বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় – বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার সিরাপ

সাধারণত দাঁতে গর্ত হলে আমরা সেটাকে দাঁতে পোকা বলে থাকি। ছোট কিংবা বড় সবার ক্ষেত্রে এ সমস্যা হতে দেখা যায়। বাচ্চাদের এ সমস্যা কি করবেন অনেক মায়েদের অজানা। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে জেনে যাবেন, বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে কি করবেন।

বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয়

দাঁতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামনের কারণে দাঁতে পোকা বা দাঁতের ক্ষয় হয়ে থাকে। বাচ্চাদের এ সমস্যা নিয়ে অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে চিন্তিত হবেন না এর প্রতিকার রয়েছে। এছারাও চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক হওয়ায় এ সমস্যা থেকে সহজেই বের হওয়া যায়। বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে কি করবেন, পোকা দাঁতের  ব্যাথা কিভাবে কমাবেন, ব্যাথায় কি সিরাপ খাওয়াবেন, দাঁতের গর্ত, মাড়ি ফুলে যায় ভেবে পাচ্ছেন না কি করবেন। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন আর এ সকল বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন। কারণ আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় এবং বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার সিরাপ সম্পর্কে।

বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয়

আমরা গ্রাম্য ভাষায় দাঁতে পোকা বলে থাকলেও বিশেষজ্ঞদের মতে এটা হলো ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁতের ক্ষয়। দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দাঁতে উপস্থিত এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া এর জন্য দায়ী। বাচ্চাদের দাঁতে পোকা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। বাচ্চারা মিষ্টি খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, চকলেট, ক্যান্ডি এ ধরণের খাবার প্রায় খেয়ে থাকে আর এ খাবারগুলো বিশেষ করে বাচ্চাদের দাঁতে পোকা যেটা আমরা বলছি সেটার জন্য দায়ী। এসব খাবার খাওয়ার ফলে দাঁতে এক ধরণের এসিড তৈরি হয় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামন হয়, যার ফলে দাঁতে পোক হয়ে থাকে। দাঁতের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে দাঁতে জমে থাকা খাবারগুলোই দাঁতের ক্ষয়ে অধিক ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাচ্চাদের দাঁতে পোকা নিয়ে অভিভাবকের চিন্তার শেষ থাকে না। বাচ্চারা ব্যাথায় ছটপট করে, কিছু খেতে গেলে ব্যাথা আরও বেড়ে যায়। আপনার বাচ্চারও কি দাঁতে পোকা?  কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। জেনে নিন বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় কি।

  • বাচ্চাদের দাঁত ক্ষয় হচ্ছে, যে সময় বুঝতে পারবেন সে সময় দেরি না করে বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। কারণ দাঁতের ক্ষয় যদি অল্প হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বাচ্চার দাঁত ফিরে পাবেন, আর দেরি হয়ে গেলে কিছু করার থাকে না।
  • আপনার বাচ্চার যদি দুধ দাঁতে পোকা বা ক্ষয় হয়ে থাকে তাহলে সে দাঁতগুলো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে উঠিয়ে নিতে হবে। আর যদি স্থায়ী দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে তাহলে সেটা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিলিং করে নিতে হবে।
  • আপনার বাচ্চার দাঁত ক্ষয় হতে শুরু করলে বাচ্চার দাঁতের সঠিক যত্ন নিন। কারণ একটি দাঁতে ক্ষয় হতে শুরু করলে, অনান্য দাঁতও ক্ষয় হতে শুরু করে। অতিরিক্ত মিষ্টি, ক্যান্ডি অথবা দাঁতের গায়ে যে খাবারগুলো লেগে থেকে যায় সে খাবারগুলো শিশুদের অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করে দিন।
  • বাচ্চাদের দাঁতে পোঁকা রোধ করতে বাচ্চার যখন প্রথম দাঁত বের হয়, তখন থেকেই বাচ্চার দাঁতের যত্ন নিতে শুরু করতে হয়। বাচ্চা ছোট অবস্থাতে দাঁত বের হলে তখন ব্রাশ করা সম্ভব হয় না। তাই পাতলা সুতি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বাচ্চার দাঁতে লেগে থাকা দুধ মুছে দিতে হবে।
  • বাচ্চা বড় হলে দাঁত ক্ষয় প্রতিরোধে, বাচ্চার বয়স অনুযায়ী সঠিক ব্রাশ ও টুথপেস্ট দিয়ে নিয়মিত দাঁতে ব্রাশ করাতে হবে।
আরো পড়ুনঃ-  বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার টিপস - বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার তেল

বাচ্চার দাঁতে ক্ষয় হলে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব। তাই আপনার বাচ্চার দাঁতে ক্ষয় হলে, যখন বুঝবেন বাচ্চার দাঁত কালো হয়ে যাচ্ছে, শিরশির করছে এবং ব্যাথা হচ্ছে, বাচ্চার খেতে কষ্ট হচ্ছে এমন অবস্থায় দ্রুত বাচ্চাকে ভালো ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাবেন।

পোঁকা দাঁতের ব্যাথা কমানোর উপায়

দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু করলেই, দাঁতে ব্যাথা হতে শুরু করে। দাঁতের ব্যাথা খুবই যন্ত্রনাদায়ক এবং অস্বস্তিকর। দাঁতে পোকা বা দাঁত ক্ষয়ের জন্য বিশেষ করে আমরা নিজেরাই দায়ী। বরাবরই আমরা দাঁতের যত্নে উদাসীন। দাঁতের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারনেও দাঁতের ক্ষয় বা দাঁতে পোকা হয়ে থাকে। দাঁতে পোঁকা এ অবস্থায় কিছু খেতে গেলেই দাঁতে খাবারের কণা ঢুকে অসহ্য ব্যাথা, ব্যাথায় কি করবো বুঝে উঠতে পারি না। খাওয়া, বিশ্রাম, ঘুম থেকে শুরু করে চলাফেরা সবকিছুতেই অস্থির অনুভব করি। কয়েকটি ঘরোয়া উপায় আছে, যেগুলো করলে ব্যাথা কমে যাবে। দাঁত ব্যাথায় ওষুধ না খেয়ে সে উপায়গুলো ব্যবহার করতে পারেন। তো জেনে নিন পোঁকা দাঁতের ব্যাথা কমানেরা উপায় সম্পর্কে।

  • পোঁকা দাঁতে ব্যাথা হতে শুরু করলে, গরম জলের সাথে এক চা চামচ নুন মিশিয়ে, মিশ্রনটি মুখের মধ্যে দিয়ে কুলকুচি করুন। এভাবে কয়েকবার কুলকুচি করুন ব্যাথা অনেকটাই কমবে।
  • দাঁতের ব্যাথা কমাতে রসুন খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। রসুন ব্লেন্ড করে তার সাথে লবঙ্গ গুড়ো এবং লবন মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রনটি আপনার ব্যাথাযুক্ত দাঁতে লাগিয়ে নিন, ব্যাথা থেকে উপশম পাবেন।
  • পুদিনা পাতার রস দাঁত ব্যাথায় কার্যকারী একটি উপাদান। তাই দাঁত ব্যাথার এ পাতার রস ব্যবহার করবেন, ব্যাথা থেকে অনেকটাই আরাম পাবেন।
  • দাঁতে ব্যাথা হলে কয়েক টুকরো পেঁয়াজ নিয়ে দাঁতে চেপে ধরে রাখুন, ব্যাথা থেকে নিরাময় পাবেন।
  • গোলমরিচ গুড়োর সাথে লবন এবং তার সাথে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর ব্যাথাযুক্ত দাঁতে এ পেস্ট লাগিয়ে রাখুন, ব্যাথা অনেকটাই কমে যাবে।
  • দাঁতে ব্যাথা হলে কয়েকটি পেয়ারার পাতা মুখে নিয়ে চিবুতে থাকুন, ব্যাথা কমে যাবে।
  • দাঁতের অসহ্য ব্যাথায় আপনার কাছে থাকা আলু কেটে দাঁতে লাগান, ব্যাথা থেকে উপশম পাবেন।
  • আপনার পোঁকা দাঁতে ব্যাথা শুরু হলে সরিষার তেলের সাথে হলুদ ও লবন ভালোভাবে মিশিয়ে ব্যাথাযুক্ত দাঁতে লাগান। যন্ত্রনাদায়ক ব্যাথা থেকে অনেকটাই স্বস্তি পাবেন।
  • লবঙ্গ ও গোলমরিচ একসাথে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন, এরপর ব্যাথারস্থানে লাগিয়ে দিন। ব্যাথা থেকে আপনাকে স্বস্তি এনে দেবে।
  • দাঁতের ব্যাথায় অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। যদি আপনার  দাঁতে ব্যাথা হয়ে থাকে তাহলে অ্যালোভেরা জেল ব্যাথাযুক্ত দাঁতে লাগিয়ে রাখুন, ব্যাথা অনেকটায় কমবে।

পোঁকা দাঁতে ব্যাথা হলে উপরের বলা ঘরোয়া উপায়গুলো করে দেখবেন, যন্ত্রনাদায়ক ব্যাথা থেকে অনেকটাই স্বস্তি পাবেন। অনেক সময় ঘরোয়া উপায়গুলোতেও ব্যাথা সারানো সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এছারাও দাঁতে ব্যাথা হতে শুরু করলে বিভিন্ন ঠান্ডা জাতীয় খাবার ও পানীয়, চিনিযুক্ত, অম্লযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলবেন। এসব খাবার দাঁতের ব্যাথাকে আরও বেশি পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়।

বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার সিরাপ

বাচ্চাদের দাঁতে গর্ত হলে করণীয়

বাচ্চাদের বয়স ৬ মাস হলে সাধারণত তাদের দুধের দাঁত উঠতে শুরু করে। এরপর ৬ বছর বয়সের পর থেকে সে দাঁতগুলো উঠে স্থায়ী দাঁত বের হয়। তবে বাচ্চাদের দাঁতের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে ৬ বছরের আগেই বাচ্চাদের দাঁত নষ্ট হতে শুরু করে, যার ফলে সেগুলো ঝড়ে পড়ে যায়। দাঁতের গর্ত কিন্তু সহজেই হয় না, তাই দাঁতকে গর্ত হওয়া থেকে আমরা বাঁচাতে পারি। দাঁতে খাদ্য কণা অনেকদিন ধরে জমে থেকে থেকে প্রথমে দাঁতের সংক্রামন শুরু হয়। এরপর প্রাথমিক অবস্থাতে দাঁত ছোট কালোর মতো দেখতে পাওয়া যায়। তথন দাঁত শিরশির অনুভূত হয় এরপর দাঁতে গর্ত হতে শুরু করে। বাচ্চাদের দাঁতে গর্ত হলে কি করবেন জেনে নিন-

আরো পড়ুনঃ-  শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় - আপনি কি ফোনে আসক্ত?

বাচ্চাদের দাঁতে গর্ত যদি হয়ে যায় এবং যখন দেখলেন দাঁতে গর্ত হয়ে গেছে। তাহলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব আপনার বাচ্চাকে ভালো কোনো ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাবেন। প্রথমে কিন্তু গর্ত ছোট থাকে, পরবর্তীতে সে গর্ত বড় হয়ে যায়। তবে প্রাথমিক অবস্থাতে যখন গর্ত ছোট থাকে, তখন চিকিৎসা নেওয়া সুবিধা হয় এবং বাচ্চারা কষ্ট কম পায়। প্রাথমিক অবস্থাতে যদি আপনার বাচ্চার দাঁতে ছোট গর্ত থাকে তাহলে সে গর্তটা ফিলিং করে দেয়। গর্ত যদি বড় হয়ে যায় এবং আপনার বাচ্চার দাঁত উঠার বয়স না হয় সেক্ষেত্রে দাঁতের রুট ক্যানেল করে, দাঁতকে স্থায়ী রাখা হয়।

দাঁতে গর্ত বা ক্যাভিটি জটিল একটি সমস্যা। অনেক সময় দেখা যায় একটি দাঁতে ক্যাভিটি হয়েছে, আবার পাশের দাঁতেও হতে শুরু করে, তখন দাঁতের সমস্যাটা জটিল হয়ে যায়। তাই দাঁত থাকতেই দাঁতের সঠিক যত্ন নিতে হবে। বাচ্চার দুধ দাঁত যখন বের হয় তখন থেকে বাচ্চাদের দাঁতের সঠিক যত্ন নেওয়া শুরু করে দিতে হয়। বাচ্চা বড় হয়ে গেলে সঠিক ব্রাশ ও টুথপেস্ট দিয়ে দুই বার ভালোভাবে বাচ্চার দাঁত পরিষ্কার করে দিতে হবে। খাওয়ার পর কুলকুচি করাতে হবে এবং দাঁতের ফাঁকে কোনো খাবার জমে থাকলে সেগুলো বের করে দিতে হবে।

আপনার বাচ্চার বয়স যদি বেশি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে বাচ্চকে ভিটামিন ডি আছে এমন খাবার বাচ্চাকে দিতে হবে। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। আর এমন খাবার অতিরিক্ত দেওয়া যাবেনা যে খাবারগুলো খেলে বাচ্চাদের ক্যাভিটির সমস্যা হতে পারে। বাচ্চাদের দাঁতের সঠিক যত্ন শুরু থেকে নিলে, বাচ্চাদের দাঁত সুরক্ষিত থাকে। তাই শুরু থেকেই বাচ্চার দাঁতের  যত্ন নিন।

বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ি ফোলা

বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া পরিচিত একটি সমস্যার নাম। বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ির প্রদাহজনিত একটি সমস্যা হলো দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া। মাড়ির সমস্যা দেখা দিলে মাড়ি দিয়ে রক্ত ঝড়ে, মাড়ি লাল হয়ে যায়, পুঁজ বের হয় এবং মাড়ি ফুলে গিয়ে ব্যাথা করে। মাড়ির সমস্যা হলে বাচ্চারা কিছু খেতে পারেনা, দাঁতে ব্যাথা হয়, গাল ফুলে যায়। অনেক বাচ্চার দেখা যায় মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণে শরীরে জ¦র চলে আসে। সাধারণত দাঁতে ক্যাভিটি থাকার কারণে বাচ্চাদের মাড়ি ফুলতে দেখা যায়। ভিটামিন সি এর অভাব, পুষ্টির ঘাটতি, দাঁত আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা দাঁতের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে মাড়ি ফোলা হয়ে থাকে।

বাচ্চাদের দাঁতে অনেক সময় শক্ত টুথব্রাশ ব্যাবহার করার ফলে কিন্তু দাঁতের মাড়ি ফুলতে দেখা যায়। খাবারের পর খাদ্যকণা যাতে জমে না থাকে এজন্য মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিষয়ের কারণে বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ি ফুলতে দেখা যায়। বাচ্চার দাঁতের মাড়ি ফুলে গেছে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তাহলে নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ি ফোলা দূর করতে কি করবেন।

আরো পড়ুনঃ-  বাচ্চাদের বিছানায় প্রস্রাব সমস্যার সমাধান

বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ি ফোলা রোধ করতে লবন পানি খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। লবনে সোডিয়াম থাকে আর সে সোডিয়াম দাঁতের মাড়ি ফোলাসহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে। সেক্ষেত্রে কুসুম গরম পানির সাথে লবন ফেলে দিয়ে দিনে কয়েকবার আপনার বাচ্চাকে কুলকুচি করাবেন। এটি করার ফলে মুখে থাকা জীবানুগুলো ধ্বংস হয়ে যায় এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা কমাতে সাহায্য করে। নিমপাতা ও পেয়ারা পাতাকে সিদ্ধ করে আপনার বাচ্চাকে কুলকুচি করবেন,  মাড়ির ফোলাভাব ও মাড়ির প্রদাহ অনেকটাই  কমে আসে।

ঘরোয়া উপায়গুলোর মাধ্যমে বাচ্চাদের দাঁতের মাড়ির  ফোলাভাব দূর করতে না পারলে। আপনার বাচ্চাকে ভালো ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাবেন। অনেক সময় দাঁতে পাথর জমে থাকার কারণেও দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, তাই আপনার বাচ্চাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে সে পাথরগুলো তুলে ফেলতে হবে।

বাচ্চাদের দাঁতে ব্যাথার সিরাপ

বাচ্চারা প্রায় দাঁত ব্যাথায় কষ্ট পায়। বাচ্চাদের সঠিক খাবার না খাওয়ানো এবং দাঁতের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারনে বাচ্চাদের দাঁতে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়।  প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষেরা দাঁত ব্যাথায় যতটুকু ভুগে, বাচ্চাদের জন্য সে ব্যাথা খুবই অসহ্যনীয়। বাচ্চারা দাঁতের তীব্র ব্যাথা নিয়ে ঠিক করে খেতে পারে না, ঘুমাতে সমস্যা হয় এবং বাচ্চারা খুবই যন্ত্রনাদায়ক ব্যাথায় ভুগতে থাকে, কান্না করে। দাঁতের ব্যাথা আসলেই সহ্য করার মতো না। এমন অবস্থায় মায়েরা ঘরোয়া উপায়গুলো করেও বাচ্চার দাঁতে ব্যাথা কমাতে পারছে না। তখন মায়েরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাচ্চার দাঁত ব্যাথার ওষুধ খুঁজতে থাকে।

তবে এভাবে বাচ্চাদের জন্য ওষুধ অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার বিভিন্ন কারণ রয়েছে, আর সেটার সঠিক কারন একমাত্র ডাক্তাররায় খুঁজে বের করতে পারে। দাঁতের ব্যাথার বিভিন্ন কারণ থাকায় দাঁতের ব্যাথার ওষুধও আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এছারাও   বাচ্চাদের বয়স ও ওজনের ওপর নির্ভর করে অনেক ওষুধ নির্ধারিত হয় এবং এসবের ওপর বিবেচনা করে ওষুধের পরিমাপ দেওয়া হয়ে। তাই বাচ্চাদের দাঁঁত ব্যাথার সিরাপ ভালো একটি ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে নিবেন। পাশাপাশি এ সময় আপনার বাচ্চাকে খুবই গরম অথবা ঠান্ডা ও মিষ্টিজাতীয় খাবার দেওয়া যাবে না।

পরিশেষে বলতে চায়, বাচ্চাদের দাঁত থাকতেই দাঁতের সঠিক যত্ন নিতে হবে। দাঁত ক্ষয় প্রতিরোধে বাচ্চাকে পুষ্টিকর ও ভিটামিন খাবার দিতে হবে, দিনে দুই বার সঠিক ব্রাশ দিয়ে ও সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করতে হবে, প্রতিবার খাবারের পর বাচ্চার মুখ ও দাঁতের মধ্যে জমে থাকা খাবারের কণাগুলো ডেন্টাল ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। বাচ্চার দাঁত বের হওয়া থেকেই দাঁতের সঠিক যত্ন নিন এবং আপনার বাচ্চার দাঁতকে সুরক্ষিত রাখুন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় – বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার সিরাপ সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় – বাচ্চাদের দাঁত ব্যাথার সিরাপ সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment