হস্ত মৈথুন বা স্বমৈথুন একটি সাধারণ এবং স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া, যা অনেক মানুষ তাদের যৌন জীবনের অংশ হিসেবে করেন। এটি দেহের যৌন চাহিদা পূরণের একটি পদ্ধতি এবং অনেকের জন্য এটি মানসিক চাপ হ্রাসের উপায়ও হতে পারে। হস্ত মৈথুন সাধারণত যৌবনের প্রারম্ভে শুরু হয়, যা সাধারণত ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে।
এই সময় শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা হস্ত মৈথুনের দিকে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করে। হস্ত মৈথুন একটি স্বাভাবিক আচরণ এবং বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এটি করে থাকে। তবে, প্রতিটি ব্যক্তির জন্য এটি ভিন্ন হতে পারে, এবং কিছু মানুষ এতে দীর্ঘ দিন ধরে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।
যদি আপনার হস্তমৈথনের অভ্যাস থেকে থাকে এবং সেটি স্বাভাবিক থাকে। তাহলে বিষয়টি নিয়ে ভয় পাওয়ার মত আপনার কিছুই হয়নি। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় কোন কিছুই ভালো নয়। আপনি যদি অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করেন তাহলে আপনার গোপনাঙ্গের যে শক্তি রয়েছে, সেটি একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। আসুন তাহলে হস্তমৈথুন ছাড়ার উপায় কি, হস্তমৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার উপায় কি এগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক।
হস্ত মৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার উপায়
আপনারা অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন হস্তমৈথুনের প্রতি ঘাটে উঠার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই হস্তমৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার উপায় গুলো কি কি রয়েছে।
কেউ যদি অতিরিক্ত হস্তমৈথনে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে নিয়মিত মধু অথবা খাঁটি ছানার সন্দেস খেতে হবে। এতে হস্তমৈথুনের ফলে যে শক্তি সেহ বেরিয়ে যায় সেটি আবার রিকোভার হয়ে যায়।
তবে আপনি নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের ক্ষতিকর পুষ্টি ঘাটতি মিটে যাবে। তাই যারা হস্তমৈথুন করে থাকেন তারা প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় অবশ্যই নিয়মিত খেজুর খাবেন।
রাতে শোবার সময় নিয়মিত সিদ্ধ ডিম এবং গরম দুধ খেতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন রাতে শোবার সময় ছোলা বুট ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলায় ভিজিয়ে রাখা ছোলা বুটের সাথে পানিও খেতে হবে।
এতে যদি হস্তমৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভাব না হয়। তাহলে অবশ্যই আপনার একজন ভালো ডাক্তারের বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত খেজুর খান তাহলে কিন্তু খেজুর শরীরের ক্ষতিকর পুষ্টি ঘাটতি মিটিয়ে দেয়।
তাই আপনারা যারা হস্তমৈথুন করেন তাদের তাহলে প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় খেজুর অবশ্যই খেতে হবে। এছাড়াও আপনাদেরকে ডিম, দুধ, ভিটামিন ও আমিষ যুক্ত খাবার খেতে হবে। এতেও আপনি যদি হস্তমৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পারেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে কেননা বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে হস্তমৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়।
হস্ত মৈথুনের পর কি খেতে হবে
হস্তমৈথুনের পর আপনি পুষ্টিকর খাবার খাবেন। যেমন: ডিম, দুধ, মাখন, দই, মধু ঘি ইত্যাদি এসব খাবার খাবেন। এছাড়াও আপনি বীর্য জাতীয় খাবারের মধ্যে কুমড়া বীজ, বাদাম, কলা ইত্যাদি জাতীয় খাবার খাবেন। আমিষ জাতীয় খাবারের মধ্যে ডিম, দুধ, এগুলো খাবার খেতে পারেন। এছাড়াও কিন্তু পেঁয়াজ, রসুন, কালোজিরা এগুলো খুবই কার্যকরী উপাদান। এই ক্ষেত্রে কিন্তু মধু খুব ভালো।
আবার আপনার শরীর যদি খুব বেশি খারাপ হয়ে থাকে তাহলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে সিনকারা সিরাপটি খেতে পারেন। তবে পূর্ণরায় শক্তি পাওয়ার জন্য হস্তমৈথুন একবারেই ছেড়ে দিতে হবে। আপনি যদি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পর আবার হস্তমৈথুন করেন। তাহলে কোন উন্নতি সাধন হবে না।
এছাড়া ফল ও শাকসবজি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা আপনাকে শক্তিশালী এবং তৃপ্ত রাখতে সাহায্য করে। পুষ্টিকর শস্যদানা জটিল কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস, যা আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করবে।
লিন প্রোটিন যেমন মাংস, মাছ, ডিম, বাদাম এবং বীজের মতো খাবারগুলিতে পাওয়া যায়, যা পেশী বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার শরীরের প্রতি যত্নশীল থাকা এবং সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু হস্তমৈথুনের পরে নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায়
জীবনের কোন না কোন সময় মানুষ হস্তমৈথুন করেন। এবং কোন এক সময় এটা মারাত্মক অভ্যাসে পরিণত হয়। কোন ব্যক্তি চাইলেও হুট করে এই বদ অভ্যাসটি ছাড়তে পারে না। ক্ষণিকের সুখের জন্য অনেকেই এই কাজটিকে খুব উপভোগ করে। কিন্তু হস্তমৈথুন যে কত ক্ষতির কারণ এটা অনেকেই জানেন না।
আর তাই না জেনে এই কাজটিকে খুব উপভোগ করেন। যখন এর ক্ষতিকর প্রভাব শরীর ও মনের ওপর পড়ে তখন হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত ব্যক্তি তার ক্ষতি নিজে নিজেই বুঝতে পারে। তখন এই খারপ নেশায় অভ্যস্ত ব্যক্তি হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় খোঁজেন। হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায়গুলো হলোঃ
১. মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং সচেতনতা:
মানসিক প্রস্তুতি: প্রথমেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে চান। নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এটি কমাতে হবে বা বন্ধ করতে হবে।
২. শারীরিক ব্যস্ততা:
ব্যায়াম করুন: শারীরিক কাজ, বিশেষ করে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়, যা এই প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে।
বাইরে সময় কাটান: প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো, হাঁটা বা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা মনকে শান্ত করতে সহায়তা করে।
৩. পর্নোগ্রাফি থেকে দূরে থাকা:
অপ্রয়োজনীয় উপাদান এড়িয়ে চলুন: পর্নোগ্রাফি বা উসকানিমূলক কনটেন্ট থেকে দূরে থাকুন। এগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখলে হস্ত মৈথুনের প্রতি আকর্ষণ কমে আসবে।
ডিজিটাল ডিটক্স: অযথা ইন্টারনেট ব্রাউজিং বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সময় ব্যয় করুন, যেখানে এমন কন্টেন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৪. সামাজিক সংযোগ বৃদ্ধি:
বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটান: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে মানসিকভাবে ভালো থাকা সম্ভব। নিজেকে একা রাখবেন না, বরং আপনার কাছের মানুষের সাথে সময় কাটান।
এছাড়াও আপনাকে পর্নোগ্রাফি ভিডিও সম্পূর্ণ ছাড়তে হবে। মনে রাখবেন এটি আপনাকে ফাঁদে ফেলার শয়তানের প্রথম একটি স্টেপ। আপনার মনে হবে পর্ন ভিডিও আরো দেখি কি হবে বীর্য বের করব না কিন্তু এতে আপনার ক্ষতি ঠিকই হবে। মস্তিষ্ক আপনাকে হস্তমৈথুন করার জন্য সংযত দিবে এগুলো থেকে আপনাকে দূরে থাকতে হবে।
খারাপ বন্ধুদের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। চোখের দৃষ্টি সংযত রাখুন। মেয়ে দেখলেই কুদৃষ্টি দিবেন না এটি জেনা। সর্বদা ভালো কথা ভাববেন।
আমি আপনাদেরকে ১০০% চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি মাত্র ২১ দিন হস্তমৈথুন বন্ধ রাখুন। তাহলে দেখবেন শরীরের পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। আপনার মস্তিষ্ক ২০০% গুণ বেশি কার্যকরী হয়ে উঠবে। এছাড়াও দেখবেন আপনি সবকিছুতেই আত্মবিশ্বাসী আর আল্লাহর রহমতে ভরে যাচ্ছে। আপনার প্রতি দোয়া রইল। যেন আল্লাহতালা আপনাকে সকল গুনাহ থেকে বাঁচার তৌফিক দান করেন। (আমিন)
হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর দিক
হস্তমৈথুন হলো শারীরবৃত্তীয় একটি প্রক্রিয়া। হস্ত মৈথুনের মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের হাত ব্যবহার করেই বীর্য স্খলন বা অর্গাজমের মাধ্যমে যৌনসুখ লাভ করেন। হস্তমৈথুনের অনেকগুলো ক্ষতিকর দিক রয়েছে যেগুলো নিম্নে টুল ধরা হলঃ
- লিঙ্গ শক্ত না হওয়া।
- চোখের দৃষ্টি কমে যাওয়া।
- স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, ফলে দ্রুত ভুলে যাওয়া।
- লিঙ্গের শিথিলতা।
- দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।
- স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
- খাবার হজম না হওয়া, ফলে ক্ষুধা কমে যাওয়া।
- দ্রুত বীর্যপাত হওয়া, ফলে সংসারে অশান্তি হওয়া।
- নার্ভ এবং হজম শক্তি কমে যাওয়া।
- শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
- মানসিক অস্থিরতা এবং খারাপ মেজাজ থাকা।
- সব সময় ক্লান্তি অনুভব করা।
- সব সময় মাথাব্যথা অনুভব করা।
- শরীর দুর্বল লাগা।
- লিঙ্গের শক্তি হারানো (ইরেকটাইল ডিসফাংশন)।
- বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়া, অল্প উত্তেজনাতেই বীর্যপাত হওয়া।
সমাজের কিছু অংশে, হস্তমৈথুনকে এখনও নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। এর ফলে লজ্জা, অপরাধবোধ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বেড়ে যাচ্ছে। বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়ার কারনে সর্বদা সামান্য সামান্য বীর্য নির্গত হতে থাকে, প্রস্রাবের নালীতে বীর্য জমে থাকে ও দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রস্রাবের নালীতে ক্ষত হয়ে যায় এবং ক্ষতস্থান হতে পুঁজ বের হয়।
বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়ার কারণে কোন কল্পনা ব্যতীত প্রস্রাবের আগে বা পরে প্রস্রাবের সাথে বীর্য নির্গত হয়। মনে রাখবেন, আপনি একা নন, অনেক মানুষ হস্তমৈথুনের সাথে সম্পর্কিত সমস্যার সম্মুখীন হয়। আপনার যদি সমস্যা হয় তবে লজ্জা পাবেন না এবং সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না।
হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম
হস্তমৈথুন করার ফলে নানান ধরণের মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক ক্ষতি সাধিত হয় যা ইসলামে অপছন্দনীয় ও ক্ষতিকর কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়।
যা একজন ব্যক্তির ইমান, চরিত্র, এবং জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। এখানে ইসলামের আলোকে হস্তমৈথুনের ১০টি ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা হলো:
১. আত্মিক দূরত্ব: হস্তমৈথুনে লিপ্ত হওয়া একজন ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দুর্বল করে দেয়। আল্লাহর কাছে আত্মিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে পাপমুক্ত থাকা জরুরি। এই কাজ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও তাওবা করতে বাধ্য করে।
২. ইমানের দুর্বলতা: হস্তমৈথুনের কারণে একজনের ইমান দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাকে সহজেই শয়তানের কুমন্ত্রণায় ফেলে দেয়। পাপের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায় এবং হস্ত মৈথুনে আসক্ত ব্যক্তি নেক কাজ থেকে দূরে সরে যায়।
৩. বিবাহের প্রতি উদাসীনতা: হস্তমৈথুন করার ফলে বিবাহের প্রতি এক ধরণের উদাসীনতা সম্পর্ক স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
৪. মানসিক অস্থিরতা: এটি মানসিক অবসাদ, অপরাধবোধ, এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কারণ হতে পারে। ফলে একজন ব্যক্তি মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে থাকে।
৫. পরকালীন শাস্তি: ইসলামের দৃষ্টিতে এর ফলে তাকে পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে যদি না কেউ তাওবা না করে হস্তমৈথুনে লিপ্ত থাকে ।
ইসলামে শরীর ও আত্মার পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি, যা হস্তমৈথুনে লিপ্ত থাকলে নষ্ট হয়।
মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম
ইসলামে হস্তমৈথুনকে একটি হারাম কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। মেয়েদের হস্তমৈথুনের ফলে দেহে নানান ধরণের শারীরিক ও মানসিকভাবে বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। যেমন-
- প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস
- বীর্যস্বল্পতা
- স্পার্মের গুণগতমান হ্রাস
- প্রোস্টেট ক্যান্সার
- মূত্রনালীর সংক্রমণ
- যৌনাঙ্গে চুলকানি
- যৌনাঙ্গে ঘা
- হতাশা
- উদ্বেগ
- অপরাধবোধ
- লজ্জা
- আত্মবিশ্বাসের অভাব
- যৌন সমস্যা ইত্যাদি।
ইসলামে হস্তমৈথুনকে হারাম কাজ হিসেবে গণ্য করা হয় কারণ এটি প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং বিবাহের বাইরে যৌন মিলনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, হস্তমৈথুনের ফলে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায় দোয়া
হস্তমৈথুন থেকে বাঁচতে ইসলামিক পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহর নিকটে কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। হস্ত মৈথুনের প্রবণতা থেকে বাঁচার জন্য সহায়ক হিসবে আমরা আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে কিছু দোয়া ও আমল তুলে ধরলামঃ
১. সুরা আল-ফালাক এবং সুরা আন-নাস পড়া: এগুলো শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুরা। এই সুরাগুলো পড়া মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং খারাপ প্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করতে পারে।
২. আস্তাগফিরুল্লাহ (استغفر الله) বেশি বেশি বলা: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর থেকে সাহায্য চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত “আস্তাগফিরুল্লাহ” পড়লে পাপের জন্য ক্ষমা পাওয়া এবং অন্তর পরিশুদ্ধ হওয়া সম্ভব।
৩. রোজা রাখা: নবী মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, যারা বিবাহ করতে অক্ষম, তারা রোজা রাখুক। কারণ রোজা কামনার প্রবণতা কমায় এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখে।
রোজা রাখলে হস্ত মৈথুনের ইচ্ছাশক্তি থাকে না। কেননা রোজা শরীর ও মনকে সংযমে রাখে।
৪. বেশি বেশি সালাত ও কুরআন তিলাওয়াত করা: সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর হয়, যা খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। কুরআন তিলাওয়াত অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেয়।
এই দোয়া ও আমল নিয়মিত করলে, ধৈর্য ও ইমানের সাথে হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
হস্ত মৈথুনের ঘরোয়া চিকিৎসা
আপনারা যারা হস্তমৈথুনের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান। তাদেরকে বলব আপনি মোট দুটি পদ্ধতিতে হস্তমৈথুনের ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারবেন। আর সেগুলো হলো:
সঠিক নিয়ম মেনে চলা: যখন আপনি দীর্ঘদিন থেকে হস্তমৈথুন করবেন। তখন অবশ্যই সে অভ্যাস আপনার শরীরের ব্যাপক ক্ষতি করবে। এর কারণে প্রথমত আপনাকে এমন কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
এছাড়াও এর পাশাপাশি আপনার হস্তমৈথুন করার ফলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেগুলো পুষিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও আপনার দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে এমন কিছু খাবার যুক্ত করতে হবে। যেন সেগুলো খাবার আপনার যৌন স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন হিসেবে কাজ করে।
খাবারে পরিবর্তন নিয়ে আসা: যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে এগুলোকে হস্তমৈথুনের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবেও ভাবতে পারেন। এখন জানার বিষয় হলো যে হস্তমৈথুন করার পর ঘরোয়া চিকিৎসার জন্য কি কি খাবার খেতে হবে। হস্তমৈথুন করার পর যেসব খাবার খাবেন সেগুলো হলো:
- ডিম,
- দুধ,
- গরম দুধ,
- সবুজ শাকসবজি,
- মধু ও কালোজিরা,
- রসুন,
- খেজুর,
- কলা,
পেঁয়াজ প্রচুর পরিমাণে পানি ইত্যাদি।
হস্ত মৈথুনের প্রাকৃতিক চিকিৎসা
হস্তমৈথুনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু চিকিৎসা এবং জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে এবং ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি পায়।২. সুষম খাদ্য গ্রহণ:
১. জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, ডিম, মাংস, কুমড়ার বীজ ইত্যাদি খেলে যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. মেডিটেশন ও মনোযোগ চর্চা: মেডিটেশন বা ধ্যান মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এবং চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক দিকে নিয়ে যায়। নিয়মিত ধ্যান করলে মানসিক শক্তি বাড়ে এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি আসে।
৩. ঘুমের নিয়মাবলী ঠিক রাখা: প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানো জরুরি, কারণ ঘুমের অভাবে শরীরে দুর্বলতা আসে এবং মানসিক উত্তেজনা বাড়ে। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
৪. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানো: মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা একাকীত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরিবার বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, হালকা বিনোদনমূলক কার্যক্রম করা, বা প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো উপকারী হতে পারে।
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান: শরীরে পর্যাপ্ত পানি পান করলে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং ইচ্ছাশক্তি উন্নত করে।
এগুলো নিয়মিত মেনে চললে ধীরে ধীরে হস্তমৈথুনের প্রতি আসক্তি কমে আসবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সহজ হবে।
হস্ত মৈথুনের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা
হস্তমৈথুনের অতিরিক্ত আসক্তি কখনও কখনও শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ধরনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা একটি বিকল্প হতে পারে।
চিকিৎসাটি সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণগত থেরাপির ওপর নির্ভর করে, যেখানে চিকিৎসক বা থেরাপিস্টের সহায়তা প্রয়োজন হয়। এখানে কিছু এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পদ্ধতি দেওয়া হলো:
১। কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT): কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি হলো মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসার একটি বিশেষ পদ্ধতি যা মানুষের নেতিবাচক চিন্তা ও অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করতে সাহায্য করে।
CBT মানসিক পরিবর্তন এনে আসক্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এই থেরাপিতে রোগীকে শেখানো হয় কীভাবে নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা চিন্তার প্রতি প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কীভাবে সমস্যা মোকাবিলা করা যায়।
২। হরমোন থেরাপি: কিছু ক্ষেত্রে, যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণের জন্য হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা হয়। এই চিকিৎসাটি শরীরে হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করে যৌন ইচ্ছাকে কমাতে সাহায্য করে।
৩। আচরণগত থেরাপি: আচরণগত থেরাপিতে একজন রোগীকে শেখানো হয় কীভাবে তাদের ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করা যায়।
এই থেরাপিতে ধীরে ধীরে নতুন ও ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে হস্তমৈথুনের আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
৪। জীবনধারা পরিবর্তন: চিকিৎসার পাশাপাশি জীবনধারা পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা মানসিক ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং হস্তমৈথুনের আসক্তি কমাতে সহায়ক হয়।
লেখকের শেষ মতামত
হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন আসলে মুলত আসক্তি। যৌবনে এবং বিশেষ করে বিবাহিত জীবনে বেশি প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। হস্তমৈথুন কি তা আমরা সাধারণত সবারই জানা আছে । বিশেষ করে ছেলেদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে যৌন ইচ্ছা ও চাহিদা বাড়তেই থাকে।
এখন তে ইন্টারনেটের যুগ যে কেউ খুব সহজেই ইউটিউবে ঢুকে খারাপ ভিডিও দেখার নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। এতে করে যৌন চাহিদা না মিটাতে পেরে জড়িয়ে পড়ছে হস্তমৈথুন বা মাস্টাবেশনের দিকে। যৌবনের প্রথম দিকে এটি সবার কাছে অনেক আনন্দদায়ক হলেও ধীরে ধীরে এর ক্ষতিকর দিকগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে।
তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের সহায়তা নিয়ে হস্ত মৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার উপায় অবলম্বন করতে হবে এর পাশাপাশি হস্ত মৈথুনের পর কি খেতে হবে সেই বিষয়ে একটি ধারণা রাখতে হবে। আমরা এই আর্টিকেলে হস্ত মৈথুনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার উপায় বি নিয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি এবং হস্ত মৈথুনের পর কি খেতে হবে তা এই পোষ্টেও বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।