আস্সলামু আলাইকুম। আজকের ব্লাগের টপিক হচ্ছে ফোন কেনার আগে যা জানা দরকার – ভালো মোবাইল চেনার উপায়। বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর জীবনে মোবাইল আমাদের ২৪ ঘন্টার সঙ্গী।
বলা যায় আমরা যতক্ষন ঘুমে থাকি সেই সময় বাদে আমরা প্রায় সব সময় কিছু না কিছু কাজের জন্যই হোক বা সময় কাটানোর জন্যই হোক আমরা আমাদের সখের মোবাইলটি ব্যবহার করে থাকি। আর এই সখের মোবাইল ফোনটি যদি বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারে তাহলে বিষয়টা অনেক হতাশার। তাই আজকের ব্লাগে আমরা জানবো নতুন মোবাইল কেনার আগে আমরা কোন কোন বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে দেখে নিব। তো আর কথা না বারিয়ে চলুন শুরু করা যাক।
মোবাইল ফোনের ব্রান্ড পছন্দ করা
সাধারনত মোবাইলের জন্য কোন বিষয় যাচাই করার আগেই আমাদের নিজস্ব একটা ব্রান্ড চয়েস থাকে। প্রতিটি ব্রান্ডেরই মোটামুটি লো/মিড/হাই রেঞ্জের ফোন বাজারে রয়েছে। কেননা মোবাইল কম্পানিগুলো ক্রেতাদের চাহিদা এবং বাজেটকে ফলো করেই মোবাইল ফোন বাজারজাত করে থাকে। আপনার ব্যাক্তি হিসাবে নিজস্ব ব্রান্ড পছন্দ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আপনার পছন্দে যে ব্রান্ডই থাকুকনা কেন আপনি চেষ্টা করবেন ভালো ভাবে যেনে শুনে তারপরে সিধান্ত নেওয়ার। তাছাড়া আপনার বাজেট যদি তুলনামুলক বেশি হয় তাহলে তো কোন কথায় নেয়, হাই রেঞ্জের যে মোবাইল কম্পানি গুলো রয়েছে সবগুলোই বর্তমানে ভালো পর্যায়ে রয়েছে।
মোবাইলের ফোনের বডি বিল্ড যাচাই করা
আমরা সাধারণত মোবাইল কেনার আগে এই বিষয়টাকে গুরত্ব দিয়ে থাকিনা। কেননা আমরা মোবাইল কিনতে গেলে প্রথমত মোবাইল দেখতে সুন্দর হলেই সেটার দিকে ঝুকে পড়ি। মোবাইলটি যে কিসের তৈরি সে বিষয়গুলো আর আমাদের কাছে প্রাধান্ন পায়না। মোবাইল ফোন সাধারনত প্লাস্টিক ও গ্লাস বডির হয়ে থাকে। লো বাজেটের ফোন গুলো সাধরণত প্লাস্টিক বডির হয়ে থাকে। তবে বাজেট বাড়ার সাথে সাথে মোবাইল ফোনের বিল্ড কোয়ালিটির পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাছাড়া অনেক সময়, মোবাইল কম্পানি গুলো আমাদের বোকা বানিয়ে থাকে। সুতরাং আমাদের উচিত মোবাইল ফোন কেনার আগে অবস্যই মোবাইলের বডি বিল্ড যাচাই বাচাই করে সিধান্ত নেওয়া উচিত।
মোবাইলের র্যাম/রোম
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক বিশ্বের সব কিছুয় আপডেট হচ্ছে। একটু খেয়াল কররে দেখবেন আগের মোবাইল গুলোয় ছবি তুললে ছবির সাইজ অনেক কম থাকতো কিংবা মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকোর্ড এর ক্ষেত্রে আগে ভিডিও সাইজ/কোয়ালিটি কম থাকলেও এখন অনেক মোবাইলে 4K থেকে 9K ভিডিও পর্যন্ত করা যায়। আর এই ফটো/ভিডিও গুলো রাখার জন্য মোবাইলে দরকার হয় অনেক রোম বা মেমেরীর। আগেকার দিনে যেমন ফটো, ভিডিও, সফটওয়ার ইত্যাদির ফাইল সাইজ কম ছিল ঠিক তেমনি আগেরকার মোবাইলের রোম বা মেমোরী গুলোও কম ছিল। সুতরাং বর্তমানে মোবাইলের রোম নির্বাচনে আমাদের অবস্যই সতর্ক থাকতে হবে। অন্য দিকে মোবাইলের পারফরমেন্স কিন্তু র্যামের উপর নির্ভর করে। মোবাইলে ইন্সলটকৃত সকল অ্যাপস কিন্তু র্যামের মাধ্যমেই কাজ করে থাকে। তাই মোবাইলের পারফরমেন্স যতটা ভাল চান অবস্যই র্যাম ও রোমের উপর খেয়াল রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
ক্যামেরা ও ভিডিও কোয়ালিটি
বর্তমান সময়ে আমরা প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে গভীড়ভাবে জড়িত। আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা সবাই ব্যাস্ত নিজ নিজ লাইফস্টাইল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত তুলে ধরতে। আপনার স্মৃতি ছবি বা ভিডিওর মাধ্যমে ধরে রাখতে মোবাইলের ক্যামেরা জুরি নেয়। কেননা মোবাইল আমাদের সারাক্ষনের সঙ্গী। তাছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট/প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা পাঠাতে বা সংরক্ষন করতে ভালো ক্যামেরা ফোনের প্রয়োজনীয়তা অনেক। তাই নতুন মোবাইল ফোন কেনার আগে সাধ্যের মধ্যে অবশ্যই ভালো ক্যামেরার ফোন কেনার চেষ্টা করবেন। অনেক সময় বেশি টাকা দিয়ে মোবাইলের ক্যামেরা ভালো হয় তেমনটা কিন্তু হয়না। সুতরাং সকল দিক বিবেচনা করে আপনি আপনার মুল্যবান অর্থ কাজে লাগিয়ে ভালো একটা মোবাইল কেনার সিদ্ধান্ত নিবেন।
মোবাইলের ডিসপ্লে
মোবাইলের ডিসপ্লে হচ্ছে মোবইলের অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি পার্ট। কেননা মোবাইলে আমাদের যেমনি কাজ করুকনা কেন ডিসপ্রেটা থাকে সবসময় আমাদের চোখের সামনে। যেমন ধরুন আপনি ক্যামেরা মেগাপিক্সেলের একটি মোবাইল কিনলেন, কিন্তু আপনার মোবাইলের ডিসপ্লে ভালো না হলে ছবির আউটপুট কিন্তু ভালো আসবে না। মোবইলের ডিসপ্লের অনেক ভাগ করছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলে: আই পি এস এবং এ্যামোলেড ডিসপ্লে। আই পি এস ডিসপ্লের আলো ধরন ক্ষমতা কম এবং চোখের জন্য অনেক ক্ষতিকর। সাধারনত লো বাজেটের ফোন গুলোতে আই পি এস ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয় এবং অন্যদিকে এ্যামোলেড ডিসপ্লের আলো ধরন ক্ষমতা অনেক বেশি এবং চোখের তুলনা মুলক ক্ষতি কম করে। তাছাড়া আই পি এস ডিসপ্লের চেয়ে এ্যামোলেড ডিসপ্লের কালার ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি, যাতে করে ছবি ও ভিডিও অনেক সুন্দর দেখায়।
মোবাইলের ব্যাটারি
মোবাইলের ব্যাটারি হচ্ছে প্রধান শক্তিদাতা। নতুন মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ন পার্ট এটি। কেননা আপনি কিধরনের কাজের জন্য আপনার মোবাইলটি ব্যবহার করবেন এটি হচ্ছে মুক্ষ বিষয়। যদি এমন হয় আপনার কাজের সময় আপনার সখের মোবাইলে চার্জ নেয় তাহলে তো অনেক দু:খ জনক ব্যাপার। সুতরাং আপনার কাজের ধরনের উপর সিদ্ধান্ত নিবেন কেমন ব্যাটারি ব্যকআপ আপনার দরকার এবং সেই অনুযায়ী নুতন মোবাইল ক্রয় করবেন।
মোবাইলের প্রসেসর
প্রসেসর হচ্ছে মোবাইলের প্রান। মোবাইলে যত ধরনের কাজ হয়ে থাকে সব কিছুর কমান্ড কিন্তু প্রসেসর থেকেই আছে। প্রসেসর এর দ্বারা প্রদানকৃত ডাটা অনুযায়ী মোবাইলের সকল হার্ডওয়ার এবং সফটওয়ার কাজ করে থাকে। তাই মোবাইল কেনার সময় অবশ্যই ভালো এবং আপডেট প্রসেসরের মোবাইল কিনবেন। প্রসেসর সম্পর্কে আপনার বিস্তার কোন জ্ঞান না থাকলে এ সম্পর্কে কারো সহযোগিতা গ্রহন করবেন অথবা পরবর্তী কোন পোষ্টে আমরা প্রসেসরে ধরন এবং কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।
লেখকের শেষ বক্তব্য
ফোন কেনার আগে যা জানা দরকার – ভালো মোবাইল চেনার উপায় সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে কার্যকারী কিছু টিপস তুরে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি ফোন কেনার আগে যা জানা দরকার – ভালো মোবাইল চেনার উপায় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।