বাম ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি – অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ

অন্ডকোষ ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আজ আমরা আপনাদের সাথে বাম ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি তার সব বিস্তারিত শেয়ার করবো। যাতে করে অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি তা জেনে আপনারা সচেতন থাকতে পারেন। অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি বা বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি বিস্তারিত জানতে নিচে পড়ুন।

বাম ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছেন যারা অন্ডকোষ ফোলা ও ব্যথাজনিত সমস্যার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন কিন্তু কারো সাথে আলোচনা করতে লজ্জাবোধ করেন। তাই আজকে বাম ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি এবং অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

অণ্ডকোষে ব্যথা কি?

অণ্ডকোষে ব্যথা বলতে অণ্ডথলি বা এর আশেপাশের অঞ্চলে যে কোনো ধরনের অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করাকে বোঝায়। এই ব্যথা হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং হঠাৎ করে শুরু হতে পারে বা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। অণ্ডকোষে ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন: আঘাত, সংক্রমণ, বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা।

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

বাম অণ্ডকোষে ব্যথার কারণগুলো সাধারণত ডান অণ্ডকোষে ব্যথার মতোই হয়ে থাকে। তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে যা বাম অণ্ডকোষে বেশি দেখা যেতে পারে। এই ব্যথা হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। নিচে বাম অণ্ডকোষে ব্যথার কিছু কারণ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ভ্যারিকোসিল বাম অণ্ডকোষে ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভ্যারিকোসিল হলো অণ্ডকোষের শিরাগুলো স্ফীত হয়ে যাওয়া। এটি সাধারণত পায়ের ভেরিকোজ ভেইনের মতো। ৯০% ক্ষেত্রে এটি বাম অণ্ডকোষে হয়। 

অণ্ডকোষের টর্শন ডান বা বাম উভয় অণ্ডকোষেই হতে পারে। এতে অণ্ডকোষের শিরা পেঁচিয়ে যায়, যার ফলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রধান লক্ষণ হলো হঠাৎ করে বাম অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা, যা খুব দ্রুত শুরু হয়। ব্যথা এত তীব্র হতে পারে যে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। 

এপিডিডাইমিটিস হলো অণ্ডকোষের পেছনের অংশে থাকা এপিডিডাইমিস নামক নালির প্রদাহ। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়। বাম অণ্ডকোষে সংক্রমণ হলে সেখানে ব্যথা, ফোলা, লালভাব এবং স্পর্শ করলে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। প্রস্রাবের সময়ও জ্বালাপোড়া হতে পারে। এর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন।

বাম অণ্ডকোষে সরাসরি কোনো আঘাত লাগলে ব্যথা হতে পারে। খেলাধুলা করার সময় আঘাত লাগা বা কোনো দুর্ঘটনার কারণে এই ধরনের ব্যথা হয়। আঘাতের পর ব্যথা তীব্র হতে পারে এবং ধীরে ধীরে কমে আসে। যদি ব্যথা না কমে বা ফোলাভাব দেখা যায়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ইনগুইনাল হার্নিয়া বা কুঁচকির হার্নিয়া হলে অন্ত্রের কিছু অংশ পেটের দুর্বল পেশির মধ্য দিয়ে বাম অণ্ডথলির দিকে নেমে আসতে পারে। এর কারণে বাম অণ্ডকোষে চাপ এবং ব্যথা অনুভূত হতে পারে। হাঁচি বা কাশি দিলে এই ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

যদি বাম অণ্ডকোষে কোনো ধরনের ব্যথা হয়, বিশেষ করে যদি তা হঠাৎ করে তীব্র হয়, তাহলে দেরি না করে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা খুব জরুরি। কারণ কিছু গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে সময়মতো চিকিৎসা না করালে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

অনেক সময় ডান অণ্ডকোষে ব্যথার একটি বড় কারণ হতে পারে হার্নিয়া। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে পেটের ভেতরের কোনো অংশ অণ্ডকোষের মধ্যে চলে আসে। এর ফলে ডান অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা ও ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। হার্নিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করানো জরুরি, কারণ সময়মতো এর সমাধান না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ-  দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় - গ্যাসট্রিক দূর করার উপায়

এছাড়াও, মূত্রনালীর সংক্রমণ, প্রোস্টেটের প্রদাহ বা টেস্টিকুলার ক্যান্সারের মতো সমস্যার কারণেও ডান অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে, যদি ডান অণ্ডকোষে ফোলাভাব বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

টেস্টিকুলার ক্যান্সার সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে কিছুক্ষেত্রে এটি অস্বস্তি ও ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাই কোনো ধরনের অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত।

অণ্ডকোষের ব্যথা, বিশেষত ডান অণ্ডকোষে ব্যথা, অবহেলা করা উচিত নয়। এটি শারীরিক এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে, তাই, অণ্ডকোষে ব্যথা হলে বা কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

এপিডিডাইমাইটিস এর কারণে: বাম অথবা ডান উভয় অণ্ডকোষে ব্যথার একটি কারণ হলো এপিডিডাইমিটিস। এটি হলো এপিডিডাইমিসের একটি সংক্রমণ। এপিডিডাইমিস হলো সেই অঙ্গ, যেখানে শুক্রাণু শরীর থেকে বের হওয়ার আগে পরিপক্ক হয়।

এপিডিডাইমাইটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেঃ

  • ব্যথা যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়
  • অণ্ডকোষের ব্যথার জায়গায় স্পর্শ করলে গরম অনুভব হয়
  • ফোলা ভাব
  • যৌনবাহিত কিছু সংক্রমণ, যেমন: ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া, এপিডিডাইমিটিসের কারণ হতে পারে।
  • মূত্রনালীর সংক্রমণও এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে।

কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণে: কিডনিতে পাথরের কারণে ব্যথা হতে পারে, যা অণ্ডকোষ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। কিডনি পাথরের ব্যথার সাথে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

  • প্রস্রাব এ রক্ত
  • প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া
  • বমি বমি ভাব
  • লিঙ্গের ওপরে ব্যথা
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • বমি হওয়া

অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ দিয়েও যদি ভালো না হয় তাহলে অপারেশন করতে হতে পারে। আর তখন অন্ডকোষে ব্যাথা, জ্বর বা স্রাব হতে পারে তখন তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করা উচিত।

অর্কাইটিস এর কারণে: অর্কাইটিস হলো অণ্ডকোষের সংক্রমণজনিত ব্যথা। এপিডিডাইমিটিসের চিকিৎসা না করলে এটি হতে পারে। অর্কাইটিসের লক্ষণগুলো হলো:

  • ক্লান্তি
  • জ্বর
  • বমি বমি ভাব
  • টেস্টিকুলার ব্যথা
  • এক বা উভয় অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া

যদি ডান অণ্ডকোষে কোনো ধরনের ব্যথা হয়, বিশেষ করে যদি তা তীব্র হয় বা হঠাৎ করে শুরু হয়, তাহলে জরুরি ভিত্তিতে একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা না করালে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। একজন ডাক্তার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দিতে পারেন। যখন কোনো ভাইরাস এর কারণে অর্কাইটিস হয় তখন তারা অন্যরকম ভাবে অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করে ।

বাম ও ডান অন্ডকোষে ব্যথা হলে করণীয়

বাম ও ডান অণ্ডকোষে ব্যথা হলে কী করবেন, তা নির্ভর করে ব্যথার কারণ এবং তীব্রতার ওপর। কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা নিজে থেকেই সেরে যায়, কিন্তু কিছু গুরুতর কারণের জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। তাই ব্যথা হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি যা প্রাথমিক করণীয় হিসেবে বিবেচিতঃ

বিশ্রাম: ব্যথা হলে যেকোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে ভারী জিনিস তোলা বা দৌড়ানোর মতো কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। বিশ্রাম নিলে অণ্ডকোষের উপর চাপ কমে এবং ব্যথা ধীরে ধীরে কমে আসতে পারে।

আরো পড়ুনঃ-  দাউদ কিভাবে ভালো হয় - দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা

ঠাণ্ডা সেঁক: একটি পরিষ্কার কাপড় বা তোয়ালেতে কিছু বরফ জড়িয়ে ব্যথার জায়গায় ১০-১৫ মিনিটের জন্য হালকাভাবে রাখুন। এটি ফোলা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে, যার ফলে ব্যথা কমবে। খেয়াল রাখবেন, বরফ যেন সরাসরি ত্বকে না লাগে, এতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সাপোর্টিং আন্ডারওয়্যার: আরামদায়ক এবং কিছুটা টাইট আন্ডারওয়্যার বা স্পোর্টস গার্ড ব্যবহার করলে অণ্ডকোষের নড়াচড়া কম হয়, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্যথা বাড়ানো থেকে রক্ষা করে এবং অণ্ডকোষকে সুরক্ষিত রাখে।

গরম সেঁক (হালকা ব্যথা হলে): যদি ব্যথা খুব হালকা হয় এবং কোনো ফোলা বা লালভাব না থাকে, তাহলে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে পেশি শিথিল হয় এবং ব্যথা কমে। তবে যদি কোনো সংক্রমণ বা ফোলা থাকে, তাহলে গরম সেঁক ব্যবহার করা উচিত নয়।

আরামদায়ক পোশাক: ঢিলেঢালা এবং আরামদায়ক পোশাক পরুন। টাইট প্যান্ট বা জিন্স পরা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে অণ্ডকোষের ওপর চাপ পড়তে পারে এবং ব্যথা বাড়তে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পান: পানি শরীরকে সচল রাখতে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যদি সংক্রমণের কারণে ব্যথা হয়, তাহলে বেশি করে পানি পান করা উপকারী হতে পারে।

ব্যথানাশক ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামলের মতো সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন। তবে অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধ না খাওয়াই ভালো, কারণ এগুলো কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়াতে পারে।

অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

অন্ডকোষে ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা এই ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অন্ডকোষে ব্যাথা ঘরোয়া চিকিৎসা দেয়ার পর দেওয়ার কয়েক দিন পর যদি ব্যথা না কমে তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বরবর্ণ হতে হবে। তাহলে চলুন এ প্রশ্নের মাধ্যমে জেনে নিন অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। 

নিম্নে অন্ডকোষ ব্যথা করা চিকিৎসা আলোচনা করা হলো-

অলিভ অয়েলঃ কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল এবং ৮ থেকে ১০ ফোঁটা মাছের তেল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এই তেলের মিশ্রণ কয়েক ফোঁটা করে অণ্ডকোষে হালকাভাবে মালিশ করুন। এভাবে আট থেকে দশ দিন ব্যবহার করলে অণ্ডকোষের ফোলা ও ব্যথা কমে যাবে।

রসুনঃ আধা অথবা এক চা চামচ রসুন ও কয়েকটা নিমের পাতা পিষে পেস্ট করে নিন। তারপর সেই পেষ্টে এক টেবিল চামচ তিলের বীজের তেল ও একটু সামান্য পরিমাণ পেট্রোলিয়াম জেল নিন। এরপর সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিশে অন্ডকোষে হালকা করে লাগান। রাত্রে ঘুমানোর আগে এইভাবে তিন চারদিন লাগালে অন্ডকোষের ব্যথা থেকে অনেকটা খারাপ মিলবে।

পান পাতা ও মধুঃ একটি পরিষ্কার পানের পাতায় সামান্য মধু মাখিয়ে নিন। এরপর পাতাটি ব্যথার জায়গায় লাগিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা রাখুন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে জায়গাটি ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েক দিন ব্যবহার করলে অণ্ডকোষের ব্যথা অনেকটাই কমে আসবে।

কলার ফুলঃ একটি কলা কয়েকদিন রোদে শুকিয়ে নিন। এরপর সেই শুকনো কলার ফুলটি গুঁড়ো করে পাউডার তৈরি করুন। এক লিটার পানির একটি পাত্রে এই পাউডারের এক চা চামচ পরিমাণ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

আরো পড়ুনঃ-  খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ

এরপর মিশ্রণটি একদিন ভিজিয়ে রাখুন এবং পরের দিন খালি পেটে সেবন করুন। চেষ্টা করবেন, যেদিন এই মিশ্রণটি পান করবেন, সেদিন অন্য কিছু না খেতে। পরের দিন পারলে খাঁটি দুধ পান করতে পারেন। কলার ফুলের এই পাউডার আপনার অণ্ডকোষের সংক্রমণ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

বরফ ব্যবহারঃ অণ্ডকোষে ব্যথার কারণে আপনি বরফের সেঁক দিতে পারেন। বরফের সেঁক দিলে ব্যথা অল্প সময়ের জন্য অনেকটা কমে আসে। যতক্ষণ না আপনি ডাক্তারের কাছে যেতে পারছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এভাবে সেঁক দিতে পারেন।

হলুদঃ ঘোলের সঙ্গে এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। দেখবেন অণ্ডকোষের ব্যথা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।

মনে রাখবেন, অণ্ডকোষের ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই যদি ঘরোয়া উপায়ে ব্যথা না কমে বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ

অণ্ডকোষে ব্যথার জন্য ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ব্যথার ধরন এবং এর পেছনের কারণ অনুযায়ী ওষুধ ভিন্ন হতে পারে। চিকিৎসক পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

তবে, কিছু সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ আছে যা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ব্যথার জন্য এটি বেশ কার্যকর। এটি ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে।
  • আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন-এর মতো ওষুধগুলো প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এপিডিডাইমিটিসের মতো প্রদাহজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে এগুলো বেশ কার্যকর হতে পারে। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এগুলো গ্রহণ করা উচিত নয়, বিশেষ করে যদি আপনার পাকস্থলী বা কিডনির কোনো সমস্যা থাকে।
  • যদি ব্যথা কোনো সংক্রমণের কারণে হয়, যেমন এপিডিডাইমিটিস, তাহলে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেবেন। 
  • কখনও কখনও অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

অণ্ডকোষের ব্যথা যদি হঠাৎ করে তীব্র হয় এবং এর সঙ্গে বমি, জ্বর, বা ফোলাভাবের মতো লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে এটি অণ্ডকোষের টর্শন-এর মতো একটি জরুরি অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এমন অবস্থায় কোনো ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ না নিয়ে দ্রুত নিকটস্থ জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করুন। কারণ, এই ধরনের সমস্যায় সময়মতো চিকিৎসা না নিলে অণ্ডকোষটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, কোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখকের শেষ মতামত

বাম বা ডান, যেকোনো অণ্ডকোষে ব্যথা হলে এর পেছনের কারণ জানা খুব জরুরি। যদিও অনেক সময় হালকা আঘাত বা সংক্রমণের কারণে ব্যথা হতে পারে, তবে কিছু গুরুতর রোগ যেমন অণ্ডকোষের টর্শন বা হার্নিয়া-এর মতো সমস্যার কারণেও ব্যথা হতে পারে, যার জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।

যদি আপনার অণ্ডকোষে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা হয়, ফোলা বা লালভাব দেখা যায়, জ্বর আসে, কিংবা ব্যথা কয়েক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে থাকে, তাহলে দেরি না করে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, কিছু গুরুতর সমস্যায় সময়মতো চিকিৎসা না করলে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। মনে রাখবেন, কোনো ধরনের ব্যথাকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো চিকিৎসা আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment