ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হলো হজ। প্রত্যেক মুমিন – মুসলিম যারা আর্থিক সামার্থবান, তাদের প্রত্যেকের ওপর হজ পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। নারীরাও যদি সামার্থবান হয় তাহলে তাদেরেও হজ পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে। তবে নারী ও পুরুষে হজ পালনের জন্য শর্ত আলাদা। নারীদের হজ পালনের নিয়ম সম্পর্কে আমাদের অনেকের জানা নেই। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো মহিলাদের হজ কখন ফরজ হয়, মহিলাদের হজ করার শর্তগুলো কি এসব বিষয় নিয়ে। নারীদের হজ সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
ইসলামে শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের মধ্যে হজ হলো অন্যতম একটি ইবাদত। যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করা যায়। তবে সবাইকে হজ করার নির্দেশ ইসলামে দেওয়া হয়নি। নারীরা আর্থিকভাবে সামর্থবান হলে হজ করা তাদের ওপর ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। হজ হলো আল্লাহর দেওয়া একটি বিধান, তাই কারো মনগড়া নিয়ম মেনে হজ পালন করলে, সেই হজ আল্লাহর নিকটে কবুল হবে না। তাই আমাদের জানতে হবে নারীদের হজ পালনের যাবতীয় সকল বিষয় সম্পর্কে। চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই মহিলাদের হজ করার শর্ত-মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম সম্পর্কে।
মহিলাদের হজ পালনের শর্ত
মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতিকে সৃষ্টি করেছন তার ইবাদত বন্দেগি করার জন্য। মুসলিম জাতির দিকনির্দেশনা তিনি কুরআন ও হাদীসের মধ্যে দিয়ে রেখেছনে। আল্লাহ রব্বুল আলামিন ঘোষনা দিয়েছেন-
মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বাইতুল্লাহ ) পৌঁছার সামর্থ রাখে, তাদের ওপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ করা ফরজ। আর কেউ যদি অস্বিকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি জগতের মুখাপেক্ষি নন।(সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)
এখানে শুধু পুরুষের কথা বলা হয়নি। পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও হজ পালনের বিধান রয়েছে। হজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। হজ্জ শব্দের অর্থ হলো সংকল্প বা ইচ্ছা করা। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে বাইতুল্লাহ যাওয়ার সংকল্প করাকে হজ্জ বলে। হজ প্রত্যেক সামার্থবানদের জন্য একবার ফরজ এরপর হজ পালন করতে চাইলে করতে পারে তবে না করলে গুনাহ নেই। নারীদের জন্য হজ পালন করার আদেশ আছে যদি সে সামার্থবান হয়, তবে নারী ও পুরুষের হজ করার শর্ত এক নই। নারীদের জন্য কিছু আলাদা শর্ত পূরন করা জরুরি।
নারীদের হজের শর্ত:
- মুসলমান হওয়া
- জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া
- প্রাপ্ত বয়স্ক ও স্বাধীন হওয়া
- হজের নির্ধারিত সময়ে হজ্জ করা
- হজের পূর্ন খরচ বহন করার সামর্থ থাকা
- হজের সফরে স্বামী বা মাহরাম সাথে থাকা। মাহরাম হলো যে পুরুষের সঙ্গে বিয়ে হারাম।
- মাহরামের হজের খরচ বহন করার সামার্থ থাকা।
মহিলাদের হজ করার ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ন একটি শর্ত হলো মাহরাম’ থাকা। রাসূল সা. বলেছেন মাহরাম ছাড়া কোনো নারী হজ পালন করবে না।
মহিলাদের হজ পালন করার ক্ষেত্রে কিছু বিধি-বিধান রয়েছে। সেগুলো হলো-
- নারীদের হজ পালনের সময় সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করতে হবে।
- নারীর হজ করতে স্বামী বা মাহরাম থাকা আবশ্যক।
- মাহরামের হজের সম্পূর্ন খরচ যে মহিলা হজ করবে তার কাছে থাকা আবশ্যক।
- তালবিয়া আস্তে আস্তে পড়তে হবে।
- পুরুষগন তাওয়াফের তিন চক্করে রমল’ বুক উঁচিয়ে হাতে নেড়ে বাহাদুরের ন্যায় হাঁটা সুন্নত, তবে মহিলাদের জন্য তা সুন্নত নয়।
- খালি না পেলে হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া মহিলাদের সুন্নত নয়, তবে পুরুষশূন্য হলে দিবেন।
- খালি না পেলে মহিলাদের সাফা মারওয়া পাহাড়ে ওঠা সুন্নত নয়, তবে পুরুষ শূন্য হলে উঠবেন।
- সাফা-মারওয়া সাঈ করার সময় সবুজ চিহ্নদ্বয়ের মাঝে নারীরা সাধারন গতিতেই হাঁটবেন। দ্রুত গতিতে হাঁটবেন না।
- তাওয়াফে জিয়ারতের পর ঋতুস্রাব আরম্ভ হলে নারীদের তাওয়াফে বিদা করা জরুরি নয়।
- এহরাম খুলতে পুরুষদের মতো নারীদের মাথা মুন্ডানোর বিধান নেই, নারীরা আঙুলের অগ্রভাগ পরিমান চুল কাটলেই হবে।
হজপালনের নারীদের জন্য বিশেষ শর্ত হলো-
- স্বামী বা মাহরাম থাকতে হবে
- মাহরামের হজের খরচ সম্পূর্ন ওই নারীকে গ্রহন করতে হবে।
মহিলাদের ইহরামের কাপড়
প্রত্যেক সমার্থবান ব্যাক্তির ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয়কেই মহান আল্লাহ তায়ালা হজ পালন করার আদেশ দিয়েছেন। তবে নারী ও পুরুষের হজ পালনের নিয়মে কিছু পার্থক্য আছে। মহিলাদের ইহরামের কাপড় কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
ইহরাম কি আমরা অনেকেই জানিনা। ইহরাম শব্দের অর্থ হলো হারাম বা নিষিদ্ধ। হজ ও ওমরাহ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তি যখন হজ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে নিয়ত করে তখন তার হালাল ও জায়েয বস্তুও হারাম হয়ে যায়। অর্থাৎ যে বিষয়গুলো যেমন- স্ত্রী সহবাস, মাথার চুল, গোফ, বগল, নাভীর নিচের পশম কাটা হালাল হলেও হজ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে নিয়ত করে তালবিয়া পাঠ করার পর সেগুলো হারাম হয়ে যায়। এখন জানবো মহিলাদের ইরামের কাপড় সম্পর্কে।
হজ পালনের জন্য ইহরামের কাপড় পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে, নারীদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। তবে নারীদের ইহরামের কাপড় পড়ার কিছু বৈশিষ্ট আছে। নারীদের ইহরামের পোষাক পুরুষদের মতো সাদা হতে হবে এমন নয়, যেকোনো রঙের পোশাক পড়তে পারবে। স্বাভাবিক পোশাকই হলো নারীদের জন্য ইহরাম।
উম্মল মুমিনিন আয়েশা (রা.) আনহা বলেন-নারীরা নিজ অভিরুচি মাফিক পোশাক পড়তে পারবেন। (আল-বাইহাকি, আস-সুনাল আল কুবরা,৯১২২)
তবে শর্ত হলো শালীন পোশাক পড়তে হবে। নারীদের পোশাকে যাতে পর্দার খেলাপ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভালোভাবে সতর ঢাকতে হবে, আঁটশাট পোশাক পড়া যাবেনা, ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে হবে, পোশাক যেকোনো রঙের পড়লেও রঙচটে পোশাক পড়া যাবে না। এমন পোশাক পড়তে হবে যাতে পুরুষের কু দৃষ্টি মহিলাদের ওপর না পড়ে। শাড়ী না পড়ে সেলোয়ার কামিজ পড়তে হবে।
ইহরাম অবস্থায় নারীরা মুখ ঢাকবে না, তবে নারীরা গাইরে মাহরাম থেকে নিজেদের আড়াল করে নিবেন। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্নিত , আয়েশা (রা.) বলেছেন- আমরা ইহরাম বেধে রাসুল সা. এর সাথে সফর করতাম। এ সময় আমাদের চেহারা খোলা থাকতো। আমাদের পাশ দিয়ে কোনো গাইরে মাহরাম অতিক্রম করলে মাথা থেকে চাদরের আঁচল টেনে দিতাম, তারা চলে গেলে আবার খুলে ফেলতাম। (বুখারি) অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায় নারীদের পর পুরুষের সামনে চেহারা খোলা নিষেধ। তবে এ অবস্থায় এমন ভাবে চেহেরা আবৃত করতে হবে যাতে মুখমন্ডলের সাথে কাপড় না লাগে। সামনে পর পুরুষ না থাকলে চেহারা আবৃত করার প্রয়োজন নেয়।
হজ পালনের সময় নারীরা উপরের নিয়মে ইহরামের কাপড় পড়বেন।
মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম
মহিলারা যারা ওমরাহ পালন করতে চান তাদের অবশ্যই সকল নিয়ম কানুন জেনে এবং মেনে ওমরা পালন করতে হবে। মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম-
পাঁচটি নিয়মে ওমরা পালন করতে হবে:
- ইহরাম
- তাওয়াফ
- তাওয়াফে নামাজ
- সায়ী
- চুল কাটা
ওমরা পালনের ৫ টি পদ্ধতির মধ্যে ইহরাম ও তাওয়াফ হলো ফরজ এবং বাকি ৩ টি ওয়াজিব।
পাঁচটি পদ্ধতি সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হলো:
ইহরাম, মহিলাদের ইহরামের কাপড়: মহিলাদের ইহরামের কাপড় পরিধানের আগে শরীরের গুপ্ত লোম পরিষ্কার করতে হবে। তবে মহিলারা কাপড়ে আতর লাগাতে পারবে না। মহিলারা ইহরামের কাপড় সেলাইযুক্ত যেকোনো রঙের যেকোনো পোশাক পড়তে পারবে। শাড়ি না পড়ে সেলওয়ার কামিজ পড়বে, পোশাক শালীন হতে হবে। তবে পর পুরুষেরা যাতে চেহারা দেখতে না পায়, সেজন্য কাপড় দিয়ে চেহারা আবৃত করতে হবে। মহিলারা বাড়ি থেকেই কাপড় পড়ে নিতে পারবেন।
মিকাত: মিকাত হলো একটি স্থানের নাম, যেখান থেকে ওমরাহর নিয়ত করা হয়। হজ করার নিয়তে যারা রওনা দিবেন মিকাতে তাদের ইহরাম বাধতে হয়। মিকাত থেকে ওমরাহর নিয়ত করার পর ইহরাম বাধতে হয়। মদিনা থেকে মক্কা যাওয়ার সময় ফ্লাইট থেকে ঘোষনা দেয়- কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা মিকাত অতিক্রম করবো। ঠিক সে সময় অনুমান করে ওমরাহর নিয়ত করতে হবে। মহিলারা ওমরাহর নিয়ত আওয়াজ করে উচ্চারন করে বলবেন না, মনে মনে নিয়ত করবেন। যদি ওমরাহর নিয়ত না করে মিকাত পার হয়ে যান তাহলে আবার মিকাতে এসে নিয়ত করতে হবে। আর যদি আবার ফিরে না আসেন তাহলে সেক্ষেত্রে দুম্বা কুরবানি দিতে হবে।
ইহরামের সময় যে কাজগুলো করা যাবে না, সেগুলো হলো-
- শরীরের কোনো অংশের চুল কাটা যাবে না।
- নক কাটা যাবে না।
- আতর লাগানো যাবে না।
- স্বামী-স্ত্রী সহবাস বা যৌন উত্তেজনা মূলক কোনো কথা বলা নিষেধ।
- কোনো জীবজন্তু শিকার ও হত্যা করা যাবে না।
- বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া যাবে না।
- হারাম এলাকার ভিতরে কোনো গাছের পাতা ছেঁড়া, গাছ কাটা যাবে না।
- ঝগড়া করা যাবে না।
তালবিয়া: ওমরাহর নিয়ত করার পর তালবিয়া পাঠ করতে হবে। মহিলারা মনে মনে তালবিয়া পাঠ করবেন। তালবিয়াটি হলো-
লাব্বঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাঈকা লা শারীকা লাকা লাব্বাঈক , ইন্নাল হামদা ওয়ান নি-আমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারী কালাক।
তাওয়াফ: তাওয়াফ নারীদেরও করতে হবে এর বিকল্প কিছু নেয়। তবে যখন পুরুষদের ভির কম থাকে, তখন করা ভালো। নারীরা রাতে তাওয়াফ করা ভালো সে সময় পুরুষের ভীড় থাকে না। মক্কায় পৌঁছার পর তাওয়াফের আগে গোসল করে নিবেন। গোসল করা মুস্তাহাব। এরপর ডান পা দিয়ে মসজিদে ঢোকার দোয়া পড়ে, মাসজিদুল হারমে প্রবেশ করবেন। এরপর মাতাবো পৌঁছালে তালবিয়া পাঠ আর করবেন না। এবার কাবা ঘরে যে কর্নারে হাজরে আসওয়াদ আছে, সে কর্নারে গিয়ে মহিলারা ডান হাত হাজরে আসওয়াদ বরাবর ইশারা করে কাবা বামদিক থেবে তাওয়াফ শুরু করবেন। ইশারার সময় বিসমিল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার’ বলবেন। হাজরে আসওয়াদে চুমু দিয়ে ডান হাতে স্পর্শ করা সুন্নত। তবে ভিড় হলে মহিলারা না করলেও হবে। তাওয়াফের সময় দোয়া পড়বেন।
তাওয়াফের নামাজ: তাওয়াফ করা হলে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে, এই নামজ ওয়াজিব যেকোনো সময় পড়তে পারেন। পুরুষ ও মহিলা একসাথে নামাজ পড়বেন না। তাওয়াফে নামাজের নিয়ম হলো- প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর সুরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে ফাতিহার পর সুরা ইখলাস পাঠ করা উত্তম। তবে না জানলে অন্য সুরা দিয়ে পড়লেও নামাজ হয়ে যায়। নামাজ শেষে বিসমিল্লাহ বলে জমজমের পানি পান করবেন। পান করা হয়ে গেলে একটু পানি হাতে নিয়ে মাথায়, মুখে ও গায়ে মাখতে পারেন, এটি সুন্নাত।
সায়ী: সাফা ও মারওয়া পাহাড় সাতবার চক্কর দেওয়া হলো সায়ী। সায়ী করার জন্য প্রথমে সাফা পাহাড় যেতে হবে, সেখানে গিয়ে কিছু দোয়া আছে সেগুলো জেনে পড়বেন। দোয়া শেষ করার পর সায়ী করতে হবে, সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার চক্কর দিবেন। সাফা থেকে মারওয়া যাবেন এক চক্কর আবার মারওয়া থেকে সাফা আসবেন দুই চক্কর হবে। সাফা থেকে মারওয়া যাওয়ার সময় সবুজ লাইট দিয়ে একটি জায়গা চিহ্নিত করা থাকে, সেই জায়গায় মহিলারা স্বাভাবিক ভাবেই হাঁটবেন।
মাথা মুন্ডন বা চুল কাটা: সায়ী শেষ হওয়ার পর মহিলারা পুরুষের ন্যায় মাথা মুন্ডন করবেন না, মহিলারা চুল কাটবেন। মহিলারা তার সবগুলো চুলকে একত্রে ধরে নিজ মাহরাম পুরুষ দিয়ে চুলের অগ্রভাগে এক ইঞ্চি মতো কেটে নিবেন। নিজেরাও একা পাড়লে কাটতে পারেন।
উপরে আমরা হজ পালনের নিয়ম সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। মহিলারা যারা ওমরা পালনের নিয়ত করেছেন তারা ওমরা সম্পর্কে সকল তথ্য, দোয়া ও পদ্ধতি জেনে তারপর ওমরাহ পালন করবেন।
হজে মহিলাদের চুল কতটুকু কাটতে হবে
হজে মহিলাদের চুল কাটা ওয়াজিব, তাই অবশ্যই চুল কাটতে হবে। হজ পালনে চুল কাটা এটি একটি ইবাদত। হজ পালনে গুরত্বপূর্ন কাজ এটি। সায়ী করার পর চুল কাটতে হয়। এখন প্রশ্ন হলো হজে মহিলাদের চুল কতটুকু কাটতে হবে? এ বিষয়ে সঠিক তথ্য আমরা অনেইকই জানি না। চলুন তাহলে জেনে নিই-
নবী করিম (সা.) হজ ও ওমরাহ পালন অবস্থায় মহীলাদের মাথা মুন্ডন নিষেধ করেছেন। তাই পুরুষের মতো নারীরা মাথা মুন্ডন করবেন না।
রাসূল (সা.) বলেছেন- স্ত্রী লোকের প্রতি মাথা মুন্ডন নেই, স্ত্রী লোকের প্রতি রয়েছে মাথা ছাটানো। (আবু দাউদ: ১৯৮৬)
মহিলাদের জন্য পুরো মাথার চুল থেকে এক কর অর্থাৎ আঙুলের উপরের এক গিরা চুল ছোট করা উত্তম। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন- ইহরামকারী নারী তার মাথার চুলকে একত্রিত করে সেখান থেকে এক কর পরিমান কাটবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ১৩০৬৫)
যাদের মাথার চুল নেই তাদের ক্ষেত্রে ব্লেড বা ক্ষুর দিয়ে পুরো মাথা মুন্ডন করার ন্যয় করতে হবে। এভাবে চুল মহিলারা নিজ মাহরাম দিয়ে কেটে নিবেন আবার মহিলারা নিজেও কাটতে পারেন। মাথার চুল কাটার পর মহিলারা ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যায়।
উপরে মহিলাদের হজ সম্পর্কিত কিছু তথ্য তুলে ধরেছি, আশা করি আপনারা পড়ে উপকৃত হয়েছেন। মহিলারা যারা হজ্জ পালন করতে চান তারা অবশ্যই হজের বিধি-বিধান জেনে, সঠিকভাবে হজ পালন করবেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
মহিলাদের হজ করার শর্ত – মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি মহিলাদের হজ করার শর্ত – মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।