tetrasol ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম – টেটরাসল সলিউশন বাচ্চাদের ব্যবহারের নিয়ম

টেটরাসল সলিউশন এক ধরনের ঔষধ যা বিশেষ কিছু চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ত্বকের সমস্যা, যেমন একজিমা বা প্রদাহের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি তরল ফর্মে থাকে এবং সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা হয়। এটি ব্যবহারের নিয়ম ভিন্ন হতে পারে ব্যক্তির অবস্থা অনুযায়ী।

tetrasol ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম

টেটরাসল এক প্রকার প্রয়োজনীয় ঔষধ। যা স্ক্যাবিস একজিমা কিংবা বিভিন্ন প্রদাহের চিকিৎসায় নির্দেশিত। টেটরাসল এসিআই লিমিটেড এর একটি পণ্য। টেটরাসল এর জেনেরিক নাম মনোসালফিরাম ২৫%। 

আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো  tetrasol ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম, টেটরাসল সলিউশন বাচ্চাদের ব্যবহারের নিয়ম, টেটরাসল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, টেটরাসল সলিউশন দাম কত। ট্রেট্রাসল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেল বিস্তারিত পড়ুন।

টেটরাসল সলিউশন কি

টেটরাসল সলিউশন এক ধরনের ঔষধ যা বিশেষ কিছু চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ত্বকের সমস্যা, যেমন একজিমা বা প্রদাহের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি তরল ফর্মে থাকে এবং সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা হয়। এটি ব্যবহারের নিয়ম ভিন্ন হতে পারে ব্যক্তির অবস্থা অনুযায়ী।

টেট্রাসল সলিউশন মূলত এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক নির্মিত একটি বাহ্যিক ত্বকের ঔষধ। এতে প্রধান উপাদান হিসেবে রয়েছে মনোসালফিরাম ২৫%, যা একটি শক্তিশালী এক্টোপ্যারাসাইটিসাইড। এই উপাদান ত্বকে থাকা পরজীবী মাইটের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

টেটরাসল সলিউশন এর কাজ

টেটরাসল মূলত ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যায় ডাক্তার নির্দেশিত করে থাকে। একজিমা স্ক্যাবিস কিংবা বিভিন্ন প্রদাহের জন্য টেটরাসল প্রয়োগ করে থাকি।

টেট্রাসলের কার্যপ্রণালী:

টেট্রাসল সলিউশন সরাসরি পরজীবী মাইটের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি স্ক্যাবিস সৃষ্টিকারী সারকপটিস স্ক্যাবিআই নামক মাইটের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী। এই ঔষধ ত্বকের উপর প্রয়োগ করার পর, এটি পুনরায় মাইটের দেহে ঢুকে জীবনচক্র ধ্বংস করে ফেলে।

আরো পড়ুনঃ-  ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ কি - ব্যবহারের নিয়ম, দাম ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানুন

টেট্রাসলের প্রধান ব্যবহার:

  • স্ক্যাবিস বা পাঁচড়া রোগের চিকিৎসায়
  • স্ক্যাবিস রোগ প্রতিরোধে
  • ত্বকের কিছু পরজীবী সংক্রমণে
  • ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া জনিত কিছু ত্বকের সমস্যায়
  • একজিমা এবং বিভিন্ন ধরনের ত্বকের প্রদাহে

টেট্রাসল সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অল্প সময়ের মধ্যেই স্ক্যাবিস সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে এটি ব্যবহারের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।

tetrasol ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম

টেটরাসল সলিউশন আমরা স্ক্যাবিস একজিমা কিংবা বিভিন্ন প্রদাহের জন্য ব্যবহার করে থাকি। টেটরাসল সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করতে হয় ছত্রাকজনিত আক্রান্ত স্থানে। টেটরাসল ভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে। একমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তির উপর নির্ভর করে টেটরাসলের মাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। 

একজন একজিমায় আক্রান্ত রোগী যদি ডাক্তারের কাছে যায় তাহলে ডাক্তার তাকে টেটরাসল প্রেসক্রাইব করবে এবং সকাল রাত প্রতিদিন দুবার করে আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করতে বলবে। 

এই ওষুধ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। এরপরে আপনার আক্রান্ত স্থানে পরিমাণ মোতাবেক প্রয়োগ করে কম করে হলেও শুকানৈর জন্য ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ওষুধ যাতে চোখে ও মুখে যাতে না যায় সেদিকে সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।

কেননা, আপনি যেই ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করেন না কেন তার আগে বা পরে আপনার হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। 

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহারে সতর্কতা

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহারের পূর্বে ভালকরে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর টেটরাসল প্রয়োগ করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে শুকানোর জন্য। চোখে ও মুখে যাতে টেটরাসল না যায় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। সতর্কতা ও সাবদানতা অবলম্বণ করতে হবে।

টেটরাসল সলিউশন বাচ্চাদের ব্যবহারের নিয়ম

টেট্রাসল সলিউশন বাচ্চাদের ব্যবহারের নিয়ম জেনে নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া নাও যেতে পারে। নিচে টেট্রাসল ব্যবহারের বিস্তারিত নিয়ম দেওয়া হলো:

বাচ্চাদের ব্যবহারের আগে প্রস্তুতি:

আরো পড়ুনঃ-  susten 30 এর কাজ কি - susten 30 খাওয়ার নিয়ম

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহার করার আগে বাচ্চাকে বেবি সাবান দিয়ে গোসল করে তাদের পুরো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। 

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহারের সময় আপনার হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে, তবে প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে বেশি ভালো হয়।

বাচ্চাদের ডোজ প্রস্তুতি:

  • প্রতি ৩০ মিলি বোতল থেকে ৫ মিলি টেটরাসল সলিউশন নিতে হবে 
  • এরপরে ৫ মিলি টেটরাসল সলিউশনের সাথে ৫ মিলি পানি অথবা নারিকেল তেল মিশিয়ে নিলে বেশি ভালো হয়।
  • এভাবে একটি ৩০ মিলি বোতল থেকে তিনটি ডোজ তৈরি করা যাবে (৫মিলি + ৫মিলি পানি/তেল) = ১০ মিলি মিশ্রণ করে নিতে হবে।

বাচ্চাদের প্রয়োগ পদ্ধতি:

  • এতক্ষণ ধরে আপনি যেই মিশ্রণটি প্রস্তুত করলেন সেটি আপনার বাচ্চার মাথা এবং মুখ ব্যতিত দেহে সমান ও আলতোভাবে লাগাতে হবে।
  • গলা থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগান (এই সময়ে জোরে ঘষবেন না)
  • এরপরে শুকানোর জন্য আপনাকে অন্তত ১০ মিনিট সময় দিতে হবে।
  • শুকিয়ে গেলে আপনার বাচ্চাকে কাপড় পড়াতে পারেন
  • এরপরে কম করে হলেও ৩-৪ ঘণ্টা ঔষধ শরীরে রাখুন, আর যদি সম্ভব হয় তাহলে আপনার বাচ্চাকে রোদে রাখুন
  • ৩-৪ ঘণ্টা ঔষধ শরীরে রাখার পর বাচ্চাকে গোসল করে ধুয়ে ফেলুন
  • সাধারণত আপনার বাচ্চাকে এভাবে একটানা ৩/৪ দিন এভাবে ব্যবহার করাতে হবে। 
  • তবে যদি খুব জটিলতা দেখা দেয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

টেটরাসল সলিউশন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

টেটরাসল সলিউশন এ খুব বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ইডিওসিনক্র্যাটিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে বিবেচিত এরিথেমেটাস ফুসকুড়ির কয়েকটি ক্ষেত্রে রিপোর্ট করা হয়েছে।

সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

  • ত্বকে লালচে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি
  • ত্বকে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া অনুভূতি
  • ত্বকে শুষ্কতা বা খসখসে ভাব
  • কম ক্ষেত্রে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া

গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (যা খুব কমই হয়):

  • তীব্র অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া 
  • শ্বাসকষ্ট
  • মুখ, জিহ্বা বা গলায় ফোলাভাব
  • তীব্র চুলকানি বা লালচে র‍্যাশ

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে করণীয়:

  • টেট্রাসল ব্যবহার বন্ধ করুন
  • প্রভাবিত স্থান ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
  • অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
  • গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে জরুরি চিকিৎসা নিন
আরো পড়ুনঃ-  কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম - কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধের নাম

টেটরাসল সলিউশন দাম কত

টেটরাসল সলিউশন হচ্ছে মূলত ACI Limited এর একটি পণ্য। যার বাজারে খুচরা মূল্য ১২৫ টাকা মাত্র। 

টেট্রাসলের সাথে অন্যান্য ঔষধ ব্যবহার

টেট্রাসল সাথে যদি সহায়ক ঔষধ ব্যবহার করা যায় তাহলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। আপনারা অনেকেই জানতে যে টেট্রাসলের সাথে অন্যান্য কি ঔষধ ব্যবহার যায়? এবার আসুন সেই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। আপনারা চুলকানি কমাতে নিম্নক্তো কিছু অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন:

প্রথম জেনারেশন অ্যান্টিহিস্টামিন:

  • ক্লোরফেনিরামিন (কিটোফেন, ফ্যাবিরোল)
  • ডাইফেনহাইড্রামিন (টাইপেন)
  • সাইপ্রোহেপ্টাডিন (পেরিয়াক্টিন)

দ্বিতীয় জেনারেশন অ্যান্টিহিস্টামিন:

  • ফেক্সোফেনাডিন (ফ্যান্সে, অ্যালেগ্রা)
  • বিলাস্টিন (বিলিটিন)
  • ইবাস্টিন (এবাসটিল)
  • লোরাটাডিন (ক্লারিটিন, লোরাকাফ)

টেটরাসল সলিউশন কতক্ষণ পর্যন্ত ব্যবহার করা উচিত?

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহারের সময়কাল সাধারণত ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী হয়। অতিরিক্ত সময় ধরে এই সলিউশন ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি চোখের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে বা অপ্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহার করার আগে করনীয় 

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহার করার পূর্বে, নিশ্চিত হতে হবে যে চোখ পরিষ্কার এবং হাতও পরিষ্কার। এছাড়া, অনেকেই লেন্স ব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে লেন্সগুলো বের করে নিতে হবে এবং এটি ব্যবহারের ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর আবার লেন্স লাগাতে পারবে।

টেটরাসল সলিউশন ব্যবহারের সময়, কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন চোখে জ্বালাপোড়া, লাল হওয়া, বা চোখে অস্বস্তি হতে পারে। যদি এসব উপসর্গ গুরুতর হয় বা বেশি দিন থাকে, তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

লেখকের শেষ মতামত

টেট্রাসল সলিউশন মূলত এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক নির্মিত একটি বাহ্যিক ত্বকের ঔষধ। এতে প্রধান উপাদান হিসেবে রয়েছে মনোসালফিরাম ২৫%, যা একটি শক্তিশালী এক্টোপ্যারাসাইটিসাইড। এই উপাদান ত্বকে থাকা পরজীবী মাইটের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

টেট্রাসল সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অল্প সময়ের মধ্যেই স্ক্যাবিস সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে এটি ব্যবহারের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।

মনে রাখবেন, সাধারণত একটি ৩০ মিলি বোতল থেকে তিনটি চিকিৎসা সেশন করা যায়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে যথেষ্ট। জটিল ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টেট্রাসল ব্যবহারের পাশাপাশি চুলকানি কমাতে একটি অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে। পরিশেষে, স্ক্যাবিস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং পারিপার্শ্বিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

আমি সহ আমার টিম প্রতিনিয়ত কাজ করি অনলাইন জগতে বিভিন্ন তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সবার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে। আমাদের সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত প্রদান করতে আমাদের যোগাযোগ পেইজ ব্যবহার করুন অথবা নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment