ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো – এসইও শিখতে কতদিন লাগে

এসইও শেখাটা হচ্ছে একটা অনবরত চলমান প্রক্রিয়া। কেননা, সার্চ ইঞ্জিন অ্যালগোরিদম প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। আর পরিবর্তিত এই অ্যালগরিদমের সাথে আপনাকেও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্ট্রাটেজি ফলো করতে হবে। এসইও শেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধৈর্য, অনুশীলন এবং কৌতূহল। নিয়মিত শিখুন, পরীক্ষা করুন এবং ফলাফল থেকে শিখুন।

ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো

কিন্তুু আপনি যদি মনে করেন কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসইও মাস্টার হয়ে যাবেন, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। কারণ, এসইও শিখতে কত সময় লাগবে তা আপনার আগের জ্ঞান, শেখার ইচ্ছা শক্তি, কত সময় দিতে পারবেন এবং কোন পদ্ধতিতে শিখছেন তার উপর নির্ভর করে।

এসইও কি

এসইও এর পূর্ণরূপ হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন । যখন কেউ কিছু খোঁজে, তখন সার্চ ইঞ্জিন (যেমন গুগল) একটি তালিকা তৈরি করে। এসইও-এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে সেই তালিকার উপরের দিকে নিয়ে আসা যায়, যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পায়।  এসইও-এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে বেশি ভিজিটর বা দর্শক আসা শুরু করে, যা আপনার ওয়েবসাইটকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। 

এসইও-এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টকে নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড বা শব্দ ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করতে পারেন, যা আপনার টার্গেট করা ভিজিটরদের কাছে আপনার ওয়েবসাইটকে আরও বেশি দৃশ্যমান করে। 

seo এর কাজ কি

এসইও এর মূল কাজগুলো নিচে উল্লেখ করা হলঃ

  • আপনার ওয়েবসাইট এর সব বিষয়বস্তু দৃশ্যমান হবে।
  • প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ ইঞ্জিনের টপ পজিশনে থাকবে।
  • ওয়েবসাইটে আশানুরুপ ট্রাফিক।
  • ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্ট সেল বৃদ্ধি।
  • অনলাইনে নিজস্ব ব্রান্ডিং তৈরি করা।
  • ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা।

তো আপনি যখন আপনার এসইও করবেন তখন আপনি কি কি বেনিফিট পাবেন সেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই বেনিফিট পাওয়ার জন্য সঠিকভাবে এসইও করার কোনো বিকল্প নেই।

এসইও কত প্রকার ও কি কি?

আমরা অর্গানিক ভাবে ভিজিটর পাওয়ার জন্য যে এসইও করি, তাকে মোট ০৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়। আর সেই এসইও এর প্রকারভেদ গুলো হলো,

  • অন পেজ এসইও (On page SEO)
  • অফ পেজ এসইও (OFF page SEO)
  • টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)

এসইও করার জন্য আপনাকে ভিন্ন ধরনের কাজ করতে হবে। তবে এসইও করার সেই সব গুলো কাজ অন পেজ ও অফ পেজ এসইও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো

ঘরে বসে এসইও শিখতে হলে আপনাকে কতগুলি স্ট্র্যাটেজি মানতে হবে। আর সেই এসইও স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল নিয়ে আমরা এখন বিস্তারিত আলোচনা করবো।

১. বিভিন্ন SEO টাইপ সম্পর্কে জানা

এখন আপনি SEO কি জানেন, পরবর্তী ধাপ হল এটি কিভাবে কাজ করে তা শিখতে হবে। একটি ওয়েবসাইট অপ্টিমাইজ করার সময় 255 টিরও বেশি এসইও র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর রয়েছে এবং রেফারেন্সের সহজতার জন্য সেগুলিকে কয়েকটি সাব-প্রসেসে বিভক্ত করা হয়েছে।

  • অন-পেজ এসইও – কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন, ইমেজ এসইও, ইন্টারনাল লিংক ইত্যাদি কাজ গুলি অনপেজ এসইওর অন্তর্গত। অনপেজ এসইও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটার মাধ্যমে আমরা কিওয়ার্ড-এর জন্য কোন একটি পেজের content অপ্টিমাইজেশন করতে পারি। নিশ্চিত করতে পারি যে, কোন পেজ থেকে কোন কিওয়ার্ডে রাঙ্ক করবে।
  • অফ-পেজ এসইও – ওয়েবসাইটকে গুগলের প্রথম পৃষ্ঠায় আনতে অফপেজ এসইও করতে পারা জরুরী। কোন ওয়েবসাইকে রাঙ্ক করাতে ব্যাকলিংক, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্তাদির মতো যে কাজ করা হয় সেগুলকে অফ পেজ এসইও বলে।
  • টেকনিক্যাল এসইও – টেকনিক্যাল এসইও সার্চ ইঞ্জিনগুলো আপনার ওয়েবসাইটকে সহজে ক্রল, ইনডেক্স এবং র‍্যাঙ্ক করতে পারে। এটি সরাসরি কন্টেন্টের মান বা ব্যাকলিংকের সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং ওয়েবসাইটের ভেতরের গঠন এবং সার্ভার-সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে।

সংক্ষেপে, টেকনিক্যাল এসইও হলো আপনার ওয়েবসাইটের ইঞ্জিনকে এমনভাবে টিউন করা, যাতে এটি সার্চ ইঞ্জিনের জন্য মসৃণভাবে চলতে পারে এবং আপনার কন্টেন্টের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা প্রকাশ করতে পারে। এটি ভালো র‍্যাঙ্কিং এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার জন্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি।

আরো পড়ুনঃ-  ট্রেডিং কিভাবে করব - ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয়

২. কিওয়ার্ড রিসার্চ শিখা

কিওয়ার্ড রিসার্চ শেখা এসইও-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারেন আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকরা সার্চ ইঞ্জিনে কী লিখে খুঁজছেন, যাতে আপনি সেই অনুযায়ী আপনার কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন।

যখন কোন ওয়েবসাইটে এসইও করবেন তখন কন্টেন্টের জন্য প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড গুলো বাছাই করতে হবে আপনি সেটা গুগলের সার্চ বারে অটোমেটিক কিছু সাজেশন পেয়ে যাবেন যেমনঃ

ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো

কীওয়ার্ড রিসার্চ: এছাড়া গুগল পেজের নিচে কিছু রিলেটেড কিওয়ার্ড ( বা প্রাসঙ্গিক টপিক) সাজেশন দেয়া থাকে। যেমনঃ

ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো

রিলেটেড কিওয়ার্ড: উপরে দেখানো ইমেজের কীওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলে আপনার সাইটের কন্টেন্টের জন্যে খুব সহজেই  প্রাসঙ্গিক ও সেরা কীওয়ার্ড নির্বাচন হয়ে উঠবে। 

৩. কন্টেন্ট অপটিমাইজেশান করতে শিখা

কীওয়ার্ড নির্বাচন করার পর সেটিকে কন্টেন্টের সঠিক স্থানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কন্টেন্টের শিরোনামের প্রথম বাক্যাংশটি অবশ্যই কীওয়ার্ড দিয়ে শুরু করতে হবে। বিষয়বস্তুর প্রথম কয়েকটি বাক্যের মধ্যে এবং মেটা ডেস্ক্রিপশন এর শুরুতে কীওয়ার্ড এর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

ওয়েবসাইটের র‍্যঙ্কিং এর বিষয়গুলোর উপর আপনার কন্টেন্ট এর মানের উপর গুরুত্ব দিতে হবে যেমনঃ 

  • সার্চ ইঞ্জিন ক্রলাররা খুব সহজেই যাতে আপনার কন্টেন্ট এর টপিক বুঝতে পারে এমন সহজবোধ্য হতে হবে।
  • সুন্দর ও শ্রুতিমধুর টাইটেল নির্বাচন করতে হবে।
  • বিষয়বস্তু অবশ্যুই প্রাসঙ্গক ও তথ্যবহুল হতে হবে।
  • নিয়মিত কন্টেন্ট আপডেট করতে হবে যাতে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র‍্যাঙ্ক পাওয়া যায়।

পরিশেষে আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট যাতে ভিজিটরদের আগ্রহ ধরে রাখতে পারে সেজন্য কন্টেন্ট এর মধ্যে ছবি, চার্ট, এবং ভিডিও অ্যাড করলে ভালো হয়।

৪. Technical এসইও করা শিখা

টেকনিক্যাল এসইও এর দিকে আমরা হয়তো নজর দেয় না। এজন্য আমাদের টেকনিক্যাল এসইও এর উপরে জ্ঞান থাকতে হবে। আসুন Technical এসইও নিয়ে আলোচনা শুরু করি।

লোডিং স্পিড: টেকনিক্যাল এসইও এর জন্যে সর্বপ্রথম ওয়েবপেজের লোডিং স্পিডকে অপ্টিমাইজ করতে হবে।  আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ভালো রাখা বর্তমান ডিজিটাল যুগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু   এর জন্যই নয়, ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্যও অপরিহার্য। 

দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইট ভিজিটরদের ধরে রাখে, বাউন্স রেট কমায় এবং রূপান্তরের (conversions) সম্ভাবনা বাড়ায়। এখানে কিছু কার্যকর কৌশল দেওয়া হলো যা আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ভালো রাখতে সাহায্য করবে:

  • ইমেজ অপ্টিমাইজেশান করুন
  • ক্যাশিং ব্যবহার করুন
  • সার্ভার রেসপন্স টাইম উন্নত করুন
  • অতিরিক্ত প্লাগইন/থিম ব্যবহার এড়িয়ে চলুন
  • জাভাস্ক্রিপ্ট রেন্ডার-ব্লকিং এড়ান
  • পারফরম্যান্স টেস্টিং টুল ব্যবহার করুন

এই কৌশলগুলো একত্রিতভাবে ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারবেন, যা আপনার ব্যবহারকারীদের জন্য আরও ভালো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে এবং আপনার এসইও র‍্যাঙ্কিংয়েও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ব্রোকেন ও ডেড লিঙ্ক: সাইটে এমন কোন লিংক থাকা যাবে না যেটি কাজ করে না যাকে আমরা ব্রোকেন লিঙ্ক বলে থাকি। এই লিঙ্কগুলি ভিজিটরদের জন্যে বিরক্তির কারন হয় এবং সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্ক কমে যায়। ব্রোকেন ও ডেড লিঙ্কগুলো নিয়মিত চেক করা এবং ঠিক করা একটি ভালো অভ্যাস, যা আপনার ওয়েবসাইটের এসইও পারফরম্যান্সকে উন্নত করে।

HTTPS এর ব্যবহার: ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ওয়েব লিঙ্কে HTTPS ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে ওয়েবসাইটটি সুরক্ষিত আছে। আর ভিজিটররা এটা দেখে বুঝতে পারে যে তাদের তথ্য হ্যাকার এবং অন্যান্য ম্যালওয়্যার ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকবে।

মোবাইল-ফ্রেন্ডলি সাইট: একটি মোবাইল ডিভাইসে সাইটের কন্টেন্টগুলো খুব সহজেই পড়া যায় এমন ফন্ট ব্যবহার করতে হবে। আবার দ্রুত লোড হয় এমন ছবি ব্যবহার করা। আর মোবাইলের ছোট পর্দায় সহজেই সেট হয় এইজন্য সাইটের পপ-আপ উইন্ডোর আকার সেভাবেই পরিবর্তন করতে হবে।

৫. ব্যাকলিংক তৈরি করতে শিখা

ব্যাকলিংক তৈরি করা এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন, যেমন গুগলে, ভালোভাবে র‍্যাংক করতে সাহায্য করে। এটি অনেকটা অন্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য “ভোট” পাওয়ার মতো। যত বেশি মানসম্পন্ন ওয়েবসাইট আপনার সাইটে লিঙ্ক দেবে, সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে তত বেশি নির্ভরযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক মনে করবে।

৬. এসইও পারফরম্যান্স ট্র্যাক করা শিখা

আরো পড়ুনঃ-  প্রফেশনাল ভাবে নতুন ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম

ওয়েবসাইটে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য এসইও করার পর নিয়মিত পারফরম্যান্স ট্র্যাক করা যেমনঃ

  • ওয়েবসাইটের ট্রাফিক এর পরিমাণ কেমন;
  • কিওয়ার্ড গুলোর র‍্যাঙ্ক পজিশন কত;
  • ভিজিটররা পেজটিতে গড়ে কত সময় ব্যয় করছে;
  • ব্যাকলিঙ্কগুলো ঠিকমত কাজ করছে কিনা এবং
  • সাইটটিতে গুগল কতটি পেজ ইন্ডেক্স করেছে।

আপনি চাইলে কিছু এসইও টুলস ব্যবহার করে এসইও পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করতে পারেন। যেসব টুলসের সাহায্য এসইও পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করা যায় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ 

  • Google Analytics, 
  • Google Search Console, 
  • Ubersuggest, 
  • Ahrefs, 
  • Semrush ইত্যাদি। 

৮. সবসমই লেগে থাকা

আসলে কোন কিছুই জানার আর শেখার শেষ নেই এইজন্য আমার অনুরোধ থাকবে এসইও শেখা কখনও বন্ধ করবেন না। কেননা গুগল র‍্যাংকিং অ্যালগরিদমগুলোকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন বা আপডেট করে থাকে, এজন্য আপনাকে সবসমই লেগে থাকতে হবে। এসইও শেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধৈর্য, অনুশীলন এবং কৌতূহল। নিয়মিত শিখুন, পরীক্ষা করুন এবং ফলাফল থেকে শিখুন।

পরিশেষে বলতে চাই আমরা “ঘরে বসে এসইও কিভাবে শিখবো” এই টপিকে আমরা এতক্ষণ ধরে যেগুলো পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি এগুলো পয়েন্ট যদি আপনি ভালোভাবে শিখে নিতে পারেন তাহলে আর এসইও এক্সপার্ট এর কাছে যেয়ে অযথা টাকা খরচ করতে হবে না। আপনি নিজেই নিজের ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানোর কাজ শুরু করতে পারবেন। 

এসইও শিখতে কতদিন লাগে

এসইও হচ্ছে মূলত হএমন একটি সেক্টর যেখানে আসলে শেষ বলতে কিছু নেই। কেননা, এসইও এর সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাংকিং অ্যালগরিদম প্রতিনিয়ত আপডেট হয়। কিন্তুু প্রফেশনাল ভাবে কোর্স করেr উপায় হচ্ছে,

  • ব্যাসিক লেভেল এসইও
  • মাষ্টার লেভেল এসইও
  • প্রাকটিক্যাল এসইও

মূলত আপনি যখন স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা কোর্স করে এসইও শিখবেন তখন এই ধাপ গুলো ফলো করে আপনি একদিন এসইও এক্সপার্ট হতে পারবেন। আর একজন এসইও এক্সপার্ট হওয়ার জন্য এই ধাপ গুলো ফলো করতে আপনার কতদিন সময় লাগবে তার ধারনা নিচে দেওয়া হলো।

১। ব্যাসিক লেভেল এসইও শিখতে কতদিন সময় লাগবে?

আর উক্ত সময়ে আপনি যা শিখবেন সেগুলো হলো,

  • এসইও কি,
  • এসইও কীভাবে কাজ করে,
  • কিওয়ার্ড রিসার্চ কি,
  • অন পেজ এসইও,
  • অফ পেজ এসইও,

তবে যখন আপনি ব্যাসিক লেভেলে থাকবেন তখন অবশ্যই আপনাকে গুরুত্বের সাথে এই বিষয় গুলো আয়ত্ব করতে হবে। অন্যথায় এই বিষয় গুলো না জানলে পরবর্তী সময়ে আপনার এসইও শেখার কাজটা অনেক কঠিন মনে হবে।

২। মাস্টার লেভেল এসইও শিখতে কতদিন সময় লাগবে?

একজন ব্যক্তি যখন এসইও এর প্রাথমিক বিষয় গুলো সম্পর্কে ধারনা নিবে তারপর তাকে মাষ্টার লেভেল এসইও শিখতে হবে। আর স্বাভাবিক ভাবে যদি আপনার এসইও শেখার যথেষ্ট ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনার প্রায় ৬ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত সময় রাখতে হবে মাষ্টার লেভেল এর এসইও শেখার জন্য। কেননা, উক্ত সময়ে আপনি বিভিন্ন বিষয় শিখতে পারবেন। যেমন,

  • কমপিটিটর এনালাইসিস,
  • টেকনিক্যাল এসইও ,
  • অ্যাডভান্স এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট তৈরি,
  • LSI কীওয়াড ব্যবহার ইত্যাদি।

আর যখন আপনি এই বিষয় গুলো শিখতে পারবেন তখন আপনি নিজেকে এসইও ফিল্ডে কাজ করার জন্য উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন। তবে তার আগে আপনাকে অবশ্যই প্রাকটিক্যাল এসইও এর কাজ জানতে হবে।

৩। প্র্যাকটিক্যাল এসইও শিখতে কতদিন সময় লাগবে?

আপনি এসইও কাজ কতদিন শিখলেন এবং সেই বিষয়গুলোর উপরে চর্চা করলেন সেটিকেই প্রাকটিক্যাল এসইও বলা হয়। আমার মনে হয় আপনি যদি ভালোভাবে ৫ থেকে ৬ মাস চর্চা করেন তাহলে এসইও এক্সপার্ট হয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। 

কিন্তুু ততোদিনে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন যে, এসইও এর শেখার শেষ বলতে কিছু নেই। বরং সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম চেন্জ হওয়ার সাথে সাথেই আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্ট্রাটেজি অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

এছাড়াও এসইও হলো বৃহৎ একটি সেক্টর। যেখানে একবারে নতুন করে শিখতে গেলে আপনাকে অনেক কিছু শিখতে হবে। আর এই বিষয় গুলো বিবেচনা করলে দেখা যাবে, নতুন একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এসইও এর প্রাথমিক বিষয় গুলো শিখতেই ১ বছর লেগে যাবে। আবার আপনি যখন এডভান্স লেভেলের এসইও শিখতে চাইবেন, তখন আপনাকে আরো ১ বছর সময় ব্যয় করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

কিন্তুু এসইও এমন কোনো বিষয় না যে আপনি একবার শিখলেই সারাজীবন সেগুলো কাজে লাগবে। কারণ, এসইও এর র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর গুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। আর আপনাকে পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজেকেও আপডেট রাখতে হবে। সেইসাথে এসইও শুধু শেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং আপনাকে প্রাকটিক্যালি কাজ চলমান রাখতে হবে।

seo শিখতে কি কি লাগে

যখন আপনি নতুন ব্যক্তি হিসেবে এসইও শিখবেন তখন আপনার নিকট বেশ কিছু জিনিস থাকতে হবে। যেগুলোর মাধ্যমে আপনি পূর্ণাঙ্গ ভাবে এসইও সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। আর এবার আমি আপনাকে এসইও শেখার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত বলবো। যেমন, 

০১- কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ

যারা নতুন করে এসইও শিখতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সর্ব প্রথম কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ এর দরকার হবে। কারন এসইও এর যাবতীয় কাজ গুলো আপনাকে অনলাইন এর মাধ্যমে করতে হবে। এছাড়াও যখন আপনি বিভিন্ন ধরনের এসইও টুলস ব্যবহার করবেন তখনও আপনার কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।

০২- এসইও শেখার আগ্রহ

যদি আপনার মধ্যে কোনো কাজ শেখার পর্যাপ্ত আগ্রহ না থাকে তাহলে কেউ আপনাকে জোর করে কিছু শেখাতে পারবে না। তাই আপনার মধ্যে এসইও শেখার আগ্রহ থাকতে হবে। 

০৩- ধৈর্য্য

আপনি আজকে আপনার ওয়েবসাইট এসইও করলে কালকেই যে লাখ লাখ ভিজিটর আসবে বিষয়টা কিন্তুু এমন নয়। বরং এসইও শেখা ও এসইও এর কাজ গুলো অনেক ধীর গতির হয়। তাই আপনার মধ্যে যথেষ্ট ধৈর্য্য থাকতে হবে।

০৪- অনুশীলন

শুধুমাত্র এসইও শিখে বসে থাকলে হবেনা, বরং আপনাকে যথেষ্ট অনুশীলন করতে হবে। আর আপনি যতো বেশি এসইও নিয়ে অনুশীলন করবেন ঠিক ততো বেশি নতুন নতুন র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

০৫- সময়

আর পরিশেষে এসইও শিখতে গেলে অবশ্যই সময় দিতে দিতে হবে। তো প্রাথমিক ভাবে এসইও শেখার জন্য আপনার যা কিছু প্রয়োজন হবে সেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আপনার মধ্যে যদি উপরোক্ত বিষয় গুলো থাকে তাহলে ধরে নিন যে আপনি এসইও শেখার জন্য একদম প্রস্তুত। আর আপনাকে দিয়েই এসইও শেখা সম্ভব হবে।

Seo শিখে কিভাবে আয় করবো?

এসইও শিখে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আপনি যেভাবে আয় করতে পারবেন তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ 

  • SEO সার্ভিস সেল করে আয়,
  • মার্কেটিং অ্যাডভাইজার থেকে আয়,
  • ওয়েব রিসার্চ এর কাজ করে,
  • ইমেইল মার্কেটিং করে,
  • অনলাইন মার্কেটার এর কাজ করে,
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে,
  • গুগল এডসেন্স থেকে,
  • ব্লগিং করে,
  • আর্টিকেল রাইটিং সার্ভিস দিয়ে,
  • ই-কমার্স ব্যবসা করে,
  • লিংক বিল্ডিং করে,

তো যখন আপনার এসইও সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ দক্ষতা থাকবে তখন আপনি উপরোক্ত উপায়ে আয় করতে পারবেন। আর এই কাজ গুলো অনলাইন মার্কেটপ্লেস কিংবা বিভিন্ন কোম্পানির আওতায় চাকরি মাধ্যমে করার সুযোগ পাবেন।

এসইও ক্যারিয়ার

এসইও (SEO) বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার ক্ষেত্র। ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে ব্যবসাগুলোর এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে।

বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ই-কমার্সের দ্রুত প্রসারের সাথে সাথে এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা বাড়ছে। অনেক স্থানীয় কোম্পানি এবং ফ্রিল্যান্সাররা এসইও সেবা প্রদান করছেন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতেও বাংলাদেশের এসইও প্রফেশনালদের একটি বড় অংশ রয়েছে। একটি পোর্টফোলিও তৈরি করে এবং কেস স্টাডি দিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে আপনি ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারেন।

এসইও একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যা সঠিক কৌশল এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্র্যাফিক ও কনভার্সন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আপনি যদি শেখার আগ্রহ নিয়ে এই ফিল্ডে আসতে চান, তাহলে এসইও ক্যারিয়ার আপনার জন্য একটি দারুণ সুযোগ হতে পারে।

লেখকের শেষ মতামত

আসলে কোন কিছুই জানার আর শেখার শেষ নেই এইজন্য আমার অনুরোধ থাকবে এসইও শেখা কখনও বন্ধ করবেন না। কেননা গুগল র‍্যাংকিং অ্যালগরিদমগুলোকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন বা আপডেট করে থাকে, এজন্য আপনাকে সবসমই লেগে থাকতে হবে। এসইও শেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধৈর্য, অনুশীলন এবং কৌতূহল। নিয়মিত শিখুন, পরীক্ষা করুন এবং ফলাফল থেকে শিখুন।

পরিশেষে বলতে চাই আমরা আজকের এই টপিকে আমরা এতক্ষণ ধরে যেগুলো পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি এগুলো পয়েন্ট যদি আপনি ভালোভাবে শিখে নিতে পারেন তাহলে আর এসইও এক্সপার্ট এর কাছে যেয়ে অযথা টাকা খরচ করতে হবে না। আপনি নিজেই নিজের ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানোর কাজ শুরু করতে পারবেন। 

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment