আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন – যোগ্যতা ও সুদের হার (আপডেট তথ্য)

আম্বালা ফাউন্ডেশন সম্পর্কে কম বেশি আমি ও আপনি নামটি পরিচিত। আম্বালা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে ক্ষুদ্রলোন প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র ও নিম্ন-আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন একটি উল্লেখযোগ্য নাম। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১৯৯৪ সাল থেকে আম্বালা ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্রলোন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন

আজকের এই আর্টিকেলে আজ আমরা আম্বালা ফাউন্ডেশনের লোন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এছাড়া আলোচনাতে রয়েছে আম্বালা ফাউন্ডেশনে কী ধরনের লোন পাওয়া যায়,এর যোগ্যতা, সুবিধা, অসুবিধা ও যোগাযোগের তথ্য। আপনি যদি আর্থিক সহায়তার অনুসন্ধান করে থাকেন থাকেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

আম্বালা ফাউন্ডেশন কী

আম্বালা ফাউন্ডেশন হলো বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (NGO)। সহজ কথায়, এটা এমন একটি সংগঠন যা লাভের উদ্দেশ্যে কাজ করে না, বরং দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।

আম্বালা ফাউন্ডেশন PKSF (পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন) এর মতো বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের ক্ষুদ্রলোন কার্যক্রম পরিচালনা করে। তারা নিজেদের তহবিল থেকেও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে।

সহজ কথায়, আম্বালা ফাউন্ডেশন হলো একটি সংস্থা যা শুধু টাকা ধার দেয় না, বরং মানুষের জীবনকে সামগ্রিকভাবে উন্নত করার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অধিকার ও পরিবেশের মতো বিভিন্ন খাতেও কাজ করে।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন কী

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন মানে হলো, আম্বালা ফাউন্ডেশন নামক একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে নেওয়া ছোট আকারের লোন, যা মূলত গ্রামীণ বা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়। এটা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মতো বড় লোন বা ব্যক্তিগত লোন নয়, বরং ক্ষুদ্রলোন ধারণার ওপর ভিত্তি করে কাজ করে।

সহজ কথায়, আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন হলো সেইসব মানুষের জন্য একটা সুযোগ, যারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চান, কিন্তু প্রয়োজনীয় পুঁজি নেই। এটা তাদের হাতে ছোট একটা আর্থিক সহায়তা তুলে দেয়, যাতে তারা নিজেদের আয় রোজগারের পথ খুঁজে নিতে পারেন এবং দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের প্রকারভেদ

আম্বালা ফাউন্ডেশন, একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (NGO) হিসেবে, মূলত ক্ষুদ্রলোন কার্যক্রমের ওপর বেশি জোর দেয়। তাদের লোনের প্রকারভেদগুলো তৈরি করা হয়েছে সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের বিভিন্ন ধরনের আর্থিক চাহিদা মেটানোর জন্য। এগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো বহুমুখী লোন হয় না, বরং নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য পূরণের জন্য লোন প্রদান করা হয়।

আম্বালা ফাউন্ডেশন তাদের ক্ষুদ্রলোন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন নামে লোন অফার করে থাকে, যা নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য পূরণ করে। এখানে প্রধান কিছু প্রকারভেদের কথা বলা হলো:

  • জাগরণ: এটি আম্বালা ফাউন্ডেশনের সাধারণ ক্ষুদ্রলোন কর্মসূচি, যা শহর ও গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য তৈরি।
  • অগ্রসর: এই লোনটি বিশেষভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য। যারা ছোট আকারের ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং নিজেদের উদ্যোগে কর্মসংস্থান তৈরি করতে চান, তাদের জন্য এটি সহায়ক।
  • সুফলন: এটি একটি কৃষি-ভিত্তিক ক্ষুদ্রলোন কর্মসূচি। যেহেতু বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ, তাই কৃষকদের জন্য বিশেষভাবে এই লোন চালু করা হয়েছে।
  • সাহস: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এটি একটি বিশেষ ক্ষুদ্রলোন কর্মসূচি। বাংলাদেশ
  • বুনিয়াদ: এটি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও), যারা ক্ষুদ্রলোন ও অন্যান্য সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে।
  • হাউজিং লোন: এটি বাড়ি কেনা, তৈরি করা বা সংস্কারের জন্য নেওয়া লোন, যা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে।
  • পানি লোন ও স্যানিটেশন লোন: এই লোন মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকে। 

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের যোগ্যতা

আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা বা শর্ত পূরণ করতে হয়। যেহেতু তারা মূলত গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে, তাই তাদের যোগ্যতাগুলোও সেই প্রেক্ষাপটেই তৈরি করা হয়েছে। একজন সাধারণ মানুষের মতো করে বলতে গেলে, তারা আসলে কিছু বিষয় দেখে নিশ্চিত হতে চায় যে, আপনি লোন নিয়ে সেটা কাজে লাগাতে পারবেন এবং সময়মতো ফেরত দিতে পারবেন। আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন নিতে হলে আপনার যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে:

আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক এনজিও লোন পাওয়ার যোগ্যতা

সদস্য হতে হবে: আম্বালা ফাউন্ডেশন এককভাবে কাউকে লোন দেয় না। আপনাকে প্রথমে তাদের কোনো একটি কেন্দ্রের (গ্রুপ) সদস্য হতে হবে। এই কেন্দ্রগুলো সাধারণত ১০ থেকে ২৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।

সঞ্চয়ী মনোভাব থাকতে হবে: লোন পাওয়ার আগে আপনাকে নিয়মিতভাবে সঞ্চয় করতে উৎসাহিত করা হবে। এই সঞ্চয় জমা দেওয়া লোনের একটি অংশ এবং এটি আপনার আর্থিক প্রমাণ হিসেবে দেখা হয়।

আয়বর্ধক কাজের পরিকল্পনা থাকতে হবে: লোন নিয়ে আপনি কী করবেন, সে সম্পর্কে আপনার একটি স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কেননা এই ফাউন্ডেশন আয়বর্ধক কাজের জন্য লোন দেয়। যেমন:

  • ছোট ব্যবসা 
  • কৃষি কাজ 
  • হস্তশিল্প বা কুটির শিল্প
  • অন্যান্য ছোটখাটো উদ্যোগ যা আপনার আয় বাড়াতে সাহায্য করবে।

নিয়মিত মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে: কেন্দ্রের সদস্য হিসেবে আপনাকে সাপ্তাহিক বা মাসিক মিটিংগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত থাকতে হবে। 

পরিবারের সমর্থন থাকতে হবে: বিশেষ করে নারী সদস্যদের ক্ষেত্রে, অনেক সময় স্বামী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সমর্থন থাকা জরুরি। লোনের আবেদনে স্বামী/স্ত্রীর যৌথ ছবি এবং তাদের সম্মতি চাওয়া হতে পারে। এর কারণ হলো, পরিবারিক সমর্থন থাকলে লোন পরিশোধের প্রক্রিয়া সহজ হয়।

বয়স এবং কর্মক্ষমতা: সাধারণত, লোন গ্রহীতাকে কর্মক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক হতে হয়। অর্থাৎ, লোন গ্রহণকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।

অন্যান্য লোন থাকা যাবে না: অনেক সময়, যদি আপনার অন্য কোনো এনজিও বা প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া লোন থাকে, তাহলে আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন পেতে সমস্যা হতে পারে। তারা নিশ্চিত হতে চায় যে, আপনি অতিরিক্ত লোনের বোঝায় জর্জরিত নন।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন নিতে হলে আপনাকে কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যেহেতু এটা ক্ষুদ্রলোন, তাই ব্যাংকের মতো অনেক জটিল কাগজপত্র লাগে না, তবে কিছু মৌলিক জিনিসপত্র অবশ্যই দরকার হয়। তারা মূলত আপনার পরিচয়, আপনি সমিতির সদস্য কিনা, এবং আপনি যে কাজটা করবেন, তার একটা সাধারণ ধারণা চায়। চলুন, বিস্তারিত জেনে নিই কী কী কাগজপত্র লাগে:

  • আপনার এনআইডি কার্ডের একটা ফটোকপি লাগবে।
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • আয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বা বেতনের সনদ
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি (বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বা পানির বিলের)
  • আপনি যে আম্বালা ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রের (গ্রুপ) একজন সদস্য, তার প্রমাণ লাগবে।
  • অনেক সময় পারিবারিক লোনের ক্ষেত্রে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর এনআইডি ও ছবিও চাওয়া হতে পারে। এটা নির্ভর করে লোনের ধরন এবং আম্বালা ফাউন্ডেশনের নিয়মের ওপর।
  • আপনার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে নেওয়া নাগরিকত্ব সনদের একটা ফটোকপি চাইতে পারে।

সকল কাগজপএ যদি সঠিক হয় ও ললোনের জন্য উপযুক্ত হলে দ্রুত লোন পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হলে আপনাকে আম্বালা ফাউন্ডেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা এ বিষয়ে সাহায্য করবেন।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন আবেদন পদ্ধতি

আম্বালা ফাউন্ডেশনে লোন আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন:

আরো পড়ুনঃ শক্তি ফাউন্ডেশন লোন আবেদন পদ্ধতি

  • শাখা অফিসে যোগাযোগ: আম্বালা ফাউন্ডেশন এর স্থানীয় শাখায় যোগাযোগ করে লোন আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করুন।
  • লোন আবেদন ফরম পূরণ: আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন আবেদন ফরম সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। 
  • ডকুমেন্টস সংগ্রহ: আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংযুক্ত করুন। 
  • আবেদনপত্র জমা দেওয়া: পূরণকৃত আবেদনপত্র এবং ডকুমেন্টস আম্বালা ফাউন্ডেশন এর নির্ধারিত শাখায় জমা দিন।
  • যাচাই-বাছাই: আম্বালা ফাউন্ডেশন আপনার আবেদনপত্র এবং ডকুমেন্টস যাচাই করবে। 
  • লোন অনুমোদন ও বিতরন: যাচাই-বাছাই শেষে আপনার আবেদন যদি উপযুক্ত বিবেচিত হয়, তাহলে লোন অনুমোদন করা হবে। লোন অনুমোদন হলে, আম্বালা ফাউন্ডেশন আপনাকে লোন বিতরণ করবে।
  • পরিশোধ: লোন পরিশোধের নিয়মাবলী এবং সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সেই অনুযায়ী লোন পরিশোধ করুন।

এই সাধারণ ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি আম্বালা ফাউন্ডেশনে লোন আবেদন করতে পারেন।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের সুদের হার

আম্বালা ফাউন্ডেশনের সুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংক ও MRA এর নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। সাধারণত ১০% থেকে ১৮% এর মধ্যে সুদের হার হতে থাকে। তবে সুদের হার মূলত লোনের ধরন, পরিমাণ এবং পরিশোধের সময়ের ওপর নির্ভর করে। 

আরো পড়ুনঃ শক্তি ফাউন্ডেশন লোনের সুদের হার

যা সরল সুদ হিসেবে গণনা করা হয়। তবে সুদের হার পরিবর্তনশীল সেহেতু আম্বালা ফাউন্ডেশনের শাখা অফিস থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন কত টাকা পাওয়া যায়?

আম্বালা ফাউন্ডেশনের লোনের পরিমাণ সাধারণত ১০ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, তবে এটি লোনের ধরন এবং আবেদনকারীর যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত প্রথমবারের জন্য ছোট পরিমাণে লোন দেওয়া হয়। সফলভাবে পরিশোধের পর বড় লোনের জন্য আবেদন করা যায়। তবে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী লোনের অর্থের পরিমান কম বা বেশি হতে পারে।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের সুবিধা ও অসুবিধা

আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে লোন নেওয়াটা গ্রামীণ বা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য অনেক সময় দারুণ একটা সুযোগ হয়। তবে, যেকোনো আর্থিক সুবিধার মতোই এর কিছু ভালো দিক আছে, আবার কিছু বিষয় আছে যেগুলো আপনার জন্য একটু চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। চলুন, আম্বালা ফাউন্ডেশন লোনের সুবিধা আর অসুবিধাগুলো সহজভাবে জেনে নিই।

সুবিধা

সহজে লোন পাওয়ার সুযোগ: ব্যাংকের মতো অত কাগজপত্র বা কঠিন নিয়মকানুন নেই। যারা হয়তো ব্যাংকে গিয়ে লোন পেতে পারেন না, তাদের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ।

ক্ষুদ্র লোনের উদ্দেশ্য পূরণ: এটা মূলত ছোট আকারের লোন, যা দিয়ে একটা মানুষ খুব সহজে অল্প পুঁজি খাটিয়ে আয় রোজগার শুরু করতে পারে।

দলবদ্ধতার সুবিধা: লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে একটা কেন্দ্রের (গ্রুপ) সদস্য হতে হয়। এর ফলে আপনি একা নন, আপনার দলের অন্য সদস্যরাও আপনাকে সাপোর্ট দেয়। 

সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা: লোন নেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত সঞ্চয় জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক, যা মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের একটা ভালো অভ্যাস তৈরি করে। এই সঞ্চয় ভবিষ্যতে আপনার নিজস্ব পুঁজি হিসেবে কাজে লাগে।

সহজ কিস্তি পরিশোধ: কিস্তিগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক হওয়ায় পরিশোধ করা সহজ হয়। ছোট ছোট অংকে টাকা শোধ করলে একবারে বড় চাপ পড়ে না। এখন ডিজিটাল পাশবুক অ্যাপ বা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই কিস্তি পরিশোধের সুবিধা আছে, যা সময় বাঁচায় আর ঝামেলা কমায়।

অসুবিধা

সুদের হার তুলনামূলক বেশি: বাণিজ্যিক ব্যাংকের বড় লোনের তুলনায় ক্ষুদ্রলোনের সুদের হার সাধারণত বেশি হয়। যদিও এটি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির নিয়ম মেনে চলে, তবুও নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এই হার বেশি মনে হতে পারে। (সাধারণত ১৪-২৪% বার্ষিক)।

সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধের চাপ: সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধের নিয়মটা অনেকের জন্য সুবিধাজনক হলেও, যাদের ব্যবসা থেকে নিয়মিত আয় আসে না বা যাদের আয় অনিয়মিত, তাদের জন্য এটা একটা চাপ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সাপ্তাহিক ভিত্তিতে কিস্তি জোগাড় করা কঠিন হতে পারে।

ছোট লোনের পরিমাণ: লোনগুলো সাধারণত ছোট অংকের হয় (যেমন ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার)। বড় কোনো উদ্যোগ বা ব্যবসার জন্য এই পরিমাণ টাকা যথেষ্ট নাও হতে পারে।

দলগত দায়বদ্ধতা: যদিও দলবদ্ধতা একটি সুবিধা, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি একটি অসুবিধাও হতে পারে। যদি আপনার দলের অন্য কোনো সদস্য সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করে, তাহলে ব্যাংক বা এনজিওর পক্ষ থেকে পুরো দলের ওপর চাপ আসতে পারে, যা সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে।

অতিরিক্ত নিয়মের বাধ্যবাধকতা: নিয়মিত মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা, সঞ্চয় জমা দেওয়া – এই নিয়মগুলো অনেক সময় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বাড়তি বাধ্যবাধকতা তৈরি করে, বিশেষ করে যারা খুব ব্যস্ত থাকেন বা যাদের যাতায়াতের সমস্যা আছে।

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন একটি দরিদ্রবান্ধব উদ্যোগ, যা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে। এর সুবিধাগুলো যেমন মানুষকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করে, তেমনি কিছু অসুবিধাও আছে যা লোন নেওয়ার আগে ভালোভাবে বিবেচনা করা উচিত। আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি এবং ব্যবসা বা প্রকল্পের ধরন বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

লেখকের শেষ মতামত

আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন বাংলাদেশের নিম্ন-আয়ের মানুষের জন্য একটি দারুণ সুযোগ। এটি শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং সামাজিক উন্নয়ন ও আত্মনির্ভরতার পথও খুলে দেয়। তবে লোন নেওয়ার আগে আপনার আর্থিক সক্ষমতা এবং পরিশোধের পরিকল্পনা বিবেচনা করুন। 

আপনি যদি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে বা জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে চান, তাহলে আজই নিকটস্থ আম্বালা ফাউন্ডেশন শাখায় যোগাযোগ করুন। আপনার স্বপ্ন পূরণের প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে এই লোন! আম্বালা ফাউন্ডেশন লোন দেওয়ার আগে আপনার আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি আপনার উদ্যোগ এবং সেটির সফলতার সম্ভাবনা যাচাই করে। তারা চায় আপনি লোন নিয়ে শুধু খরচ না করে, বরং তার মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের জন্য একটি টেকসই আয়ের পথ তৈরি করুন।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment