মাশরুম চাষ পদ্ধতি – মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

মাশরুম খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। এটি পুষ্টিকর হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, তাই এটি চাষে লাভবান হওয়া যায়। তবে জানতে হবে কিভাবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরন করে মাশরুম চাষ করা যায়। যারা মাশরুম চাষের  সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের আাজকের আর্টিকেলটি পড়লেই জেনে যাবেন।

মাশরুম চাষ পদ্ধতি

মাশরুম বাড়িতেই সহজে চাষ করা যায়, সেটা আপনারা জানেন কী? সঠিক পদ্ধতি জেনে আপনিও বাড়িতে সহজেই মাশরুম চাষে সফল হতে পারবেন। তাহলে মাশরুম চাষে সফল হতে আজকের আর্টিকেলে জেনে নিন, মাশরুম চাষ পদ্ধতি এবং মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে।  পাশাপাশি মাশরুম নিয়ে আরও অনেক তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন, আর্টিকেলটি সম্পূর্নভাবে পড়লে।

মাশরুম চাষ পদ্ধতি

মাশরুম ছত্রাকজাতীয় একটি উদ্ভিজ্য, সেটা আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি না। মাশরুম চাষ বানিজ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাশরুম চাষ খরচ বেশি হয় না, তাই এটি চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া সম্ভব। সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক পদ্ধতি ছাড়া মাশরুম চাষে সফল হওয়া যায় না। তাই পরিকল্পনা নিয়ে সঠিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের জন্য উপযোগি। তাই মাশরুম বাংলাদেশে চাষ করা সহজ। মাশরুম ঘরে বসেই চাষ করতে পারবেন। তবে জানতে হবে কিভাবে ঘরে বসে মাশরুম চাষ করা যায়। মাশরুম চাষের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন-

বর্তমানে সারা বিশে^ অনেক জাতের মাশরুমের চাষ হয়ে থাকে। তবে সব মাশরুমের থেকে, যে মাশরুগুলো আমাদের দেশে সহজেই আবহাওয়ার উপযোগি সেগুলো চাষ করতে হবে। আমাদের দেশে অয়েস্টার, ঝিনুক, প্যাডি স্ট্র, মিল্কি জাতীয় মাশরুম চাষ তুলনামূলক ভাবে সহজ। এখানে অয়েস্টার জাতের মাশরুম শীতকালে চাষ করা ভালো এবং বাকিগুলো মার্চের থেকে শুরু করতে হবে। নিচে আমরা অয়েস্টার মাশরুম চাষ সম্পর্কে আলোচান করবো।

অয়েষ্টার মাশরুম চাষের উপকরণ: স্পন বা মাশরুমের বীজ, খড় এবং পলিথীন ব্যাগ। মাশরুমের বীজ, চাষ করার জন্য বীজ পাওয়া যায় এমন দোকানে গেলে পেয়ে যাবেন।

চাষের স্থান: মাশরুম মাটিতে বা খোলা জায়গায় চাষ করা যাবেনা। তাই কোনো আবাদী জমি মাশরুম চাষের জন্য বাছাই করবেন  না। রোদ আছে এমন জায়গা মাশরুম চাষের জন্য উপযোগি নয়,  ছায়াযুক্ত বা অন্ধকারযুক্ত স্থানে মাশরুমের চাষ করতে হবে। তাই ঘরের উপরে বাঁশের চালা দিতে হবে। তবে ঘরের দেওয়াল বাঁশের অথবা মাটির করতে পারেন। তবে ঘর তৈরিতে খেয়াল রাখবেন যাতে ঘরের ভেতর আলো ঢুকতে না পারে।

চাষ পদ্ধতি: অয়েস্টার মাশরুম চাষে প্রথমেই খড় কেটে জীবানুমুক্ত করতে হবে। এজন্য খড়গুলো  আধ থেকে এক ইঞ্চি করে কেটে ২০ মিনিট মতো গরম ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে নিন। এরপর খড়গুলো থেকে পানি ঝড়িয়ে নিবেন, এমন ভাবে পানি ঝড়াবেন যাতে হাত দিয়ে খড় চাপলে পানি বের হয়ে না আসে, তবে হাতে একটু ভেজা ভাব থাকবে। এরপর একটি পলিব্যাগ দুই ইঞ্চি মতো পুরো করে খড় বিছিয়ে তার উপরে বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে। বীজের ওপর আবার খড় দিতে হবে, খড়ের ওপর আবার বীজ দিয়ে পর পর সাত থেকে আটটি স্তরে ব্যাগে বীজ দিতে পারবেন। এবার পলিব্যাগের মুখ শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক - হাঁস পালন প্রশিক্ষন

৩ থেকে ৪ দিন পর অল্প পরিমাণে সাদা ধরনের আস্তরণ প্যাকেটে বীজের জায়গায় দেখতে পাবেন, যেটাকে মাইসেলিয়াম বলা হয়। এরপর বেশকিছুদিন গেলে পুরো ব্যাগে মাইসেলিয়ামে ভর্তি হয়ে যাবে। মাইসেলিয়ামে ভর্তি হয়ে গেলে তুলো সরিয়ে ব্যাগে আরও কয়েকটি ছিদ্র করে ব্যাগটি অল্প আলোতে রাখতে হবে, যে আলো বই পড়ার উপযোগি।  এরপর প্যাকেটের উপর বাতাসের আদ্রতা বুঝে মাঝে মাঝে পানি স্প্রে করতে হবে। কয়েকদিনের মধ্যে মাশরুমের পিনহেড ছিদ্র দিয়ে উঁকি দেবে। মাশরুমের প্যাকেটগুলো সবসময় ঠান্ডা রাখতে পানি স্প্রে করতে হবে, কারণ ঠান্ডা আবহাওয়ায় মাশরুম ভালো ফলন দেয়। সঠিক পরিচর্যা নিলে ২০ দিনের মধ্যেই ফলন হতে শুরু করে। মাশরুম চাষের একটি ব্যাগ থেকে তিনবার ফলন পাওয়া যায়।

মাশরুম চাষে উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করবেন। মাশরুম চাষ শরু করার আগে ভালোভাবে পরিকল্পনা করে, সঠিক পদ্ধতির ধারণা সম্পূর্ন নিয়ে তারপর মাশরুম চাষ করবেন। তাহলে ভালো ফলন অবশ্যই পাবেন।

মাশরুম বীজের দাম

মাশরুম খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার তার সাথে লাভজনক একটি ব্যবসার মাধ্যম। মাশরুম চাষ করা খুবই সহজ এবং আর্থিক দৃষ্টিকোন থেকে খুব লাভজনক। কম খরচ দিয়ে প্রথমে শুরু করে, হয়ে উঠা যাবে সফল উদ্যোক্তা। মাশরুম চাষ অনেকেই করতে চাই,মাশরুম চাষের জন্য মাশরুমের বীজ সংগ্রহ করতে হবে। কারণ বীজ থেকেই মাশরুমের চারা বের হয়। মাশরুমের বীজ বাড়িতে তৈরি করতে পারেন অথবা বাজার থেকে কিনতে পারেন। মাশরুম যারা চাষ করতে চান এবং মাশরুমের যারা বীজ কিনতে চান, তাদের মাশরুমের বীজের দাম সম্পর্কে ধারণা নেওয়া ভালো। তাহলে বীজ কিনা আপনার সহজ হবে। বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন মাশরুম বীজের দাম কত।

মাশরুম চাষে প্রথমেই আপনাকে বীজ ক্রয় করতে হবে, বীজ ছাড়া মাশরুম চাষ করা যায় না। আর বীচ সংগ্রহকরণের সময় অবশ্যই খেয়াল  রাখবেন বীজ যাতে ভালো মানের হয়। বাজারে বিভিন্ন জাতের বীজ রয়েছে, বীজের জাতভেদে বীজের দাম কম বেশি হতে পারে। এলাকা ও চাহিদা অনুযায়ী বীজের দাম কমবেশি হতে দেখা যায়। আবার অনেক অসাধু  ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা ক্রেতার কাছে বেশি দামে বীজ বিক্রয় করে থাকে। এসবের কারনে মাশরুম বীজের দাম কম বেশি হতে পারে। তাই মাশরুমের একেবারেই সঠিক দাম বলতে পারছিনা। তবে দামের একটি ধারণা আপনাদের দিতে পারি, যা জেনে আপনাদের উপকার হবে।

আগের তুলনায় বর্তমান সময়ে মাশরুম বীজের দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে মাশরুম বীজের বাজার হলো প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। তবে এ দামের থেকে কিছুটা কম বেশি হতে পারে। এ দাম বিবেচনা করেও মাশরুমের বীজ ক্রয় করবেন। এ দামের থেকে মাশরুম বীজের দাম খুব একটিা কম বা বেশি হবে না।

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

মাশরুমের উপকারিতা

মাশরুম খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার, যা খেলে আমাদের দেহে বিভিন্ন উপকার পায়। বিভিন্ন জটিল রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধকগুন মাশরুমের মধ্যে রয়েছে। মাশরুমের মধ্যে প্রোটিন, শর্করা, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, লৌহ, ভিটামিন সি’, ডি’, বি৬সহ আরও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থের জন্য উপকারি। মাশরুম বিভিন্নভাবে খেতে পারেন, সাধরনত রান্না করে, নুডুলস বানিয়ে, স্যুপ বানিয়ে, সালাড বানিয়ে, মাশরুমের ফ্রাই বানিয়ে খাওয়া যায়। এছারাও বিভিন্ন তরাকারির স্বাদ বাড়াতে মাশরুম ব্যবহার করা যায়। মাশরুম আপনি যেভাবেই খান না কেন এর উপকারিতা পাওয়া যায়। মাশরুমের মধ্যে উপকারি গুনগুলো কি সেগুলোর সাথে আমরা এখন পরিচিত হবো। চলুন জেনে নিই মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ-  কাঁঠাল পাতার উপকারিতা - কাঁঠাল পাতার বৈশিষ্ট্য

ওজন নিয়ন্ত্রন: যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সমস্যই আছেন তারা খাদ্যতালিকায় মাশরুম রাখবেন। মাশরুম আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে, ওজন নিয়ন্ত্রনে আনে।

ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: মানবদেহে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। আর সে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা সহজেই কমিয়ে আনতে পারে। তাই নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ক্যান্সার প্রতিরোধক: ক্যানসার মরনব্যাধি একটি রোগ, এ রোগ প্রতিরোধ করা যায় নিয়মিত খাদ্যতালিকায় মাশরুম রাখলে।

এইডস: মাশরুম এইডস প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

পেটের সমস্যা: যারা পেটের সমস্যা নিয়ে ভুগছেন, নিয়মিত মাশরুম খাবেন। মাশরুম খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়।

কিডনির সমস্যা: কিডনির বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে মাশরুম সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছারাও যারা নিয়মিত মাশরুম খায়, তাদের কিডনি সুস্থ থাকে।

গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধক: মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদান একজন গর্ভবতী মা ও শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে। নিয়মিত গর্ভবতী মায়েরা পর্যাপ্ত পরিমানে মাশরুম খেলে মা ও অনাগত শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

চর্মরোগ প্রতিরোধ: যারা চর্মরোগে আক্রান্ত, তারা নিয়মিত মাশরুম খাবেন। মাশরুমে থাকা ভিটামিন ও খনিজ লবন দেহের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ প্রতিরোধ করে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন: মাশরুমে থাকা ইরিটাডেনিন, কিটিন ও ভিটামিন বি, সি, ডি মানবদেহে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে। নিয়মিত মাশরুম খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে হার্টের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকে।

পাকা চুলের সমস্যা:  মাশরুম অল্প বয়সে চুল পাকা সমস্যার প্রতিরোধ করে থাকে।

দৃষ্টিশক্তি রক্ষায়: মাশরুম নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে নিয়তি মাশরুম খাবেন।

জন্ডিস প্রতিরোধক: মাশরুমে থাকা ফলিক এসিড, লৌহ এবং এমাইনো এসিড জন্ডিস প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

মাশরুম খাওয়া স্বাস্থের জন্য উপকারি হওয়ায়, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাশরুম রাখবেন।  তবে মাশরুম অবশ্যই সতর্কতার সাথে খেতে হবে। কারণ অতিরিক্ত মাশরুম খাওয়ার ফলে বিভিন্ন শারিরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ মাশরুম খেতে পারবেন। তাই পরিমাণমতো মাশরুম দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখবেন। আর মাশরুম কাঁচা অথবা অল্প সেদ্ধ করে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে হজেম ও অ্যালার্জিজনিত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই মাশরুমের উপকার পেতে সঠিক নিয়মে, পর্যাপ্ত পরিমাণে দৈনিক মাশরুম খাবেন।

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

মাশরুম চাষ বাড়িতে সহজেই করা যাবে। কিভাবে মাশরুম চাষ করবেন পূর্বে আলোচনা করেছি। এখন আলোচনা করবো কিভাবে বাড়িতে মাশরুমের বীজ তৈরি করবেন। মাশরুমের বীজ দিয়ে মাশরুমের চাষ করা হয়। বাজারে মাশরুমের  বীজ কিনতে পাওয়া যায়, আবার বাড়িতেও এ বীজ তৈরি করতে পারবেন। অনেকের মনে হয় বাড়িতে মাশরুম বীজ তৈরি করা কঠিন একটি প্রক্রিয়া। তবে মাশরুমের বীজ কীভাবে তৈরি করবেন এর সঠিক প্রক্রিয়া যদি আপনার জানা থাকে, তাহলে বাড়িতে আপনিও সহজেই মাশরুমের বীজ তৈরি করতে পারবেন। চলুন বিস্তারিতভাবে জানা যাক মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে।

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি: মাশরুমের বীজ বা স্পন তৈরি করতে যে উপকরণগুলো আপনাকে নিতে হবে সেগুলো হলো- কাঠের গুড়া, গমের ভুষি, ধানের তুষ বা কাটা খড়, পাথরের চূর্ন এবং পানি। এ সবগুলো উপাদানের সাহায্য নিয়ে বাড়িতে আপনি সহজেই মাশরুমের বীজ বা স্পন তৈরি করতে পারবেন। পরিমানমতো সবগুলো উপদান আপনাকের মাশরুম বীজ তৈরির জন্য নিতে হবে। সবগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে মাশরুমের বীজ তৈরি করা হয়। সেক্ষেত্রে উদাহরণসরূপ ১০০ টি স্পন প্যাকেট তৈরি করার জন্য কতটুকু উপাদান নিতে হবে জেনে নিন। ১০০ টি স্পন প্যাকেট তৈরি করতে-

  • কাঠের গুড়া – ১৬ কেজি
  • গমের ভুশি – ৮ কেজি
  • ধানের তুষ – ১ কেজি
  • পাথরের চূর্ণ – ১০০ গ্রাম
আরো পড়ুনঃ-  টবে গোলাপ ফুলের চাষ পদ্ধতি - গোলাপ ফুল কখন ফোটে

এই সবগুলো উপাদানের সাথে পরিমাণ মতো পানি মিশাতে হবে। এখানে ২৫ কেজি উপাদানের সাথে ২৫ লিটার পানি যোগ করতে হবে। আর কাঠের গুড়া অবশ্যই চালনি দিয়ে চেলে ব্যবহার করবেন, চালার পর সবগুলো উপাদান এর সাথে যোগ করবেন। এবার সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে পর্যাপ্ত পানি তার সাথে মিশিয়ে  হাত দিয়ে নাড়া চাড়া করে নিতে হবে। পানি অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমানে দিতে হবে। এরপর এ মিশ্রনগুলো ভরার জন্য প্যাকেট নিতে হবে। ৫০০ গ্রাম করে প্যাকেট করতে চাইলে, প্যাকেটের সাইজ ৭ বাই ১০ নিতে পারেন। এবার মিশ্রনগুলো ৫০০ গ্রাম করে প্যাকেটে ভড়ে প্যাকেটের দুই কোনো ভাঁজ করে সমতল করে নিতে হবে। এরপর প্যাকেট টি এদিকে সেদিক করে ভালোভাবে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে। প্যাকেট তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে, প্যাকেটগুলোকে ড্রামের সাহায্য নিয়ে জীবানুমুক্ত করতে হবে। ড্রামের নিচে আগুনের তাপ দিয়ে জীবানু মুক্ত করা হয়। তাপ দেওয়া হয়ে গেলে বীজগুলো ঠান্ডা হওয়ার পর আবার সেগুলোকে জীবানুমুক্ত করা হয়। বীজ জীবানুমুক্ত করার প্রক্রিয়া মাশরুম চাষ প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে জেনে নেওয়া ভালো হবে। সেখানে তারা সরাসরি দেখিয়ে দেবে কিভাবে  বীজ জীবানুমুক্ত করা হয়। এভাবে বাড়িতে বীজ তৈরি করবেন।

মাশরুম চাষের ট্রেনিং কোথায় হয়

মাশরুম চাষে সফল হতে, ভালোভাবে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষন নিতে হবে। মাশরুম চাষের সঠিক প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য সরকার এর উদ্যোক নিয়েছেন। মাশরুম চাষ করে যাতে সবাই সফল হতে পারে, সেদিক বিবেচনা করে সরকার এ উদ্যোকটি নিয়েছেন। বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম চাষ’ নামে ঢাকার সাভারে একটি প্রকল্প চালু করেছেন।

এছারাও মাশরুম চাষের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো সুষ্ঠভাবে মাশরুম চাষের ট্রেনিং দিয়ে থাকেন। সে ট্রেনিং সেন্টার গুলোর মধ্যে, হিউম্যান ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ যেটি ঢাকার মৌচাকে মুকুল টাউরে রয়েছে এবং আরেকটি ট্রেনিং সেন্টার হলে-শেফা মাশরুম’ যেটি সাভার বাসস্ট্যান্ডে পুরাতন কাস্টমস অফিসের পাশে রয়েছে। এ ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে অধিক সময় ধরে হাতে কলমে মাশরুম চাষের সুবিধা, প্রশিক্ষন, সংরক্ষন, প্রক্রিয়া জাতকরণ এবং বিপনন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন তথ্যগুলো আলোচনা করে থাকে।

মাশরুম  চাষে সফল হতে ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষা নেওয়ায় বেশি উত্তম। এ সেন্টারগুলো থেকে, শিক্ষা নিয়ে সফলের একটি নিশ্চয়তা পাওয়া যায়, যদি আপনি সে অনুযায়ী পরিশ্রম করতে পারেন।  মাশুরুম চাষের মধ্য দিয়ে হাজারো নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তাই বেকার না থেকে মাশরুম চাষের উদ্যোগ নিন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

মাশরুম চাষ পদ্ধতি – মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি মাশরুম চাষ পদ্ধতি – মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment