নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি – বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা

আজাকের এই ব্লগে আমরা জানবো নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি সম্পর্কে এবং  বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য উপকারী ও কার্যকারী কিছু টিপস।
নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি
বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিজের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারাটা একটা চ্যালেঞ্জর বিষয়। কিন্তু জীবনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কিছু  অর্জন করার মতো শান্তি আর কোনোকিছুতে পাওয়া যায় না।  আমরা  কয়  একটি  ছোট ছোট  বিষয়ে খেয়াল রাখলেই  আমাদের ভর্তি পরীক্ষার যাত্রাটা অনেকটা  মসৃন হবে।

নিজের উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশুনা ঠিক রাখা

আমরা যে জায়গায় আছি, মানে আমাদের বর্তমান আমাদের সব সময়ে ঠিক রাখতে হবে। বর্তমান ঠিক না রাখলে ভবিষ্যৎ কখনো ঠিক হবে না । কারণ বর্তমানে আমি যা করছি সেটিই আমাদের ভবিৎষতে গড়বে । তাই নিজের উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশুনা আমাদের খুব মন দিয়ে করতে হবে, ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস এবং বই গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ । তাই উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস ভালো করে পড়ে নিজের ভিত্তি শক্ত করতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে আমাদের অন্য বই পড়তে হবে।

নিজের পছন্দের বিষয়টি খুঁজে বের করা

কোনো একটি বিষয়ে সবাই পড়ছে বলে যে আমিও সেই বিষয়ে পড়বো, বিষয়েটি  এমন  না  হলেই  ভালো। কারণ চার বছর শেষে , নিজের কর্ম জীবনে এই পড়াশুনা যদি কোনো কাজে না আসে তাহলে এত কষ্ট করে নিজের অপ্রিয়   বিষয়ের উপর পড়াশুনা করে সময় নষ্ট  করার কোনো মানে নাই। আমরা সারা জীবন নিজের অপছন্দের কাজ করতে পারবোনা। আর করলেও উন্নতি করতে পারবো না। সুতরাং যে বিষয়ে নিয়ে পড়বো সেই  বিষয়টি  অবশ্যই আমাদের পছন্দের বিষয়ে হতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে সাবজেক্ট চয়েজ

এমন  হতেই  পারে  আপনার  কবিতা  লিখতে ভালো লাগে, এবং আপনার খুব জানতে ইচ্ছা  করে  একটি  মাথার চুলের মধ্যে কি কি পদার্থ আছে। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না আপনার কোন বিষয়ে আগ্রহ বেশী । এই  জায়গায়  আপনার  করণীয়  কাজ  হলো  আপনার  উচ্চ মাধ্যমিকের এবং  পাশাপাশি  কিছু বাইরের সাহিত্য বই এবং কিছু বিজ্ঞান বই নিয়ে পড়তে থাকা। যে বিষয়টি নিয়ে আপনি দীর্ঘদিন উৎসাহের  সাথে পড়তে পারবেন, কাজ করতে পারবেন এবং বুঝতে পারবেন , আপনি বুঝে নিবেন আপনি এই  বিষয় নিয়ে আপনার ভবিৎষতে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারবেন এবং উৎসাহের সাথে কাজ করতে  পারবেন বা নিজেই কর্মস্থল করে দিতে পারবেন ।
এক এক বিশ্যবিদ্যালয় এক এক বিষয়ের জন্য নামকরা, আপনি আপনার পছন্দের বাংলাদের দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করে, সেই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ফেইসবুক, গুগল, বা কোনো বড় ভাই বোনের কাছ থেকে তথ্য নিতে পড়েন। দু থেকে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করুন এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন।

সঠিক ভাবে প্রস্তুতি গ্রহন

সঠিক প্রস্তুতি, কথাটা খুব কঠিন আবার খুব সহজ। সঠিক প্রস্তুতি মানে আমাকে বুঝতে হবে আমাকে ঠিক কতটুকু, কি ভাবে, কোথা থেকে পড়তে হবে। সঠিক প্রস্তুতি মানে যে সব কিছু পড়তে হবে ব্যাপারটা তা নয়। অল্প পড়াশুনা করেও অনেক পরীক্ষার্থী অনেক ভালো করে, কারণ তারা সঠিক জায়গা থেকে সঠিক টপিকস পড়েছে।
আরো একটি বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, সেটি হচ্ছে আমাদের পড়ার ধরণ। নৈবিত্তিক প্রশ্ন আসবে বলে যে আমাদের নৈবিত্তিকই পড়তে হবে ব্যাপারটা এমন নয়। কোনো বিষয়কে যদি আমরা না বুঝে মুসখস্ত করি তাহলে সেই পড়াশুনা আমাদের কোনো কাজে আসবে না।
মূল প্রস্তুতি:
  1. আমাদের আগের বছরের প্রশ্ন ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
  2. কোন কোন জায়গা থেকে সব থেকে বেশি প্রশ্ন আসে সেই টপিকস গুলো চিহ্নিত করতে হবে।
  3. সেই টপিকস গুলো ভালো মতো পড়তে হবে, বুঝতে হবে। (আমার যদি টপিকস নিয়ে ধারণা থাকে তাহলে আমি যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।
  4. উচ্চ মাধ্যমিকের বই গুলো ভালো মতো পড়বো। যেমন বাংলা ব্যাকরণ।
  5. ঘন্টা ধরে নয় টপিকস ধরে প্রতিদিন পড়বো। রোজ নির্দিষ্ট কয়েকটি টপিকস ধরে ধরে পড়বো। যতক্ষণ না বুঝবো ততক্ষণ পড়বো।
আরো পড়ুনঃ-  পড়ালেখায় সফল হওয়ার উপায় - একজন আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য

সঠিক নিয়মে ভাবে আবেদন

আবেদন করার আগে অবশ্যই বিশ্ববিদালয়ের ওয়েবসাইটে যেয়ে সকল নিয়ম কানুন মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিব, কম পক্ষে ৩ বার পড়তে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার দিন করণীয়

পরীক্ষার আগের রাতে আমরা অনেক পড়াশুনা করি এইটি আমাদের একটি ভুল। যদি আমরা আগে থেকে ভালো করে পড়াশুনা করি তাহলে আমাদের পরীক্ষার আগের দিন রাত জেগে সব কিছু পড়ার চেষ্টা না করা উচিত। কারণ এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। পরীক্ষার আগের রাতে খুব ভালো করে ঘুমানো দরকার যাতে পরের দিন মাথা ঠান্ডা রেখে আমরা পরীক্ষাটা দিতে পারি। পর্যাপ্ত পরিমানে খাওয়া দাওয়া করে পরীক্ষার হলে ঢুকতে হবে, চিন্তামুক্ত ভাবে পরীক্ষা দিতে হবে. তা না হলে জানা জিনিস ও আমরা পরীক্ষায় ভুলে যেতে পারি।

পরীক্ষার যাত্রায় করণীয় কিছু সাধারণ বিষয়

নিজের খাওয়া দাওয়ার খেয়াল রাখা, সকালের খাবার আমাদের সারা দিনের কাজের, পড়াশুনার এবং অনেক সময় আমাদের ব্যবহারের উপর ও প্রভাব ফেলে। আমরা মানুষ আমাদের সকল শক্তি আমরা আমাদের খাবার থেকে পেয়ে থাকি, খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে আমরা ভালো ভাবে কোনো কাজ করতে পারবো না। নিজের ঘুম এর দিক খেয়াল রাখা, রোজ ছয় থেকে ঘণ্টা ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অনেক জরুরি। মানুষিক ভাবে স্থির থাকা, সঠিক সময়ে পড়াশুনা করা। একটি গবেষণায় দেখা জানা যায় মানুষ ভোর চারটা  থেকে সকল আঁটটা, নয়টা পর্যন্ত যদি রোজ পড়তে পারে তা হলে সে অনেক ভালো ভাবে পড়াশুনা মনে রাখতে পারে। এবং এই সময় অনেক পড়াশুনা শেষ করা যায়।  এই টি আমাদের শরীরের একটি রাসায়নিক পদার্থ নিষ্কাশনের কারণে হয়ে থাকে। যা শুধু ভোর চারটা  থেকে সকল আঁটটা, নয়টা পর্যন্ত আমাদের শরীরি থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় পরিবারের করণীয়

নিজের বাচ্চাদের খাওয়া দাওয়া, ঘুমের দিক খেয়াল রাখা এক জন মা বাবা হিসেবে আপনাদের গুরু দায়িত্ব, তবে তার থেকে ও বড় গুরু দায়িত্ব হলো সন্তান কে একটি সুস্থ এবং শান্তিপূর্ণ মানুষিকতা দেওয়া। এই সময় অধিকাংশ মা বাবাই তাদের সন্তানদের অনেক মানুষিক চাপ দিয়ে থাকেন, অনেক ছাত্র ছাত্রীরা নিজের মা বাবার কাছেও শান্তিতে থাকতে পারেনা এই সময়। ব্যাপারটি এমন নয়,আপনার সন্তান একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তি না হতে পারলে আপনার সন্তানের জীবনের কোন মানে নেই।মা বাবা হিসেবে আপনার একটাই কাজ করণীয়, নিজের সন্তানকে একটি শান্তিপূর্ণ এবং সঠিক মানুষিকতা দিন। সে কোথাও হেঁড়ে গেলে যেনো দিন শেষ সে মনে করতে পারে যে সে আপনাদের কাছে জায়গা পাবে।
  1. দিন শেষে এটি একটি পরীক্ষা, এই একটি পরীক্ষা কারোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।
  2. বাসার পরিবেশ সুন্দর রাখবেন।
  3. বাসায় একটি সতেজ এবং প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরী করুন।
  4. নিজের সন্তানের সাথে সুন্দর ভাষায় এবং ভালো কথা বলুন
  5. তার নিজের পছন্দ অনুযায়ীই তাকে বিষয় নির্ধারণ করতে দিন।
আরো পড়ুনঃ-  পিএইচডি করার যোগ্যতা কি - পিএইচডি করার খরচ
আপনার সন্তানের মধ্যে দিয়ে আপনার স্বপ্নপূরণ করতে চাইবেন না। কারণ সে ও এক জন আলাদা মানুষ তার ও নিজের স্বপ্ন থাকতে পারে, হয়তো আপনার স্বপ্নের সাথে মিলে না। তাই আপনার সন্তানকে তার মতো গড়ে তুলুন।

লেখকের শেষ বক্তব্য

নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি – বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে কার্যকারী কিছু টিপস তুরে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি নতুনদের বিশ্ববিদ্যালের ভর্তির প্রস্তুতি – বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।

Leave a Comment