বাংলাদেশের ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের পচ্ছন্দের তালিকায় কক্সবাজার রয়েছে। কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ গুলো দেখার জন্য প্রতিবছর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের কেন এতটা পচ্ছন্দের জায়গা কক্সবাজার, কিসের জন্য কক্সবাজার বিখ্যাত আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো। কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ এবং কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত এসব বিষয় বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়বেন।
বাংলাদেশের দক্ষিন পূবাঞ্চলে কক্সবাজারের অবস্থান। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে রয়েছে, এছারাও এখানে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। প্রতিবছরই লাখো পর্যটক এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য ভিড় জমায়। আপনিও কি কক্সবাজার ভ্রমন করতে চান? জানতে চান কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত এবং কি কি দর্শনীয় স্থান সেখানে আছে? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ুন এবং কক্সবাজার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত
বাংলাদেশে মোট ৬৪ টি জেলা রয়েছে যার মধ্যে কক্সবাজার অন্যতম একটি জেলা। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগে কক্সবাজার জেলা অবস্থিত। কক্সবাজার জেলার মোট আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার। এ জেলার মধ্যে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেগুলো সবগুলোই সুন্দর। এছারাও এ জেলার মধ্যে বিখ্যাত খাবার, বিখ্যাত ব্যক্তি রয়েছে। এসবের কারনে বর্তমানে কক্সবাজার বিখ্যাত একটি জেলা। কক্সবাজারের সবগুলো দর্শনীয় স্থানের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষিত করে। তবে কক্সবাজারের সবগুলো দর্শনীয় স্থান সুন্দর হলেও কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত বেশিরভাগ পর্যটকদের আকষর্ন কেন্দ্র। তাই কক্সবাজারকে সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত বলা হয়।
পৃথিবীর সবথেকে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসেবে বিবেচিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এ সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যেন এ সমুদ্র সৈকতের মধ্যে ঢেলে দেওয়া। তাইতো পর্যটকদের সহজেই আকৃষ্ট করে নেয় এ সমুদ্র সৈকত। পুরো সমুদ্র সৈকত বালুকাময়, সেখানে কাদা মাটির কোনো অসিত্ব নেয়। সারি সারি সবুজ গাছ, ঝর্না, পাহাড়, ঝিনুকের সমারহ, সৈকতের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউ, মেঘেদের ভেসে বেড়ানো, সকালের সূর্য ওঠা, সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায় সমুদ্র সৈকত থেকে। একেক ঋতুতে একেক রূপে সাজে এ সমুদ্র সৈকত। যেকোনো ঋতুতে আসলে সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তাইতো সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের কাছে এত পচ্ছন্দের একটি জায়গা।
সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। পরবর্তীতে এসব দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছারাও সেখানে থাকা খাওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। বালুকাময় সমুদ্র সৈকত ছাড়াও এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র এবং কক্সবাজারের আতিথেয়তায় মুগ্ধ করে পর্যটকদের। এসব কারনেই মূলত কক্সবাজার বিখ্যাত একটি জেলা। আপনি চাইলে ঘুরে এসে দেখতে পারেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৈন্দর্য্যসহ আরও দর্শনীয় স্থানগুলো।
কক্সবাজার জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
কক্সবাজার জেলায় বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানগুলো ছাড়াও, এ জেলায় বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি কক্সবাজার জেলায় জন্মগ্রহন করেছেন। রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, কৃতি খেলোয়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্মস্থান কক্সবাজার জেলায়। এক নজরে দেখে নিন কক্সবাজার জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গেন নাম-
- মোহাম্মাদ নুরুল হোদা – কবি
- জনাব মোস্তাক আহমদ চেীধুরি – রাজনীতিবীদ
- জনাব ওসমান সারওয়ার আলম চৌধুরি – রাজনীতিবীদ
- সুনীল কৃষ্ণ দে – খেলোয়াড়
- ছুরত আলম – খেলোয়াড়
- মরহুম হযরত আলাউদ্দিন শাহ (রঃ) – অধ্যাত্বিক
- মরহুম হযরত নুরুল হক শাহ (রঃ) – অধ্যাত্বিক
- জনাব নুরুল হক বীরপ্রতীক – মুক্তিযোদ্ধা
- জনাব কামাল হোসেন চৌধুরি – মুক্তিযোদ্ধা
- মরহুম ওস্তাদ আবু বক্কর – সাস্কৃতিক ব্যক্তি
- জনাব সমরজিত রায় – সঙ্গীত শিল্পী
- ফজলুল করিম – আইনজীবী
- বদিউল আলম – শিক্ষাবিদ
- মোহাম্মাদ ইব্রাহিম – ফুটবলার
- হুমায়ন আহমেদ – ক্রিকেটার
- মমিনুল হক – ক্রিকেটার
- মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন – বীর উত্তম
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থানসমূহ
কক্সবাজার বর্তমানে পর্যটকদের মনে বিশেষ করে জায়গা করে নিয়েছে। এখানে বিশ্বের সবথেকে বড় সমুদ্র সৈকত ছাড়াও, আরও অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান সেখানে রয়েছে। চলুন দর্শনীয় স্থানগুলোর সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
নিভৃতে নিসর্গ পার্ক: কক্সবাজার থেকে এই পার্কের দুরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। এ পার্কে একসাথে নীল জলরাশি, তার উপরে তাকালে আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা সাদা মেঘের রাশি, চারপাশে পাহাড়, পাহাড় বেয়ে বয়ে আসছে পাহাড়ি ঝর্না, পাখিদের কলরব, বিভিন্ন বন্য প্রানী সেখানে গেলে দেখতে পাওয়া যায়। এজন্য প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এ পার্কের মধ্যে ভিড় জমায়।
মহেশখালী দ্বীপ: কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মহেশখালী দ্বীপের অবস্থান। প্রাকৃতিক সব সৌন্দর্যের বৈশিষ্ট্য এ দ্বীপে গেলে চোখে পড়ে। সেখানে গেলে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসা যাবে। কিংবদন্তীয় সেই আদিনাথ মন্দির, রাখাইন বৌদ্ধবিহার, শুটিং ব্রিজ নামে নান্দদিক একটি ব্রিজ এসব দর্শনীয় স্থান থেকে সেখানে গেলে ঘুরে আসা যাবে।
রামু রাবার বাগান: কক্সবাজার শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে রামু রাবার বাগানের অবস্থান। এখানে ঢুকলেই মনে হবে রোমাঞ্চকার সৌন্দর্যে যেন হারিয়ে গেছি। পাহারি টিলা তার সাথে চারদিকে সবুজের সমারহ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। সারি সারি রাবার গাছ সেখানে অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে। এ সৌন্দর্য দেখতে দেশ বিদেশ থেকে হাজারো পর্যটক এখানে পরিদর্শন করতে আসে।
শামলাপুর সৈমুদ্র সৈকত: কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলা থেকে বাহারছড়া ইউনিয়নে শামলাপুর সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। নীল জলরাশি, চারদিকে সবুজ ঝাউবন, সারি সারি বিভিন্ন ধরনের নৌকা এসব বিষয়ের দেখা মিলে সেখানে গেলে। এসব বিষয় দেখার জন্য ভ্রমনপ্রিয় মানুষেরা সেখানে ছুটে যায়।
শাহপরীর দ্বীপ: কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলা থেকে শাহপরী দ্বীপের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। শাহপরীর দ্বীপে তিনটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে, আরও দেখতে পাবেন উঁচু পাহাড়, পাহাড়ি গুহা, লবন চাষের জন্য বিস্তৃত জমি এবং সেখানে মানুষের কর্মব্যস্ততা। এসব বিষয় পর্যটকদের মুগ্ধ করে, তাই হাজারো পর্যটক সেখান থেকে ঘুরে আসে।
ডুলা হাজারা সাফারি পার্ক: কক্সবাজার সদর থেকে উত্তর দিকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ডুলা হাজারা সাফারি পার্ক অবস্থিত। এ পার্কের নাম শুনে মনে হচ্ছে এখানে প্রাকৃতিক অবকাঠামো রয়েছে। কিন্তু তার বদলে অত্যাধুনিক ও কৃত্রিম অবকাঠামো সেখানে তৈরি করা হয়েছে। এ পার্ক হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে প্রভৃতি প্রানী রয়েছে। দেশি অথবা বিদেশী প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ, বানর, বিড়াল, বাঘ, সিংহ, হরিণ, কুমির, হাতি, ভালুকসহ আরও প্রভৃতি পশুপাখি এ পার্কের মধ্যে রয়েছে। এ পার্কে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পশু পাখিদের মুক্তভাবে চলাফেরা দেখতে পাওয়া যায়। এসব দেখতে প্রতিবছর লাখো পর্যনটক এসে ভিড় জমায়।
হিমছড়ি: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে দক্ষিনে ১২ কিলোমিটার দূরে হিমছড়ি অবস্থান করছে। হিমছড়ি একটি সমুদ্র সৈকতের নাম, এটি পাহাড়ের গা বেয়ে বয়ে চলেছে। এ সমুদ্র সৈকতটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং নির্জন। হিমছড়ির যাওয়ার রাস্তা থেকে শুরু করে, হিমছড়ির চারপাশ সত্যিই চমৎকার। চারপাশে পাহাড়, পাহাড়ি ঝর্না, সবুজ গাছ এবং সেখানে একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে উঁচু পাহাড় রয়েছে, সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়। পাহাড়ের চুড়ায় উঠে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতটি পুরো উপভোগ করা যায়।
উপরের বলা দর্শনীয় স্থানগুলো ছাড়াও কক্সবাজারে- ইনানি বিচ, ইনানী রয়েল রিসোর্ট, সমুদ্র সৈকত, রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, সোনাদিয়া দ্বীপ, মাথিনের কূপ, আদিনাথ মন্দির, মেরিন ড্রাইভ রোড, প্রবাল দ্বীপ সেন মার্টিন, লাবনী বিচ, কুতুবদিয়া বাতিঘর, টেকনাফ সমুদ্র সৈকত, রাডার স্টেশন, ঝিনুক মার্কেট সহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের কাছে এসব দর্শনীয় স্থান খুবই পচ্ছন্দের। তাই কক্সবাজার এসে আপনিও এসব দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখে যাবেন।
কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার
বর্তমানে ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের পচ্ছন্দের তালিকায় কক্সবাজার রয়েছে। বন্ধুরা মিলে কোথাও ভ্রমনে যেতে চাইলে কক্সবাজারের নাম উঠে আসে। সেখানে শতটিরও কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যা সবহগুলো মনোমুগ্ধকর। কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান ছাড়াও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবারের সেখানে দেখা মিলে। অনেক পর্যটকদের মুখে এ খাবারগুলোর প্রশংসা শুনতে পাওয়া যায়, যেগুলো কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবার। চলুন কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবারগুলো সাথের পরিচিত হই।
চিকেন লালসু: কক্সবাজারের এতিহ্যবাহী একটি খাবারের নাম হলো চিকেন লালসু। এটি সাধারনত একটি বিশেষ ভর্তা, যা মুরগির মাংস দিয়ে ঝাল স্বাদে বানানো হয়। মুরগির মাংস দিয়ে বানানো অসাধারন স্বাদের ভর্তাটি বিভিন্ন পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়।
বলা পিঠা: কক্সবাজার জেলায় বিখ্যাত একটি খাবার বলা পিঠা। এটি একটি পিঠার নাম, যা গরমের সময় পাওয়া যায়। এ পিঠা ঠান্ডা স্বাদের হয়ে থাকে, তাই গরমে পর্যটকদের কাছে প্রিয় একটি খাবার। গরমে পর্যটকদের কাছে এ খাবারের চাহিদা বেশি হয়ে থাকে।
মুন্ডি: মুন্ডি একটি নুডলস জাতীয় খাবারের নাম, যা চালের গুড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। টক-ঝাল স্বাদের এ খাবার পাহাড়িদের স্থানীয় খাবার । তবে শুধু পাহাড়িদের নয় কক্সবাজারের পর্যটকদের পচ্ছন্দের তালিকায় এ খাবারটি রয়েছে।
লইট্টা ফ্রাই: লইট্টা মাছ দিয়ে এ চমৎকার খাবারটি বানানো হয়। লইট্টা মাছকে ছোট ছোট করে কেটে তার সাথে ময়দার আটা এবং বিভিন্ন স্বাদের মসলা দিয়ে, তেলে ভেজে এ খাবারটি তৈরি করা হয়। লইট্টা মাছ দিয়ে বানানো এ খাবারটি পর্যটকদের প্রশংসার খাবার তালিকায় থাকে।
রূপচাঁদা মাছের ফ্রাই: সামুদ্রিক মাছ রূপচাঁদা প্রায় সবার পচ্ছন্দের। কক্সবাজারে এ মাছ দিয়ে বিভিন্ন পদ তৈরি করা হয়, যার একটি হলো রূপচাঁদা ফ্রাই। রূপচাঁদা মাছের সাথে বিভিন্ন স্বাদের মসলার উপাদান মিশিয়ে রূপচাঁদা ফ্রাই তৈরি করা হয়। কক্সবাজার পর্যটকদের মনে এ খাবার জায়গা করে নিয়েছে। তাই কক্সবাজার বিখ্যাত খাবার তালিকায় এ খাবারের নাম রয়েছে।
কোরাল বা শুটকি ভর্তা: কোরাল কা শুটকি মাছ দিয়ে এ ভর্তা তৈরি করে পরিবেশন করা হয়। ঝাল স্বাদের এই ভর্তা কক্সবাজার পর্যটকদের কাছে প্রিয় একটি খাবার। কক্সবাজার ভ্রমন করতে আসা অনেক পর্যটক এই খাবারকে খুব পচ্ছন্দ করে থাকে।
কালাভুনা: কক্সবাজারের বিভিন্ন বাংলা খাবার পাওয়া যায়, যার একটি হলো কালাভুনা। চমৎকার স্বাদে তৈরি করা হয় এই কালাভুনা, সামন্য পরিমানেও ঝোলের কোনো চিহ্ন থাকেনা। বাঙালী পর্যটক ছাড়াও সবাই এ খাবারের প্রশংসা করে থাকে।
এসব খাবার ছাড়াও আরও অনেক মজাদার খাবার যেমন- পুডিং, ফালুদা, বিভিন্ন স্বাদের ভর্তা, বিরিয়ানী, চিকেন খিচুরি, ছ মু হডা প্রভৃতি খাবার কক্সবাজার গেলে পেয়ে যাবেন। এছারাও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, রূপচাঁদা, কাঁকড়া, স্কুইড, চিংড়ী, টুনা মাছ দিয়ে বিভিন্ন স্বাদের খাবার তৈরি করা হয়। আর এসব সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরিকৃত খাবার হওয়ায় কক্সবাজারের খাবারগুলো বিখ্যাত।
কক্সবাজার হোটেল ভাড়া
কক্সবাজার জেলায় ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের থাকার জন্য আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট একং কটেজের সুব্যবস্থা রয়েছে। এখানে বেশি এবং কম দুই ধরনে বাজেটের হোটেল রয়েছে। কক্সবাজার আপনি ঘুরতে গেলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক হোটেল খুঁজে নিতে হবে। অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ষাকালে হোটেল ভাড়া কম হয়ে থাকে। আবার যেগুলো সমুদ্র সৈকতের কাছের হোটেল সেগুলোতে ভাড়া বেশি হয়ে থাকে। তবে এখানকার হোটেলগুলোতে কক্সবাজারের সৌন্দর্য বেশি উপভোগ করা যায়। যাইহোক আপনি আপনার ইচ্ছামতো হোটেল বাছাই করে নিবেন। কক্সবাজারের কয়েকটি হোটেল ভাড়া সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন।
সায়মন বিচ: কক্সবাজারে এ হোটেলটি কলাতলী মেরিন ড্রাইভ রোডে অবস্থিত। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ১০৫০০ থেকে ৪৪০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ হোটেলের ভাড়া বেশি হলেও এ হোটেলটি থাকার জন্য খুব সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে।
হোটেল সী প্যালেস: এ হোটেলটি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের ভাড়া ৩৫০০ থেকে ১৭০০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ওশান প্যারাডাইস হোটেল: কলাতলীতে এ হোটেলটি রয়েছে। এ হোটেলে এসি সহ খাওয়া দাওয়া সকল বিষয়ে সুব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ৮০০০ থেকে ১৭০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রাসাদ প্যারাডাইস হোটেল: কক্সবাজার নিউ বীচ রোডে এ হোটেল অবস্থিত। প্রতিদিনের এ হোটেল রুমের ভাড়া ৪৫০০ থেকে ১০০০০ টাকা হয়ে থাকে।
হোটেল কোস্টাল পিস: কক্সবাজার কলাতলীর বাইপাস রোডে এ হোটেল অবস্থিত। প্রতি রাতে জন্য এ হোটেল রুমের ভাড়া ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
গ্র্যান্ড বিচ রিসোর্ট: কক্সবাজার কলাতলী রোডে এ হোটেল অবস্থিত, প্রতি রাতের জন্য এ রিসোর্টের রুম ভাড়া ২০০০ টাকা।
অ্যালবাট্রস রিসোর্ট: কক্সবাজার কলাতলী রোডে এ হোটেল অবস্থিত। প্রতি রাতের জন্য এ রিসোর্টের ভাড়া ২২০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
লং বিচ হোটেল: কলাতলীতে এ হোটেল রয়েছে, প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ৬৫০০ থেকে ৪০০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
জলতরঙ্গ: প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ৮৯২৫ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
হোটেল বিচ পার্ক: প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ৪৫০০ থেকে ১৩০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
হোটেল নিরিবিলি: এটি কক্সবাজারের সস্তা মানের একটি আবাসিক হোটেল। কক্সবাজার বিচ রোডে এটি অবস্থিত। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলের রুম ভাড়া ১৮০০ থেকে ২৫০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
মোটেল প্রবাল: কক্সবাজার মোটেল রোডে এ হোটেল অবস্থিত। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেলে রুম ভাড়া ৫০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকা হয়ে থাকে।
মোটেল উপল: মোটেল রোড কক্সবাজারে এ হোটেল অবস্থিত। প্রতি রাতের জন্য এ হোটেল ভাড়া ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
এসব হোটেল ছাড়াও আরও অনেক হোটেল কক্সবাজারে রয়েছে। আপনি কতজন নিয়ে থাকবেন সে অনুযায়ী হোটেল রুম নিতে হবে এবং প্রতি রাতের জন্য হোটেল ভাড়া সে হিসেবে নির্ধারন করা হবে। সবমিলিয়ে কক্সবাজার জেলার দর্শনীয় স্থানসহ সবকিছু সত্যিই সুন্দর। তাই আপনিও ঘুরে আসুন সুন্দরতম জেলা কক্সবাজার থেকে।
লেখকের শেষ বক্তব্য
কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত – কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান সমূহ এবং কক্সবাজার হোটেল ভাড়া সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত – কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান সমূহ এবং কক্সবাজার হোটেল ভাড়া সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।