প্রিয় পাঠক আপনি কি হাঁস পালন করতে চাচ্ছেন? কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে হাঁস পালন করবেন এবং কোন জাতের হাঁস পালনে লাভজনক হওয়া যাবে। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। কারন আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক এবং হাঁস পালন প্রশিক্ষন সম্পর্কে। এসব বিষয় বিস্তারিত জানতে আমাদের বলা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
হাঁস পালন করে আমাদের দেশের মানুষেরা কর্মসংস্থান তৈরি করছে। হাঁস পালনের মাধ্যমে হাঁসের ডিম ও মাংস আমাদের পুষ্টির চাহিদা মিটায় পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। আমাদের দেশে হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে হাঁস পালনের জন্য কিছু সঠিক পদ্ধতি আছে, যেগুলো জেনে হাঁস পালন করা জরুরি। তাই যারা হাঁস পালন করতে চান তারা সঠিক পদ্ধতি জেনে হাঁস পালন করুন সফলতা অর্জন করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক হাঁস পালনের সঠিক পদ্ধতি এবং কোন জাতের হাঁস পালনে লাভবান হওয়া যাবে।
হাঁস পালন পদ্ধতি
হাঁস পালন বর্তমান সময়ে একটি লাভজনক ব্যবসা। হাঁস পালন করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। হাঁস পালনের মাধ্যমে আমাদের প্রানীজ আমিষের ঘাটতি পূরন হয়। গ্রাম বাংলার মহিলারাও বাড়িতে থেকে হাঁস পালন করে লাভবান হতে পারবে। তবে হাঁস পালনের সঠিক পদ্ধতি কি জানতে হবে। হাঁস পালনের সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে নিঃসন্দেহে সফল হতে পারা যাবে।
বর্তমানে হাঁস পালনের অনেক পদ্ধতি বেরিয়েছে। তবে হাঁস পালনের দুইটি পদ্ধতি সচারচর দেখা যাচ্ছে, একটি হচ্ছে উন্মুক্ত অপরটি আবদ্ধ।
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালন: উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হাঁস পালনে, হাঁস গুলোকে সকাল বেলা অল্প করে খাবার খাইয়ে ছেড়ে দেয়া হয়, খাবার না দিলেও চলে। এ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করলে আশেপাশে নদীনালা, খালবিল, পুকুর, জলাশয় থাকতে হবে। সারাদিনে তারা ঘুড়ে বেড়িয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় খাবার যোগাড় করে নেই। সন্ধার সময় বাড়ি ফিরলে তখন সুষম খাবার দিতে হবে। এ হাঁস পালন পদ্ধতি সবথেকে সহজ পদ্ধতি। আমাদের দেশে গ্রামঞ্চলে এ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করতে বেশি দেখা যায়। এ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করলে খাদ্যের জন্য তেমন খরচ হয় না এবং শ্রমিক কম লাগে। তবে ডিম পাড়ার সময় হাঁস গুলোকে সতর্ক করে রাখতে হবে, নাহলে বাইরে ডিম দিয়ে দিতে পারে।
আবদ্ধ পদ্ধতিতে হাঁস পালন: এ পদ্ধতিতে হাঁসগুলোকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ রাখা হয়। তবে কেউ কেউ দিনের বেলায় ঘেরা থাকে এমন নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে ছেড়ে দেয়। এ পদ্ধতিতে জায়গার পরিমান একটু বেশি লাগে এবং খাবারের খরচ বেশি হয়। এই পদ্ধতিতে হাঁস পালনের বড় সুবিধা হলো শিকারি প্রানীর ভয় থাকে না।
হাঁসের ঘর তৈরি: হাঁস পালন করতে গেলে প্রথমেই এর জন্য ভালোভাবে ঘর তৈরি করা জরুরি। হাঁসের ঘরে জন্য উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে, ঠান্ডা থেকে সাবধানে রাখতে হবে, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং খোলামেলা পরিবেশ রাখতে হবে। ঘরের উচ্চতা ৫ থেকে ৬ ফুট হতে হবে। বাঁশ অথবা ইট দিয়ে মজবুত করে ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের দরজা শক্ত করে বানাতে হবে যাতে ক্ষতিকর প্রানী ঘরে প্রবেশ করতে না পারে। হাঁসের সংখ্যা অনুযায়ী ঘর তৈরি করতে হবে। ঘর যদি পাকা করেন তাহলে প্রতি হাঁসের জন্য জায়গার মাপ ৩ বর্গফুট হলেই হবে। আর ঘর কাঁচা হলে জায়গার মাপ একটু বেশি প্রয়োজন। ঘরের তাপমাত্রা ৫৫ থেকে ৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে হবে। ঘরের মেঝেতে ধানের তুষ অথবা কাঠের গুড়া ব্যবহার করতে পারেন। হাঁসের ঘরের আদ্রতা হাঁস পালনে খুবই গুরত্বপূর্ন। আবহাওয়া ভালো থাকলে হাঁসের বৃদ্ধি ভালোভাবে হয়।
হাঁসের খাবার: হাঁস পালনে, হাঁসের জন্য সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা থাকবে। সুষম খাদ্য খাওয়ালে হাঁস তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং ডিম অল্পসময়ের মধ্যে পাড়ে। বয়স অনুযায়ী এবং কিভাবে পালন করবেন তার উপর খাবারের মাপ নির্ধারন করা হয়। উম্মুক্ত পদ্ধতিতে পালন কারলে খাবার কম লাগে এবং আবদ্ধ পদ্ধতিতে খাবার বেশি লাগে। হাঁসের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন খুঁদ, গমভাঙ্গা, ভূট্টা, শামুক, ঝিনুক, কেঁচো, কলার মোচা ইত্যাদি।
হাঁস পালনে বড় সুবিধা হলো এরা কম সময়ে বেশি ডিম পাড়ে। একটি দেশি হাঁস বছরে ৯০ টি ডিম দিয়ে থাকে তবে উন্নত জাতের হাঁস বছরে ৩০০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। তাই উন্নত জাতের হাঁস পালন করলে লাভবান বেশি হওয়া যাবে।
পরিচর্যা: সঠিকভাবে পরিচর্যা হাঁস পালনে সফলতা এনে দেয়। তাই হাঁসের খাবার এবং রোগের দিকে নজর দিতে হবে। হাঁসের ঘর এবং খাওয়ার পাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। হাঁসের রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তিতে আলোচনা করা আছে, জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
হাঁস পালনের উপকারিতা
বর্তমানে গ্রামের মানুষেরা হাঁস পালন করে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আমাদের দেশের প্রায় সকল আবহাওয়ায় হাঁস পালনের জন্য উপযোগি। তাই আমাদের দেশে হাঁস পালন করা সহজ। অনেকেই আবার হাঁস পালনকে সহজ এবং প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। হাঁস পালন করে খামারিরা যেসব উপকার পায়। সেগুলো হলো-
- হাঁস পালনে পরিশ্রম খুবই কম এবং ব্যয় কম আয় বেশি।
- হাঁস আমাদের আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা পূরন করে থাকে।
- মুরগির তুলনায় হাঁসের রোগ বালাই কম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
- হাঁসের বিষ্ঠা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- হাঁস বছরে অনেক ডিম দিয়ে থাকে।
- হাঁসের খাওয়ার জোর থাকলে অল্প সময়েই (৬ মাসের আগেই) বড় হয় এবং তাড়াতাড়ি ডিম দেয়
- হাঁসের মল মাছের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
- হাঁস ও মাছ চাষ একসাথে করে অনেক লাভবান হওয়া যায়।
- হাঁসের মাংস নিয়মিত খেলে আপনার রক্তশূন্যতা দূর হয় এবং হাঁসের ডিম ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরন করে থাকে।
বর্তমান সময়ে চাকরি পাওয়া খুবই কঠিন একটি কাজ। তাই যারা বেকার রয়েছেন গ্রাম্য পরিবেশে বাড়িতে থেকেই কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে সফল ব্যবসায়ী হতে পারবেন, হাঁস পালনের মধ্য দিয়ে।
কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক
বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন জাতের হাঁস রয়েছে। যারা হাঁস পালন করতে চান তাদের জানা উচিত কোন জাতের হাঁস পালন করে লাভবান হওয়া যায়।
বর্তমান সময়ে চায়না প্রজাতির একটি হাঁস পালন করা হচ্ছে, যা পালন করে খামারিরা অধিক লাভবান হতে পারছে। সেটা হলো বেইজিং জাতের হাঁস। আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে উপযোগি এই জাতের হাঁসটি, এটি পালন করা সহজ। মাংস এবং ডিম উভয়ের জন্য এ হাঁস পালন করা লাভজনক।
বেইজিং জাতের হাঁসটির সুভিধা হলো, এ হাঁসটি অল্প সময়ের মধ্যে বড় হয়। এ জাতের হাঁস বছরে ৩০০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে এবং মাংস অনান্য হাঁসের তুলনায় বেশি হয়। এ হাঁসের রোগ বালাই কম হয়। এ জাতের হাঁসের প্রধানত দুটি রোগ দেখা দেয়, ডাকপ্লেগ ও ডাক কলেরা। ৩ মাস বয়সে এই হাঁসটি বিক্রির উপযোগি হয়ে উঠে। তাই ২৫ দিনে ডাকপ্লেগ এবং ৪০ দিনে ডাকপ্লেগ কলেরার টিকা দিতে হবে। ডাপপ্লেগ রোগের মূল লক্ষন হলো হাঁসের পা পড়ে যাবে এবং পা অবশ হয়ে যাবে আর ডাপপ্লেগ কলেরার লক্ষন হলো দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা বা ডানা ঝুলে যাওয়া। তাই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই চিকিৎসা পড়লে এ জাতের হাঁসের তেমন ক্ষতি হয় না।
আমাদের দেশি হাঁস যেভাবে লালন পালন করেন, উন্মুক্ত অথবা আবদ্ধ দুইভাবেই করতে পারবেন। তবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে লাভ বেশি করা যাবে। দেশি হাঁসকে যেভাবে, যা খাবার খাওয়াবেন এ জাতের হাঁসকে তাই খাওয়াতে পারেন। এ জাতের হাঁস কিনার পর ১ মাস বয়স পর্যন্ত ফিড খাওয়াবেন এবং ১ মাসের আগে ছাড়বেন না। এর পর উন্মুক্ত ভাবে ছেড়ে দিলে মাঠে, খালে বিলে, জলাশয়ে, পুকুরে বিভিন্ন স্থানে বেড়িয়ে নিজের খাবার নিজেরা তেরি করে নিতে পারে। ৩ মাস বয়সে এ জাতের হাঁসের ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত হয়। তখন থেকেই বিক্রি করা শরু করতে পারবেন। অল্প সময়ে বিক্রির উপযোগি বলে এ জাতের হাঁসের তেমন ক্ষতি হওয়ার সময় পায় না এবং অধিক লাভবান হওয়া যায়। তাই হাঁস পালন করে লাভবান হতে চাইলে বেইজিং জাতের হাঁস বাছাই করে নিন।
হাঁসের বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা
সকল পশুপাখি পালনে রোগ বালাই হয়ে থাকে, হাঁসও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে মুরগির থেকে হাঁসের রোগ কম হয়, একেবারেই হয় না এমন নয়। একটি হাঁস রোগাক্রান্ত হলে অপর একটি হাঁসে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে যায়। তাই রোগের উপসর্গ দেখার আগেই চিকিৎসা দেওয়া ভালো, তবে তারপরও যদি রোগের লক্ষন প্রকাশ পায় তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে হবে। চলুন হাঁসের যে রোগ গুলো হয় সেগুলোর সাথে পরিচিত হয় এবং কি লক্ষন দেখলে বুঝবো যে হাঁস রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
ডাক ভাইরাল হেপাটাইটিস রোগ: সাধারনত হাঁসের বাচ্চার এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষনগুলো হলো ঘাড় বাঁকা হয়ে যাওয়া, খাওয়া কমিয়ে দেওয়া, সবুজ পায়খানা ইত্যাদি। এ রোগের চিকিৎসা হলো ডাক ভাইরাল হেপাটাইটিস টিকা দিতে হবে। তবে সতর্কতার সাথে বাচ্চা কিনলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডাক প্লেগ: এটি হাঁসের একটি জটিল রোগ। এ রোগ হঠাৎ করে হাঁসের মধ্যে প্রবেশ করে। এ রোগের লক্ষন হলো খাদ্য কম খাবে এবং পানি বেশি খায়। মাথা ও ঘাড় ঘুরতে থাকে। এ রোগ হয়ে গেলে হাঁসকে বাঁচানো যায় না। তাই এ রোগ থেকে বাঁচাতে হলে হাঁস নেওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনে, ৩৫ থেকে ৪৫ দিনে এবং ৪ থেকে ৫ মাস পর টিকা দিতে হবে।
ডাক কলেরা: কোনো হাঁসকে যদি এ রোগ হয়ে থাকে তাহলে, হাঁস পাতলা পায়খানা করবে, পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে, মাথা ফুলে যাবে, হা করে নিশ্বাস নিবে এবং হাঁস দুর্বল হয়ে ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়। এ রোগের চিকিৎসায় পটেনশিয়াম সালফোনেমাইড ভালো কাজ করে। এ রোগ প্রতিরোধ করতে খামার সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
মাইকোটক্সিকোসিস: এ রোগ হলে হাঁস হঠাৎ করে নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং ঘাড় ও পা প্যারালাইসিস হতে পারে। পচা খাবার থেকে এ রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই পচা খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এ রোগের চিকিৎসায় বটুলিজম এন্টি-টক্সিন ০.৫ থেবে ১ মি.লি ইনজেক্ট করে দিতে হবে।
আমাশয়: হাঁসের বাচ্চার এ রোগ বেশি হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষন হলো বাচ্চা চুন পায়খানা করবে এবং খাদ্য কম খাবে। এ রোগের চিকিৎসায় ই এস বি৩ দিতে পারেন।
রোগে আক্রান্ত হলে ভয় এর কিছু নেই। হাঁস পালন করতে হলে সঠিকভাবে হাঁসের যত্ন নিবেন এবং নিয়মিত কৃমির ওষুধ খাওয়াবেন। হাঁসের থাকার জায়গা, খাবারের জায়গা পরিস্কার রাখবেন, সুষম খাবার খাওয়াবেন এবং পঁচা, বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অতিরিক্ত গরম ও ঠান্ডা থেকে নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে রোগ বালাই কম হবে এবং হাস পালন করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক – হাঁস পালন প্রশিক্ষন সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক – হাঁস পালন প্রশিক্ষন সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।