কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পরিশ্রম করেন তবুও যেন সফলতা নাগালের বাইরে, সফলতা যেন ধরা দিতে চায়না। সফলতা অর্জুনের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে নিঃসন্দেহে পরিশ্রম। কিন্তু পরিশ্রম যদি বুদ্ধিদীপ্ত না হয় এবং পরিশ্রমের মধ্যে বিভিন্ন ত্রুটি থাকে তবে সাফল্য ধরা দিবে না। সাফল্য অর্জনের জন্যপরিশ্রমের পাশাপাশি বুদ্ধি দিয়ে কিছু কিছু খারাপ অভ্যাস বাদ দিতে হবে। আপনি যদি পরিশ্রম না করেন এবং সাফল্য আনতে চেয়ে হতাশায় ভোগেন তবে সাফল্য আপনার থেকে দূরে সরে যাবে। সফলতা ধীরে ধীরে আপনার কাজের গতি কমিয়ে দিবে। হতাশা আপনাকে গ্রাস করবে। এমন কিছু কাজ আছে যেগুলা অফিসে করা বেমানান। সে সকল কাজ যদি আপনারা করেন তবে আপনাদের বস রাগান্বিত হবে এতে আপনার সফলতা অর্জনের চান্স অনেকটাই কমে যাবে।
আজাকের এই ব্লগে আমরা জানবো সফলতা কিভাবে আসে – জীবনে সফলতা অর্জনের উপায় সম্পর্কে কার্যকারী কিছু উপায়।
পোশাক পরিচ্ছদ
আপনি যদি পোশাকের প্রতি যত্নশীল না হন তবে আপনার থেকে যারা পোশাকের প্রতি যত্নশীল, স্মার্ট তাদের প্রতি বসের নজর যাবে। আপনার অফিসে বা যে জায়গায় আপনাকে জায়গা করে নিতে গেলে অবশ্যই সেই জায়গা অনুযায়ী মানানসই পোশাক পরিধান করতে হবে। তার পাশাপাশি অবশ্যই পরিষ্কার পরিছন্ন এবং যেন স্মার্ট লুক দেয় এমন গেট আপ নিয়ে থাকতে হবে। পোশাক যদি আপনার অপরিষ্কার হয়ে থাকে তবে আপনার অফিসের কলিক আপনার থেকে দূরে থাকবে। আপনার লুক যদি ভালো থাকে তবে অবশ্যই আপনার বস ম্যানেজার আপনার দিকেই আকর্ষিত হবে। তাই অবশ্যই পোশাক কমদামি হলেও কাজের জায়গার মানানসই হয় কোন ধরনের পোশাক পড়তে হবে।
সময়ের গুরুত্ব
কর্মক্ষেত্রে সফলতা আনতে চাইলে কাজের জায়গায় সময়মতো আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যারা ঠিক সময়ে অফিসে আসে তারা সবার কাছ থেকেই প্রশংসা তাই। তাছাড়া দেরি করে আসলে নিজের কাজগুলোই দেরি হয়ে যায় করতে। নিজের কাজ জমা থাকে। নিজের কাজ তাড়াতাড়ি করার জন্য এবং সফলতা অর্জনের জন্য টাইমলি অফিসে আসা খুবই জরুরী। কোথায় আছে Time And Tide Wait For None. তাই সময়ের কাজ সময়মতো করা গুরুত্বপূর্ণ এইজন্য অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ।
অলসতা দূর করা
শুধু কর্মক্ষেত্রে নয় যদি জীবনে সফলতা আনার ইচ্ছে থাকে তবে অবশ্যই অলসতা বাদ দিতে হবে। জীবন থেকে অলস শব্দটাকে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত। তাছাড়া অলস ভাবে বসে থাকলে কোন কাজ ঠিকমতো করা হয় না। অনেক কাজ একসাথে জমা হয়। এত কাজ একসাথে করতে গেলে ভুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে। সময়মতো কাজ করে নিলে কাজের চাপ কম থাকে এবং ভুলের সম্ভাবনা থাকে। সময়মতো কাজ করে দিলে অফিসের বস খুশি থাকে এতে করে সফলতার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাই। বসের খুশির জন্য হলেও অলসতা দূর করে একটু কাজ বেশি করে দেওয়াই ভালো।
অলসতা দূর করার দোয়া
আরবি: اللهم إني أعوذ بك من الهم والحزن والعجز والكسل والجبن والبخل
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি।
অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা, পেরেশানি, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে।
কম কথা বলার কৌশল
বাচাল স্বভাবের মানুষ কে কেউ পছন্দ করে না। অতিরিক্ত কথা বলা মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাই। তাই যেটুকু প্রয়োজন অতটুকুই কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। অফিস টাইমে কাজের কথা বলো উচিত। অফিসের বস এবং কর্মচারীদের ভালো ব্যবহার করতে হবে। কম কথা বলেও তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক সম্পূরক মেইনটেন করা উচিত। কর্মক্ষেত্রে নতুন কিছু শিখা এবং সুযোগ হলে নিজের আগ্রহের সাথে সেসব করা উচিত। এতে আপনার বুঝতে পারবে যে আপনি কতটা কাজের প্রতি আগ্রহ এবং দ্রুত শিখতে পারবেন। বেশি কথা বললে মানুষের ভুল করার বা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে যেন কম কথা বলো যাই। অল্প কথায় কাজ হয়ে গেলে বেশি কথার প্রয়োজন নেই।
সর্বদা সত্য কথা বলা
কর্মক্ষেত্রে সৎ থাকা খুবই জরুরী। কখনোই মিথ্যা বলার মত বড় একটা ভুল করবেন না। কারণ মিথ্যা আপনার মূর্তি নষ্টের জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও মিথ্যাবাদী কে কেউ পছন্দ কি করে না। এছাড়া ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য সত্য কথা বলো উচিত। সততা ছাড়া কোন কাজে সফলতার আশা যাই না। তাই নিজের সততা এবং ভালো ব্যবহার দিয়ে সবার মন জয় করা যেতে পারে। মিথ্যাবাদী কে কেউই পছন্দ করে না। একবার মিথ্যা কথা বললে তারপর থেকে এমনিতেই বিশ্বাস হারিয়ে যাই এতে আপনি আপনার বসের বিশ্বাস হারাতে পারেন। তাই সব সময় নিজের সত্যতা নিয়ে কর্মজীবন শুরু এবং শেষ করা উচিত। নিজেকে সত রাখলে কর্মচারীদের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
কর্ম পরিকল্পনা ছক
গুছিয়ে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হবে। কোন দিন কোনটার পরে কোন কাজ করবেন এবং কতটুকু কাজ করবেন, এগুলো রুটিন করে নিন।অফিস থেকে আপনাকে রুটিন দেওয়া হবে আর রুটিন ফলো করার জন্য আপনাকে নিজেকে নিজের রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। নিচের খাতা বা কম্পিউটারে নিজের রুটিন গুলো ফাইল করে গুছিয়ে রাখতে হবে। আগের দিন অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ঠিক করে রাখবেন পরবর্তী দিন অফিস শেষে কি কি কাজ করবেন। এবং এসেই আপনি সে কাজগুলো করা শুরু করে দিতে পারবেন।এভাবে গুছিয়ে কাজ করতে পারলে অনেক বেশি প্রডাক্টিভিটি সাথে কাজ পারবেন যা কর্মক্ষেত্রে হওয়ার সহজ হবে। অগোছালোভাবে কাজ করলে কখনোই আপনি নিজের মেধা ও দক্ষতার পুরোটা ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না । কাজেই যতটা সম্ভব পরিকল্পনা মাসিক গুছিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন।
অহেতুক কারো সময় নষ্ট করবেন না। সৌজন্যমূলক সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি খেয়াল রাখবেন যে আপনার দ্বারা কারো কাজের সময় নষ্ট না হয়। এতে সহকর্মীরা বিরক্ত এবং এড়িয়ে চলতে চাইবে। যদি কাউকে জরুরী কাজ করতে দেখেন তবে অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন। সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য লাঞ্চ অফিসের শেষের সময়ের ফ্রি টাইম।অফিসে পলিটিক্স ও বিবাদ এড়িয়ে চলা উচিত। সব সময় চেষ্টা করবেন একটু বেশি কাজ করার এবং ভালো পারফরমেন্স দেওয়া।
লেখকের শেষ বক্তব্য
সফলতা কিভাবে আসে – জীবনে সফলতা অর্জনের উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে কার্যকারী কিছু টিপস তুরে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি সফলতা কিভাবে আসে – জীবনে সফলতা অর্জনের উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।