আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আলু খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। আলুর শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি পুষ্টিকর খাবারাও। আলু আমরা প্রায় আমাদের খাবার তালিকায় রাখি, তবে জানি কি আলুর সঠিক পুষ্টিগুন সম্পর্কে? যদি আপনারা আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ুন এবং জেনে নিন আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আলু আমাদের স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারি একটি সবজি। তবে এটি উপকারী হলেও সঠিক নিয়মে এটি খেতে হবে, নয়লে শরীরের জন্য সেটা ক্ষতি হতে পারে। তাই আমাদের আলু খাওয়ার আগে অবশ্যই জানতে হবে আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা

বিশ্বজুড়ে আলুর প্রচলন রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের রান্নাঘরে আলু দেখতে পাওয়া যায়। সবজি হিসেবে আলু খুবই সুস্বাদু এবং প্রায় অনেকের পচ্ছন্দের একটি খাবার। বিভিন্ন পদের রান্নার স্বাদকে আরও বাড়িয়ে তোলে আলু। আলু শুধু স্বাদেই সেরা নয়, এর মধ্যে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য উপকারী বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। আলুর মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ রয়েছে। এসব পুষ্টি উপাদান আলুর মধ্যে থাকায় আলু আমাদের জন্য খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। আলু বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে, তবে সিদ্ধ আলু শরীরের জন্য বেশি পুষ্টিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সিদ্ধ আলু খাওয়ার ফলে যে উপকারগুলো আমরা পেয়ে থাকি সেগুলোর সম্পর্কে জেনে নিন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সিদ্ধ আলু খুবই উপকারি একটি সবজি। আলুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি’ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: সিদ্ধ আলুর মধ্য থেকে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। সে কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। যার ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি ঠিক থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

শরীরের প্রদাহ কমে: নিয়মিত সিদ্ধ আলু যদি খাওয়া হয়, তাহলে আমাদের শরীরের প্রদাহ কমে। বাতের ব্যাথাও প্রতিরোধ করতে সিদ্ধ আলু বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে: উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা প্রায় মানুষকে পড়তে দেখা যায়, প্রায় এ সমস্যা নিয়ে মানুষ চিন্তিত। তাই আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে চান এবং নিয়ন্ত্রনে রাখতে চান তাহলে নিয়মিত আলু সিদ্ধ খান।

হাড়ের স্বাস্থ ভালো থাকে:  হাড়ের স্বাস্থ ভালো রাখতে সিদ্ধ আলু খুবই উপকারী একটি সবজি। সিদ্ধ আলু থেকে ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্গ, ম্যাগনেসিয়াম উপাদানগুলো পাওয়া যায়, যা হাড়ের স্বাস্থ ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকে: আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক না থাকলে, শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা জরুরি। নিয়মিত যদি আপনি আলু সেদ্ধ খান তাহলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে। 

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: ক্যান্সার খুবই আতঙ্কিত একটি রোগ। আলুর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক গুন। তাই মারাত্মক এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত আলু সিদ্ধ খাবেন।

হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়: সিদ্ধ আলুর মধ্যে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে যার কারনে এটি খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। 

পেটের সমস্যা দূর হয়: আলু সিদ্ধ পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস, ডায়রিয়া, আমাশয় এর সমস্যায় খুবই কার্যকারী। তাই পেটের সমস্যা হলে পরিমিত আলু সিদ্ধ খাবেন। 

ওজন কমে: অনেকেই মনে করেন আলু খেলে ওজন বাড়ে। তবে অল্প পরিমাণে আলু যদি খান, তাহলে ওজন দ্রুত কমে যায়। আলুর মধ্যে থাকা ফাইবার ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে। তাই অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগলে অল্প পরিমাণে নিয়মিত আলু সিদ্ধ খান। 

মস্তিষ্কের ক্ষমতা  বৃদ্ধি করে: মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত আলু সেদ্ধ খাবেন। এছারাও দীর্ঘক্ষন মস্তিষ্ক খাটিয়ে কাজ করলে, মস্তিষ্কে ক্লান্তিভাব চলে আসে, সে ক্লান্তিভাব দূর হয় আলু সিদ্ধ খেলে।

উপরের স্বাস্থ উপকারিতাগুলো আলু সিদ্ধ খাওয়ার ফলে আপনিও পেয়ে যাবেন। এসব উপকার ছাড়াও শারিরিক বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে আলুকে নিঃসন্দেহে বেছে নিতে পারেন।

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়

আলু জনপ্রিয় সবজিগুলোর মধ্যে একটি। শরীরকে সুস্থ রাখতে আলুর মধ্য থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভিটামিন পাওয়া যায়। স্বাস্থকে ঠিক রাখতে আলুকে খাবার তালিকায় রাখা জরুরি। অবশ্য বাঙালিরা প্রায় আলু খেয়ে থাকেন। মাংসের সাথে, মাছের ঝোলে, ডিমের সাথে, সবজির কারি, বিরিয়ানিতে, ডালের সাথে, এসব দেশি রান্নায় বাঙালিরা আলুকে বাদ দিতে চায় না।  তাই তাদের মনে প্রশ্ন আসে প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়? প্রতিদিন আলু খাওয়া ঠিক কতটা স্বাস্থকর অনেকেই জানতে চান। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়।

আমরা অনেকেই মনে করে থাকি আলু ওজনকে অস্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে দেয়।  তবে পরিমিত আলু সিদ্ধ খেলে ওজন সহজেই কমে যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আলু সিদ্ধ যদি ওজন কমাতে খেতে চান তাহলে ভাতের পরিমাণটা কমিয়ে আলু খাবেন। ওজন নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায় প্রতিদিন আলু খেলে। তবে আলু প্রতিদিন খেতে হলে কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।

আলু আপনি প্রতিদিন খেতে পারবেন, তবে দেখতে হবে আপনি কি পরিমাণে আলু খাচ্ছেন এবং আলু রান্না কিভাবে করে খাচ্ছেন। যেমন আপনি যদি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বানিয়ে প্রতিদিন খান। তাহলে সেটা মোটেও স্বাস্থকর নয়, কারণ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ডুবো তেলে তৈরি করা হয়। তবে আপনি যদি পরিমিত  আলু সিদ্ধ করে প্রতিদিন খান তাহলে সেটা স্বাস্থের জন্য অবশ্যই উপকারী।

আলু খেতে হলে এটাও খেয়াল রাখা জরুরি যে আপনি কি  পদের সাথে আলু রান্না করে খাচ্ছেন। কারণ আলু কতটা পুষ্টিকর তা অনেকটাই আলু কিভাবে রান্না করছেন তার ওপর নির্ভর করে। যেমন প্রতিদিন যদি আপনি উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের সাথে যুক্ত করে আলু রান্না করে খান তাহলে সেটা স্বাস্থের জন্য ক্ষতি হতে পারে। তাই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের সাথে আলু একসাথে রান্না করা থেকে বিরত থাকায় ভালো। তবে সপ্তাহে দুইদিন খেতে পারেন উপকার পাবেন।

উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, আলু প্রতিদিন খেতে পারবেন কোনো শারিরিক ক্ষতি হবে না। তবে শর্ত হলো পরিমিত আলু প্রতিদিন খেতে হবে এবং সঠিক উপায়ে রান্না করে আলু খেতে হবে।

রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা

আলু শুধু খাবারে উপকারী নয়, রুপচর্চায় আলুর ব্যবহার অতুলনীয়। রুপচর্চায় আলুর ব্যবহার অনেকদিন থেকে হয়ে আসছে। আলুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফসফরাস ও জিঙ্ক। আলুর মধ্যে থাকা এ উপাদানগুলো  আমাদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। ত্বকের বিভিন্ন দাগ ছোপ দূর করে, বয়সের ছাপ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জল ও মসৃন বানায় আলুর তৈরি ফেইসপ্যাক। চোখের ডার্ক সার্কেল দূর করতে এবং ত্বকে বলিরেখা পড়তে বাধা দিতে আলু অনেক উপকারী। আপনাদের রূপচর্চায় আলু কিভাবে ব্যবহার করবেন কয়েকটি ফেইস প্যাক সম্পর্কে জেনে নিন। 

  • আলু থেকে রস বের করে, সে রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগিয়ে নিন। এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন, নিয়মিত করলে সুন্দর ত্বক পেয়ে যাবেন। 
  • অর্ধেক আলু নিয়ে তার সাথে একটি স্ট্রবেরি নিয়ে একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর তার সাথে মধু মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট মতো অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট হয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে ত্বকের দাগ ছোপ দূর হবে। 
  • একটি গ্রেডেট আলুর সাথে ১ চা চামচ করে দুধ ও মধু মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করুন। এবার মিশ্রনটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট মতো অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন, ত্বকের বিভিন্ন উপকার পেয়ে যাবেন। 
  • চোখের ডার্ক সার্কেল সমস্যাই ভুগছেন, আলু কেটে চোখের নিচে লাগিয়ে নিন। 
  • শুধু আলুর রস মুখের ত্বকে লাগিয়ে নিন, ব্রনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। 
  • রূপচর্চায় আলুর রসের সাথে  গোলাপজল মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিন। মিশ্রনটির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট মতো অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন। নিয়মিত করলে ত্বকের বিভিন্ন উপকার আপনি পাবেন। 
  • রোদে ঘুরে উজ্জল ত্বক হারিয়ে ফেলছেন তাহলে আলুর রসের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে ফেইস প্যাক বানিয়ে আপনার মুখের ত্বকে লাগিয়ে নিন। ত্বক উজ্জল ও সুন্দর দেখাবে অনেকটায়। 
  • আলুর রসের সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে রূপচর্চায় ব্যবহার করুন। ত্বকের বলিরোখা কমাতে খুবই কার্যকারী এ প্যাকটি।

রূপচর্চায় আলু উপরের নিয়মে ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। তাই রান্নাঘরে থাকা স্বাস্থকর আলু রূপচর্চায় আপনিও ব্যবহার করুন।

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার নিয়ম

সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয়

আলু আমাদের প্রয়োজনীয় একটি সবজি। আমাদের দেহে পুষ্টির ঘাটতি ও শক্তির চাহিদা সহজেই পূরন হয় আলু খেলে। তাই সুস্থজীবন পেতে হলে আলু খাওয়া অপরিহার্য। আলু সুস্বাদু হওয়ায় এবং এর মধ্যে বিভিন্ন উপকারী গুন থাকায় সবাই আলু পচ্ছন্দ করে। তাই যারা ওজন নিয়ে চিন্তিত এবং মোটা হওয়ার ভয় পান তারা অনেকেই দ্বিধাদন্দে থাকেন যে সিদ্ধ আলু খেলে মোটা হয় কি না। তো চলুন নিচের আলোচনা থেকে আপনার সংকোচ দূর করে নিন, জেনে নিন সিদ্ধ আলু খেলে মোটা হয় কি না।

আলুতে ওজন বাড়ায় তবে সেটি যদি পরিমিত এবং সঠিক নিয়মে খাওয়া না হয় তাহলে। তবে আপনি যদি সিদ্ধ করা আলু পরিমিত খান তাহলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে না। অনেকেই আমরা মনে করি যে আলু সেদ্ধ খেলে ওজন বেড়ে যায়।  তাই ওজন বাড়তে শুরু করলেই আলু খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেন।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে ওজন কমাতে  সাদা আলু ও রাঙা আলু কার্যকর। বিশেষজ্ঞদের মতে আলুতে কার্বহাইড্রেট রয়েছে আর কার্বোহাইড্রেট থাকার কারণে শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত ক্যালোরি মুক্ত হয়। আর সিদ্ধ আলু যদি খাওয়া হয়, তাহলে পেট দীর্ঘসময় ভরা থাকে, ফলে অনান্য খাবারের প্রতি চাহিদা কমে আসে অনেকটায়। অল্প আলুতে চর্বির পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে যার কারনে পরিমিত খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। আবার আলুর মধ্যে থাকা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের মধ্যে ওজন বাড়তে দেয় না। তাই পুষ্টিবীদদের মতে পরিমিত সিদ্ধ আলু যদি খাওয়া হয় তাহলে কখনয় মোটা হবেন না।

আলু সেদ্ধতে যাতে ওজন বাড়ার আশঙ্কা না থাকে সেজন্য দৈনিক মাঝারি সাইজের দুইটির বেশি আলু খাবেন না। অতিরিক্ত আলু সিদ্ধ যদি নিয়মিত খান তাহলে দ্রুত ওজন বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। মোটা হওয়ার ভয়ে আলু খাওয়া বাদ দিবেন না। তবে আলু সেদ্ধ খেলে ভাতের পরিমাণ টা একটু কমিয়ে খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রের জন্য উপকারী। সুতরাং প্রতিদিন আলু সিদ্ধ পরিমিত খাবেন, পরিমিত আলু সেদ্ধ ওজন বাড়ায় না বরং ওজনকে কমিয়ে আনে।

আলু খেলে কি ক্ষতি হয়

আলু খেলে কি ক্ষতি হয়

বাঙালিদের রান্নাঘরে আলু ছাড়া যেন চলেই না। আলু শুধু স্বাদেই অতুলনীয় নয়, উপকারীও বটে। শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ন পুষ্টিকর উপাদানগুলো আলুর মধ্য থেকে পাওয়া যায়। তবে আলু উপকারি বলে এটি অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। আবার অতিরিক্ত তেলে ভাজা আলুও নিয়মিত খাওয়া যাবে না। আলু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়। নি¤েœর আলোচনা থেকে জেনে নিন আলু খেলে কি ক্ষত হয়।

গ্যাস হয়: আলু যদি আপনি সঠিক নিয়মে না খান, ডুবানো তেলে যদি নিয়মিত আলু ভেজে খান তাহলে উপকারের থেকে ক্ষতি অনেকটাই বেশি হবে। নিয়মিত ভাজা আলু আপনার গ্যাসের সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে।

উচ্চ রক্তচাপ: আলু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে, তবে নিয়মিত যদি অতিরিক্ত আলু আপনি খেতেই থাকেন তাহলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত আলু খাওয়া ঠিক নয়। 

ডায়রিয়া: আলু পেটের সমস্যা সমাধান করে, তবে পরিমিত আলু না খেলে পেটের সমস্যা বেড়ে যায় এবং ডায়রিয়ার  সমস্যা হতে দেখা যায়। 

মেদ বাড়ে: আলুর মধ্যে ক্যালরি, প্রোটিন ও চর্বি পাওয়া যায়। তাই এটি যদি নিয়মিত অতিরিক্ত খাওয়া যায় তাহলে মেদ বেড়ে যায়। 

ডায়াবেটিস বাড়ে: নিয়মিত যদি অতিরিক্ত আলু খান তাহলে ইনসুলিনের মাত্রা এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। যার কারণে অতিরিক্ত আলু খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আলু অল্প পরিমাণে খাবেন।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায়: যাদে শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাদের অতিরিক্ত আলু খাওয়া বিপজ্জনক। অতিরিক্ত আলু খাওয়ার ফেলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। 

মাথা ব্যাথা হয়: পরিমিত আলু না খেলে মাথা ব্যাথার সমস্যা হতে দেখা যায়। আলুর মধ্যে থাকা  সোলানিন নামক বিষাক্ত যৌগ শরীরের মধ্যে বেশি পরিমাণে প্রবেশ করলে মাথা ব্যাথার সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে।

অতিরিক্ত আলু খেলে উপরের বলা স্বাস্থ অপকারিতা গুলো হতে পারে। তাই আলুর উপকার পেতে হলে সঠিক নিয়মে, সঠিক মাপে এবং সঠিক উপায়ে রান্না করে প্রতিদিন আলু খেতে হবে। সপ্তাহে চার থেকে পাঁচদিন মাঝারি সাইজের দুইটি করে আলু খাবেন। সাবধানতার সাথে আলু খাবেন, চুপসে যাওয়া আলু, গন্ধ হয়ে যাওয়া আলু, গাছ বের হয়ে যাওয়া আলু যদি নরম হয়ে যায় এবং সবুজ আলু খাওয়া ঠিক নয়। 

পরিশেষে বলতে চায়, আলুর যেহেতু উপকারিতা ও অপকারিতা দুটি দিগই রয়েছে সেহেতু এ দুদিক বিবেচনা করে পরিমাণ মতো আলু খাবেন। তাহলে আশা করি আলু থেকে কোনো ক্ষতি আপনার হবে না।

আরো পড়ুন: কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা কলার পুষ্টিগুণ

লেখকের শেষ বক্তব্য

আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
comment url