে। আর সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে। চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে শুরু করা যাক।
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস লিস্ট
একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা রাখার যে চুক্তি সেটি হলো ডিপিএস। ডিপিএস এ নির্দিষ্ট সময়ে আপনার অর্থ জমা হতে থাকবে এবং সময় শেষে জমানো টাকা সুদসহ আপনাকে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। এ ডিপিএস আমরা বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠানে খুলে থাকি। আমাদের মধ্যে অনেকেই সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস খুলতে চাই। কারণ সোনালী ব্যাংক হলো বাংলাদেশের সবথেকে বড় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংকে কি আপনি ডিপিএস করতে চাইছেন? তাহলে ডিপিএস করার আগে আপনার অবশ্যই জেনে নিতে হবে সোনালী ব্যাংক ডিপিএস লিস্ট সম্পর্কে। তো চলুন জেনে নিন সোনালী ব্যাংক ডিপিএস লিস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত।
সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস এর বিভিন্ন স্কিম রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আছে সোনালী সঞ্চয় স্কিম, চিকিৎসা সঞ্চয় স্কিম, শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম, পল্লী সঞ্চয় স্কিম, অনিবাসী আমানত সঞ্চয় স্কিম, সোনালী ব্যাংক অবসর সঞ্চয় স্কিম, সোনালী ব্যাংক মিলিওনিয়ার স্কিম, বিবাহ সঞ্চয় স্কিম এবং স্বাধীন স্কিম। আর স্কিমগুলোর ডিপিএস রেট ভিন্ন হয়ে থাকে। স্কিম অনুযায়ী ডিপিএস তালিকা নিচে দেওয়া হলো-
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস লিস্টঃ
- সোনালী ব্যাংকে, সোনালী সঞ্চয় স্কিম ৫ বছর মেয়াদে ৬.৫০% চক্রবৃদ্ধিতে মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা অথবা এর গুনিতক, সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা।
- শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম ৬.৫০% চক্রবৃদ্ধিতে ৫ বছর মেয়াদে মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা অথবা এর গুনিতক, সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা।
- পল্লী সঞ্চয় স্কিম ৭ বছর মেয়াদে ৬.৫০% সরল হারে মাসিক কিস্তি ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০ এবং ১০০০ টাকা।
- চিকিৎসা সঞ্চয় স্কিম ১০ বছর মেয়াদে ৬.৫০% চকৃবৃদ্ধি মুনাফায় মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা অথবা এর গুনিতক এবং ১০০০০ টাকা।
- বিবাহ সঞ্চয় স্কিম ১০ বছর মেয়াদে ৬.৫০% চক্রবৃদ্ধি মুনাফায় মাসিক কিস্তি ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- স্বাধীন সঞ্চয়ী স্কিম ৫ অথবা ১০ বছর মেয়াদে মাসিক কিস্তি ১০০০টাকা এবং সঞ্চয়ী হিসেবে বিদ্যমান মুনাফা হারের অতিরিক্ত ৩% প্রাথমিক জমা: ১০০০ টাকা।
- অনিবাসী আমানত স্কিম ৫ বছর মেয়াদে ৭% সরল হার মুনাফায় মাসিক কিস্তি ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- সোনালী ব্যাংক অবসর সঞ্চয় স্কিম ৩ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে সরল হার মুনাফা ৮%।
- সোনালী ব্যাংক মিলিওনিয়ার স্কিম মেয়াদ ৩ তেকে ২০ বছর হয়ে থাকে এবং চক্রবৃদ্ধি মুনাফার হার ৬%, ৬.৫০% এবং ৭% হয়ে থাকে।
এ ছিল সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস লিস্ট। এর মধ্যে থেকে আপনার পচ্ছন্দ মতো যেকোনো একটি স্কিম বাছাই করে সঞ্চয় দিতে পারেন। তবে বর্তমানে দেশের পরিস্থিতির কারনে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তাই আপনি যে স্কিম ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চাইছেন, সে বিষয়ে আপনার নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে জেনে নিন।
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম
দেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় ব্যাংকের তালিকায় প্রথম নাম রয়েছে সোনালী ব্যাংকের। ব্যাংকে আমরা টাকা সঞ্চয় রাখার আগে দ্বিধায় পড়ে যায়, যে আমাদের আমনতকৃত টাকা পরবর্তীতে ফেরত পাবো তো? তবে সোনালী ব্যাংক কে সহজেই ভরসা করা যায়। আর এ জন্য অনেকেই সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস খুলতে চাই। তবে সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট যারা খুলতে চান, অনেকেই জানতে চান সোনালী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম সম্পর্কে। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট যদি আপনি খুলতে চান, তাহলে প্রথমে আপনার জানতে হবে সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট খুলতে কি কি ইনফরমেশন লাগবে। জেনে নিন ইনফরমেশনগুলো কি কি-
- সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট তৈরির জন্য অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশর নাগরিক হতে হবে।
- আপনার বয়স ১৮ অথবা ১৮ এর থেকে বেশি হতে হবে। তবে আপনি যদি নাবালক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মা-বাবা অভিভাবক হয়ে স্বীকৃতি দিলে আপনার ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করা সম্ভব হবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি এবং নমিনির দুই কপি ছবি।
- আপনার এবং নমিনির দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্র এর সত্যায়িত জমা দিতে হবে।
উপরের উল্লিখিত কাগজপত্র যদি আপনার ঠিক থাকে তাহলে আপনি সহজেই সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারবেন। কিভাবে খুলবেন জেনে নিন-
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম:
খুব সহজ অর্থে বলা যায়, যদি আপনি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান তাহলে, উপরে বলা কাগজপত্রগুলো নিয়ে আপনার নিকটস্থ কোনো একটি সোনালী ব্যাংক ব্রাঞ্চ অথবা শাখায় চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে তাদের আপনার একাউন্ট খোলার বিষয়টা বলবেন, এরপর তারাই আপনাকে বলে দিবে আপনার ডিপিএস একাউন্ট খুলতে কি কি করতে হবে। এভাবে আপনি খুব সহজেই খুলে নিতে পারবেন সোনালী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট।
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ভাঙ্গার নিয়ম
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আয়কৃত টাকা সবটুকু খরচ না করে ভবিষ্যৎ এর জন্য জমা রাখতে চাই। তবে সে টাকা ঘরে জমা রাখলে খরচ হয়ে যাবে ভেবে কোনো ব্যাংক প্রতিষ্ঠানে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেখে দেয়। এভাবে ব্যাংকে টাকা নির্দিষ্ট সময় মেয়াদে জমা রাখায় হলো ডিপিএস। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জমানো টাকা সুদসহ ফেরত দেওয়া হয়। সোনালী ব্যাংকের নিয়ম ও তাই, মেয়াদ শেষ হলে জমানো টাকা সুদসহ দিয়ে দেওয়া হয়।
তবে সোনালী ব্যাংকে যারা টাকা রাখছেন অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, মেয়াদ শেষে অথবা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ডিপিএস কিভাবে ভাঙতে হয় বা ভাঙা যাবে কি না। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ভাঙার নিয়ম সম্পর্কে।
সোনালী ব্যাংক এ যদি আপনি ডিপিএস জমা দিয়ে থাকেন এবং সেটি যদি আপনি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভাঙতে চান তাহলে আপনি পুরো টাকা সুদসহ পেয়ে যাবেন। এজন্য আপনাকে ব্যাংকে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার ডিপিএস এর স্কিম অনুযায়ী জমা দিতে হবে। তবে ডিপিএস সার্টিফিকেট, পরিচয়পত্র, ঠিকানা প্রমাণ এগুলো আপনার যেকোনো স্কিমের জন্য দিতে হবে।
আবার আপনি কোনো কারনে সোনালী ব্যাংকে নির্দিষ্ট সময়ের আগে যদি ডিপিএস ভাঙতে চান, তাহলে আপনি ভাঙতে পারবেন। তবে জমানো টাকার ওপর যে সুদ প্রদান করা হয় সে সুদ আপনাকে সম্পূর্ন দেওয়া হবে না। এছারাও মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি আপনি ডিপিএস ভেঙে দেন তাহলে কিছু খরচ আপনাকে ব্যাংক বাবদ করতে হবে। কিন্তু আপনার জমানো টাকা সবটুকু উত্তলন করতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি কি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলার সিধান্ত নিচ্ছেন? তবে আপনার সঠিক তথ্য জানা নেই কিভাবে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয়? তাহলে নিচের আলোচনাটুকু পড়ুন এবং জেনে নিন সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সিধান্ত যদি আপনি নিয়ে থাকেন। তাহলে আপনি সঠিক সিধান্ত নিয়েছেন। কারন সোনালী ব্যাংক হলো বাংলাদেশের সবগুলো সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং বিশ^স্ত ও নির্ভরযোগ্য। তাই খুলে রাখতে পারেন এ ব্যাংকে, ব্যাংক একাউন্ট। সোনালী ব্যাংক একাউন্ট যদি আপনি খুলতে চান তাহলে আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। জেনে নিন সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজপত্র আপনার প্রয়োজন হবে।
- আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স এগুলোর যেকোনো একটির ফটোকপি লাগবে।
- একজন নমিনি লাগবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি এবং নমিনির এক কপি ছবি দিতে হবে।
- কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে একাউন্ট খুলতে চাইলে সে প্রতিষ্ঠিানের ট্রেড লাইসেন্স ও টিন একাউন্ট এর ফটোকপি জমা লাগবে।
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হলে উল্লেখিত তথ্যগুলো সংগ্রহ করে সোনালী ব্যাংকের নিকটস্থ কোনো একটি শাখায় চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন, তারা একটি আবেদন ফরম দিবে। সেটি ভালোভাবে পূরন করে ব্যাংকে জমা দিবেন তার সাথে যেসব কাগজপত্র তারা চাইবে সেগুলো দিবেন। এভাবে ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট আপনি খুলতে পারবেন।
তবে বর্তমান আধুনিক যুগে আপনি স্বশরীরে ব্যাংকে উপস্থিত না হয়েও অনলাইনের মাধ্যমে খুলে নিতে পারবেন সোনালী ব্যাংক একাউন্ট। সোনালী ই সেবা অ্যাপস ব্যাবহার করে এটি সম্ভব হবে। যদি অনলাইনে আপনার ব্যাংক একাউন্ট খোলা কমপ্লিট হয়ে যায়, তাহলে এস এম এস করে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে
সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান। তাই অনেক মানুষ এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানে লেনদেন করে থাকে, আবার অনেকেই এ ব্যাংকে লেনদেনের জন্য একাউন্ট খুলতে চাইছে। সোনালী ব্যাংকে যারা একাউন্ট খুলতে চান অনেকেই জানতে আগ্রহী সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে। সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, একাউন্ট খোলার আগে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। তাই জেনে নিন সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে।
সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খুলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো টাকা লাগে না। তবে একাউন্ট খুলার সময় যদি আপনি সেভিংস একাউন্ট খুলতে চান তাহলে সেভিংস একাউন্টে জমা দিতে হবে ৫০০ টাকা এবং কারেন্ট একাউন্টের জন্য জমা দিতে হবে ১০০০ টাকা। এ টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে আমানত হিসেবে জমা থেকে যাবে। সুতরাং সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে আপনার কোনো টাকা লাগবে না। আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
পরিশেষে বলতে চাই, আস্থার সাথে জনগনের পাশে দাড়িয়েছে সোনালী ব্যাংক, তাই আপনি যদি কোনো ব্যাংকে ডিপিএস খোলার সিধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে সোনালী ব্যাংকে খুলতে পারেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সে সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।